সাইমুর জন্মদিন

ছোট্ট আপু সাইমু,
কেক আমি খাইমু।
দাওয়াত কি দিবেন?
আজ হ্যাপি বার্থ ডে,
সাইমুর বার্থ ডে,
গিফট কি নিবেন?
শুভ শুভ শুভ হোক,
আজকের দিন।
ফ্রি ফ্রি, কেক ছাড়া,
দোয়া শুধু নিন।

কবিতাঃ সাইমুর জন্মদিন
© শামীম রেজা।
১৩/০৯/২০১৪

Post Comment

সুন্দরী প্রতিযোগীতা

চামড়ার ব্যবসা,
গরমটা ভ্যাপসা,
ড্রেসটা সর্ট।
স্নো মাখ! স্নো মাখ!
সাবানে পানিতে,
পুরুষকে টানিতে,
নারীদের ঢল।
হেলে চল! দুলে চল!
চামড়ার দালালী,
বাবা-মা কাঙালী,
বিজনেস বেশ।
মেয়ে শেষ! মেয়ে শেষ!


কবিতাঃ সুন্দরী প্রতিযোগীতা
© শামীম রেজা
১৩/০৯/২০১৪

Post Comment

প্রিয় বন্ধু

বন্ধু জানোনাতো তুমি,
পেয়েছো কি হীরের খনি!
যে রতনের যতনে লাগে,
হাজার দিবস রাত,
তুমি তা লুফে নিলে,
একটু বাড়িয়ে হাত।
প্রস্থানে যার ম্লান হয়ে যায়,
আগ্রা, বাগদাদ আর ইস্তাম্বুলের শওকত।
তুমিতা নিমিষেই পেলে,
একটু বাড়িয়ে হাত।
ভাঙা বেড়ায় যে জন দেখে,
ভরা জ্যোৎস্নার আলো,
সেইতো জানে চাঁদের কদর,
বিষাদ কতটা কালো।
যে উচ্ছাসে সুরভীত হয়,
লক্ষ বাগের ফুল।
অবহেলাতে পায়ে ঠেলে কভু,
বন্ধু করোনা ভুল।
বন্ধু জানোনাতো তুমি,
পেয়েছো কি হীরের খনি!
যে প্রাণ সাধণায় রত,
হেরার জ্যোতি প্রিয়।
যে হীরে দ্যুতি ছড়ায়,
বিভোর প্রকৃতিও।
তুমি তার যত্ন নিও, যত্ন নিও।

কবিতাঃ প্রিয় বন্ধু
© শামীম রেজা
১০/০৯/২০১৪

Post Comment

আমাদের কুটিরে

আমাদের এখানে, বুনো ছায়া কুটিরে,
এখানেই সুখ আছে, গলা ভরা গান।
বুক ভরা নিঃশ্বাসে সুধা অফুরাণ।
এখানে পুকুর পাড়ে, রোজ ওঠে চাঁদ,
দুধ সাদা জ্যোৎস্নায় হাসি মাখা রাত।
জোঁনাকির ঝিকি মিকি, তারাদের আলো,
সুবাসিত বুনো ফুলে মন হয় ভালো।
এখানে শ্যামল ছায়া, পূবালী বায়,
পাল তুলে মাঝিরা দাড় বেয়ে যায়।
কুয়াশা কাটা ভোর, মিস্টি আলোয়,
কোরআনের সুরে ভাসে এই লোকালয়।
আয় সখা এখানে আমাদের গাঁয়,
পাখিদের কুহুতান, লতাদের ছায়।
এখানেই সুখ আছে, আছে পরিবার,
আত্মার বন্ধন দেখবি আবার।

কবিতাঃ আমাদের কুটিরে
© শামীম রেজা
০৮/০৯/২০১৪

Post Comment

সুখ তারা জেগে রয়।

চাঁদ গেছে ঘুমিয়ে,
রাত বড় ক্লান্ত।
নাইট গার্ড, হাক ডাক,
হয়ে গেছে শান্ত।
রাত জাগা পাখি হয়ে,
সুখ তারা জেগে রয়।
এই বুঝি খসে পরে,
জ্বলে নেভে হয় ভয়।
তার পর আসে ভোর,
নির্ঘুম রাত ঘোর,
কেটে যায়।
শিশিরে ঘাস ফুল ভেসে যায়।

কবিতাঃ সুখ তারা জেগে রয়।
© শামীম রেজা।
০৭/০৯/২০১৪

Post Comment

আল কায়দা আসছে।

এক।
শেষ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম ধরে রাখা গেলোনা, হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার আশংকা কক্সবাজার। দূর্দান্ত বেগে এগিয়ে আসছে আল কায়দার সৈন্যরা। ইতোমধ্যেই ভারতের আসাম, ত্রিপুরা এবং গুজরাটে শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে গ্লোবাল জিহাদ আলকায়দার ভারতীয় শাখা। মুক্তিকামী হাজারো তরুণ জড়ো হচ্ছে আলকায়দার ছায়াতলে। চোখে মুখে স্বপ্ন, খিলাফত! একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী বিপ্লব!

ঢাকার বেশ কয়েকটি স্পটে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে শোনা গেছে। আত্মঘাতি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে তাগুত বাংলাদেশ সরকারের ডজন খানেক সেনা সদস্য ও বেশ কিছু সাধারণ মানুষ, আহতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। কারো হাত নেই, কারো মাথা উড়ে গেছে, রক্তাক্ত বিচ্ছিন্ন পা নিয়ে চিৎকার করছে মানুষ!

দফায় দফায় বৈঠক করছে সেনাবাহিনীর উর্ধতন অফিসাররা, সর্বশক্তি নিয়োগ করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা আল কায়দার অগ্রযাত্রা।
যারা মৃত্যুকে ভয় পায় তাদেরকে থামানো যায়, কিন্তু যারা মৃত্যুর মাঝেই খুঁজে ফেরে জীবনের চরম স্বার্থকতা সেই বাহিনীকে পরাজিত করে সাধ্য কার?!

পার্বত্যাঞ্চলে শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তাগুত সরকারের সহযোগী দল জমিয়তে ইসলামিয়্যাহ খাগড়াছড়ি শাখার আমিরকে সুযোগ দেয়া হয়েছিলো তওবা করে আল কায়দায় জয়েন করার জন্য। কিন্তু গোয়ার লোকটা আলকায়দায় শরীক হতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলো।
চৌরাস্তার মোড়ে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথাটা রেখে দেয়া হয়েছে পায়ের কাছে।

দুই।
দেশ বিদেশের বিপুল সংখ্যক অপেক্ষমান সাংবাদিক বঙ্গভবনের বাহিরে। রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে, বৈঠকে উপস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম ফগ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তারেক জিয়াদ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং ক্ষমতাসীন দলের শরীক জামিয়্যতে ইসলামিয়্যাহর আমির শফিকুল ইসলাম।

একে একে তার দাবী উত্থাপন করলেন মিঃ ফগ। আমাদের তেমন কোনো চাহিদা নেই, শুধু সেন্ট মার্টিনে একটা নৌ ঘাটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি স্বাধীন খৃস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিলেই তোমরা চিন্তা মুক্ত। বাকি কাজ আমরাই করবো, আল কায়দা নিয়ে তোমাদেরকে আর ভাবতে হবেনা।

ইম্পসিবল! প্রায় একসাথেই টেবিলের উপর সশব্দে থাবা বসিয়ে দিলেন তিন বাহিনীর প্রধানগণ। বাংলাদেশের একজন দেশপ্রেমিক সেনাসদস্যর প্রাণ থাকতে এই ভূখন্ডের এক ইঞ্চি মাটি কারো কাছে ছেড়ে দেয়া হবেনা।

অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন উইলিয়াম ফগ। “তোমরা বোধ হয় ইরাক, লিবিয়ার পরিণতি থেকে শিক্ষা নাও নাই। সিরিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখো! আমেরিকার হাতে যাদু আছে, আমেরিকা যেখানে হাত দিবে সেখানেই ইরাক-সিরিয়া সৃষ্টি হবে। তোমরা কি প্রস্তর যুগে ফিরে যেতে চাও? আমাদের কথা মেনে না নেয়া হলে এই ভূখন্ডকে আমরা মাটির সাথে মিশিয়ে দিবো।
ঠিক এই সময়টার জন্য আমরা বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছি, তোমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি...”

প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী তারেক জিয়াদ, মিথ্যে কথা! এদেশের জনগণই আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।

হ্যা সেটা ঠিক, এদেশের জনগণই তোমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। কিন্তু সেই ভোট দেয়ার সুযোগ আমরাই তাদেরকে করে দিয়েছি। তোমরা ভুলে যাচ্ছো কেনো? পূর্ববর্তী আওয়ামী পার্টির সরকার এদেশের পুলিশ, সামরিক বাহিনী, সচিবালয় এমনকি আদালতে পর্যন্ত ভারতের এজেন্টদেরকে বসিয়েছিলো। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের কংগ্রেস সরকারের সহায়তায় এদেশে নির্মমতম গণহত্যা সংঘঠিত করেছিলো। আর তুমিতো লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছিলে, ফগের ঠোটে বিদ্রুপের হাসি। আমরাই সেই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছি। ভারতে কংগ্রেসের পতন ঘটিয়েছি, তোমাদের সামরিক বাহিনীতে প্রেসার ক্রিয়েট করে ভারতপন্থীদের হটিয়ে দিয়েছি এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি।

কিন্তু একথাওতো ঠিক, আওয়ামী পার্টিকে ক্ষমতায় বসানো এবং বাংলাদেশের প্রশাসনকে ভারতীয় করনের ক্ষেত্রেও আপনাদের ইন্ধন ছিলো। আপনারা কাটা দিয়ে কাটা তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে ক্ষোভ ঝড়ে পড়লো।

ইউ আর রাইট, কাটা দিয়ে কাটা তোলার ব্যাপারটা ঠিক ধরেছো। এই ব্যাপারটা যেহেতু ধরতে পেরেছো, সেহেতু বুঝতেই পারছো আমরা আমাদের দুটো দাবি যেভাবেই হোক আদায় করে নিবো। একটা ব্যাপার ভেবে দেখো, এখন পর্যন্ত আমরা তোমাদেরকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যহত রেখেছি, এটা বন্ধ হয়ে গেলে দেশটা আল কায়দার হাতে চলে যাবে। এবার তোমরাই সিদ্ধান্ত নাও কি করবে।

কিন্তু আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে আপনারা গোপনে আল কায়দার কাছেও স্বল্প মূল্যে অস্ত্র বিক্রি করছেন। আপনাদের দাবী আদায়ের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আল কায়দাকে পাঠিয়েছেন, এখন ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন।

তোমার অভিযোগ আংশিক সত্য, হ্যা আমরা ব্লাক মার্কেটে আল কায়দাকে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছি। আর তুমি যেটা বললে আমরা আল কায়দাকে দক্ষিণ এশিয়াতে পাঠিয়েছি এটা ভুল। আল কায়দা নিজের গরজেই এখানে এসেছে, আমরা শুধু আসার পরিবেশটা সুগম করে দিয়েছি।
এটাকে তুমি ইঁদুর বিড়াল খেলা ভাবতে পারো।
আমাদের যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানে আল কায়দার যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেই। আমরা ব্লাক মার্কেটে তাদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করি, এবং প্রকাশ্যে তাদের সাথে যুদ্ধ করি। ঠিক এখন যেমন সিরিয়াতে আইএস এবং নুসরাকে যুদ্ধের পরিবেশ দিয়েছি কিন্তু ইরাকে তাদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।

আমরা যদি আপনাদের দাবী মেনে না নেই? তারেক জিয়াদের কন্ঠে হতাশার সুর।

দাবী আপনাকে মানতেই হবে, আপনি বয়সে তরুন মিস্টার প্রধানমন্ত্রী। আপনি নিশ্চই এতো অল্প বয়সে মরতে চাননা, এখনো সামনে গোটা জীবন পরে আছে।
আমরা ব্লাক মার্কেটে আল কায়দাকে বিপুল পরিমাণে শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহ করবো। তারা একের পর এক শহর দখল করে রাজধানীতে পৌছে যাবে। আপনাদের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদদের হত্যা করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখবে।
তারপরে জঙ্গিবাদ দমন এবং আপনাদেরকে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আমরা বাংলাদেশে হামলা চালাবো। আলকায়দাকে দমন করবো, আমাদের সেনাবাহিনী দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসরাইলের আদলে একটি খৃস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো এবং সেন্টমার্টিনে একটি নৌঘাটি স্থাপন করবো। আর বোনাস হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে আমাদের একটি সামরিক ঘাটি স্থাপন করবো।

চেঁচিয়ে উঠলেন জমিয়তে ইসলামিয়্যাহর আমির জনাব শফিকুল ইসলাম, আপনাদের সেই স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে দিবোনা। আল কায়দার নেতৃবৃন্দের সাথে আমরা আলোচনায় বসবো, আমাদের এই ভাতৃঘাতি সংঘর্ষ বন্ধ করে আমরা সমঝোতায় আসবো।

ফিক করে হেসে ফেললেন মিঃ উইলিয়াম, তাগুতের সাথে আলকায়দা আলোচনায় বসবেনা। মুরতাদ সরকার এবং তাদের শরীক তাগুত জামিয়তে ইসলামিয়্যাহর বিরুদ্ধে আল কায়দার জিহাদ অব্যাহত থাকবে, আমরা সেই ব্যবস্থাই করে দিবো।

তিন।
মিস্টার ফগকে ঘিরে ধরলেন বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক। আলোচনায় কি কি বিষয় উঠে এসেছে, কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মিস্টার ফগ ঘোষণা দিলেন, অত্যান্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে কাজ করবে।

চার
আলকায়দা আগের চাইতেও দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে, শক্তিশালী অস্ত্রের মাধ্যমে গুড়িয়ে দিচ্ছে মুরতাদ সরকারী বাহিনীর সমস্ত প্রতিরোধ। জামিয়তে ইসলামিয়্যাহর পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। আল কায়দা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, তাগুতের সাথে আলোচনা হবে দুইটা শর্তে, হয় আত্মসমর্পন করো, নয়তো পালিয়ে যাও।

ইতোমধ্যেই যুদ্ধ নিহত হয়েছ লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ, ঘর বাড়ি ব্যবসা হারিয়ে পথে বসেছে প্রায় অর্ধকোটি মুসলিম। একের পর এক রকেট এসে ধ্বসিয়ে দিচ্ছে নগরীর বহুতল ভবনগুলো। মরছে নারী, মরছে শিশু। পথের ধারে না খেতে পেয়ে ধুকে ধুকে মরছে বৃদ্ধ এবং পঙ্গুরা, খিলাফতের আগমনে প্রাণ ভয়ে দ্রুত পালাতে গিয়ে স্বজনরা তাদের ফেলে গেছে।

অনলাইনে ব্যাপকভাবে শেয়ার হচ্ছে একটি ভিডিও, তাগুত জমিয়তে ইসলামিয়্যাহর আমির শফিকুল ইসলামের কাটা মাথা নিয়ে উল্লাস করছে আলকায়দা জিহাদের মরণজয়ী মুজাহিদরা।
এক হাতে ঝুলছে আমেরিকার তৈরী শক্তিশালী ম্যানপ্যাড, অন্যহাতে শফিকের কাটা মাথা।
উল্লাসিত মুজাহিদদের কন্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে, আল্লাহু আকবর। আল্লাহু আকবর।

গল্পঃ আল কায়দা আসছে।
© শামীম রেজা
০৬/০৯/২০১৪

Post Comment

তারেক জিয়ার রাজনীতি শিক্ষা

৭৫এর পনেরো আগস্ট যে মহান বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছিলো, জন্ম হয়েছিলো এক নতুন বাংলাদেশ। সেই বিপ্লবের নায়কদের ফাসির দন্ড ঘোষণা করা হলো, দন্ড ঘোশণা করেই ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়লো আওয়ামীলীগ। বিএনপি ক্ষমতায় এসে দীর্ঘ পাঁচটি বছর মামলা ঝুলিয়ে রাখলো। অথচ চাইলেই আপিলের মাধ্যমে জাতীয় বীরদেরকে মুক্ত করে আনা মূহূর্তের ব্যাপার ছিলো।

যে আগস্ট বিপ্লব না হলে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেতোনা, জন্ম হতোনা বিএনপি নামক কোন দলের, সেই বিপ্লবীরা শেষ পর্যন্ত ফাঁসির রশিতে ঝুলে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলো। নির্লিপ্ত ছিলো 'বাংলাদেশ ননসেন্স পার্টি' ওরফে বিএনপি।

বিএনপি হচ্ছে ভদ্র লোকের দল, তবে মাঝে মধ্যে দুই চারটা মুনাফিক বের হয়ে আসে এটাই পার্থক্য। বদরুদ্দোজা চৌধুরী থেকে মান্নান ভূইয়া কেউই এই লিস্টের বাইরে নেই। আর বর্তমানে বিএনপির অবস্থা হচ্ছে “লোম বাছতে কম্বল উজাড়!” হাজার খানেক খোকা আর মওদূদ ঘাপটি মেরে আছে বিএনপি’র আচল তলে।

শুনেছি চার দলীয় জোট আমলে জামায়াতের কাছে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের লিস্ট চাওয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে সেই লিস্টের সবাইকে বাদ দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। কত বড় বেঈমান হলে এমন কাজ করা সম্ভব।

জামায়াত টিভি চ্যানেল চেয়েছিলো দুইটা, অনুমতি দেয়া হয়েছে ১টার, তাও বহু ঝড়-ঝঞ্চা মোকাবেলা করে এর ওর পায়ে ধরে সেটা আনতে হয়েছে। টিভি দেয়া হয়েছে বিএনপি'র ফালুদেরকে, ফালুরা সেই সব টিভিকে ফালুদা বানিয়ে আওয়ামীলীগকে গিফট করে দিয়েছে। অথচ দেশের ক্রান্তিকালে দুঃসময়ে অন্ধের ষষ্ঠী হয়ে সেই জামায়াতী চ্যনেলই বিএনপির পাশে এসে দাড়িয়েছিলো। বেঈমানের দলের চামচারা তখন আওয়ামীলীগের খাটের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
মখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনের শাসনামলে এক নয়া দিগন্ত যে ভূমিকা পালন করেছিলো গোটা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের রক্ত বিসর্জন দিলেও সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব হবেনা।

সেনা প্রধান বানানো হলো, মঈন উদ্দিন আহমদকে। পরীক্ষিত বিএনপি জামায়াত সমর্থক বাদ দিয়ে তারেকের পছন্দ হলো মঈন ইউ আহমদকে। রতনে রতন চিনে শুকুরে চিনে কি সেটা পাঠকরাই ভালো বলতে পারবেন।
পাপের প্রাশ্চিত্ত করলো কোমড় ভাঙা ধোলাই খেয়ে। সেই সাথে এদেশের জনগণের গলায় পরিয়ে দিলো দীর্ঘ গোলামীর শৃঙ্খল।

বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে ধারণ রয়েছে এমন একটা শিশুও বলে দিতে পারবে জামায়াতের সমর্থন ছাড়া সুষ্ঠ নির্বাচনে এদেশে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবেনা। ২০০১সালে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসলো চার দলীয় জোট সরকার। কক্সবাজারের এক জনসভায় হাজির হয়ে তারেক জিয়া তার ভাঙা ভাঙা কথায় “আপনারা সবাই গরু, ছাগল, হাস, মুরগী......। পালবেন”। স্টাইলে বক্তব্যে ঘোষনা দিলেন, "বিএনপি’তে জামায়াতের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করতে হবে"।
অথচ জামায়াতের সমর্থন নিয়েই এই তারেক জিয়া ওই মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলো। প্রধানমন্ত্রী ছেলে হওয়া ছাড়া আর কি যোগ্যতা আছে এই তারেকের?

বগুড়া আজিজুল হক কলেজে ছাত্রদলের সমাবেশে তারেক জিয়া আক্ষেপ করে বললেন, আমার জেলার কলেজে আমাকে ঢুকতে হয় শিবিরের অনুমতি নিয়ে। তোমরা ছাত্রদলের ছেলেরা কি করো?!
সেই দিন বেশি দূরে নয় মিস্টার জিয়ার পুত্র! শুধু মাত্র বগুড়া নয়, বাংলাদেশে ঢুকতে হলেও আপনাকে শিবিরের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। অপেক্ষা করেন, সময় সন্নিকটে।

বর্তমান কূটনৈতিক তৎপরতা এবং বিএনপি’র তৎপরতায় একটা বিষয় স্পষ্ট সেটা হচ্ছে টাকা আসছে। যে উৎস থেকেই আসুক প্রচুর পরিমানে টাকা আসছে। ইদানিংকার মিছিল সমাবেশে বিএনপি সমর্থকদের উপস্থিতি দেখলেই সেটা আপনার কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
এযাবৎ কালে বিএনপি’র নিবেদিত প্রাণ গুটি কয়েক কর্মীরা জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করে আন্দোলন চালিয়ে গেছে, তাদের জন্য জামিনের ব্যবস্থা করা হয় নাই, আহতদের চিকিৎসা প্রদান করা হয় নাই। এখন ঘোশণা দেয়া হচ্ছে সুসময়ে যারা আন্দোলন করবে তাদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।
দলের নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের সাথে কত বড় তামাসা হতে পারে বিএনপির এই ঘোষণা, বিবেকবান মাত্রই উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।

সরকার পরিবর্তন সন্নিকটে। ক্ষমতার পালাবদল হচ্ছে এটা নিশ্চিত। তারেক জিয়ার চুলকানী শুরু হয়ে গেছে। এতোদিন যারা আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছে সেই জামায়াত-শিবিরকে যতটা সম্ভব কোণঠাসা করে রাখতে হবে। আর আলালের ঘরের দুলাল মিস্টার তারেক জিয়া, ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফাতে লাফাতে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে পদার্পণ করে ক্ষমতার চেয়ারে দুই পা উঠিয়ে বসবেন!

সাহস থাকলে সিঙ্গাপুর মালয়শিয়াতে ঘোড়াঘুড়ির পরিবর্তে বাংলাদেশে আসুন, জামায়াত শিবিরের মতো করে একটা মিছিলের নেতৃত্ব প্রদান করুন।
সাধারণ মানুষ রক্ত ঝড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরী করে দিবে, আর আপনার মতো লন্ডন পলাতক নেতারা সেই রক্ত পিচ্ছিল পথ মারিয়ে ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করবেন? গিয়াস উদ্দিন আল মামুনদের সাথে নিয়ে টাকার পাহাড় গড়ে তুলবেন?! বাহবা আপনারই প্রাপ্য!

মিস্টার তারেক জিয়া, ভুলে গেলে চলবেনা, এই জামায়াত শিবিরই আওয়ামীলীগের মোকাবেলা করেছে, সাতক্ষিরাতে ভারতীয় বাহিনীকে মোকাবেলা করেছে। সমগ্র বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে মোকাবেলা করে উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আপনার চাপা যদি সামলাতে না পারেন, তবে ইসলাম ও দেশ রক্ষার স্বার্থে জামায়াত-শিবির যে কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সেটা বাস্তবায়ন করা জামায়াতের জন্য অসম্ভব হবেনা।

আপনার ফতোয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে এদেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতি অতীতেও করেছে ভবিষ্যতেও করবে ইনশাআল্লাহ। সাহস থাকলে মোকাবেলা করুন।

লেখাঃ তারেক জিয়ার রাজনীতি শিক্ষা
© শামীম রেজা
০৪/০৯/২০১৪

Post Comment

অনুতাপ

রাত্রি গুলো নীরব আমার, ভীষণ রকম চুপ,
রাত্রি মানে বিভীষিকা, বিষন্নতায় ডুব।
উচ্ছাসিত কাব্যগুলো আজ রয়েছে বেশ,
কেউ জানেনা, কেউ বোঝেনা, সব হয়েছে শেষ।
হাহাকারের মন্ত্র বলে, শিশির ভেজা মন,
ও দয়াময় আর পারিনা! ভাঙছি অনুক্ষণ!
ক্ষণিক মোহে পথ ভুলেছি, এইতো আমার পাপ,
পথের ভুলে বন্দী হলাম, তোমার অভিশাপ।
মুক্ত করো, দাও মুছে দাও, অশ্রু ঝড়া আঁখি,
হই যেনোগো মাবুদ তোমার জান্নাতের ওই পাখি।

কবিতাঃ অনুতাপ
© শামীম রেজা
০৪/০৯/২০১৪

Post Comment

শিক্ষায় বিনিয়োগ

ওই থাম! পড়া বন্ধ! দেয়ালের উপর সপাং করে বেতের আঘাত।
পুরো মসজিদ নিস্তব্ধ, সবাই এবার ভয়ে ভয়ে তাকায় হুজুরের দিকে। আজকের মতো পড়া শেষ! তবে মাইরের সময় সন্নিকটে।
দুই লাইন করে ছেলে মেয়ে মুখোমুখি বসে আছে, মধ্য খানের ফাঁকা যায়গাটুকু দিয়ে এমাথা ওমাথা হেটে বেড়াচ্ছেন হুজুর।

‘এই তুই! হ ডানদিক থেকে শুরু কর, কালকে নামাজ কয় ওয়াক্ত পড়ছস?’
‘হুজুর, দুই ওয়াক্ত!’
‘বাকি তিন ওয়াক্ত পড়স নাই ক্যান? সপাং! সপাং! সপাং! তিনটা বাড়ি। তার পরেরটা, হ তুই, কয় ওয়াক্ত পড়ছস?’
‘হুজুর তিন ওয়াক্ত পড়ছি!’
‘বাকি দুই ওয়াক্ত পড়স নাই ক্যান? সপাং! সপাং! দুই ওয়াক্তের জন্য দুইটা বাড়ি। তার পরের জন, কয় ওয়াক্ত?’
‘হুজুর, ছয় ওয়াক্ত!’
‘আচ্ছা, তার পরের জন, কয় ওয়াক্ত?’
‘হুজুর, ছয় ওয়াক্ত পড়ছি’।
তার পরের জন ক’ কয় ওয়াক্ত পরছস? তাড়াতাড়ি ক! সপাং করে দেয়ালে বাড়ি।
ভয়ে কেঁপে ওঠে ছাত্র। হুজুর, ছয় ওয়াক্ত!

সিরিয়াল ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে আমার দিকে, ভোর বেলা ঘুম ভাঙেনা। বিছানা থেকে টেনে হিঁচড়ে প্রথমে ফ্লোরে নামানো হয়েছিলো, সেখানেই ঘুমিয়ে গেছি। তারপর টানতে টানতে বারান্দায়, বারান্দায় ফেলে রাখার পরে সেখানেই ঠান্ডা মেঝেতে ঘুম। এরপর বড় আপা, ভাইয়া, মা তিনজনে মিলে চ্যাংদোলা করে গোসল খানায় নিয়ে শুইয়ে দিলো, সেখানেই ঘুম! তবে এটা ঘুমনা, জিদের বহিঃ প্রকাশ, ‘আমার ঘুম ভাঙলি ক্যান, আমি এখানেই ঘুমামু!’
গায়ে পানি ঢালার পরে কাঁদতে কাঁদতে ঘরের ভেতর তুল-কালাম ঘটিয়ে দিলাম। এ কুত্তা! আমারে তুলছস ক্যা! আমি মক্তবে যামুনা! আমি যামুনা, যামুনা, যামুনা! আমি ঘুমামু!

মুখে আমি যতই বলি যামুনা, যেতে আমাকে হবেই, নইলে অনুপস্থিতির দায়ে পরের দিন হুজুরের বেতের বারি। অগ্যতা ক্রন্দিত নয়নে পাঞ্জাবী টুপি পরে, বগলের নিচে আমপাড়া এবং রেহাল সহ মক্তবে গমন। এটাই ছিলো আমার প্রত্যাহিক রুটিন কান্নাকাটি।

সিরিয়াল কাছাকাছি চলে এসেছে, কিন্তু আমি ভেবে পাচ্ছিনা পোলাপাইনে নামাজ ছয় ওয়াক্ত কেমনে পড়ে? আমিতো চার ওয়াক্ত পড়ছি। আর নামাজতো পাঁচ ওয়াক্ত, এদিকে হুজুরের বেতের দিকে তাকাতেও ভয়!
ওই, তুই ক! কয় ওয়াক্ত? তাড়াতাড়ি, তাড়াতাড়ি ক!
দ্বিধাদন্ধ ঝেড়ে হুজুরের বেতের দিকে তাকিয়ে ঝটপট উত্তর দিলাম, হুজুর, ছয় ওয়াক্ত!
হুজুরের কোনো রেসপন্স নেই। তার পরের জনকে জিজ্ঞাসা করলো, তার পরের জন, তার পরের জন, এভাবে জিজ্ঞাসাবাদ এবং রিমান্ড সম্পন্ন হলো। এই বয়সে এসেও হুজুরের সেই ছয় ওয়াক্ত নামাজের মুজেজা বুঝতে সক্ষম হইনাই।

নাহ! মক্তব আমাকে খুব বেশি দিন জ্বালাতন করতে সক্ষম হয় নাই। ভর্তি হলাম কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে। আহ কি শান্তি, সকাল সাতটা পর্যন্ত ঘুম, স্কুলের প্রস্তুতি এবং স্কুলে যাওয়া সব মিলিয়ে ৮.৩০এর মধ্যে ক্লাসে হাজির। মক্তবে যাওয়ার সময় কোথায়?
বাসায় হুজুর রাখা হলো, প্রতিদিন বিকালে এক ঘন্টা করে হুজুরের কাছে আরবি পড়তাম।
সবাই কি বাসায় হুজুর রাখে, কিংবা বাসায় হুজুর রাখার মতো সামর্থ-ইচ্ছা সবার আছে?

খুব খুব ছোট বেলায় গ্রামে থাকতাম, ভোর বেলায় ঘুম ভাঙতো মায়ের গুণ গুণ কন্ঠের কোরআন তিলাওয়াত শুনে। স্টেডিয়াম আকৃতির গোলাকার বাড়ি, মাঝখানে বিশাল উঠান, উঠানের চারিদিকে ঘর। পাশের ঘর থেকে কোরআন তিলাওয়াত করতেন ছোট দাদু, তার পরের ঘরে উচ্চ শব্দে কোরআন পড়তেন জামালের বাপ।
এভাবেই কোন ঘরে দাদু, কোন ঘরে কাকা, কোন ঘরে ফুফু আর পুকুর পাড়ে মসজিদে আমার চাইতে বয়সে একটু সিনিয়রা কোরাস করে তিলাওয়াত করতো, ‘বা যবর বা, বা যের বি..’।
পরন্ত দুপুরে সকল কাজ সাঙ্গ করে মা চাচিরা বসতেন কোরআন তিলাওয়াতে। তার পরে আমাদের কোলে বসিয়ে শোনাতেন হাদিসের কিসসা, সাহাবীদের কিসসা। তন্ময় হয়ে শুনতাম সে সব গল্প।

দিন এখন বদলে গেছে, বদলে গেছে মানুষ। ভোর বেলা এখন আর গ্রামের প্রতিটা ঘর থেকে গুণ গুণ শব্দের কোরানের সুর ভেসে আসেনা। এদেশের নগরে গ্রামে ভোর বেলা ভেসে আসে হারমনিয়ামের সাথে সা। রে। গা। মা...।
মসজিদের কোরাস কন্ঠে আরবি পড়া ছাত্রের সংখ্যা কমে এসেছে। ভোর হতেই কিন্ডার গার্ডেন মুখি ছোট ছোট শিশুরা। ক্যারিয়ার গড়তে হবে, প্রতিযোগীতায় এগিয়ে থাকতে হবে। ভিত্তি মজবুত না হলে কিভাবে হবে? তাইতো এতো এতো পড়ার মাঝে আরবী পড়ার সময় কই? বিনোদনের জন্য একটু সময়তো রাখতেই হবে, নইলে বাচ্চার মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হবে।

এখন আর গ্রামের মায়েরা তাদের শিশুদের হাদিসের কিসসা শুনায়না, তারা সকল কাজ সাঙ্গ করে বাচ্চাদের কোলে নিয়ে বসে ভারতীয় সিরিয়াল দেখে। বাচ্চাদের প্রেম শিখায়, ভালোবাসা শিখায়, কুটনামী শিখায়, বিনা পয়সায় মূর্তিপূজা শিখায়। পয়সা খরচ করে আরবী পড়ানোর দরকার কি?!

‘ইসলামীক এডুকেশন সোসাইটি’ শিশুদের উপযোগী করে বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছ। কিন্তু সমন্বয় এবং মনিটরিং এর অভাবে বিদ্যালয় ভিত্তিক ইসলামী শিক্ষার মান এখনো ব্যাপক হারে ডেভেলপ করেনাই।
সামর্থবানরাতো অনেক জায়গায় বিনিয়োগ করছেন, ইসলামী শিক্ষার জন্য কি কিছু বিনিয়োগ করা যায়না?

একটা স্কুল, প্রতিটা ক্লাসরুমে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা। শ্রেণী শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ক্লাস ভিত্তিক পাঠাগার, সেখানে থাকবে বাচ্চাদের উপযোগী পত্রিকা-ম্যাগাজিন, ইসলামীক কমিকের বই- সিডি। থাকবে সমৃদ্ধ ক্রিড়া উপকরণ। প্রতিদিনের গল্প বলার আসর। আর থাকবে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোরআনে হাফেজ বানানোর উদ্যোগ (যতটুকু পারা যায়)।
এই ব্যবস্থা গুলো যদি করা যায়, আমার মতো আর কেউ বলবেনা, মক্তবে যামুনা, যামুনা, যামুনা! ঝড় হোক, বন্যা হোক, শিশুরা স্কুলে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করবে, স্কুলে যামু, যামু, যামু!

প্রয়োজন একটু সদিচ্ছার, প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগের। আপনার এলাকায় গড়ে তুলুন একটি স্কুল, হয়ে যান মানুষ গড়ার কারিগর। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব উঠে আসবে আপনার বিদ্যালয় থেকে, সেই সাথে নগদ পয়সাতো আছেই।

লেখাঃ শিক্ষায় বিনিয়োগ
© শামীম রেজা
৩০/০৮/২০১৪

Post Comment

সংখ্যালঘুর প্রশাসন, সংকটে মুসলিম।

বছর চারেক আগের কথা, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে রাজশাহী গিয়েছিলাম। ফেরার পথে শ্যামলী পরিবহনের টিকেট নিলাম। ভালোই চলছিলো রাতের জার্নি, বাসের স্টাফরা পরস্পরের নাম ধরে সম্বোধন করায় বুঝতে পারছিলাম সবাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী, এমনকি যে কাউন্টারে টিকেট করেছি তারাও হিন্দু।
সুন্দর ছিম ছাম একটি হোটেলে যাত্রা বিরতী দেয়া হলো। সবাই রাতের খাবার খাওয়ার পরে আবার গন্তব্য পথে ছুটবে গাড়ি। বিড়ানীর অর্ডার দিলাম, সাথে কোল্ড ড্রিংকস।

খাওয়ার পরে বাসে উঠেই কেমন যেনো মাথা ঘুড়াচ্ছিলো, সাথে বমি বমি ভাব। জার্নিতে অনেকেরই এমন হয় সেটা জানি, কিন্তু প্রচুর জার্নির অভ্যাস থাকাতে আমার এই প্রব্লেমটা নেই। কেমন যেনো একটা সন্দেহ হলো।
পরের স্টপেজে গাড়ি ঢুকলো একটি পেট্রোল পাম্পে, বাস থেকে নেমে পেট্রোল পাম্প ঘুড়ে ঘুড়ে দেখলাম, পাম্পের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের নানা রকমের দেব দেবীর ছবি টানানো।
বুঝতে অসুবিধা হলোনা, শ্যামলী পরিবহনের মালিক কর্মচারী সবাই হিন্দু, এমনকি তারা যে রেষ্ট্রুরেন্টে গাড়ি থামায় সেটাও হিন্দু মালিকের, যে পেট্রোল পাম্প থেকে তেল নেয় সেটাও হিন্দু। তার মানে হারাম পন্থায় জবাই করা পশুর মাংস দিয়ে রান্না করা বিড়ানী খাওয়ায় অসুস্থ বোধ করছিলাম!
পরে দেখেছি শ্যামলী পরিবহনের সুপার ভাইজারের কাছে যে যাত্রী তালিকা থাকে তার শিরোনামে লেখা থাকে, “বাবা লোকনাথের নামে চলিলাম!”

সেদিন ফেসবুকে কার যেনো একটা লেখা দেখেছিলাম সম্ভবত ‘ফারিজা বিনতে বুলবুল’ আপার লেখা। হিন্দুদের যে ইউনিটি সেটার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি সি.পি ফুডের কথা উল্লেখ করেছেন, এই প্রতিষ্ঠানের মালিক থেকে শুরু করে সকল কর্মচারী হিন্দু! আচ্ছা, ‘সি.পি. ফুডে’র কর্মীদের হাতে জবাই করা মুরগী কি হালাল? তারা কি আল্লাহর নামে জবাই করে, নাকি ভগবানের নামে মাথা কাটা মুরগী দিয়েই সুস্বাদু সব আইটেম তৈরী করে?!

চট্টগ্রামের গোল পাহাড় থেকে শুরু করে আন্দরকিল্লা এবং জামাল খানে বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ক্লিনিক রয়েছে। এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সকল ডাক্তার এমনকি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত সবাই হিন্দু। কি চমৎকার ঐক্য তাদের মাঝে।

ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এতোক্ষণ কথা বললাম, এবার আসি সরকারী এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে। সমগ্র বাংলাদেশের কথা জানিনা, চট্টগ্রামের স্কুল গুলোতে ব্যাপক হারে হিন্দু শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে। একজন, দুইজন, তিনজন বাড়ছেই, প্রতি নিয়তই বাড়ছে। কি মনে হচ্ছে, হিন্দুরা অত্যান্ত মেধাবী তাই চাহিবা মাত্রই চাকরী হয়ে যাচ্ছে!?

সেদিন আমার রুমমেট প্রশ্ন করলো, আচ্ছা বিদ্যুৎ বিভাগ কি হিন্দু প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে? আমি আসলে জানিনা কেনো, কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি, ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ’ খুলশী এড়িয়ার অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী হিন্দু!

পুলিশের এস.আই নিয়োগ দেয়া হবে, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা দৌড় ঝাপ শুরু করলো। রেজাল্টের দিন দেখা গেলো দারুণ দৃশ্য। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা কেউ চাকরী পেলো, কেউ পেলোনা! কিন্তু অমুসলীম হলের সিংহভাগ ছাত্রই চাকরী পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়লো। এটা আমার কথা না, ঢাকা ভার্সিটির এক ছাত্রলীগের নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছেন।

সম্প্রতি পুলিশের এ.আই.জি প্রলয় কুমারের মহা প্রলয়তো আমরা দেখলামই। কিভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ উত্থাপন করে ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদককে রিমান্ডে নেয়া হলো। তিনি নাকি প্রকাশ্যেই পুলিশের মধ্যে হিন্দু পুলিশ লীগ গঠন করেছেন, এবং পুলিশ হেড কোয়ার্টারে বসে বসে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে গালা-গালি করছেন। এই প্রলয় কুমার ঘুশের টাকায় কিংবা ‘র’(RAW) এর টাকায় উত্তরাতে ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। আরো দেখলাম ঢাকাতে হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক মসজিদে তালা দেয়ার হুমকির ঘটনা। বাংলাদেশের সবগুলো থানাতে এখন হিন্দু পুলিশ অফিসারদের জয় জয়কার। প্রচন্ড দাপটশালী এই পুলিশ কর্মকর্তারা।

কিছুদিন পূর্বে এক ভাই সম্ভবত বরিশাল শিক্ষাবোর্ড ঘুড়ে এসে ফেসবুকে লিখেছেন, তিনি অবাক হয়ে গিয়েছেন, এটা কি বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ড, নাকি ভুলে ভারতে ঢুকে পড়েছেন। সিরিয়ালি যতজন কর্মকর্তা বসে আছেন তাদের অধিকাংশরই রুমের সামনে নেমপ্লেটে হিন্দু নাম লেখা।
সুরঙ্গ ব্যাংক নামে পরিচিত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বসানো হয়েছে দুইজন হিন্দু পরিচালক। সরকারী ব্যাংকগুলোতে গণহারে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে হিন্দু কর্মকর্তা।

বিগত অবৈধ নির্বাচনের পূর্বে একটা নিউজ দেখেছিলাম, জানিনা কতটুকু সত্য সেখানে বলা হয়েছিলো ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টির জেলা প্রশাসক হচ্ছেন হিন্দু।

বেশ কিছুদিন পূর্বে একটি প্রগ্রামে গিয়েছিলাম, সেখানে একজন বক্তা বলছিলেন, সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রমোশনের পূর্বে ভারতে গিয়ে ছয় মাসের একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার নিয়ম চালু করা হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষনের নামে বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তাদের মদ, নারী ইত্যাদি অফার করা হয়। যারা সহজেই এগুলো গ্রহণ করে তারা পজেটিভ হিসেবে বিবেচিত হন এবং তাদের প্রমোশন দেয়া হয়। আর যারা মদ, নারী এড়িয়ে চলেন তারা মৌলবাদী বলে বিবেচিত হন, সামরিক বাহিনীতে তাদেরকে ব্যাপকভাবে কোনঠাসা করে রাখা হয় এবং সুযোগ বুঝে ঠুনকো অভিযোগে বহিস্কার কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
সবচাইতে যেটা ভয়াবহ সেটা হচ্ছে, যেসব কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে মদ, নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েন তাদের গোপন মূহুর্তগুলোর প্রমাণ ধরে রাখা হয় পরবর্তীতে ব্লাক মেইল করে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করার জন্য।

একটা সময় ভারতীয় উপামহাদেশ ছিলো শত শত ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত, জুলুম ছিলো সেসব রাজ্য শাসনের স্বাভাবিক নীতি। উচ্চ বংশের হিন্দুরা নিম্ন বংশের হিন্দুদেরকে এবং বৌদ্ধদেরকে চরম পর্যায়ে নির্যাতন চালাতো। এক পর্যায়ে ভারত বর্ষে মুসলিমদের আগমন হলো, তারা সমগ্র ভারতের রাজ্যগুলো দখল করে একটি বিশাল সাম্রাজ্য গঠন করলেন এবং সাম্য ও ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করলেন। ইসলামে সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দলে দলে হিন্দু এবং বৌদ্ধরা ইসলাম গ্রহণ করলো।
এক পর্যায়ে ব্রিটিশরা এ অঞ্চল দখল করলো, মুসলিমদেরকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে বসিয়ে দিলো এদেশীয় দালাল হিন্দুদেরকে। ক্ষুব্ধ মুসলিমরা প্রতিবাদ জানালো, ফলাফল হলো ভয়াবহ। মুসলমানদের জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব কেড়ে নিয়ে তাবেদার হিন্দুদের নেতৃত্বে জমিদারী প্রদান করা হলো। মুসলিমরা রাজা থেকে পরিণত হলো গোলামে, এমনকি হিন্দু জমিদারদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মুসলিম প্রজারা বাধ্য হয়ে জুতা খুলে বগলে নিতো, নইলে জমিদারের অবমাননা হবে!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুসলিমদের গালি দিয়ে বলেছিলো, “চাষার ছেলেরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তবে ক্ষেতে খামারে কাজ করবে কারা?”
পরবর্তীতে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭সালের ১৪ই আগস্ট মুসলমানরা পেলো স্বাধীন আবাস ভূমি। পেলো হিন্দুত্বের গোলামী হতে মুক্তি।

বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের শাসন দেখে বারবারই কেবল মনে হচ্ছে, আমরা কি বৃটিশ শাসনাধীন ভারতের অবস্থায় পতিত হচ্ছি, যেখানে হিন্দুরা শাসন করবে মুসলিমদেরকে! আওয়ামীলীগের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু হিন্দু কর্মকর্তা এবং দেয়া হচ্ছে অপরিসীম ক্ষমতা।
বাংলাদেশ কি হিন্দু প্রশাসন শাসিত মুসলিম দেশে পরিণত হচ্ছে?

লেখাঃ সংখ্যালঘুর প্রশাসন, সংকটে মুসলিম।
© শামীম রেজা
২৫/০৮/২০১৪

Post Comment

আইএসআইএস এবং ঐক্যবদ্ধ বাতিল

হযরত আলী (রাঃ) এবং হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মধ্যে চলমান যুদ্ধে উস্কানি দানের উদ্দেশ্যে রোমান সম্রাট সিজার মুয়াবিয়া (রাঃ) এর পক্ষে সামরিক সহায়তার প্রস্তাব দিলেন। জবাবে মুয়াবিয়া (রাঃ) লিখে পাঠালেন, “হে রোমের কুকুর, যদি তোর সৈন্যবাহিনী এক কদমও মুসলিম সীমান্তের দিকে এগোয়, জেনে রাখিস আলীর (রা) বাহিনীর পক্ষে প্রথম যে ব্যক্তি শহীদ হবে, সে আমি ছাড়া আর কেউ না”।

ইরাকে মার্কিন স্বার্থ এবং সিরিয়াতে স্বৈরাচারী বাশার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে আইএসআইএস নামক সংগঠন। শিয়াদের প্রতি এই সংগঠনটির নৃশংসতা এবং অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের সাথে গায়ে পরে যুদ্ধ লাগানোর জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত এই সংগঠনটি। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকটি লেখাতে আমি আইএসআইএস এর বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছি।

ইতোমধ্যেই ইরাকের নাস্তিক-কমিউনিস্ট কুর্দিরা এবং ইয়াযিদি খৃস্টান সহ শিয়ারা ঘুরে দাড়িয়েছে। মার্কিন বাহিনীর নেতৃত্বে চলছে আইএসআইএস এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত যুদ্ধ। ইতোমধ্যে সৌদি সরকার আইএসআইএস ও আল কায়দা বিরোধী যুদ্ধে জাতিসংঘকে ১০০মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি গ্রান্ড মুফতি ঘোষণা দিয়েছেন, আল কায়দা ও আইএসআইএস হচ্ছে ইসলামের এক নম্বর দুশমন।

এমনিতে আমি আইএসআইএসে'র কট্টর সমালোচক, কিন্তু উপরোক্ত খবরগুলো পড়ে এখন আমি অন্তরের অন্তস্থল হতে আইএসআইএস’র বিজয় কামনা করছি। সারাবিশ্বের জিহাদ পাগল মুসলিমরা পরিবার স্ত্রী-সন্তানের মায়া ত্যাগ করে ছুটে গিয়েছেন ইরাক-সিরিয়ার জিহাদের ময়দানে, একটাই তাদের উদ্দেশ্য ‘হয় আল্লাহর হুকুমত নয়তো শাহাদাত’। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আইএসআইএস এর কর্মপদ্ধতীকে অপছন্দ করি কিন্তু তাদের নিয়্যতের ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই।

এই সেই সৌদি গ্রান্ড মুফতি যিনি ফতোয়া দিয়েছিলেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া যাবেনা, এই সেই বাতিলপন্থী আলেম যারা বলে ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল সমাবেশ করা অর্থহীন। আজ তারা ফতোয়া দিচ্ছে “আল কায়দা, আইএসআইএস ইসলামের দুশমন”। আর সৌদি আরবের মার্কিন তাবেদার রাজ পরিবার হচ্ছে ইসলামের বড় খাদেম। এই গ্রান্ড মুফতির চাইতে বড় শয়তানতো আমি আর দেখছিনা। আর মুসলিমরা সব সময় শয়তানের উল্টো দিকেই চলে।

ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মুসলিমকে ইহুদীরা হত্যা করলো, আফগানিস্থানকে কার্পেট বোমা মেরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলো মার্কিন খৃস্টানরা। চীনে উইঘুর মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে, প্রকাশ্য নামাজ পড়তে দেয়া হচ্ছেনা, এমনকি রোজা রাখায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নাস্তিক সরকার। রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর নির্মম গণহত্যায় মেতে উঠেছে বৌদ্ধরা। এতো কিছু দেখেও নিশ্চুপ সৌদি সরকার, বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ কিংবা মুক্তিকামী মুসলিমদের পক্ষে তারা কোনো প্রকার আর্থিক সামরিক সহায়তা প্রদান করেনাই।
অথচ সেই সৌদি সরকারই মুক্তিকামী উগ্রপন্থী বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের দমনে অনুদান সরবরাহ করছে জাতিসংঘকে।

একদিকে আমেরিকা মুসলিম হত্যা করার জন্য ইসরাইলকে দশ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দেয়, অন্যদিকে সৌদি সরকার আল কায়দা-আইএসআইএস'কে দমনে জাতিসংঘকে ১০০মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান প্রদান করে। ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী এই যুদ্ধে এক হয়েছে কাফের এবং মুনাফিক।

ইরাকে আমেরিকার এবং তাদের তাবেদার সরকার, নাস্তিক কুর্দি এবং ইয়াযিদী খৃস্টানরা একজোট হয়েছে মুসলিম হত্যায়। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে আইএসআইএস। রসুনের কোয়াগুলো একই বৃন্তে এসে যক্ত হয়েছে।
আইএসআইএসের সাথে আমার কর্মপদ্ধতী কেন্দ্রীক দ্বন্ধ থাকতে পারে, কিন্তু যখন দেখি মার্কিন বাহিনী, ইয়াযিদী খৃস্টান এবং কুর্দি নাস্তিকদের হাতে আইএসআইএস এর মুসলিমরা নিহত হচ্ছে তখন সে দৃশ্য সহ্য করা কঠিন হয়ে যায়। মুসলিমদের নিজেদের মধ্যে পত পার্থক্য থাকলে সেটা নিজেদেরকেই মিটিয়ে ফেলতে হবে, যে ব্যক্তি ইহুদী-খৃস্টানদের সহায়তায় নিজের মুসলিম প্রতিপক্ষকে হত্যা করে সে ব্যক্তি কিভাবে মুসলিম হতে পারে?

আমেরিকার পক্ষে গোয়েন্দা কার্যক্রমের অভিযোগে মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলেকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আইএসআইএস। জেমস ফলের মুক্তির বিনিময় হিসেবে ডাঃ আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি দাবী করেছিলো তারা, কিন্তু মার্কিন সরকার আইএসআইএস এর দাবী মেনে নেয় নাই। ফলশ্রুতিতে তাকে মরতে হলো।

আজকে জেমস ফলের জন্য আমরা চোখের পানি নাকের পানি এক করে ফেলছি। একজন সাংবাদিকের জন্য আমাদের হৃদয়ে প্রচন্ড কষ্ট অনুভব করছি। এর কারণ হচ্ছে, মার্কিন মিডিয়া আমাদেরকে কষ্ট অনুভব করতে বলছে তাই আমরা জেমস ফলের জন্য কষ্ট অনুভব করছি, অন্যদিকে মার্কিন সামরিক সহায়তায় ইসরাইলের তান্ডবে ফিলিস্তিনে যেসব সাংবাদিক নিহত হয়েছে তাদের জন্য আমাদের কোনো কষ্ট নেই। মিশরে সিসি বিরোধী আন্দোলনে সেনাবাহিনীর গুলিতে যেসব সাংবাদিক নিহত হয়েছে তাদের জন্য আমরা কষ্ট অনুভব করিনা, কারণ মার্কিন মিডিয়া আমাদের বলে দিয়েছে, মিশর-ফিলিস্তিনের সাংবাদিকদের জন্য কেঁদে লাভ নেই!

সর্বশেষ কথা হচ্ছে, যে সংগঠনটি ডঃ আফিয়া সিদ্দিকির মুক্তি চেয়ে মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, যে সংগঠনটি ইরাকের মাটি হতে কবর পুজা, মাজার পুজা উচ্ছেদ করে শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করেছে, যে সংগঠনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ইহুদী, খৃস্টান, নাস্তিক, মুনাফিক, স্বৈরাচার এবং সাম্রাজ্যবাদীরা সে সংগঠনের সাথে আমার কর্মপদ্ধতীগত মত পার্থক্য থাকতে পারে তাই বলে সেই সংগঠনের মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফির মুনাফিককে কখনো সমর্থন করা যায়না। কাফেরের হাতে একজন মুসলিমের রক্ত ঝড়বে এই দৃশ্য সহ্য করা যায়না।

আইএসআইএস এর বিজয় কামনা করে এবং রোমান সম্রাট সিজারের প্রতি হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর বক্তব্যটি স্মরণ করেই লেখাটি শেষ করছি।

লেখাঃ আইএসআইএস এবং ঐক্যবদ্ধ বাতিল
© শামীম রেজা
২৩/০৮/২০১৪

Post Comment

অবিবেচক

আমার রুমমেট আমিন ভাই অত্যান্ত অমায়িক মানুষ, মানুষের বিপদের কথা শুনলেই ছুটে যান, ঝাপিয়ে পড়েন বিপদাপন্ন মানুষের সেবায়।

হঠাৎ করেই ইউনিভার্সিটির এক বন্ধু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান জরুরী অপারেশন করতে হবে আশি হাজার টাকা প্রয়োজন, নইলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হবেনা। এদিকে রোগীর আর্থিক অবস্থা চরম পর্যায়ের অসহায়। হাউ-মাউ করে কেঁদে উঠলো রোগী।
আমিন ভাই ডাক্তারকে বললেন, “আপনি অপারেশনের ব্যবস্থা করেন, আমি টাকার ব্যবস্থা করছি”। এদিকে আমিন ভাইয়ের পকেটে ফুটো পয়সাও নেই, ছুটে গেলেন চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে, বন্ধুদের জড়ো করে গঠন করা হলো ফান্ড, ছাত্রদের থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে অপারেশনের টাকা পরিশোধ করা হলো।

গ্রামের অসহায় এক দরিদ্র পিতা, অসুস্থতা জনিত কারনে ভর্তি করা হলো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রোগীর অপারেশন হবে, প্রয়োজন ৩ব্যাগ রক্তের। ছুটে গেলেন আমিন ভাই, অনাত্মীয় এক মানুষের জন্য সংগ্রহ করে দিলেন তিন ব্যাগ রক্ত।
তারই কিছুদিন পরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুর রক্তের প্রয়োজন, ফেসবুকে পোস্ট দেখে হাজির হলেন আমিন ভাই। ব্যবস্থা করা হলো রক্ত।
পরোপকারী এই মানুষটার রক্তের সাথে মিশে আছে মানুষের উপকার করা। তাই যেখানেই মানুষের দূর্দশার কথা শুনেছেন ছুটে গেছেন বিপদাক্রান্ত মানুষের পাশে।

যে ঘটনার প্রেক্ষিতে আজকের এই পোস্ট সেটা এখন উল্লেখ করবো। জরুরী রক্তের প্রয়োজন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার দিলাম, পাশে তাকিয়ে দেখি আমিন ভাই হাজির, জিজ্ঞাসা করলাম কোথায় যাচ্ছেন?
আমিন ভাইয়ের নির্লিপ্ত জবাব, রক্ত দিতে।

আমিন ভাই ছুটে গেলেন, ন্যাশনাল হাসপাতালে।
রোগির ছয় ছেলের মধ্যে দুই ছেলে উপস্থিত, বড় ছেলে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন, এবং চট্টগ্রাম ইউনিতে পিএইচডি অধ্যায়নরত। আর ছোট জন আইইউসিতে ইংলিশে মাস্টার্স করছেন। কথা, বেশ ভূষায় বোঝা যাচ্ছে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবার।

ছোট ছেলের সাথে কথা প্রসঙ্গে আমিন ভাই জিজ্ঞাসা করলেন, সংগঠন (জামায়াত-শিবির) করেন?
তার নির্লিপ্ত জবাব, “না করিনা, তবে আমার ছোট ভাই করতো এখন আর করেনা”।
হতাশ আমিন ভাই আর কিছু জিজ্ঞাসা করলেননা।
তারপরে সেই ছোট ছেলের ফিসফিস করে প্রশ্ন, “আপনি যে রক্ত দিতে আসছেন, আপনার কোনো দাবী আছে?”
হতভম্ব আমিন ভাই বললেন, কিসের দাবী?
“না, অনেকেইতো রক্ত দিয়ে টাকা পয়সা চায়!”
আমিন ভাই জানালেন তার কোনো দাবী নেই।

ন্যাশনাল হাসপাতালের নিজস্ব ব্লাড ব্যাংক নেই, রক্ত দিতে হবে আন্দরকিল্লা রেডক্রিসেন্টে গিয়ে। সিএনজিতে উঠেই ছোট ছেলে কথা বলা শুরু করলো। “রক্ত আমিই দিতাম, কিন্তু বড় ভাই নিষেধ করলো, রক্ত দেয়ার পরে যদি কিছু হয়ে যায় তবে আব্বার সেবা করবে কে, তাই দিচ্ছিনা!!!”
এবার বিরক্ত হওয়ার পালা, রোগীর ছোট ছেলের বিশাল শরীরের দিকে তাকিয়ে আমিন ভাইয়ের মেজাজ সপ্তমে। এটা কেমন কথা, বাবার সাথে ব্লাড গ্রুপ মিল থাকার পরেও ছেলে রক্ত দিচ্ছেনা, এরা কেমন লোক?! একবার ভাবলেন রক্ত না দিয়েই চলে আসবেন, কিন্তু মুখের সামনে এভাবে কাউকে অপমান করতেও ইচ্ছে হচ্ছিলোনা।

রক্ত দিয়ে ফিরে আসার পথে সিএনজি নেয়া হলো, আন্দরকিল্লা হতে খুলশী। রোগীর ছেলেই দরদাম করে সিএনজি নিলেন, নইলে আমিন ভাই হয়তো ৫টাকা দিয়ে টেম্পুতে বাদুর ঝোলা হয়ে বাসায় আসতেন। সিএনজি ভাড়া একশ বিশ টাকা। পথিমধ্যে ন্যাশনাল হাসপাতালের কাছাকাছি এসে রক্তের ব্যাগ নিয়ে রোগীর ছেলে নেমে গেলো।

অত্যান্ত বিব্রতকর হলেও ব্যাপারটা সত্যি যে, রোগীর ছেলে সিএনজি ভাড়াটা দেননি, আমিন ভাই বাসায় এসে সিএনজি ভাড়া পরিশোধ করেছেন।
আমিন ভাই আক্ষেপ করে বলছিলেন, “রোগী যদি দরিদ্র হতেন তবে কিছু টাকা দিয়ে আসতাম, কিন্তু এমন স্বচ্ছল একটা পরিবারের কাছ থেকে এমন আচরণ দেখে আমি হতাশ!”


লেখাঃ অবিবেচক 
© শামীম রেজা
 ১৬/০৭/২০১৪

Post Comment

মসজিদ নয়, মুসল্লি নির্মাণ করুন।

রেল গেইটের কাছেই মূল রাস্তার পাশে স্থাপন করা হয়েছে স্থায়ী টং ঘর, লাগানো হয়েছে স্থায়ী মাইক। সেই ভোর বেলায় যখন মানুষ রাস্তার পাশ দিয়ে গার্মেন্টসে-অফিসে যাতায়াত করে অর্থাৎ ৭টা থেকে শুরু হয় সুরেলা কন্ঠের আহ্বান- “কত টাকা কত পয়সা অকারণে চলে যায়, আল্লাহর ঘরে দান করিলে আখেরাতে পাওয়া যায়...”

এই টংঘরটিতে মসজিদের টাকা তোলা হচ্ছে বিগত চার-পাচ বছর ধরে, আপাতত দৃষ্টিতে মহৎ এই কর্মটি দেখে অনেক ভাইয়ের হৃদয় বিগলিত হয়ে যায়, আহা মসজিদের জন্য কত দরদ, সংসার মায়া ত্যাগ করে কতিপয় মানুষ সেই ভোর হতে মধ্যরাত পর্যন্ত মসজিদের জন্য টাকা তুলেই যাচ্ছে, রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, বন্যা তাদের এই কাজে বাঁধা প্রদান করতে পারছেনা, মাশাআল্লাহ।

এলাকার কিছু মুরব্বি এবং তরুণ প্রায়ই কানের কাছে এসে ঘ্যান ঘ্যান শুরু করলো, ভাই একটা কিছু করেন, সেই ভোর বেলা থেকে শুরু হয় এদের অত্যাচার, ঘরে অসুস্থ মানুষ আছে, বাচ্চারা ঘুমাতে পারেনা, পরীক্ষার্থীরা পড়তে পারেনা। আল্লাহর তিরিশটা দিন যদি এভাবে কানের কাছে মাইকের প্যান প্যানানী চলতে থাকে তাহলে ঘরে কেমন থাকি? মসজিদের জন্য এভাবে মাইক বাজিয়ে টাকা তুলে মানুষকে কষ্ট দেয়া কি ইসলামের বিধান?

প্রথমে ভাবলাম সাংগঠনিক উদ্যোগে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে টংঘরটা ভেঙে দেই। পরবর্তীতে পিছিয়ে এলাম, এমনিতেই জামায়াত শিবিরের দোষের অভাব নেই, এই ঘটনার পরে দেখা যাবে পত্রিকায় বড় বড় হেডিং-এ নিউজ আসবে, “মসজিদের উন্নয়নের জন্য টাকা কালেকশনে শিবিরের বাঁধা!” চারিদিকে ছিঃ ছিঃ পরে যাবে। জামায়াত শিবির এতো খারাপ! মসজিদের উন্নয়নে বাঁধা প্রদান করে! কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে নিউজ করবে “জামায়াত শিবিরের বাধায় মসজিদ বানানো সম্ভব হলোনা”।

টংঘরটি এখনো আছে, এখনো মাইক বাজিয়ে টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দান সংগ্রহকারীদের সাথে মসজিদ কমিটির চুক্তি আছে, দানের দুই তৃতীয়াংশ পাবে দান সংগ্রহকারীরা আর একভাগ পাবে মসজিদ।

প্রায়ই ব্যক্তিগত-পারিবারিক কাজে দেশের এমাথা ওমাথা ভ্রমণ করতে হয়। গাড়িতে উঠতেই ধারাবাহিকভাবে একের পর এক আসতে থাকে, কেউ আসে স্রেফ ভিক্ষার জন্য তাদেরকে কাউকে দেই, কাউকে দেইনা। আরেক শ্রেণির মানুষ আসে, মসজিদ, এতিমখানা, মাদ্রাসা ইত্যাদির জন্য।

মাওয়া পয়েন্টে নৌ পারাপারের সময় একটি কওমী মাদ্রাসায় দানের জন্য লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছিলো। মাদ্রাসার লিফলেটটি পড়তেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। ডাক দিয়ে বললাম, হাফেজদেরকে কি সুদের টাকা খাওয়াবেন?
মাদ্রাসার একাউন্ট করা হয়েছে সোনালী ব্যাংকে। কোনো সদুত্তর নেই!
আমার দেখা অধিকাংশ কওমী মাদ্রাসার লেনদেন সুদী ব্যাংকের সাথে। ইসলামী ব্যাংক জামায়াতী প্রতিষ্ঠান, তাই তারা ইসলামী ব্যাংকের সাথে লেনদেন করেনা।

ফেনীর মহিপাল বাসস্ট্যান্ডে প্রায়ই এতিমখানার ছেলেরা টাকা কালেকশন করতে আসে। টাকা দেয়ার সাথে সাথেই বলে, “ভাইয়া আমার একটা কোরআন শরীফ কেনা লাগবে যদি একটা কোরআন কেনার টাকা দিতেন!” প্রথম প্রথম দিতাম, এখন দেইনা, কেমন যেনো সন্দেহ হয়।
মহিপাল বাসস্ট্যান্ডে আরেকটা ছেলে রেগুলার টাকা কালেকশন করে, সিলমারা চেহারা, একবার দেখলেই আজীবন মনে থাকে। সম্ভবত গাঁজা খায়! অতিরিক্ত সিগারেট খাওয়ার কারনে ঠোট দুটি পুড়ে কালো হয়ে গেছে। একহাতে মসজিদের চাঁদার রসিদ হাতে নিয়ে টাকা সংগ্রহ করছে।

ঈদের পর পর একটা বিয়ের দাওয়াত ছিলো মানিকগঞ্জের সারারিয়া গ্রামে। ব্যস্ততার কারনে যাওয়া হয়নাই। খালাতো ভাই গিয়েছিলো, এর আগেও বেশ কয়েকবার সে ওই এলাকা ঘুরে এসেছে। তার কাছ থেকেই শুনলাম, প্রতি পাঁচ মিনিট হাটা পথ অতিক্রম করলেই একটা করে মসজিদ, যে সে মসজিদ নয় অত্যান্ত জাকজমকপূর্ণ ভাবে টাইলস করা মসজিদ, প্রবাসীরা তাদের আয় দিয়ে এইসব মসজিদ স্থাপন করেছেন।
সব চাইতে হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে এতো সুন্দর সুন্দর মসজিদ অথচ নামাজ আদায় করার মতো মুসল্লি নেই।
আজান দিয়ে ঈমাম সাহেব বসে আছেন, মসজিদের পাশ দিয়ে এক লোক হেটে যাচ্ছে। ঈমাম সাহেব ডাক দিয়ে বললেন, ভাই নামাজ পড়বেননা?
হুজুর আপনি শুরু করে দেন, আমার কাজ আছে!

সে গ্রামের আরেকটি ভয়াবহ রীতির কথা শুনলাম, জানিনা সমগ্র মানিকগঞ্জে একই রীতি চালু আছে কিনা। সেটা হচ্ছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে এবং কনের সকল নারী অভিভাবক মা, চাচী, খালা, ফুফু কপালে সিঁদুর ধারণ করেন। মুসলিমের বিয়েতে হিন্দুয়ানী প্রথা। এমনকি ধান, দূর্বাঘাস, ইত্যাদি দিয়ে লক্ষীপূজার আদলে কিছু প্রথা বাস্তবায়ন করা হয়।

একই সাথে অনেকগুলো ব্যাপার উপস্থাপন করলাম, এই লেখার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উলু বনে মুক্ত ছড়ানো হতে মুসলমানদের বিরত রাখা। মসজিদ সংস্কারে অর্থ ব্যায় না করে মুসল্লি সংস্কারে অর্থ ব্যায় করা।
প্রতি মাসের আয়ের একটা অংশ পৃথক করে রাখুন দান করার উদ্দেশ্যে এবং পথে ঘাটে মসজিদ মাদ্রাসায় দান না করে সরাসরি মাদ্রাসাতে গিয়ে টাকা দান করুন। আমার মতে পথে-ঘাটের মসজিদের জন্য টাকা দান করার প্রয়োজন নেই, মসজিদ সংস্কারের প্রয়োজন হলে স্থানীয় মুসল্লিরাই সেটার ব্যবস্থা করবে। আপনি বরং মুসল্লি তৈরীর জন্য টাকা ব্যায় করুন।

বাংলাদেশের মানুষের ইসলাম বোঝার মধ্যে এখনো শিরকী চিন্তা ভাবনা রয়ে গেছে। বাজেটের একটা অংশ দিয়ে ইসলামী বই কিনুন, সেই বই উপহার দিন প্রিয়জনকে।
আপনার দেয়া বই পড়ে তৈরি হবে মুসল্লি, এই মুসল্লিরাই তৈরী করবে মসজিদ, মাদ্রাসা।
অবশ্যই অবশ্যই সরাসরি মাদ্রাসাতে দান করতে হবে। ডাক্তার তৈরীতে যেমন মেডিকেল কলেজের বিকল্প নেই, আলেম তৈরীতে তেমনি মাদ্রাসার বিকল্প কিছু নেই।

সারারিয়ার মতো মুসল্লি বিহীন সুরম্য মসজিদ বানিয়ে কি লাভ হবে? তার চাইতে মসজিদ বিহীন উন্মুক্ত ময়দানে তিনজন মানুষের নামাজের জামায়াত অনেক বেশি উত্তম।

লেখাঃ মসজিদ নয়, মুসল্লি নির্মাণ করুন।
© শামীম রেজা
১৫/০৮/২০১৪

Post Comment

নাস্তিকতা কি অপরাধ?

কুমিল্লা গিয়েছিলাম, ফেরার পথে বাসে বসেই অভ্যাস বশত মোবাইলে ফেসবুকিং। Lulu Akhtar আপার একটা স্ট্যাটাস পড়ে আনমনেই বেশ কিছুক্ষণ হাসলাম, হাসার কারণ হচ্ছে একটা কৌতুক মনে পড়ে গিয়েছিলো-
এক যুবক এসেছে গীর্জার পাদ্রির নিকট, এসে জিজ্ঞাসা করলো “আচ্ছা ফাদার, আমি যদি আমার গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে ঘুমাই তবে কি আমার পাপ হবে?”
ফাদার কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে ভাবলেন, অবশেষে জবাব দিলেন, “না, পাপ হবেনা!”
উৎফুল্ল যুবক যখন গীর্জা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখুনি ফাদার বলে উঠলেন, “কিন্তু প্রব্লেম হচ্ছে তোমরাতো ঘুমাবানা!”
যুবক লজ্বিত হয়ে গীর্জা থেকে বেরিয়ে গেলো।

কৌতুক দিয়েই লেখাটা শুরু করলাম, এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। লুলু আপার স্ট্যাটাসে এক নাস্তিকের প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, আমি আলেম নই তাই কোরআন হাদীসের আলোকে প্রশ্নটির জবাব দিতে পারবোনা, তবে দুনিয়াবি দৃষ্টিতে কিছুটা বিশ্লেষণ করবো।

নাস্তিকের প্রশ্নটি ছিলো- “আচ্ছা, স্রষ্টাকে যদি কেউ অবিশ্বাস করে, অস্বীকার করে তাতে স্রষ্টার কি কোনো ক্ষতি হবে? না তাতে স্রষ্টার বিন্দুমাত্রও ক্ষতি হবেনা। তাহলে শুধুমাত্র অবিশ্বাস করার কারনে স্রষ্টা তার বান্দাহকে এতবড় নিষ্ঠুর শাস্তি দিবেন কেন? এতে তার লাভ কি?
রাজাকে রাজা হিসেবে বিশ্বাস না করলে রাজা যদি রাখালকে নির্মমভাবে পিটিয়ে অথবা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে তবে সেটা আপনার নিকট বর্বরোচিত কাজ বলে মনে হয় অথচ অবিশ্বাস করার কারনে স্রষ্টা কতৃক মানুষকে চিরকাল নরকে পোড়ালে সেটা আপনার দৃষ্টিতে ইনসাফ? এটা কেমন ইনসাফ???"

প্রশ্নটা পড়তেই ঘুরে ফিরে আমার কেবল পাদ্রির কথাটা মনে পড়ছিলো, “ঘুমালে প্রব্লেম নেই কিন্তু তোমরাতো ঘুমাবেনা”!
আল্লাহর অস্তিত্ব বিশ্বাস না করলে প্রব্লেম নেই, কিন্তু তোমরাতো শুধুমাত্র এই অবিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা, তোমরা সহ্যের সকল সীমা অতিক্রম করে নিজেদের সহ গোটা জাতিকে নিয়ে যাবে ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে।

একজন আস্তিকের হৃদয়ে সর্বদা আল্লাহর ভয় থাকে, পরকালের ভয় থাকে, তার হৃদয়ের পুলিশ তাকে সকল প্রকার অন্যায়, পাপ কার্য হতে বিরত রাখে।
অন্যদিকে একজন নাস্তিক দুনিয়াবি পুলিশের অনুপস্থিতিতে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য যে কোনো প্রকারের পাপ কার্যে জড়িয়ে পড়ে অনায়াসে। তার মনে পরকালের ভয় থাকেনা, অন্যায়-জুলুমের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহীর ভয় থাকেনা। তাই আমরা দেখতে পাই নাস্তিক মাত্রই দুশ্চরিত্র, নাস্তিক মাত্রই অশ্লীল ভাষী, পাপাচারী, জুলুমকারী।

একজন আস্তিক যদি অন্যায়-জুলুমে লিপ্ত হয় তবে সেটার একটা মাত্রা থাকে, কিন্তু নাস্তিকের অন্যায়ের কোনো মাত্রা থাকেনা। আমরা দেখতে পাই বিশ্বের ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যাগুলো সংগঠিত হয়েছে নাস্তিক্যবাদী শাসকদের হাতে। এই নাস্তিকরা যখনই ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে তখনই মানুষের উপর চালিয়েছে স্মরণকালের নির্মমতম বর্বরতা। নাস্তিক-কমিউনিস্টদের হাতে এযাবত কালে নিহত হয়েছে ১৪৯,৪৬৯,৬১০জন মানব সন্তান (https://www.facebook.com/namosenatripura/posts/253007241490128)

ইতিহাস স্বাক্ষী একজন মানুষ যখন সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাস করে তখন সে শুধুমাত্র অবিশ্বাসের উপরেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেনা, সে লিপ্ত হয়ে সভ্যতা বিধ্বংশী তৎপরতায়, মানবতা বিধ্বংশী তৎপরতায়। নাস্তিক তার অবিশ্বাসকে ছড়িয়ে দেয় দিকে দিকে এবং এর ডাল পালা গুলোও লিপ্ত হয় একই রকম কিংবা তার চাইতেও গুরুতর সীমালঙ্ঘনে।

সেই পাদ্রীর বক্তব্যের সাথে মিল রেখেই বলছি, সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাস করলে প্রব্লেম নেই, কিন্তু তোমরাতো শুধুমাত্র অবিশ্বাস করবেনা, তোমরা সীমা অতিক্রম করে যাবে এবং এই সীমা অতিক্রম করার শাস্তি অনন্তকাল জাহান্নামের আগুনে পুড়েই ভোগ করতে হবে।

লেখাঃ নাস্তিকতা কি অপরাধ?
© শামীম রেজা
১৪/০৮/২০১৪

Post Comment

রাজনীতি করার কি প্রয়োজন?

সংসদ ভবন এলাকাতে গিয়েছিলাম, বিশাল উন্মুক্ত এলাকা জুড়ে নিরাপদ প্রেমের ব্যবস্থা। ঢাকা শহরের প্রতিটি পর্যটন এরিয়াতে একই চিত্র। শুধুমাত্র ঢাকা নয় এই চিত্র বাংলাদেশের প্রতিটি শহর এমনকি গ্রামেরও।
স্কুল-কলেজের ছেলে মেয়েরা প্রকাশ্য অনৈতিক কাজে জড়াচ্ছে আর পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে।

এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম, পার্ক এড়িয়াতে ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়লে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। ছিনতাইকারী বারবার বলছিলো “স্যার, আমরা ছিনতাইকারী নই, এখানে এরা প্রেম করতে এসেছে, আমরা বাঁধা দিয়েছি”। পুলিশ সুন্দর জবাব দিয়েছিলো, পার্কগুলাতো প্রেমের জন্যই বানানো হয়েছে, এখানে প্রেম করবেনাতো কোথায় করবে?

আজ আবদ্ধ ঘরে কুরআনের আলোচনা করা যায়না, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা যায়না। অথচ প্রকাশ্য উন্মুক্ত স্থানে ব্যভিচার করা মামুলী ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। গোপন বৈঠকের অজুহাতে, নাশকতার পরিকল্পনার মিথ্যা অজুহাত দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় দ্বীনি বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদেরকে, আর অনৈতিক কাজের জন্য দেয়া হয় রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা।

নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় কোরানের মাহমিল, অথচ দ্বিস্তর-তিনস্তর এর নিরাপত্তা দিয়ে আয়োজন করা হয় ব্যান্ডসংগীত, যাত্রা গানের আসর। অশ্লীল ভিডিও দিয়ে ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক পূর্ণ থাকলে প্রব্লেম নেই, এগুলো স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু সেই ল্যাপটপে যদি ইসলামী বই পাওয়া যায় তবে সেটা হয়ে যায় জিহাদী বই, জঙ্গি বই। জিহাদী বইয়ের অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হয় জামিন অযোগ্য ধারার মামলায়।

প্রেমের টানে বারবার ঘর ছাড়া এক মেয়ে বলেছিলো, ছোট বেলা থেকেই দেখতাম সবাই মোবাইলে প্রেম করে, আমারও করতে ইচ্ছে হতো। সেই থেকে শুরু, যখন হাতে মোবাইল এলো তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নাই। এই মেয়েটি কিন্তু প্রেমের জন্য প্রেম করেনাই, সবাই করে তাই তারও করতে ইচ্ছে হয়েছে।
আজকে যখন ছোট ছোট বাচ্চারা পার্ক এবং রাস্তার পাশে যুগলবন্দী হয়ে বসে থাকার দৃশ্য দেখে তখন তাদেরও ইচ্ছে হয় বড় হয়ে তারাও এমন করে হাত ধরা ধরি করে রাস্তার পাশে বসে থাকবে। বাচ্চারা দেখে শিখে।

না শুধুমাত্র বাচ্চারা নয়, কখনো কখনো বড়রাও দেখে শিখে, সেদিন আহসান মঞ্জিলে গিয়েছিলাম, লম্বা দাড়ি এবং টুপি পড়া এক যুবক বিশাল যুব্বা পড়া অবস্থায় এক হিজাবী-নিকাবী আপুর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় বসে আছে। পোশাক দেখে তাদের সম্পর্কে কু ধারনা করলামনা, ধারনা করলাম তারা স্বামী-স্ত্রী, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কাকে দেখানোর জন্য তারা প্রকাশ্যে এভাবে রোমান্টিকতা প্রদর্শণ করছেন?!
এটাকেই বলে দেখে শেখা। তারা দেখেছেন, শিখেছেন, এখন সবাইকে দেখাচ্ছেন।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায়, পৃষ্ঠপোষকতায় যদি অশ্লীলতা-ব্যভিচারকে প্রচার করা হয়, আর দ্বীনি মাহফিলকে, দ্বীনি আলোচনাকে নাশকতার আশংকায় বন্ধ করে দেয়া হয় তবে শুধুমাত্র আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুরা অশ্লীলতা শিখবেনা, আমরা বড়রাও শিখবো, চর্চা করবো, প্রচার করবো।

তারপরেও এক শ্রেণীর মানুষ বলবেন, ইসলামী আন্দোলন করার কি প্রয়োজন? কুরআন পড়বা, নামাজ পড়বা, রোজা রাখবা তাহলেই ইসলাম পালন হয়ে যাবে। রাজনীতি করবে শয়তানেরা, ভালো মানুষরা মসজিদে বসে আল্লাহ আল্লাহ জিকির করবে।
ইসলামপন্থীদের সংসদে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, সংসদে যাবে শয়তানেরা তারা সংসদে বসে ইসলাম বিরোধী আইন বানাবে আর সেই আইনের মাধ্যমে মুসলমানদের শাসন করা হবে।
এই শ্রেনীর মানুষেরা শয়তানের চাইতে কোনো অংশে কম ক্ষতিকর নয়।

লেখাঃ রাজনীতি করার কি প্রয়োজন?
© শামীম রেজা
১২/০৮/২০১৪

Post Comment

ঈদ ভ্রমণ এবং হাবিজাবি

গ্রামের পুকুরে ব্যাপক ডুবাডুবি এবং প্রচুর আত্নীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হলো এবারের ঈদের আনন্দ। প্রতিবারের মতো এবারেও ঈদ উপলক্ষে কুমিল্লা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল মোট চারটি জেলায় ছিলো বাধ্যতামূলক ঈদ সফর।

ঈদ শেষ কিন্তু বেড়ানো শেষ হয়নি, ফিরে যাবো চট্টগ্রাম। ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপক খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সকল কষ্ট ভুলে যাই যখন পদ্মাপাড়ে মাওয়া ঘাটে কড়কড়ে ইলিশ মাছ ভাজার সাথে শুকনো মরিচ ভাজার চমৎকার ঘ্রাণ ভেসে আসে। জিভের পানি আর সামলানো যায়না।
অথচ এবার আর মাওয়া লঞ্চ পারাপারে ইলিশ মাছ খাওয়া যাবেনা। অন্তত পক্ষে লঞ্চ ডুবিতে মারা যাওয়া মানুষের পচা গলা মৃতদেহ যে মাছের পেটে গিয়েছে সে মাছ মুখে দেয়া সম্ভব নয়।

বিগত অবৈধ নির্বাচনের পূর্ববর্তী বৈধ নির্বাচনে এই এলাকার জনগণ ব্যাপক হারে আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়েছিলো একটাই আশা নিয়ে, সেটি হচ্ছে পদ্মা নদীতে ব্রিজ হবে। দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ ৫-৭মিনিটে পদ্মা নদী পারি দিবে।
জনগণের আশা আকাঙ্খাকে আরো উস্কে দিয়েছিলো শুধু মাত্র মাদারীপুর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয় ‘যোগাযোগ’ এবং ‘নৌ পরিবহন’ মন্ত্রিত্ব প্রদান করার কারণে। আর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীতো গোপালী মেয়ে।

কথায় আছে, অতি আশা করোনা, আশা ভেঙে যাবে। এই অঞ্চলের মানুষের মোহ ভঙ্গ হয়েছে, চোর ডাকাতদের মানুষ চিনতে সক্ষম হয়েছে। সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের এলাকায় যেখানে মানুষে চোখ বন্ধ করে নৌকায় ভোট দেয়, সেখানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দ্বিগুণ ভোটে নির্বাচিত হয়েছে জামায়াত প্রার্থি। অথচ এই এলাকায় হারিকেন জ্বালিয়ে খোঁজা খুঁজি করলেও সব মিলিয়ে হাজার তিনেক জামায়াত-শিবির কর্মী পাওয়া যাবেনা। জনমত উল্টে গেছে, আওয়ামীলীগের বিকল্প হিসেবে মানুষ জামায়াতকে বেছে নিয়েছে। যদিও বিজয়ী হওয়ার পরেও জামায়াত পদটি ধরে রাখতে পারেনাই আওয়ামীলীগের পেশি শক্তির কারণে, চূড়ান্ত ফলাফল ঘোশণার সময় জামায়াত প্রার্থির হাত-পা বেঁধে মারধর করে ফলাফল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তারা বলাবলি করছিলো, “জামায়াতের লোক হয়ে নির্বাচন করার এতো খায়েশ কেনো?!” কিন্তু মানুষের মাঝে যে নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে সেটা কিভাবে অস্বীকার করা যাবে?

আব্বা চরম মাত্রার আওয়ামী সাপোর্টার, আমি তার রাজাকার পুত্র। নবম শ্রেণী পড়ুয়া ছোট ভাই আব্বার মতোই কট্টর আওয়ামীলীগ সমর্থক। রাজনৈতিক বিতর্কের সময় যদি আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয় তবে ছোট ভাই লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করে। আমার এক দূর সম্পর্কের খালা ছিলেন, তার সামনে বসে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে কিছু বলা হলে খালার চোখের পানি শামলানো মুশকিল হয়ে যেতো। সেই খালার আব্বা মানে আমার নানা আওয়ামীলীগ ছেড়ে এখন এক্টিভ জামায়াত সমর্থক আলহামদুলিল্লাহ। আশা করা যাচ্ছে পুরো পরিবারটিই একসময় জামায়াত সমর্থকে রুপান্তরিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

এবারে ঈদে বাড়ি আসার সময় আমার লেখা কারাগারের দিনগুলো বইটি নিয়ে এসেছিলাম। ছোট ভাই দেখলাম খুটিয়ে খুটিয়ে বইটি পড়ছে।
কথা হচ্ছিলো, স্টার জলসা চ্যানেল বন্ধ, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বিনা শুল্কে ভারতের পণ্যবাহী নৌ যান চলাচল এবং সম্প্রচার নীতিমালার ব্যাপারে। ছোট ভাই বিপ্লবী ভঙ্গিতে বলে উঠলো “আওয়ামীলীগের কাছ থেকে এর চাইতে ভালো কিছু আশা করা যায়না”।
ছোট ভাইয়ের মুখে এই কথা শুনে আমি হতভম্ব! কিছুই বলছিলামনা।
ছোট বোন বললো, তারপরেওতো তুই আওয়ামীলীগ সমর্থন করস।
ছোট ভাই বললো, আগে করতাম এখন করিনা।
ছোট বোন আবার বললো, তাহলে কি করস?
ছোট ভাইয়ের স্পষ্ট জবাব, “শিবির করি!”

লেখাঃ ঈদ ভ্রমণ এবং হাবিজাবি
© শামীম রেজা
০৯/০৮/২০১৪

Post Comment

সাঁতার

এক ডুব, দুই ডুব,
কথা নাই চুপ চুপ।
আহ, কি শান্তি,
ঘুচে যায় ক্লান্তি।
শান বাঁধা পুকুরে,
রোদ জ্বলা দুপুরে,
পার হই সাতরে,
ভয় নেই রাত্রে
ওঠে যদি জ্বর!
মনে বলে ডুবে মর!
ডুবে মর, ডুবে মর!
উল্লাস, হৈ চৈ,
জল হেথা থৈ থৈ,
ডান কাত, বাম কাত,
সোজা সুজি ছুড়ে হাত,
দেই ঝাপ একদম,
জল হেথা নয় কম,
আহ, কি শান্তি,
ঘুচে যায় ক্লান্তি।
নিজ বাড়ি পুকুরে,
রোদ জ্বলা দুপুরে।

কবিতাঃ সাঁতার
© শামীম রেজা
০৬/০৮/২০১৪

Post Comment

আমার জিহাদ শিক্ষা

ফ্রেন্ডলিস্টে ব্যালেন্স আনার জন্য এবং জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির প্রত্যাশায় স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়েই খুঁজে খুঁজে বেশ কিছু জিহাদী আইডিকে ফ্রেন্ডলিস্টে এ্যাড করে নিয়েছিলাম। এক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা মিশ্র।

খুব মনযোগ দিয়ে সিরিয়া ইরাকের জিহাদের খবর গুলো খুটিয়ে খুটিয়ে নিয়মিতই পড়ি। আনন্দিত হই যখন আইএসআইএস নতুন নতুন এলাকা দখল করে এগিয়ে যায় বীর বিক্রমে, হৃদয়ে আশা জেগে ওঠে মুসলমানদের পূর্ণজাগরনের। আবার যখন জাবাহাতুন নুসরাহর বিজয়ের খবর শুনি তখনো আনন্দিত হই। যখন দেখি ইরাক এবং সিরিয়ার বিভিন্ন জনপদে শরীয়া আইন কায়েম করা হয়েছে তখনতো আনন্দের সীমা থাকেনা, মুখ ফুটে একটা শব্দই বেরিয়ে আসে “আল্লাহু আকবর”।

আবার বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীনও হই যখন দেখি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হিজরত করে যাওয়া প্রতিপক্ষ দলের মুজাহিদের কাটা মাথা নিয়ে উল্লাসে “আল্লাহু আকবর” স্লোগান দেয় আইএসআইএস কিংবা নুসরা সদস্যরা, তখনও মুখ ফুটে একটাই শব্দ বেরিয়ে আসে “নাউজুবিল্লাহ”! ইবলিশ শয়তানের চ্যালা ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এমন নৃশংস কাজ করে “আল্লাহু আকবর” স্লোগান দেয়া সম্ভব নয়।

বিশ্বব্যাপী জিহাদী সংগঠনগুলো খুব ভালোভাবেই টুইটারকে কাজে লাগাচ্ছে। আইএসআইএস এর জিহাদীরা টুইট করে, “ইসরাইলের হামলায় হামাস পরাজিত হলেই ভালো হবে, তাহলে ফিলিস্তিনিরা বাধ্য হয় আইএসআইএস এর পতাকা তলে শামিল হবে”। আবার আলকায়দা সমর্থকরা আর এক ধাপ এগিয়ে আছে(সবাইনা তবে অনেকেই), তারা ধরেই নিয়েছে হামাসের মাধ্যমে বিজয় সম্ভব নয়। বিজয় হবে কালো পতাকাবাহী দলের মাধ্যমে, তারা আসবে খোরাসান থেকে, বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও সেই দলে যোগ দিতে হবে। অতএব কালো পতাকার সৈনিকেরা খোরাসান থেকে ফিলিস্তিনে অভিযান পরিচালনা করার আগ পর্যন্ত মুখে আঙুল দিয়ে বসে থাকো। হামাসের বিজয়ে মাতামাতি করার কিছু নেই।

আমার ফ্রেন্ডলিস্টের সেই জ্ঞানী আইডিগুলো থেকে অনেক অনেক জ্ঞান অর্জন করেছি, যেমন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার চাইতে দাড়ি রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
জিহাদ করার জন্য একে ফোর্টি সেভেন বাধ্যতামূলক, ইট,লাঠি,ককটেল দিয়ে জিহাদ করলে জিহাদ হবেনা।
ইসলামী সংগঠনের হরতাল বাধাগ্রস্থ করার অপরাধে গাড়ি ভাঙা হারাম, কিন্তু আইএসআইএস এর অগ্রগতিতে বাঁধা প্রদানকারীদের কল্লা ফেলে দেয়া ফরজ।
জিহাদ কোনো কৌশলের নাম নয়, জিহাদ হচ্ছে গায়ের জোরে জাহেলদেরকে ইসলাম শিখানো।
জিহাদের সাথে হুদাইবিয়ার সন্ধির কোনো সম্পর্ক নাই, শান্তিকালীন সময় বলতে কিছু নেই। যুদ্ধ এবং যুদ্ধ, যুদ্ধ করেই ইসলাম কায়েম করতে হবে। (মদিনা কি যুদ্ধ করে জয় করা হয়েছিলো? ভুলে গেছি!)

গ্লোবাল জিহাদ থেকে আরো একটা বিষয় শিখেছি, যদিও সেটা এখনো এদেশে চালু হয়নাই, তবে আশা করা যায়, অস্ত্র হাতে পেলে এদেশেও সেই সংস্কৃতির আমদানী হবে, সেটা হচ্ছে যাকে তাকে হত্যা করার জন্য কাফের এবং মুরতাদ ফতোয়া দেয়া এবং সেই মুরতাদের কাটা মাথা হাতে নিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড দেয়া।

জানার কোনো শেষ নাই, এখনো জানছি এবং জানার চেষ্টা করছি।

লেখাঃ আমার জিহাদ শিক্ষা
© শামীম রেজা
০৪/০৮/২০১৪

Post Comment

পোশাক বন্দী ইসলাম

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, শিয়াদের ব্যাপারে জামায়াতের মন্তব্য কি, ওহাবীদের ব্যাপারে জামায়াতের বক্তব্য কি, কিংবা সালাফী, মাজহাবী, লা-মাজহাবী ইত্যাদি ইস্যুতে জামায়াত চুপ কেনো ইত্যাদি ইত্যাদি।
সবচাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এইযে আকিদাগত বিভিন্ন ইস্যুতে জামায়াতের চুপ থাকার নীতি এটাই জামায়াতকে একটি ব্যতিক্রম অবস্থান দান করেছে। জামায়াত কোনো ফতোয়া বোর্ডের নাম নয়, যে ইচ্ছে হলো যেকোনো ইস্যুতে একটা ফতোয়া দিয়ে দিলাম, কিংবা জামায়াত কোনো আকিদাগত গ্রুপের নামও নয় যে নিজস্ব আকিদাকে আকড়ে ধরে বাকি সব আকিদাকে বাতিল বলে ঘোষণা দিয়ে দিলো।

জামায়াত তাঁর নাম করণের ব্যাপারে স্বার্থক, সংগঠনটির নাম ‘জামায়াতে ইসলামী’। এটাকে জামায়াতে সুন্নি, জামায়াতে শিয়া কিংবা জামায়াতে ওহাবী, সালাফী, মাজহাবী, লা-মাজহাবী বলা যাবেনা। জামায়াত হচ্ছে সকল মতের সকল পথের মুসলিমদের একটি ঐক্যবদ্ধ সংগঠনের নাম। যে সংগঠনের ব্যানারে শামিল হয়েছে নানান আকিদার মুসলিম। এখানে আকিদা নিয়ে মারামারি হয়না, কথা কাটাকাটি হয়না, সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বিশ্বব্যাপী বৃহত্তর ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন বুকে ধারণ করে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ‘জামায়াত ইসলামী’ নামক ইসলামী সংগঠনের ব্যানারে।

সেদিন কথা হচ্ছিলো এক শীর্ষস্থানীয় জামায়াত নেতার সাথে, আমার স্বল্প জ্ঞান দিয়ে যখন আমি বলছিলাম এইসব শীয়া-সুন্নী পার্থক্য করে মুসলিমদের ঐক্যে ফাটল ধরানো হচ্ছে। কুরআন হাদিস মানলে আবার শিয়া সুন্নি আসবে কোথা হতে। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা মুসলিম।
সম্মানিত দায়িত্বশীল তখন মুচকি হেসে বলছিলেন, শিয়ারা মুসলিম হলে আমরা কি?!
অথচ জামায়াতের এমন অনেক নেতার লেখা পড়েছি যেখানে শিয়াদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়েছে।
এখানেই জামায়াত ব্যতিক্রম, জামায়াত কখনো আকিদাগত বিষয় নিয়ে কিংবা মাজহাবী বিষয় নিয়ে বিতর্ক করেনা, যার যার মতামত বিশ্বাস সেটা তাঁর নিজস্ব। জামায়াতের লক্ষ একটাই সেটা হচ্ছে, সকল মতের মুসলমানদের সাথে নিয়ে বিশ্বব্যাপী ইসলামী বিপ্লব।

আবার এটাও দেখা যায় অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, জামায়াত শিবিরের ভাইয়েরা দাড়ি রাখেনা কেনো কিংবা টাকনুর উপর প্যান্ট পড়েনা কেনো।
আসলে প্রশ্নটাতেই ভুল থেকে যাচ্ছে, জামায়াত-শিবিরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা দাড়ি রাখেন এবং তারা টাকনুর উপর প্যান্ট পড়েন।
রুট লেভেলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা দাড়ি রাখেননা এটা সত্য। আর জামায়াতের সাংগঠনিক সিস্টেমে দাড়ি রাখার জন্য কাউকে বাধ্য করা হয়না কিংবা দাড়ি কাটার জন্যও কাউকে উৎসাহিত করা হয়না।

আমাদের রাসূল(সঃ) মানুষের মুখে দাড়ি রাখানো কিংবা টাকনুর উপর প্যান্ট পড়ানোর জন্য নবুওয়াতের দাড়িত্বপ্রাপ্ত হননাই, এর চাইতেও হাজার গুণ গুরুত্বপূর্ণ মিশন ছিলো তাঁর সম্মুখে।
আজকে যদি প্রশ্ন করা হতো জামায়াত কেনো ফিলিস্তিনে গিয়ে জিহাদ করছেনা কিংবা জামায়াত কেনো তাগুত সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করছেনা তাহলে প্রশ্নটা অধিক যুক্তিযুক্ত হতো। আজকে পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা কুফরী শক্তির অধীন হয়ে গেছে, সমগ্র বিশ্বে মুসলিমরা মার খাচ্ছে, আর আমরা প্রশ্ন করছি আমাদের দাড়ির সাইজ কত বড়, কিংবা আমাদের কাপড় টাকনুর উপরে রয়েছে কিনা। আজকে যদি সমগ্র বিশ্বের মুসলিমরা টাকনুর উপর প্যান্ট পড়া শুরু করে আর লম্বা লম্বা দাড়ি রাখা আরম্ভ করে তবে কি মুসলিম বিশ্বের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে?

এখানে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, জামায়াত শিবির কাউকে দাড়ি রাখতে মানা করেনা আবার কাউকে দাড়ি কাটতেও বলেনা। জামায়াতের আন্দোলন মানুষের বাহ্যিক লেবাস পরিবর্তনের জন্য নয়। জামায়াত কোনো ফতোয়া বোর্ডও নয়। জামায়াতের আন্দোলন হচ্ছে সকল মত, পথের মুসলিমদের নিয়ে (দাড়ি ওয়ালা, দাড়ি ছাড়া) ইসলামী বিপ্লবের চেষ্টা করে যাওয়া।

আমাদের প্রব্লেম হচ্ছে ইসলামকে আমরা লেবাসের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলেছি। জাকির নায়েক কোর্ট টাই পড়ে বক্তৃতা দেয় একারণে তিনি ইহুদী-খৃস্টানদের দালাল, তাঁর সকল ভালো কাজ কোর্ট টাইয়ের ফিল্টারে আটকে গেছে।
দাড়ি রাখলে ঈমান বৃদ্ধি হয়না বরং মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আলো প্রজ্বলিত হলে গালে দাড়ি গজায়, প্যান্ট গিরার উপরে উঠে যায়। গ্রাজুয়েট হওয়ার আগেই কাউকে জোর করে গ্রাজুয়েশন গাউন পরিয়ে দেয়া হলে গ্রাজুয়েশনের কোনো ভ্যালু থাকেনা।
অনেকেই দেখা যায় দাড়ি, পাগড়ি পরিধান করে অনেক অপকর্ম করেন, ফলশ্রুতিতে দোষ হয় লেবাসের। মানুষ বলে বেড়ায় হুজুররা এই করে সেই করে। বোরখা পড়া মেয়ে পার্কে, সিনেমা হলে ঘুরে বেড়ায়।

আমাদের একটা বিপ্লবী চিন্তা হচ্ছে, আমরা অগার ভাই মগাকে ধরে এনে লেফটেন্যান্ট, কর্ণেল কিংবা মেজর, জেনারেলের পোশাক পরিয়ে দেই। আর মনে মনে আত্মতৃপ্তিতে ভুগি একজন ইসলামের সৈনিক বৃদ্ধিপেলো। কিন্তু এই মগা সাহেব যে পোশাকের সম্মান ধূলায় মিশিয়ে দিতে পারে সে চিন্তা কি আমাদের মাথায় আছে?

লেখাঃ পোশাক বন্দী ইসলাম
© শামীম রেজা
০২/০৮/২০১৪

Post Comment

বউ যায় বাজারে

বউ যাবে বাজারে,
আহা কি সাজারে!
আইব্রু, উপটান,
সারা মুখে চুনকাম।
উঁচু করে খোঁপাটা,
রাঙা করে চোপাটা।
আজ যেনো বিয়ে তাঁর,
পড়ে নেয় মনিহার।
পেট খোলা শাড়িতে,
জামাইয়ের গাড়িতে,
চলে যায় বাজারে,
কি মজা আহারে!
ইলিশ আর ট্যাংড়া
মাছ বেঁচে চ্যাংড়া,
চোখ দিয়ে গিলে খায়,
কুলিগুলি হেসে যায়।
বউ যায় বাজারে,
আহা কি সাজারে!

কবিতাঃ বউ যায় বাজারে
© শামীম রেজা
৩০/০৭/২০১৪

Post Comment

ভারতীয় পোশাক

বড় আপাকে নিয়ে শপিংয়ে গিয়েছিলাম, ইচ্ছে বাড়ির সবার জন্য কিছু কেনাকাটা করা। কাপড়-চোপড় পছন্দ করার দায়িত্ব বড় আপার দিকে ঠেলে দিলেও ছোট বোনের থ্রি-পিচ চয়েজ করার দায়িত্ব দেয়া হলো আমাকে। চমৎকার দেখে দুটো থ্রি-পিচ নিলাম, একটা সুতি এবং আরেকটা জর্জেটের। দারুণ সব কারুকাজ, এসব থ্রি-পিচ এর আবার ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে, আমি যে দুটো কিনেছি সেগুলোরও কি কি যেনো নাম বললো ভুলে গেছি, পামেলা কিংবা এজাতীয় কিছু। জিনিস সুন্দর, দামটাও অনেক সুন্দর এবং সেটা সৌন্দর্যের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলো।

বাড়িতে যাওয়ার পরে সবার ঈদের ড্রেস দেখা দেখি নিয়ে তুমুল হৈ চৈ। কাজিনেরা বলাবলি করছিলো ছোট আপুর জন্য পাখি ড্রেস আনছে, অনেক সুন্দর!
আমি চেচিয়ে উঠলাম, আরেনা! ওইসব পাখি ড্রেস আমি কিনিনা, এটার অন্য নাম আছে পামেলা নাকি কি একটা নাম, তবে পাখিনা।
শুরু হয়ে গেলো বিতর্ক! আপনি পোলা মানুষ পাখি ড্রেসের কি বুঝেন। অমুক সিরিয়ালে এটা পাখি পড়েছিলো।
আমি যতই না না করি ওরা ততই চেপে ধরে। শেষ-মেশ পোশাকের ক্যাটালগের ছবি হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো, ‘দেখছেন, পাখির গায়ে এই জামা!’
মডেলের ছবির দিকে তাকিয়ে বললাম, এই মেয়েটার নাম পাখি!!
হ্যা, অমুক সিরিয়ালের নায়িকা পাখি। পাখির গায়ে যতগুলো থ্রি-পিচ ছিলো সবগুলোই পাখি ড্রেস!
পাখির কথা শুনে আমার আখি লাল হয়ে গেলো।

ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েকমাস হলো, ঈদ উপলক্ষে শশুর মশায় নতুন বউয়ের জন্য বহু টাকা খরচ করে দামি শাড়ি পাঠিয়েছেন। মা-চাচিরা শাড়ি দেখছিলেন আর গাল-গপ্প করছিলেন, এই শাড়িটা অনু পড়েছিলো, অনেক সুন্দর হইছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আলোচনার মাঝখানে আমি বামহাত ঢুকিয়ে দিলাম, অনু কে? বাড়ি কোম্মে?
চাচিতো হাসিতে গড়াগড়ি খায় অবস্থা! হাসতে হাসতেই বললেন, অনুদের বাড়ি ভারতে। পুরো মখা হয়ে গেলাম, তাহলে আপনি অনুকে চিনেন কি করে? পুরাই টাস্কি খাওয়ার যোগার, অনু হচ্ছে ভারতীয় সিরিয়ালের নায়িকা।

নাহ! মেজাজটা আর ঠিক রাখা সম্ভব হলোনা, মেজাজ খারাপ হয়েছে এদেশের গার্মেন্টস মালিকদের উপরে। আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে গোলামির মানসিকতা। আমরা ভিন্ন দেশের পোশাকের অর্ডার নিয়ে দর্জিগীরি করি। নিজস্ব উদ্ভাবনী কিংবা নিজস্ব প্রোডাক্ট নিয়ে বাজারে আসার মুরোদ আমাদের নেই। আজীবন শুধু অপরের গোলামীই করে গেলাম।

ঈদ পূজা উপলক্ষে কেনো আমাদের শক্তিশালী নিজস্ব প্রডাক্ট থাকবেনা? ঈদ উপলক্ষে সারাবছর ধরে ভারত যেসব পোশাক তৈরী করে সেই একই পোশাক আরো কম খরচে আমরা উৎপাদন করতে পারিনা? আমাদেরকেতো আর আমদানি শুল্ক দিতে হবেনা, সেই দিক থেকেতো আমরা ভালো অবস্থানে আছি। একটা ঈদে, শুধুমাত্র একটা ঈদে যদি আমরা ভারতীয় পোশাককে মার খাওয়াতে পারি, তাহলে পরের বছর তারা আর বাংলাদেশ মুখী হওয়ার সাহস করবেনা। আমাদের নিজস্ব ডিজাইনাররাই তৈরী করবে দারুণ সব দেশীয় ধর্মীয় ঐতিহ্য সমৃদ্ধ পোশাক।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিকেরা, আপনারা কচু গাছে গলায় রশি বেধে ঝুলে পড়েন।

পাখি থ্রি-পিচ কিংবা অনু শাড়ি নিয়ে যখন মেজাজ পুরাটাই খারাপ ঠিক তখনই এক কাজিন প্রশ্ন করলো, ভাইয়া ঈদে আপনি কি কিনছেন? মুচকি হেসে জবাব দিলাম, পাখি লুঙ্গি কিনছি!

লেখাঃ ভারতীয় পোশাক
© শামীম রেজা
২৮/০৭/২০১৪

Post Comment

অর্থনৈতিক যুদ্ধ


এমনিতে আমি নিরামিষ টাইপের মানুষ, চা, কফি কিংবা কোল্ড ড্রিঙ্কস এর প্রতি বিন্দুমাত্র আসক্তি নেই। কিন্তু বন্ধুদের আড্ডায় এক কাপ চা কিংবা প্রচন্ড গরমে খানিকটা কোল্ড ড্রিঙ্কসতো পান করা যেতেই পারে।

গতকালও ছিলো তেমন একটি দিন, একেতো দীর্ঘ জার্নির ক্লান্তিতে বিধ্বস্ত তাঁর উপর প্রচন্ড গরম। ইফতারির জন্য ভালো একটি ড্রিঙ্কস খুজছিলাম, টাইগার কিংবা স্পীড নিলামনা, ধারণা করছি এগুলোতে এ্যালকোহলের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত, মাত্রাতিরিক্ত এ্যালকোহলতো হালালের প্রশ্নই ওঠেনা। কোকাকোলা, পেপসি পান করবোনা এগুলো ইহুদী পণ্য বলে, এসব বোতল পূর্ণ হয়ে আছে ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্তে।
বেছে বেছে শেষ পর্যন্ত স্প্রাইটের বোতলটাই হাতে তুলে নিলাম, কিন্তু দূর্ভাগ্য খালি বোতল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়ে লেভেলের একটি যায়গায় চোখ আটকে গেলো। ছোট্ট করে লেখা আছে “কোকাকোলা রেজিস্টার্ড পণ্য”! মনে পড়ে গেলো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কথা, মনে পড়ে গেলো বাংলাদেশের মিডিয়ার কথা।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি দেশের ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র পণ্য বিক্রয় করেনা, একই সাথে তারা নিজস্ব রাজনীতি এবং সাংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয় দেশে দেশে। বাংলাদেশে ইসলাম প্রবেশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বিশ্বের একমাত্র মুসলিম দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ যে দেশের সীমান্তের সাথে অন্য কোনো মুসলিম দেশের সীমান্ত নেই। আরবের মুসলিম বণিকরা এদেশে এসেছিলেন বাণিজ্য করার উদ্দেশ্য নিয়ে, এবং বাণিজ্যের সাথে সাথে তারা পৌছে দিয়েছিলেন ইসলামের সুমহান আদর্শের বার্তা।

ব্রিটিশদের “ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী” এদেশে এসেছিলো বাণিজ্য করার জন্য। বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে তারা বাস্তবায়ন করেছিলো রাজনৈতিক এজেন্ডা, কিনে নিয়েছিলো নবাব সিরাজের সেনাপতি সহ অসংখ্য প্রভাবশালী ব্যক্তিকে, ফলশ্রুতিতে পুরো দেশটাই চলে গিয়েছিলো তাদের হাতে। এদেশের জনসাধারণ পরিণত হয়েছিলো ব্রিটিশদের গোলামে, সূদীর্ঘ সেই গোলামির ইতিহাস।

আমরা আন্দালিব পার্থের দেয়া বক্তব্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ইন্ডিয়ান কোম্পানী এয়ারটেল কিভাবে শতকোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কিনে নিয়েছিলো ওয়ারিদ টেলিকমকে। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে মিডিয়ায় হৈ চৈ হয়নি, কেনো হয়নি সেটা পরবর্তীতে আলোচনা করবো। শাহবাগ আন্দোলনের সময় মিডিয়াতে তুমুল হৈ চৈ পড়ে গিয়েছিলো ইসলামী ব্যাংক জাতীয়করণ কিংবা বন্ধ করে দেয়ার দাবিতে, সেই দাবী এখন স্তিমিত হয়ে গেছে। যেসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান তখন ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে মঞ্চ কাপিয়েছিলো তারা এখন ইসলামী ব্যাংকের পক্ষে সাফাই গাইছে। বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানী গুলোর দূর্ণীতির বিরুদ্ধে মিডিয়াতে কোনো নিউজ হয়না, তারা কি ফেরেশতা? তারা কি ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেনা? তাহলে মিডিয়াতে নিউজ হচ্ছেনা কেনো?
আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি একদিকে পুরো বিশ্বের মুসলিম-অমুসলিম সহ দল মত নির্বিশেষ সবাই ইহুদী বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ছে, অন্যদিকে ঠিক তখনি আমাদের দেশের মিডিয়া এই ইস্যুতে নির্বিকার হয়ে বসে আছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিডিয়া ইহুদীদের পক্ষ নিয়ে নিউজ প্রকাশ করছে। এর কারণ কি, বাংলাদেশের সব মিডিয়া মালিকরা কি ইহুদী হয়ে গেছে? উত্তর যদি হয় ‘না’, তাহলে মিডিয়া কেনো ইহুদীদের পক্ষাবলম্বন করছে?

একটি নিউজ পড়েছিলাম, কোকাকোলা পেপসি সহ অন্যান্য কোম্পানির পণ্যের উৎপাদন খরচের তুলনায় বিজ্ঞাপন খরচ বেশি। আজকে যদি বাজার করার জন্য পণ্যের তালিকা করেন তবে তালিকার ৭০% পণ্যই থাকবে ইহুদী নিয়ন্ত্রিত কোম্পানীর। ব্যবসা এবং সুদ এই দুইটা জিনিস ইহুদীরা অনেক ভালো বুঝে। ইহুদীদের এই বিরাট বিশাল ব্যবসার বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হয় মিডিয়াকে, প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বাজেট। যে মিডিয়া যত বেশি ইহুদী তোষণ করতে পারবে সে মিডিয়া তত বেশি বিজ্ঞাপন বাজেট বরাদ্দ পাবে। সুতরাং মিডিয়াগুলো কেনো শুধু শুধু বিনে পয়সায় ইহুদীদের বিরুদ্ধে নিউজ করতে যাবে, যেখানে ইহুদীদের পক্ষে লিখলে পাচ্ছে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন।
একই কথা প্রযোজ্য টেলিকম সেক্টরের দূর্ণীতির প্রসঙ্গে, মোবাইল কোম্পানি গুলো কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে মিডিয়ার মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে। আসছি ইসলামী ব্যংকের প্রসঙ্গে, হঠাৎ করেই বাতিলপন্থীদের কাছে ইসলামী ব্যাংক ভালো হয়ে গেলো কেনো? কারণ ঐ একটাই সেটা হচ্ছে ‘বিজ্ঞাপন’। মিডিয়ার পর্দায় ইসলামী ব্যাংকের বিশাল বিশাল বিজ্ঞাপন।

যে কথা বলছিলাম, আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র পণ্য বিক্রয় করেনা, একই সাথে তারা নিজেদের রাজনীতি এবং সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেয় দেশে দেশে। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি কিভাবে ইহুদী পণ্যের কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপনের লোভে ফিলিস্তিনের গণহত্যা ইস্যুতে আমাদের মিডিয়াগুলো পঙ্গু হয়ে বসে আছে। কিভাবে ভারতীয় কোম্পানীর বিজ্ঞাপনের লোভে প্রথম আলো সহ অন্যান্য মিডিয়া ফেলানীদের নিয়ে লীড নিউজ করেনা। জাতীয় স্বার্থের চাইতে ভারতের এবং ইহুদীদের স্বার্থকেই আমাদের মিডিয়া প্রাধান্য দিচ্ছে।

আমরা দেখতে পাচ্ছি, মিডিয়ার এই এক চোখা নীতির পেছনের কারণ শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিকও বটে। আজকে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালাচ্ছে তাদের অর্থনৈতিক শক্তিতে, ব্যবসায়ীক শক্তিতে। তাদের বিজ্ঞাপন বাজেটই নিয়ন্ত্রণ করছে গোটা বিশ্বের মিডিয়াকে। মিডিয়া আজ তাদের চাহিদা মোতাবেক নিউজ তৈরী করছে।

আমরা চাইলেই রাতারাতি ইহুদী প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে শক্তিশালী মুসলিম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারবোনা, যেটা পারবো সেটা হচ্ছে ইহুদী পণ্য বয়কট করে তাদের অর্থনীতির ভিত নাড়িয়ে দিতে। ইতোমধ্যেই ইসরাইলী অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন বিশ্বব্যাপী ইহুদী পণ্য বয়কটের কারণে তাদের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে।
নিচে কিছু বহুল ব্যবহৃত ইহুদী পণ্যের নাম উল্লেখ করা হলো। আসুন ইসরাইলী পণ্য বর্জন করে বিকল্প পণ্য গ্রহণ করে ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষায় এগিয়ে আসি। আমার টাকায় কেনা বুলেটে জীবন দিতে হবেনা আর কোনো মুসলিম ভাইকে।

১। বাটা ২। ইউনিলিভার ৩। নেসলে ৪। ম্যাকডোনাল্ডস ৫। পেপসি ৬। কোকাকোলা

#SaveGaza #SupportPalestine #StopGenocide #SupportHamas

লেখাঃ অর্থনৈতিক যুদ্ধ
© শামীম রেজা
২৬/০৭/২০১৪

Post Comment

মামা বলছি

ঘুঘু সই! বাসা কই?
শিমুল গাছে।
শিমুল কই?
........................
ছোট তালগাছটা লড়ে-চড়ে,
বড় তালগাছটা ভাইঙ্গা......পড়ে।
কোন ঘাটে পড়বা, শোনার ঘাটে নাকি রুপার ঘাটে?
ধুপ্পু, ধুপ্পু, ধুপ্পু......ত!
পিচ্চি ভাগ্নীটা হি হি করে হাসিতে ভেঙে পড়ে।

শুয়ে শুয়ে দুই পায়ের পাতার উপর ছোট ভাগ্নীকে বসিয়ে দোল খাওয়াচ্ছিলাম, আর সুর করে আবৃতি করছিলাম আঞ্চলিক কবিতা। পিচ্চিটার আনন্দ দেখে কে! অনেক দিন পরে মামাকে কাছে পেয়েছে। এমনিতে মোবাইল হাতে নিলে তাঁর কথা ফুরায়না, আধো আধো বুলি- মামা আসসালামু আলাইকুম, মামা ভাত কেয়েচ? মামা রোজা রেকেচ? মামা বালো আচো? আমি বালো আচি!

সেদিন ছোট বোনকে ফোন করে নালিশ করছিলো সেঝ ভাইগ্নাটা, ‘খালামনি! ছোট মামা শুধু সিটিং করে’
‘কি সিটিং করে?’
‘ছোট মামা শুধু বলে আসবো, কিন্তু আসেনা’।
এক গাদা অভিযোগের স্তুপ! অভিযোগের পাহাড় সরানোর জন্য শেষ পর্যন্ত চলেই এলাম।

অলরেডি মোবাইল দুটো বেদখল হয়ে গেছে। মেঝ ভাইগ্না বসে বসে ল্যাপটপে গেমস খেলছে, বড় জন বসে আছে গেমস খেলা শেষ হলে কার্টুন দেখবে। সব চাইতে পিচ্চিটা মোবাইল হাতে নিয়ে পায়ের পাতার উপর বসে বসে ‘ঘুঘু সই’ খেলছে, আর সেঝ ভাইগ্না মোবাইলে মোটর রেসিং নিয়ে ব্যস্ত।

ছোট ভাগ্নি একটু পর পরেই ‘ঘুঘু সই’ খেলা ফেলে টেনে উঠিয়ে বসাচ্ছে, মামা ওঠো! মামা ওঠো! আমি কাঁধে চোব্বো, তারপর কাঁধে উঠেই দুই গাল মাখা মাখি করে চখাম চখাম আদর।

পৃথিবীটা এখানে অন্যরকম, পৃথিবীর সব আনন্দ এসে জড়ো হয়েছে শিশুদের এই সর্গরাজ্যে।

লেখাঃ মামা বলছি
© শামীম রেজা
২৩/০৭/২০১৪

Post Comment

কবি, কবিতা এবং কিছু অলস কথন।

অলস মস্তিস্ক কবিতার কারখানা, এবং এই অলসতার কারণে অধিকাংশ কবিই শেষ বয়সে নিদারুণ অর্থ কষ্টে পতিত হয়। যেমন রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, শাহ আব্দুল করিম, ফররুখ আহম্মদ প্রমুখ প্রমুখ এবং প্রমুখ।

কবি চরিত্র নিয়ে যুগে যুগে বিস্তর গবেষনা হয়েছে, তা সে গবেষণা যতটানা কবিতার মর্মোদ্ধারের উদ্দেশ্যে হয়েছে তার চাইতেও বেশি হয়েছে কবি জাতির চরিত্রের সর্বোনাশ করার উদ্দেশ্যে। কবিদের সবাই হিংসে করে, শত্রুজ্ঞান করে, নিন্দা করে। নারী কবিদেরকে নারীরা হিংসে করে, পুরুষ কবিদেরকে পুরুষরা হিংসে করে।
নজরুল দাদায় যেখানে সেখানে গিয়ে একটার পরে একটা প্রেম করেছিলেন, এই তথ্যটা গোপন রাখলে কি এমন ক্ষতি হতো? কিংবা রবীন্দ্র সাহেব যে গণহারে ভাবিদের সাথে পরকীয়া করতেন এটাইবা প্রকাশ করার কি প্রয়োজন ছিলো! শুধু শুধু কবি জাতির অসম্মান!

সেদিন এক বড় ভাই চুপি চুপি ডেকে বললেন, প্রেম করেন?
‘কেনো ভাই?’
‘এতো সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখেন! প্রেম না করলেতো এমন ছন্দ আসার কথানা!’

তারো আগে, বহু বহু আগে, ‘একবার একলা পেয়ে এক শুভাকাঙ্খী বলেই ফেললেন, ‘কবিদের আমি বিশ্বাস করিনা! আমি দেখেছি কবিদের ক্যরেক্টারে সমস্যা থাকে’।
‘আমিতো ভাই রাজাকার পার্টি করি, মল্লিক ভাই, ফররুখ চাচায়তো কবি ছিলেন, তাঁদের ক্যারেক্টারেও কি......?’
‘সবাই মল্লিক-ফররুখ হতে পারেনা!’
ভাগ্যিস বিশ্বের তাবৎ সুশীল কবিবৃন্দ এই শুভাকাঙ্খীকে চিনতে পারেনাই, নইলে শ’খানেক থুক্কু হাজারে হাজারে, লাখে লাখে বিপ্লবী কবিতা রচিত হয়ে যেতো। ফাঁকতালে গালি দেয়া এই শুভাকাঙ্খী বিখ্যাত হয়ে যেতেন।

আমার এক বন্ধু চোখ বড় বড় করে বলেছিলো, ‘কবিতা লেখিস?! সাবধান! কবিদের অনেক প্রেমিকা থাকে কিন্তু বউ থাকেনা। বউ থাকবে কি করে, বউ পালার মতো পয়সা থাকলেতো!’

কিন্তু সবার উপরে যে কথাটি মনে রাখতে হবে, বিশ্বের যাবতীয় সুশীল-কুশীল মানুষের মধ্যে এই কবিরাই কিন্তু সব চাইতে বেশি দীর্ঘজীবি হয়। আপনি পুলিশের আইজি হন, সেনাবাহিনীর প্রধান হন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর হন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, কিংবা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী হন। জনগণ একদিন ঠিকই আপনাকে ভুলে যাবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র।

অতিকায় ডায়নোসর বিলুপ্ত হয়, কিন্তু তেলাপোকা প্রজাতির কবিরা থেকে যায়, অমর, অক্ষয়। আমাদের সেই দুখু মিয়া নজরুল কিংবা ভুখা মিয়া রুদ্র কিন্তু এখনো মরেনাই, চরম অভাবী ফররুখ এখনো জাজ্বল্যমান প্রস্ফুটিত।

আসুন আমরা অলস হই, কবি হই, অমর হই- বলেছেন জনৈক লেজকাটা শেয়াল থুক্ক জনৈক কবি।

লেখাঃ কবি, কবিতা এবং কিছু অলস কথন।
© শামীম রেজা
২২/০৭/২০১৪

Post Comment

মিডিয়া যুদ্ধ

হলিউড নির্মিত “ফারেনহাইট নাইন ইলেভেন” মুভি দেখেছিলাম। মুসলমানরাযে কতটা খারাপ হতে পারে এই মুভিটি না দেখলে বুঝতে পারতামনা। ফুলের মতো নিস্পাপ মার্কিন সৈন্যরা ইরাকে গিয়েছিলো মানবতার মুক্তির দিশারী হয়ে, বর্বর ইরাকীদের একটু মানবতা শেখাতে, ইরাকের নারীদের ধর্ষণ করে সভ্য সন্তান জন্মানোর এজেন্ডা নিয়ে। কিন্তু এই বর্বর মুসলমানরা মানবতা শিখতে চায়না, তারা মার্কিন সেনাদের উপর গুলি চালায়, আত্মঘাতি বোমা হামলা করে। আহারে কি খারাপ সন্ত্রাসী মুসলমানরা!
এই মুভিটি দেখে মন খারাপ করার কিছু নেই, এই ছবিটি আপনার আমার মতো মুসলমানদের বিরুদ্ধে তৈরী করা হয়নাই। মুভিটা বানানো হয়েছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, আপনি আমিতো সন্ত্রাসী নই তাইনা!

মুসলমানরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত, একভাগে আছে যারা কোরানের আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, এরা হচ্ছে সন্ত্রাসী মুসলিম। আরেকভাগে আছে খেয়ে দেয়ে দুই দিন বেঁচে থাকতে চায়, এরা হচ্ছে ভালো মুসলিম, খাঁটি আল্লাহর বান্দা, এরা সকাল বিকাল জিকির আসগার করবে আর মসজিদে সিন্নি দিবে, মরার সাথে সাথেই জান্নাত নিশ্চিত! আসমানের উপর আর জমিনের নিচে ছাড়া এদের আর কোনো চিন্তা নেই। রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফিরাউন কি নমরুদ এটা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথাও নেই।

গাঁজাতে ইসরাইলী বাহিনীর বর্বরতা নিয়ে একটি লেখা তৈরী করেছিলাম, বার বার চেষ্টা করেও কমেন্ট বক্সে একটি ছবি আপলোড দিতে পারছিলামনা। ছবিটা ছিলো একটি ফিলিস্তিনি শিশুর পোড়া মৃতদেহ। ফেসবুক বার বার একটি ম্যাসেজ শো করছিলো “এই ছবিটা ফেসবুকের পলিসিকে ভায়োলেট করবে, তাই আপলোড করা যাবেনা”। কি অদ্ভুত নিয়ম! যে ফেসবুকে সানি লিওনের মতো পর্ণো তারকার নামে ভেরিফায়েড পেজ থাকতে পারে, যে ফেসবুকে পর্ণো সাহিত্য নিয়ে অশ্লীল পেজ থাকতে পারে, সেখানে ইহুদী বর্বরতা নিয়ে ছবি আপলোড করা যাবেনা, কি অদ্ভুত নিয়ম! নিয়মটা অবশ্যই শুধুমাত্র সন্ত্রাসী মুসলিমদের বিরুদ্ধে এবং এতে আমাদের মাইন্ড করার কিছু নেই। এটা সন্ত্রাসী হামাসের বিরুদ্ধে, আপনি আমিতো ভালো মুসলিম তাইনা!?

কিছুদিন আগে ফেসবুক টুইটার সহ আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে তোলপাড় করা একটি নিউজ ছড়িয়ে পড়লো। যৌন জিহাদ করার জন্য দলে দলে আরব নারীরা সিরিয়াতে যাচ্ছে! কি যুক্তিপূর্ণ উদাহরণ, সচিত্র প্রতিবেদন! শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হলো এটা ছিলো ইসলামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা।
দলে দলে নারীরা সিরিয়া গমন করেছে এটা ঠিক, তবে সেটা জিহাদ করার জন্য, যৌন জিহাদ নামক অশ্লীল কোনো ব্যাপার এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলোনা।

আপনারা নিশ্চই মালালাকে ভুলে যাননাই, কি আর্তনাদ, কি হাহাকার, পাকিস্থানী এক কিশোরীর জন্য! আমি নিজেও মালালার জন্য শোক প্রকাশ করে দুই মাইল লম্বা লেখা তৈরী করেছিলাম। কি বর্বর তালেবান সন্ত্রাসীরা, একটা কিশোরী মেয়ের উপর হামলা করে, বর্বর, শয়তান, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা ভুলে গেছি আফিয়া সিদ্দিকি সহ অগণিত অগণিত মুসলিম ভাই-বোনদের কথা যার প্রতিদিনই নিহত হচ্ছে মার্কিন ড্রোন হামলায়। আমাদের মন খারাপ করার কিছু নেই, আফিয়া সিদ্দিকীরা আমাদের মতো ভালো মুসলিম ছিলেননা, তিনি ছিলেন সন্ত্রাসী মুসলিম। আজকে ফিলিস্তিনে যে শিশুরা নিহত হচ্ছে, পাকিস্থানের ওয়াজিরিস্থানে যে শিশুরা মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হচ্ছে ওরা সন্ত্রাসী মুসলিম, ওদের জন্য মন খারাপ করার কিছু নেই। মিডিয়া আমাদেরকে বলে দিয়েছে সন্ত্রাসীদের জন্য মন খারাপ করতে হয়না।

বোকো হারামের জিহাদীরা শ’খানেক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করেছে, বিশ্বব্যাপী মিডিয়াতে তোলপাড় করা নিউজ। স্কুল ছাত্রীদের মুক্তির দাবিতে মিশেল ওবামা ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। মিডিয়াতে নিউজ হলো মেয়ে গুলোকে দাশী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আরো যতসব অশ্লীল কু-রুচি পূর্ণ ইঙ্গিত। ছিঃ ছিঃ বোকো হারামের হারামিরা কতটা খারাপ, তারা মেয়েদেরকে অপহরণ করে।
কিন্তু ভেতরের খবর হচ্ছে সরকারী বাহিনী বোকো হারামের জিহাদীদের পরিবারের সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার করে তুমুল অত্যাচার করছিলো। বোকো হারাম এই ছাত্রীদের অপহরণ করেছে বন্দীবিনিময় চুক্তি করার লক্ষে। তোমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছো, আমারও তোমাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছি, ব্যাপারটা এর চাইতে ভিন্ন কিছু নয়। মিডিয়ার এই সত্য গোপন করার মানসিকতাকে আমরা নিন্দা জানাবোনা, কারণ এটা করা হচ্ছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। আপনি আমিতো সন্ত্রাসী নই তাইনা?!

ইরাকে আইএসআইএস অমুসলিমদের উপর মোট আয়ের ২% জিযিয়া ধার্য করেছে, বিনিময়ে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়। আহারে ধর্মীয় স্বাধীনতা! বর্বর মুসলিম!
কিন্তু এই মিডিয়াই নিরব থাকে যখন ফ্রান্সের আদালতে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হিজাব পড়ার অপরাধে দুইশত ইউরো জরিমানা করা হয়। এই মিডিয়া ভুলে যায় মুসলিমরা তাদের আয়ের বিশাল একটা অংশ জাকাত প্রদান করে, অমুসলিমরা জাকাত হতে মুক্ত, উপরন্তু তারা জাকাতের মাধ্যমে অর্জিত বিভিন্ন সামাজিক সুবিধা ভোগ করে। না মিডিয়ার এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা কিছু বলবোনা, কারণ আইএসআইএস সন্ত্রাসী সংগঠন। আপনি আমিতো সন্ত্রাসী নই তাইনা!?

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আলেম মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হয়ে গেলেন, কুখ্যাত দেলু রাজাকার, শীর্ষস্থানীয় ধর্ষক! বাঙালী বংশোদ্ভুত ইসলামী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা হয়ে গেলেন, বিহারী কসাই কাদের! হত্যা ধর্ষণ নিয়ে মিডিয়াতে রচিত হলো রসালো সাহিত্য কর্ম। না এঘটনায় আমরা মন খারাপ করবোনা, আমরা দুঃখিত হবোনা, কারণ এরা সবাই সন্ত্রাসী মুসলিম, আপনি আমিতো সন্ত্রাসী নই তাইনা?! আমরাতো ভালো মুসলিম, মার্কিন সার্টিফায়েড সভ্য মুসলিম, জান্নাত আমাদের নিশ্চিত!

কথা প্রসঙ্গে এক ভাই বলছিলেন, আজকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলী বাহিনী যে হত্যা, ধ্বংশলীলা চালাচ্ছে। এর অর্ধেকও যদি মুসলিমরা করতো তবে বিশ্বব্যাপী কেমন তোলপাড় শুরু হতো! গেলো গেলো করে ইহুদী খৃস্টান মিডিয়া এবং আরব রাজা-বাদশারা তেড়ে আসতোনা? মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের চোখের পানি নাকের পানি এক হতোনা?!

অনেকেই মনে করছেন আমরা শুধু সামরিক দিক হতে পিছিয়ে আছি, আজকে যদি আমরা অস্ত্র শক্তিতে বলিয়ান হই তবে মুসলিমদের এই সমস্ত সমস্যা থাকবেনা। কিন্তু না, আমরা পিছিয়ে আছি সবগুলো সেক্টরেই, অর্থনীতি, রাজনীতি, সামরিক, সাংস্কৃতিক, প্রচার মাধ্যম থেকে শুরু করে সবগুলো সেক্টরেই আমরা মার খাচ্ছি।

যুদ্ধাস্ত্রের রুপান্তর ঘটেছে, এখন আর শুধুমাত্র বারুদের মাঝে যুদ্ধাস্ত্র সীমাবদ্ধ নেই। মিডিয়াই নিয়ন্ত্রণ করছে বিশ্ব। ফিলিস্তিন-ইসরাইলের লড়াইতে মুসলিমরা টুইটার যুদ্ধে বিজয় লাভ করেছে, আমরা পরিতৃপ্ত্ব, আহ্লাদিত। কিন্তু এই মিডিয়াটিকে আমরা ততদিনই ব্যবহার করতে পারবো যতদিন এর নিয়ন্ত্রকরা আমাদেরকে ব্যবহার করতে দিবে। তারা যখন প্রয়োজন বোধ করবে আমাদের আইডি এবং হ্যাশ ট্যাগগুলো রিমুভ করে দিবে, যেমনি ভাবে আজ বন্ধ করে দেয়া হলো হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসসাম বিগ্রেডের টুইটার একাউন্ট।
প্রয়োজন নিজস্ব মিডিয়া, বিকল্প মিডিয়া।

লেখাঃ মিডিয়া যুদ্ধ
©শামীম রেজা
২০/০৭/২০১৪

Post Comment

ব্যস্ত কাব্য


ব্যস্ত আমি, ব্যস্ত ভীষণ, ব্যস্ত সীমাহীন,
ব্যস্ত বলে কাজ না করে ঝিমাই সারাদিন।
কাজের চাপে ঘুম হবেনা, হচ্ছে বড় ভয়,
তাইতো ঘুমাই সকাল দুপুর, হচ্ছে ঘুমের জয়।
কাজযে অনেক তাইতো ভেবে, নামাজ করি সর্ট,
সিজদা এবং রুকু গুলো ফট ফটা ফট, ফট।
কোন কাজে মন বসেনা ব্যস্ত আমি তাই,
ব্যস্ত বলে যাইনা কাজে, কাজের সময় নাই।
ব্যস্ততাতে যায়না খাওয়া, স্বাস্থ্য হবে শেষ,
তাইতো খেলাম দিনে রাতে, খাচ্ছি আহা বেশ!
দেখ, আমি ব্যস্ত বলে পড়ছিনাকো বই,
ব্যস্ত বলে হচ্ছেনা কাজ, অলস আমি নই।

কবিতাঃ ব্যস্ত কাব্য
© শামীম রেজা
১৯/০৭/২০১৪

Post Comment

বিদায় শিবির


না, অনেক হয়েছে, আর না! এই শিবিরের সাথে আমি আর নেই। অনেকতো করলাম, সেই শৈশব, কৈশর হতে শুরু করে তারুণ্যের সোনা ঝরা দিনগুলো একে একে সব বিলিয়ে দিলাম শিবিরের জন্য। লাভ কি হলো! কি পেয়েছি শিবির করে! আমার মতো হাজারো তরুণ তাদের জীবনের সব চাইতে মূল্যবান সময় ব্যয় করেছে শিবিরের পেছনে। ফলাফল?

সেদিন দেখা করলাম স্থানীয় জামায়াতের দায়িত্বশীলের সাথে, তিনিই ফোন করেছিলেন। আমার সম্পর্কে নাকি কি কি শুনেছেন তাই জানতে চাইছিলেন। অকপটে স্বীকার করলাম, যা শুনেছেন ঠিকই শুনেছেন আমি আর এই শিবিরের সাথে নেই। দায়িত্বশীল ভাই দেখলাম হেব্বি খুশি হয়ে গেলেন, আমার এই সিদ্ধান্তের সাথে তিনিও একমত। হাতে একগাদা বই, রিপোর্ট আর পরিচিতি ধরিয়ে দিলেন।

ওহ! একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, ছাত্র জীবন শেষ হয়ে গেলে কেউ আর শিবিরের সাথে থাকতে পারেনা। শিবিরতো আর আদু ভাইদের সংগঠননা, রেজাল্ট পাবলিশ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে অটোমেটিক শিবিরের খাতা থেকে নাম কেটে যায়। আমারও ছাত্রজীবন শেষ হয়ে গেছে। শিবিরের সাথে থাকবো কি করে?

উপরে যে কথা বলছিলাম, শৈশব কৈশর হতে শুরু করে তারুণ্যের সোনালী দিনগুলো ব্যায় করেছি শিবিরের পেছনে, বিনিময়ে কি পেয়েছি?
আলহামদুলিল্লাহ, বিনিময়ে আমি ইসলাম পেয়েছি। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি ছাত্রের জীবনে আল্লাহর বিশেষ রহমত। আমি ইসলাম শিখেছি শিবিরের কাছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জিয়ার আদর্শ, মুজিবের আদর্শ কিংবা মার্কসের আদর্শের পরিবর্তে মুহাম্মদ (সঃ) এর আদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা আমি শিখেছি শিবিরের কাছে।

শিবির আমাকে শিখিয়েছে মানব রচিত তন্ত্রমন্ত্রকে পদদলিত করে আল্লাহর জমিনে একমাত্র আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করলেই হবে মানবতার মুক্তি। সরাসরি কোরআন হাদিস হতে জ্ঞান অর্জনের প্রেরণা যুগিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেখানে বাতিলের চাকচিক্যময় জীবনের হাতছানি, সেখানে শিবির দেখিয়েছে নিয়ন্ত্রিন আলোকিত পথের দিশা।

এদেশের কলেজ-ভার্সিটির চত্ত্বরে প্রথম আজান দিয়েছে ছাত্রশিবির। মার্ক্সবাদ-মাওবাদের মরিচিকার পেছনে ছুটন্ত ছাত্রদের মাঝে ইসলামের নিয়ামত নিয়ে হাজির হয়েছে আলোকিত সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির।

আমি আর শিবিরের সাথে নেই, মুরুব্বি সংগঠন জামায়াতে যোগ দিয়েছি।

লেখাঃ বিদায় শিবির
© শামীম রেজা
১৭/০৭/২০১৪

Post Comment

পথভ্রষ্ট জাতি

বিশ্বকাপ ফাইনাল উপলক্ষে বিশাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো আর্জেন্টিনা সমর্থকরা। এলাকার ঘরে ঘরে গিয়ে চাঁদা তুলেছে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা। পাশের এলাকাতেও শুনলাম গরু কেনা হয়েছে। বিরানী রান্না হবে, উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে, বিরানীর মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর চারিদিক।

ঠিক একই মূহুর্তে ফিলিস্তিনের জীর্ণ কুটিরে অভুক্ত পিতৃহীন শিশু ভয়ে আতঙ্কে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে জানতে চাইছে “মা, আজকে রাতেই কি আমরা মরে যাবো?” ইসরাইলি বিমান থেকে ফেলা হচ্ছে ফসফসার বোমা, গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বাড়িঘর। হাসপাতাল খালি করে দেয়ার নোটিশ জারি করা হয়েছে, নইলে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হবে। চিকিৎসা নিতে দেয়া হবেনা আহত-মূমুর্ষু ফিলিস্তিনিদের। বর্বর ইহুদীরা পাহাড়ের উপর চেয়ার পেতে বসে ইসরাইলি বিমানের বর্বর বোমা হামলার ফলে প্রজ্বলিত আগুনের দৃশ্য উপভোগ করছে।

যে ছেলেগুলো আর্জেন্টিনা কিংবা জার্মানির জন্য এতো বিশাল বিপুল আয়োজন করেছে সেই ছেলেগুলো মুসলিম, আবার যে শিশুগুলো ফিলিস্তিনে নিহত হচ্ছে সেই পরিবারটিও মুসলিম। যে ছোট্ট শিশুটি ইসরাইলের বিমানের গর্জন শুনে ভয়ে আতঙ্কে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরছে সেই শিশুটিও মুসলিম।

এক আহত ফিলিস্তিনি শিশুর কথা শুনেছিলাম যে কান্নারত অবস্থায় বলছিলো “আমি আল্লাহকে সব বলে দিবো”। এই শিশুটি যদি সত্যি সত্যিই আল্লাহকে সব কিছু বলে দেয়, তবে সে কি বলবে? ইহুদীদের বর্বরতার বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে অভিযোগ জানাবে?
আমারতো তা মনে হয়না, আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এই শিশুটি তার প্রভুর নিকট যখন অভিযোগ জানাবে তখন বলবে, “হে রহমানুর রহিম, যখন ইসরাইলি সৈন্যরা আমাদের উপর বোমা নিক্ষপ করছিলো, যখন তারা আমাদের বাড়িগুলো গুড়িয়ে দিচ্ছিলো, যখন তারা আমাদেরকে হত্যা করছিলো, ঠিক তখনি বিশ্বের অপর প্রান্তে আমাদের মুসলিম ভাইয়েরা বিশ্বকাপ খেলার উন্মাদনায় মেতে ছিল, তারা ঢোল-বাদ্য সহকারে বিরানীর উৎসব করছিলো, তুমি এর বিচার করো মাবুদ”!

যে চল্লিশ হাজার টাকা ব্যয় করে বিরানীর উৎসব করা হোল, যে গরুটি জবাই করে ঢোল পিটিয়ে সাময়ীক উত্তেজনায় একটি রাত পার করা হলো সে টাকা দিয়ে একটি মুসলিম পরিবারের দারিদ্র বিমোচন করা সম্ভব হতো।
একটি অভাবী পরিবারকে রিক্সা কিনে দেয়া যেতো, একজন নারীকে সেলাই মেশিন কিনে দেয়া যেতো। অথবা সেই গরুটি কোন একটি দরিদ্র পরিবারের দারিদ্র বিমোচনের অবলম্বন হতে পারতো।

এক ব্যক্তি বলছিলো, আমি ঘুষ খাইনা, আসলে তাকে ঘুষ দেয়াই হয়না সে খাবে কি করে। জঙ্গলে গিয়ে বৈরাগী জীবন যাপন করে নফসকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ। কিন্তু লোকালয়ে পাপাচারে পরিপূর্ণ সমাজে বসবাস করেও নফসকে নিয়ন্ত্রণ করাই হচ্ছে তাকওয়ার পরিচয়।
ফুটবল বিশ্বকাপ ঝড়ে আক্রান্ত জাতি নিজের ভাই হত্যার সময়েও মেতে ছিল বিপুল উল্লাসে। গতকাল বিশ্বকাপ ফুটবল শেষ হয়েছে, আজকে থেকে হয়তো অনেক অনলাইন এক্টিভিস্ট ফিলিস্তিনের পক্ষে কী-বোর্ড ধারণ করবেন, তারা আর ফুটবল নিয়ে মেতে থাকবেননা, তারা ভালো হয়ে যাবেন। ভালো না হয়ে উপায় আছে! বিশ্বকাপতো শেষ হয়ে গেছে।

সময় হয়েছে আত্মপর্যালোচনার, আমরা যে নিজেদের মুসলিম দাবী করি, আমরা যে নিজদের ইসলামী আন্দোলনের কর্মী দাবী করি, আমরা যে নিজেদেরকে রাসূলের সৈনিক দাবী করি, আমরা আমাদের দাবীতে কতটা সৎ?

লেখাঃ পথভ্রষ্ট জাতি
© শামীম রেজা
১৪/০৭/২০১৪

Post Comment

ইসলামী বিপ্লবের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি।

বিশ্বব্যাপী খিলাফত প্রত্যাশী গ্রুপগুলো মূলত দুইভাগে বিভক্ত। এক ভাগে রয়েছে যারা মনে করে অস্ত্রই সকল ক্ষমতার উৎস এবং এখানে জনমতের তোয়াক্কা করার কিছু নেই, জনগণকে পিটিয়ে পিটিয়ে খিলাফত গিলতে বাধ্য করা হবে। আরেকভাগে রয়েছে গণতন্ত্রিক পন্থায় খিলাফত প্রত্যাশীরা, অস্ত্র ধারণ করাকে এই গ্রুপ হারামের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে।
এই দুটি মূল ধারার বাইরেও আরেকটি ধারা রয়েছে তারা ক্যান্টনমেন্ট বাদি, তাদের ধারনা ক্যান্টমনেটের আর্মি অফিসাররা তাদের কথায় মুগ্ধ হয়ে খিলাফতের মোয়া নিয়ে হাজির হয়ে যাবে।

বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ এলাকা যেমন ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্থান, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া সহ যেসব সংঘাতপূর্ণ এলাকা রয়েছে সেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা হচ্ছে চরমপর্যায়ের আহম্মকি। পরিস্থিতি বুঝে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা ছাড়া বিজয়ী হওয়া অসম্ভব।

আবার জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র্ক্ষমতা পরিবর্তন করা যায় এমন এলাকাতে সশস্ত্র বিল্পবের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে জনগণের উপর জুলুম। একটি শান্তিপূর্ণ জনপদকে যুদ্ধের ধ্বংশলীলার মধ্যে ঠেলে দিয়ে জনগণের জানমালকে হুমকিগ্রস্থ করা আর যাই হোক, বিচক্ষণতার মধ্যে পড়েনা। শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। যুক্তি যেখানে পরাজিত অস্ত্র সেখানে মূল হাতিয়ার। ইসলাম কোনো দূর্বল মতবাদের নাম নয়, ইসলাম হচ্ছে একটি শক্তিশালী জীবনব্যবস্থা, জনগণকে ইসলাম বোঝাতে সক্ষম হলে তারা স্বেচ্ছায়ই খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সমর্থন যোগাবে।

বিশ্বের শান্তিপূর্ণ এলাকাতে যেখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে সেসব স্থানে দেখা যায় ইসলামী গণতান্ত্রিক দলগুলো অস্ত্র ধারণ করাকে হারাম পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। অস্ত্রের ডিলারশিপ ইহুদী-খৃস্টানদের এজেন্টের হাতে তুলে দিয়ে খালি হাতে ইসলামী বিপ্লবের সুখ স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। এসব ইসলামী সংগঠনের ধারণা, দেশের বিপুল বিশাল জনমত যদি খিলাফত ব্যবস্থার পক্ষে ভোট প্রদান করে তবে কোনো অস্ত্র শক্তি সেই জনমতকে প্রত্যাক্ষাণ করতে পারবেনা। কিন্তু এসব ইসলামী দলগুলো একথা ভাবনাতেই আনেনা যে, ডাকাতের হাতের অস্ত্র ততক্ষণ পর্যন্ত শান্ত থাকবে যতক্ষণ আপনি ডাকাতি কাজে বাঁধা প্রদান করবেননা, আর যখনই আপনি তাঁর ডাকাতিতে বাঁধা প্রদান করবেন তখন আপনার গলায় ছুড়ি চালাতে ডাকাত দল এক মূহুর্ত দ্বিধা করবেনা।
বাতিলপন্থীরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ততদিন পর্যন্ত সমর্থন করবে যতদিন পর্যন্ত জনমত তাদের পক্ষে থাকবে। আর যখনই জনমত খিলাফতের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে ঠিক তখনি এসব ডাকাত দলের অস্ত্র হকের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে। তারা কিছুতেই খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে দিবেনা। আমাদের সামনেতো উদাহরণ রয়েছেই, সাম্প্রতিক মিশর, তিউনিশিয়া, ফিলিস্তিনে হামাস, তুরস্ক, আলজেরিয়া। এসব রাষ্ট্রগুলোতে যখনই খিলাফতপন্থী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তখনই বাতিলের অস্ত্র ইসলামের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে।

মিশরের নিরস্ত্র ইসলামপন্থী হাজার হাজার জনতা খালি হাতে বাতিলের বুলেটে শহীদ হয়ে যাচ্ছে। সামান্য ইটের টুকরো দিয়েই গড়ে তুলছে প্রতিরোধ। ইটের টুকরো দিয়ে বাতিলের মোকাবেলা যদি যায়েজ হয় তাহলে আগ্নেয়াস্ত্র নয় কেনো? একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে ব্রাদারহুডের সে রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছিলোনা, যার কারণে অস্ত্রের মোকাবেলা ইট দিয়েই করতে হচ্ছে। আর এখন যদি ব্রাদারহুড সীমিতি সামর্থ দিয়ে অস্ত্র ধারণ করে তবে তাদের এতোদিনের গোছানো ময়দান ধুলায় মিশে যাবে।
কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে অন্য যায়গাতে, এতোদিন কেনো ব্রাদারহুড প্রস্তুতি নেয়নাই? এপ্রশ্নের জবাব কেউ দিবেনা। সবাই ক্যান্টনমেন্ট বাদীদের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, আসমান থেকে ফেরেশতা নাজিল হয়ে বাতিলের মোকাবেলা করবে।

আগামী কাল যদি বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে নির্বাচিত হয়, তবে সেনাবাহিনী সংসদ ভবন থেকে জামায়াতকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। জামায়াত কি প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এমন পরিস্থিতির মোকাবেলায়? কুকুরের জন্য মুগুর রেডি করা না হলে কামড় খেতেই হবে সে আপনি যতই ভদ্রলোক হননা কেনো।

আমার মনে হয় বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক ইসলামী রাজনৈতিক দলসমূহের জন্য সময় এসেছে ঘুড়ে দাড়াবার, বারুদের ডিলারশীপ একচেটিয়াভাবে ইহুদি খৃস্টানদের এজেন্টদের কাছে ছেড়ে না দিয়ে নিজেদের জন্যও কিছু জমা করার। বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক ইসলামী দল সমূহের রয়েছে কোটি কোটি কর্মী সমর্থক, তাদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করলে আখেরে নিজেরাই লাভবান হবে। অন্ততপক্ষে ব্রাদারহুডের মতো খালি হাতে জীবন দিতে হবেনা, আলজেরিয়া, তুরস্কের মতো সেনাবাহিনীর হাতে উচ্ছেদ হতে হবেনা, তিউনিসিয়ার মতো সামান্য হুমকিতেই ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হবেনা। আমি বলছিনা প্রকাশ্যেই সব কিছু করতে হবে, নফল ইবাদততো আমরা গোপনেই করে থাকি, একটা ফরজের জন্য নাহয় গোপনে প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম!

ফিলিস্তিনের হামাস এক্ষেত্রে দারুণ উদাহরণ হতে পারে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্রাঞ্চের পাশাপাশি হামাসের রয়েছে সশস্ত্র সামরিক বিভাগ। ভদ্রলোকের সাথে ভদ্রলোকী আপ্যায়ন করতে হবে, আর কুকুরের আপ্যায়নের জন্য মুগুর রেডি রাখতে হবে। প্রয়োজন হতে পারে যেকোনো সময়।

লেখাঃ ইসলামী বিপ্লবের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি।
© শামীম রেজা
১১/০৭/২০১৪

Post Comment