তিনি আমার রুমে এসেই বললেন "শামীম ভাই! আমি এখন মোবাইলে কথা বলবো কান বন্ধ রাখবেন"। ভাবলাম মজা করছে তাই হেসেই জবাব দিলাম “পাগলাতো ভুলেই গিয়েছিলো হাক্কা নাড়াতে হবে, মনে করিয়ে দিলেন!”
ব্যাপারটা কোনভাবেই মজার ছিলোনা, পারিবারিক জটিলতা। মোবাইলে কথা বলতে বলতে ভদ্রলোক আবেগাপ্লুত হয়ে পরছিলেন। আমি রুমে না থাকলে হয়তো কেঁদেই ফেলতেন। তুচ্ছ পারিবারিক ব্যাপার নিয়ে বউ বাবার বাড়ি চলে গেছে। দু’বছর ধরে অনেকভাবে চেষ্টা করেছেন ফিরিয়ে আনতে লাভ হয়নি। বউয়ের শর্ত ছিলো শ্বশুর শাশুড়ির সাথে একই ভবনে থাকতে পারবেনা, তার জন্য আলাদা বাসা নিতে হবে। ঢাকায় পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাসায় উঠতে মন সায় না দিলেও তিনি রাজি হয়ে গেলেন। কিন্তু শর্তের পরে শর্ত আসতে লাগলো। ব্যাপারটা ডিভোর্সের পর্যায়ে চলে গেছে।
ভদ্রলোক আক্ষরিক অর্থেই ভদ্রলোক। এমন হাসিখুশি ভালো একটা মানুষের ভেতরে এতটা যন্ত্রণা পুষে রেখেছেন ভয়াবহ!
দুই-
এক পরিচিত ভদ্রলোকের চাকরি চলে গেছে, ঘরে কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়ে। সংসার চালাতে কিছু একটা করতেই হবে। তিনি সেই ভোর রাতে বিছানা ত্যাগ করে চলে যান সবজির কাঁচা বাজারে, পাইকারি দরে সবজি কিনে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন।
উপার্জন কম বলে বউয়ের বকা-ঝকা শুনতে হয়। প্রায়ই ছেলে-মেয়েদের সামনে স্বামী বেচারাকে উত্তম-মধ্যম দান করেন। মাঝে মধ্যে ঘর থেকেও বের করে দেন “তুই আমার ঘর থেকে বাইর হইয়া যা!”
এক পরিচিত ভদ্রলোকের চাকরি চলে গেছে, ঘরে কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়ে। সংসার চালাতে কিছু একটা করতেই হবে। তিনি সেই ভোর রাতে বিছানা ত্যাগ করে চলে যান সবজির কাঁচা বাজারে, পাইকারি দরে সবজি কিনে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন।
উপার্জন কম বলে বউয়ের বকা-ঝকা শুনতে হয়। প্রায়ই ছেলে-মেয়েদের সামনে স্বামী বেচারাকে উত্তম-মধ্যম দান করেন। মাঝে মধ্যে ঘর থেকেও বের করে দেন “তুই আমার ঘর থেকে বাইর হইয়া যা!”
ঘরটা বউয়ের হলেও মাস শেষে যেখান থেকে পারেন, যেভাবে পারেন ভাড়াটা কিন্তু স্বামী বেচারাকেই পরিশোধ করতে হয়।
তিন-
বন্ধুকে নিয়ে বাসা খুঁজতে বেড়িয়েছিলাম। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক অমায়িক মানুষ, তিনি আমাদের কাছে বাসা ভাড়া এবং বাড়ির নিয়ম কানুন অবহিত করছিলেন। হঠাৎ করেই কোথা থেকে তার অর্ধাঙ্গিনী চলে এলেন, এসেই খটখটে কণ্ঠে জানতে চাইলেন কি ব্যাপার! কি সমস্যা!
বন্ধুকে নিয়ে বাসা খুঁজতে বেড়িয়েছিলাম। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক অমায়িক মানুষ, তিনি আমাদের কাছে বাসা ভাড়া এবং বাড়ির নিয়ম কানুন অবহিত করছিলেন। হঠাৎ করেই কোথা থেকে তার অর্ধাঙ্গিনী চলে এলেন, এসেই খটখটে কণ্ঠে জানতে চাইলেন কি ব্যাপার! কি সমস্যা!
স্বামী বেচারা দেখলাম থতমত খেয়ে গেছেন, ভেজা বেড়ালের মতো মিউ মিউ করে বললেন “বাসা দেখতে এসেছে!” ভদ্রমহিলা অভদ্র কণ্ঠে বললেন, “বাসা ভাড়া পনের হাজার টাকা, গ্যাস বিদ্যুৎ নিজের!”
বন্ধুটি কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন “সত্যিই ঢোল আর মেয়ে মানুষ পিটানোর উপর রাখতে হয়, যেখানে তার হাসবেন্ড কথা বলতেছে সেখানে তার আগ বাড়িয়ে কথা বলার প্রয়োজন কি!”
তিনটি ঘটনার শিক্ষা, অবলা পুরুষদের দুঃখ কেউ বুঝলোনা!
© শামীম রেজা
No comments:
Post a Comment