টেলিফোন রঙ্গ


বঙ্গভবনে রঙ্গ মোবাইলে, কথা হইলে সারা,
হাকিলেন ম্যাডাম, কই সকলে, চামচা আছিস কারা?
ঘষিয়া হস্ত, চামচা সমস্ত, কোরাস করিয়া কয়,
জয় ভারত মাতাকি জয়!, জয় হাসিনা জয়।
নাহিদ, ইনু, মেনন,
কথা বলেছি কেমন?
তা ম্যাডাম বলেছেন মহা বেশ!
ফান্দে পড়িয়া, খালেদা জিয়া, নত হইবে অবশেষ।
আপনি হাজার ডিগ্রি ধারী, খালেদা ম্যাট্রিক পাশ
দেখিলাম তিনি, গালিতে না পারিয়া, করিতেছেন হাস-ফাঁস।
সাকা’র যোগ্য প্রেমিকা আপনি, আপনি মুজিব কন্যা।
মুখের ভাষায় আপনার যোগ্য, খালেদা কভু হননা।
হাসিয়া মুচকি, বাজিয়ে চুটকি, শেখ হাসিনা কয়,
বিজয় আমার হয়েছে বটে, তারপরেও ভয় হয়!
ডাকো সমস্ত টিভি ক্যামেরা, ডাকো সমস্ত দালাল
করিয়া প্রচার ফোনের কথা, টাকা করিবে হালাল।

করিয়া প্রচার ফোনের কথা, দালাল মিডিয়া কয়।
জয় ভারতের জয়, জয় হাসিনার জয়।
শুনিয়া সকল ঝগড়া বিবাদ, ছোট্ট শিশু হাসে,
ঝগড়াটে ঐ মিথ্যেবাদী, ক্ষমতায় কেমনে আসে!
অন্ধফকির ঝোপের ধারে, জোনাক পোকা গোনে,
বয়রা নারী নষ্ট ফোনে, রিঙের আওয়াজ শোনে।

শুনিয়া সকল আলোচনা, কাল নাগিনী তুলিয়া ফনা, ইনুরে ডাকিয়া কয়।
হানিপ্যারে লাত্থি দিছি, তোকে কেনো নয়?
ওরে মখা ও সাহারা,
আমি এখন দিশাহারা।
হারাই যদি ক্ষমতা এবার, জনতা ভাঙিবে হাড় !
ঘুমের ঘোড়ে শব্দ শুনি, মার, মার, মার।
বলিলেন সাহারা, হারিলে গোহারা, চিন্তার কিছু নাই,
কানে ধরিয়া, নাকে খত দিয়া, দাদাদের দেশে যাই।

৩০অক্টোবর২০১৩

Post Comment

জনতার ধারণায় শিবির


১। আমার এক রিলেটিভ কট্টর আওয়ামিলীগ, জামায়াত শিবির মানেই রগ কাটার দল এটা তার বদ্ধমূল ধারণা। আলোচনা প্রসঙ্গে একদিন বলছিলাম, শিবির রগ কাটে আপনাদের এই ধারণা ভুল। সাথে সাথেই তিনি জবাব দিলেন, তুমি শিবিরে ঢুকছো কয়দিন হয়? ধীরে ধীরে দেখবা, সব বুঝতে পারবা!
জন্ম থেকেই যেই পোলায় শিবির করে, সে শিবির সম্পর্কে কিছুই জানেনা, আর যে জীবনে কোনো দিন শিবির করেনাই, সে শিবির সম্পর্কে বহু কিছু জানে, হায়রে বাঙালী!

২। শিবিরের একটা জাদুর বাক্স আছে, ওই যাদুর বাক্সে সব সময় শিবিরের একটা টিম অস্ত্র-গোলাবারুদ নিয়ে রেডি থাকে। সারাদিন তাদের কোনো কাজ নেই, তারা শুধু মদ গাজা খায়, আর অভিযানের নির্দেশ আসলে অভিযানে ঝাপিয়ে পড়ে।
যেকোনো সংঘাত সংঘর্ষে শিবিরের সাধারণ কর্মী-সাথীরা অংশ গ্রহণ করেনা। ওই যাদুর বাক্সের কারনেই শিবিরের সাথে কেউ পারেনা!

৩। পোলায় ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, ক্লাসের মধ্যেও ভালো ছাত্র। ছোট বড় সবাইকে সালাম দেয়, ধর্মে-কর্মে এগিয়ে, হেব্বি স্মার্ট! তবে প্রব্লেম হইলো গিয়া, পোলায় শিবির করে।

৪। চট্টগ্রামের লোকেদের ভাষায়, “চিটাগাংয়ের শিবির গুলো খুব ভদ্র, তবে মিডিয়ার কথায় বুঝলাম, রাজশাহীর শিবিরগুলো ডেয়ারিং, একেকটায় বিশাল বিশাল সন্ত্রাসী”।
রাজশাহীর লোকেদের ভাষায়, “রাজশাহীর শিবিরগুলো খুব ভদ্র, তবে মিডিয়ার কথায় বুঝলাম, চট্টগ্রাম আর সিলেটের শিবিরগুলো ডেয়ারিং, একেকটায় বিশাল বিশাল সন্ত্রাসী”।
বাকি জেলাগুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

৬। বর্তমান কেন্দ্রীয় সহকারী সমাজ কল্যান সম্পাদক আবসার উদ্দীন শাহীন ভাই তখন চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের অর্থ সম্পাদক। একদিন কথা প্রসঙ্গে তার ক্লাসফ্রেন্ড নোবেল ভাই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘শাহীন, তুইতো বহুত দিন ধরে শিবির করস, তুই শিবিরের কি?’
শাহীন ভাই বললেন ‘সদস্য’।
নোবেল ভাইতো তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে করতে শেষ, ‘ধুর ব্যাডা, কি শিবির করস! এতো দিন শিবির করেও এখন পর্যন্ত সদস্যই রয়ে গেলি, সাথী হইতে পারলিনা!’
শাহীন ভাই আক্ষেপ করে বলছিলেন, “শামীম ভাই, দুঃখের কথা কাকে বলি, এখনো সদস্যই রয়ে গেলাম, সাথী হইতে পারলামনা!”

২৯অক্টোবর২০১৩

Post Comment

মেয়েটি বিয়ের শিকার হইছে

আমরা যারা নিয়মিত খবর পড়ি তারা শিকার শব্দটির সাথে খুব বেশি পরিচিত, যেমন প্রতারণার শিকার, নির্যাতনের শিকার, ধর্শনের শিকার, হত্যাকান্ডের শিকার। অর্থাৎ নেগেটিভ অর্থেই শিকার শব্দটিকে ইউজ করা হয়।
ইদানিং কালে বিয়ের ক্ষেত্রেও শিকার শব্দটি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়েছে, সেদিন একটি বেসরকারী সংস্থার জড়িপ প্রতিবেদন পড়লাম, সংবাদটির শিরোনাম ছিলো “প্রতিবছর ১৯লাখ মেয়ে বাল্য বিবাহের শিকার”।
উপরের সংবাদটি পড়লে মনে হবে বাল্য বিবাহ একটি জঘন্য ঘটনা, এবং এই ঘটনার মাধ্যমে ওই মেয়েগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

দুইটি কেস স্টাডি বলছি,
এক) ছেলে-মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে, না এটা বাল্যবিবাহ ছিলোনা, সরকারী হিসেবে উপযুক্ত বয়সের বিয়ে। বিয়ের দিন-তারিখ সব ওকে, ছেলেপক্ষ বিয়ের বাজার করে রেডি, এরই মধ্যে ছেলের নম্বরে একটি কল আসলো, কেউ একজন তার সাথে দেখা করতে চায়, অনেক কাহিনী করার পরে হবু-বর দেখা করতে রাজি হলো। দেখাকারী আর কেউ নয়, কনের সাবেক প্রেমিক, একগাদা ডকুমেন্ট নিয়ে হাজির! তারা এরপূর্বে গোপনে বিয়ে করেছিলো।
দুই) বড়যাত্রী বাহি মাইক্রোবাস দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে, পেছন থেকে ধাওয়া করেছে একটি মটর সাইকেল, সবাই ভাবছে নিশ্চই ছিনতাইকারী হবে। হঠাৎ গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে একটি ইটের টুকড়ো ঢুকলো গাড়ির ভেতরে, ইটের সাথে বাধা কিছু কাগজপত্র। এই মেয়েরও গোপন বিয়ে হয়েছিলো, সাবেক প্রেমিকের সাথে।

উপরের দুইটি ঘটনার বাহিরেও প্রতিদিনের খবরের কাগজে আমরা নানা রকমের খবর পড়ে থাকি, গতকাল একটি নিউজ পড়লাম কালিয়াকৈড়ে আবাসিক হোটেল হতে ৩৩জোড়া নারী পুরুষ গ্রেপ্তার, তাদের মধ্যে কলেজ ছাত্রীও রয়েছে। এমন ঘটনা এখন অহরহ, আপনার আশেপাশের আবাসিক হোটেলগুলোর দিকে লক্ষ রাখলে বুঝতে পারবেন সেখানে কারা যাতায়াত করে।

একটা সময় ছিলো, আমাদের নানী-দাদীদের বিয়ে হয়েছিলো ১০/১১ বছর বয়সে, কারো কারো তিন-চার বছর বয়সেই। তখন আজকের দিনের মতো এমন টিভি-মোবাইল কিংবা ইন্টারনেট ব্যবস্থা ছিলোনা, কিংবা ছিলোনা পর্ণভিডিওর মতো উত্তেজক ব্যবস্থা। তাদের চরিত্র এখনকার তরুণ-তরুণীদের চাইতে হাজার গুণ ভালো ছিলো।
কিন্তু আজকের এই ডিজিটাল যুগে বিয়ের বয়স পিছিয়ে দেয়া হলো, মেয়েদের ক্ষেত্রে-১৮ এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে-২১। বিয়ের বয়স বাড়িয়ে দেয়া হলেও মানুষের শারিরীক পরিবর্তন কিংবা চাহিদা কিন্তু থামিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নাই, তার উপর এভেইলেভল করা হয়েছে পর্ণোগ্রাফী।
ব্যাপারটি হচ্ছে, আপনাকে দিনের পরে দিন অভুক্ত রেখে আপনার সামনে বিড়ানি রেখে দেয়া হলো, বিরানী কতটা সুস্বাদু সে কথাও বর্ণনা করা হলো। সাথে সতর্কবানী, এটা তোমার খাবার নয়, তুমি যদি এটা খাও তবে তোমার গুনাহ হবে।

এবার আসি পরকীয়া সম্পর্কের দিকে, আজকে যেই ছেলে এবং মেয়েটি স্কুল/কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে এবং লিপ্ত হচ্ছে অনৈতিক সম্পর্কে তারা কিন্তু সবাই সবাইকে বিয়ে করতে পারবেনা। ফলশ্রুতিতে যেটা হবে তা হচ্ছে, বিয়ের পরেও কিন্তু অনেকেই তাদের পূর্বের জীবনের প্রেমিক-প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে, সমাজে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়বে পরিকীয়া এবং বিবাহ বিচ্ছেদ।

কল্পনা করুন, সরকার ঘোশণা দিলো, আজ হতে ১৫বছর বয়স হলেই মেয়ের বাবা-মায়েরা তাদের মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করতে বাধ্য থাকবে। তাহলে সমাজের চিত্রটা কেমন হতো?
পার্কের নিরিবিলি গাছের নিচে কিংবা ছাতার নিচে কোনো অবিবাহিত তরুন-তরুনিকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যাবেনা। অন্ধকার চাইনিজ রেষ্ট্রুরেন্টে খুজে পাওয়া যাবেনা, কোনো স্কুল/কলেজ পড়ুয়া প্রেমিক জুটিকে। বন্ধ হয়ে যাবে আবাসিক হোটেলগুলোর রমরমা ডেটিং বাণিজ্য।

সুতরাং সিদ্ধান্ত আপনার, পার্কের ছাতার নিচে কিংবা অন্ধকার চাইনিজ রেষ্ট্রুরেন্টে যেই ছেলে-মেয়েগুলো সময় কাটায় তারা কিন্তু আপনার আমার ছেলে-মেয়ে। বাল্য বিবাহের দোহাই দিয়ে তাদের তুলে দিবেন প্রেমিক পুরুষের হাতে, নাকি সঠিক সময়ে ঘোশণা করবেন শুভ বিবাহের শুভ বার্তা।

২৭অক্টোবর২০১৩

Post Comment

গদি সমাচার

যখন খুব ছোটো ছিলাম তখন মানুষের মুখে মুখে শুনতাম, ক্ষমতার গদির জন্য নাকি খালেদা-হাসিনা মারামারি করে। একটা গদির জন্য নাকি এতো এতো হরতাল-অবরোধ, খুনোখুনি। আমার শিশুমন অবাক হতো, সামান্য গদীর জন্য এতো কাড়াকাড়ি করার কি দরকার, গদিটাকি দেখতে খুব সুন্দর! বসতে খুব আরাম! অনেক বেশি তুলা ব্যবহার করা হয়, নাকি অন্য কিছুদিয়ে নরম করা হয়? তাদেরতো অনেক অনেক টাকা, এতো মারামারি না করে নতুন একটা স্বর্ণ খচিত গদি বানিয়ে নিলেইত হয়!
ধীরে ধীরে বয়স বাড়লো উন্নত হলো বুদ্ধি-বিবেক, দেখলাম গদির কি ক্ষমতা! এই গদির জোড়েই চোখের পলকে সংবিধান হতে বিসমিল্লাহ তুলে দেয়া যায়, রাস্ট্রধর্ম ইসলাম উৎখাতের ঘোশণা দেয়া যায়, আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অস্বীকার করা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা যায়, মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ করা যায়, ভারতের কাছে বিনামূল্যে দেশ উজার করে দেয়া যায়। আহা, গদির কি শান!

দেখলাম শুধু হাসিনা-খালেদাই নয়, গদির দিকে লোভ আছে আরো অনেকেরই, তাদের মধ্যে জামায়াত আছে, এরশাদ আছে, আছে আরো অনেকেই। এদের মধ্যে জামায়াত সহ ইসলামপন্থী আরো কিছু দল গদি চায় ভিন্ন কারণে, তাদের ইচ্ছে আরাম করে গদিতে বসে আঙুলের ইশারায় দেশে কোরআনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে, দেশকে এগিয়ে নেয়া হবে খিলাফতের স্বর্ণযুগে।

একটি দল আছে তারা গদীকে ঘৃণা করে, তাদের দৃস্টিতে ওই গদি হচ্ছে নাপাক! যারা গদীর লোভ করে তারা ইসলামের দৃস্টিতে ঘৃণীত। গদীর চেয়ে মসজিদ উত্তম, দেশের শাসন ক্ষমতা শয়তানের হাতে তুলে দিয়ে এরা মসজিদ আবাদ করে! শয়তান দেশের মানুষের হাতে জাহান্নামের টিকেট ধরিয়ে দিলেও এই দলের কিছু যায় আসেনা। এই দলের নিকট গদিপ্রেমী খিলাফতপন্থীদের চাইতে বরং কাফের মুশরিকরা উত্তম! জামায়াত শিবিরকে পারলে তারা গলাধাক্কা দিয়ে মসজিদ হতে বের করে দেয়।

আরেকটি দল আছে তারাও গদি চায় তবে একটু ভিন্ন স্টাইলে, খালেদা হাসিনা টাইপের কিংবা রাসূল (সঃ) এর সুন্নতী স্টাইলে নয়, তারা অস্ত্রের মুখে দেশের মানুষের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে গদিতে বসতে চায়। রাসূল (সঃ) মদিনার জনগনের ইচ্ছেতে/আনুগত্যে ক্ষমতায় বসেছিলেন, আর এরা অস্ত্রের জোড়ে ক্ষমতায় বসে জনগণকে আনুগত্য করতে বাধ্য করবে।

সর্বশেষ যে দলের কথা বলবো তারাও গদি চায়, তবে কিভাবে চায় সেটা তারা নিজেরাও জানেনা। তাদের ধারণা দেশের আনাচে কানাচে, পথে ঘাটে এবং বিপনী বিতানে বোমা ফাটিয়ে মানুষ মারলেই গদী পাওয়া যাবে। এই দলটি মশা মারার জন্য কয়েলের পরিবর্তে একে ফোর্টিসেভেন ইউজ করতে ইচ্ছুক। তারা কাউকে হাতের ইশারা করার পরিবর্তে বন্দুকের গুলি দিয়ে ইশারা দিতে আগ্রহী।
রাসূল (সঃ)এর কর্মপদ্ধতী ছিলো, অবস্থাভেদে যেখানে আলোচনার প্রয়োজনবোধ করেছেন সেখানে আলোচনা, যেখানে অবরোধের প্রয়োজনবোধ করেছেন সেখানে অবরোধ, যেখানে সন্ধি চুক্তির প্রয়োজনবোধ করেছেন সেখানে সন্ধিচুক্তি এবং যেখানে যুদ্ধের প্রয়োজনবোধ করেছেন সেখানে যুদ্ধ করেছেন।
কিন্তু এই শেষোক্ত দলটি রাসূল (সঃ) এর কর্মপদ্ধতী বাদ দিয়ে সবজায়গাতেই বোমাবাজি এবং হত্যাকান্ডের মাধ্যমে গদি চায়।

দেশে গোলযোগ শুরু হয়েছে, হাসিনার গদি নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে বিএনপি-জামায়াত সহ ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল ১৮টি দল। একদিকে ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল শক্তি অন্যদিকে হাসিনার সাথে আছে আল্লাহদ্রোহী নাস্তিক্যবাদী শক্তি।
এই যুদ্ধে বিএনপি চায় ক্ষমতা, জামায়াত চায় ইসলামে বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে। আর আওয়ামী-বাম শক্তি চায় দেশ হতে ইসলাম নির্মূল করতে।

সিদ্ধান্ত আপনার, এই গদির লড়াইয়ে আপনি কোন পক্ষে, মুসলিম নাকি আওয়ামিলীগ?

২৬অক্টোবর২০১৩

Post Comment

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রতিরক্ষাবাহিনীর প্রতি আহ্বান।

পুলিশঃ
পুলিশ ভাইয়েরা, দলীয় সরকারের চাপের মুখে জামায়াত-শিবিরের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করেছেন, পঙ্গু করে দিয়েছেন অসংখ্য ভাইকে। শত শত মায়ের বুক খালি করেছেন, নিজের সন্তানকে একজোড়া নতুন জুতো কিনে দিতে গিয়ে, বাবা হারা করেছেন শত শত সন্তানকে। নিজ স্ত্রীকে নতুন শাড়ি কিনে দিতে গিয়ে, স্বামী হারা করেছেন শত শত নারীকে।
আমরা আপনাদের ক্ষমা করে দিতে পারি, কিন্তু ওই সন্তান হারা মা, স্বামী হারা বোন এবং বাবা হারা শিশুটি’র চোখের পানি আপনাদের ক্ষমা করবে?
ডেডলাইন পঁচিশে অক্টোবর, তওবা করে মুসলিম হওয়ার সুযোগ এখনো রয়ে গেছে, আগামী কাল আপনাদের ভূমিকাই প্রমান করবে আপনারা কি মুসলিম নাকি আওয়ামিলীগ।
জীবনে অন্ততপক্ষে একবার জামায়াত-শিবিরকে অনুরসরণ করুন। জামায়াত-শিবিরের ভাইয়েরা ঘর হতে বের হওয়ার আগে মনে মনে আত্মীয় স্বজনের কাছ হতে চিরবিদায়ের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়। আগামীকাল যদি আপনাদের স্বজনদের চোখে পানি দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে সেটা আপনাদের কর্মফল ছিলো।

র‍্যাবঃ
একসময় জনগনের বন্ধু বর্তমান আওয়ামিলীগের ক্যাডার সংগঠন কিংবা রক্ষীবাহিনীর আধুনিক সংস্করণ। রক্ষিবাহিনীর পরিণতি ভুলে গেলে অপেক্ষায় থাকেন, পঁচিশ অক্টোবর আপনাদের ভূমিকাই আপনাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে, ইনশাআল্লাহ্‌।

বিজিবিঃ
আমরা জানি, দেশপ্রেমিক বিডিআরকে পিলখানায় কবর দিয়ে, ভারতীয় বিএসএফের জুতো পরিস্কারের জন্য আপনাদের সৃস্টি করা হয়েছে। সীমান্তের কাটাতাড়ে ফেলানীরা ঝুলছে, আর আপনারা “আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম” হয়ে লাশ সৎকারের দায়ীত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বীরত্ব প্রদর্শন করছেন নিরস্ত্র বাংলাদেশীদের হত্যা করে।
মনে রাখবেন, আমরা হিজড়া বিজিবি নয়, বিডিআরকে ভালবাসি সীমান্তে তাদের অসামান্য অবদানের জন্য। আগামীকাল পঁচিশে অক্টোবর আপনাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে, বাংলাদেশে বিজিবি থাকবে নাকি বাধ্যতামূলক অপসারণের পরে পুণরায় চালু হবে বিডিআর। বাংলাদেশের সীমান্তের নিরাপত্তায় আমরা আওয়ামিলীগ নয়, মুসলিম বাহিনী দেখতে চাই।

সেনাবাহিনীঃ
মনেপরে সেই দিনগুলো? লুঙ্গিপড়া, খালি পায়ের একদল সৈনিক মার্চ করে যাচ্ছে, “লেফট-রাইট, লেফট রাইট”, কিংবা আওয়ামিলীগের ছ্যাচড়া সন্ত্রাসীরা বিয়ের অনুষ্ঠান হতে অপহরণ করার চেস্টা করছে সেনা অফিসারের সুন্দরী স্ত্রীকে!
মনে পরে? অপহরনে বাধা দেয়ায় চাকরিচ্যুত হওয়া সেনাঅফিসারদের কথা! কিংবা পিলখানায় শায়ীত সিনিয়র সহকর্মীদের হাসিমাখা মুখের প্রতিচ্ছবি?
আপনারা ছিলেন বিলুপ্ত প্রজাতি, শেখমুজিব আপনাদের প্যান্ট কিনে দেয়ার প্রয়োজনবোধ করেনাই,
লুঙ্গিপড়ে, খালি পায়ে আপনারা পিটি-প্যারেড করতেন। আপনাদের জন্য উপহারের কামান আনা হলেও গোলা আনা হয়নাই। আপনারা ছিলেন নখদন্তহীন বাঘ! অন্যদিকে স্যুটেড ব্যুটেড রক্ষীবাহিনী আপনাদের চাইতেও অধিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতো।
ইতিহাস ভুলে যাবেননা, যদি ভুলে যান, জনগণ সময়মতো ইতিহাসের শিক্ষা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবে ইনশাআল্লাহ্‌।

বিচারপতিঃ
রেনেসার গানটি মনে পরে গেলো, “বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা”

আওয়ামিলীগঃ
কোন পরিচয় আপনাদের কাছে প্রিয়, আওয়ামিলীগ নাকি মুসলিম? আপনাদের পরিবারের হাসি কান্না নির্ধারণ করবে আপনাদের পরিচয়।
দুঃসহ সেই পাচটি বছর আমরা ভুলি নাই, নির্ঘুম পালিয়ে বেড়ানো শীতের রাত গুলো আমরা ভুলিনাই। অসংখ্য পঙ্গু ভাই ছটফট করছে চোখের সম্মুখে, শহীদ পরিবারের আহাজারীতে আজো ভারী হয়ে আছে আকাশ বাতাস।
আপনাদের জন্য আমরা অধীর হয়ে অপেক্ষা করছি, হয় শাহাদাৎ নয়তো হুকুমত, এর বিকল্প আমাদের সামনে নেই।

২৪অক্টোবর২০১৩

Post Comment

হরতাল ভাঙচুর এবং কিছু প্রশ্নের জবাব

হরতালে গাড়ি ভাঙার ব্যাপারে একভাই প্রশ্ন করেছেন “গাড়ি ভাঙ্গার দলিল দিতে পারবেন? দলিল দেন দেখি, কোন দলিলের ভিত্তিতে মানুষের গাড়ি ভাঙ্গেন?”
প্রশ্নটি সেখানে অপ্রাসাঙ্গীক ছিলো বিধায় ভিন্ন একটি লেখার মাধ্যমে সেই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি।

বেশ কিছুদিন আগে, আমার পূর্বের একটি লেখায় বলেছিলাম, “মাদানী যুগের প্রথম দিকে মদীনার আশে-পাশে সাহাবীরা (রাঃ) বেশ কিছু হরতাল পালন করেছেন (কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলার গমন পথে হামলা এবং বাধা প্রদান)”।
আমার সেই লেখাটি পড়ে, এক ভাই ইনবক্সে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন এবং আমি সাধ্যানুযায়ী তার জবাব দিয়েছি। আশা করি আমাদের সেই কনভার্সেশন পড়লেই আজকের প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে।

Abdur Razzaque-
Sahabira to kaferder kafela akromon korto. Kintu akhon shadharon manush j khotigrostho hosse? Cng te agun lagse. Manush hortal er din chakri babsha korte parsena. Atar ki hobe? Bekkha ki?

Shamim Reja-
কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলাতে অনেক সাধারণ মানুষের ব্যবসায়ীক উপকরণ ছিলো। তারা সবাই সাহাবিদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করেননাই। কিন্তু তারপরেও কুরাইশদের সাথে বাণিজ্য পরিচালিত করার অপরাধে তারাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো।
আমাদের হরতালের দিন যারা সরকারের পক্ষ নিয়ে গাড়ি বের করবে আমরাও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো, সে সাধারণ নাকি অসাধারণ সেটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যাথা নেই।

Abdur Razzaque-
Kintu tara silo kafir pure kafir r ara to muslim. Shadharon hok r oshadharoni hok...
Ak muslimer jan mal opor muslimer kase amanot

Shamim Reja-
ইসলামী আন্দোলনের বিরোধীতাকারীরা মুসলিম নাকি অমুসলিম সেটা কি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার?

Abdur Razzaque-
Of course not

আশা করছি, ইসলামী দলগুলোর হরতালের ব্যাপারে যাদের কনফিউশন আছে তারা তাদের জবাব পেয়ে গেছেন।

২১অক্টোবর২০১৩

Post Comment

প্যারাসিট্যামলবাদী ডাক্তার এবং সশস্ত্র বিপ্লব।

এক
বাবা বিশাল ডাক্তার, চতুর্দিকে নাম-যশ/সুখ্যাতি। এতো চমৎকার তার চিকিৎসা জ্ঞান, যে রোগীর চিকিৎসা করেছেন সে রোগীই সুস্থতা লাভ করেছেন, কোনো রোগীই তার কাছ হতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাননাই। স্বাভাবিক নিয়মেই সেই ডাক্তার একদিন ইন্তেকাল করলেন।
ডাক্তারের সন্তান ভাবনায় পড়লো, অত্র অঞ্চলের এতো এতো অসহায় মানুষ এখন কারকাছ হতে চিকিৎসা লাভ করবে? অতঃপর অনেক ভেবে চিন্তে, অসহায় মানুষের দুঃখের কথা ভেবে, ছেলে সিদ্ধান্ত নিলো বাবার দায়ীত্ব নিজ কাধে তুলে নিবে। কিন্তু সেটা কিভাবে? ছেলেতো ডাক্তারী বিদ্যায় পারদর্শী নয়!!
ছেলের মনে পড়লো, কি এক রোগের জন্য তার বাবা একজন রোগীকে প্যারাসিটেমল ট্যাবলয়েড দিয়েছিলো। ছেলে সেই মোতাবেক চিকিৎসা করবে বলে ঠিক করে নিলো।
রোগী এসে বলে, মাথা ব্যাথা- রেডি ঔষধ, খাও প্যরাসিটেমল!
রোগী আসে, পেটে ব্যাথা- খাও প্যারাসিটেমল!
বুক জ্বলে-খাও প্যারাসিটেমল!
আমার গরু হারাইয়া গেছে-খাও প্যারাসিটেমল, গরু চলে আসবে!
এভাবেই চলছে তার চিকিৎসা, আর সবচাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার এই চিকিৎসায় কিছু কিছু রোগী উপকার পাচ্ছে, তারাও সুনাম করছে, ‘ডাক্তার খুব ভালো, একেবারে বাপকা ব্যাটা!!’

দুই
চৌদ্দশত বছর পূর্বে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সঃ) মক্কী জীবনে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে নির্যাতিত হলেন, অনেক সাহাবী শহীদ হলেন, কিন্তু প্রতিরোধের জন্য আল্লাহর রাসূল (সঃ) একটি খেজুরের লাঠিও হাতে তুলে নিলেননা।
মাদানী জীবনে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের সমর্থন নিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে মদীনায় ইসলামী রাস্ট্র প্রতিষ্ঠিত করলেন।
মাদানী যুগের প্রথম দিকে মদীনার আশে-পাশে সাহাবীরা (রাঃ) বেশ কিছু হরতাল পালন করলেন (কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলার গমন পথে হামলা এবং বাধা প্রদান)।
বদর, ওহুদ ও খন্দকের যুদ্ধে শত্রুর আক্রমনের মোকাবেলায় ইসলামী রাস্ট্রের প্রধান হিসেবে তিনি যুদ্ধের ঘোশণা দিলেন, এবং সর্বোশক্তি দিয়ে কাফেরদের আক্রমন মোকাবেলা করলেন, আল্লাহ বিজয় দান করলেন।
কাফেরদের একদলকে মোকাবেলায় অপেক্ষাকৃত ভালো অন্যদলের সাথে জোট গঠন (চুক্তি) করলেন।
তাবুকের অভিযানে শত্রুর মোকাবেলায় যুদ্ধের কৌশল হিসেবে শত্রু পক্ষ প্রস্তুত হওয়ার পূর্বেই ইসলামী রাস্ট্রের প্রধান হিসেবে তিনি সেনা অভিযান পরিচালিত করলেন।
উপরের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, শত্রুর মোকাবেলায় আল্লাহর রাসূল(সঃ) অবস্থা ভেদে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, যেখনে নির্যাতন সহ্য করা প্রয়োজন সেখানে মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করেছিলেন, যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব সেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করেননাই। এবং যেখানে শত্রুর মোকাবেলায় চুক্তি/জোট করা সম্ভব হয়েছিলো সেখানে চুক্তিও করেছিলেন। আবার যেখানে যুদ্ধ অনিবার্য সেখানে ইসলামী রাস্ট্রের পক্ষ হতে ঘোশণা দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন।

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে, উপরে ডাক্তার এবং তার ছেলের গল্প বলেছিলাম, সব যায়গাতেই প্যারাসিটেমল।
ঠিক তেমনি ইদানিং কিছু ইসলাম পন্থীর উদ্ভব হয়েছে তারা সব যায়গাতেই প্যারাসিটেমল ইউজ করতে চাইছেন।
অর্থনৈতিক সমস্যা?- শুরু করে দাও সশস্ত্র জিহাদ!
রাজনৈতিক সমস্য?- শুরু করে দাও সশস্ত্র জিহাদ!
আওয়ামিলীগ নির্যাতন করেছে?- শুরু করে দাও সশস্ত্র জিহাদ!
মিশরে নির্যাতন?- শুরু করে দাও সশস্ত্র জিহাদ!
আল্লাহর রাসূল(সঃ) যে অবস্থা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছিলেন সেটা যেনো তাদের চোখেই পড়ছেনা। তাদের একদফা একদাবী, এখনই শুরু করে দিতে হবে সশস্ত্র জিহাদ!

ওহ! ভালো কথা, এই সশস্ত্র জিহাদীদের আরেকটি সুন্দর কৌশল আছে, এরা কিন্তু নিজেরা জিহাদ করবেনা, আপনাকে ক্রমাগত খুচিয়ে খুচিয়ে প্রয়োজনীয় প্রিপারেশন ছাড়াই যুদ্ধের ময়দানে নামিয়ে পেছন হতে পালিয়ে যাবে। বিশ্বের কোথাও এই সশস্ত্র জিহাদের স্লোগানধারীদের জিহাদ চোখে পড়বেনা, এরা অন্যের ক্রেডিট ছিনতাই করতে উস্তাদ!
তারা উদাহরণ দেয়ার সময় তালেবানদের কথা বলবে, আলকায়েদার কথা বলবে। কিন্তু নিজেদের সংগঠন কবে কোথায় যুদ্ধ করেছে বা করছে সে নজীর কিন্তু তারা উপস্থাপন করতে পারবেনা।
ইদানিং তারা সিরিয়ার যুদ্ধের উদাহরণ দিচ্ছে, কিন্তু মূল কথা হচ্ছে সিরিয়ার যুদ্ধে বিরোধী মুভমেন্টের নেতৃত্বে আছে ইখওয়ান(ব্রাদারহুড), আর সেকারণেই মিশর এবং তুরস্ক দেশ দুটি, সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

অতএব, এইসব প্যারাসিট্যামলবাদী ডাক্তারদের কথা এবং কাজ হতে সাবধান, এরা আপনাকে গাছে তুলে দিয়ে মই নামিয়ে নিবে!

২০অক্টোবর২০১৩

Post Comment

তালেবান, জামায়াত-ইখওয়ান এবং হিজবুত তাহরির

ব্যক্তিগতভাবে আমি তালেবানদের সমর্থন করিঃ

তালেবানদের উত্থান সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় তা হচ্ছে, যুদ্ধবিদ্ধস্ত আফগানিস্থানে তখন মারাত্মক গোলোযোগ। অস্ত্র যার ক্ষমতা তার এই নীতিতেই চলছিলো আফগানিস্থান। হত্যা, ডাকাতি, ধর্শনের মতো জঘন্য ঘটনা ছিলো নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে একদল ইসলাম প্রেমিক মাদ্রাসা ছাত্র হাতে অস্ত্র তুলে নিলেন, আফগানিস্থানের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ইসলামী বিপ্লবের কর্মকৌশল নির্ধারণ করলেন এবং দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রাম করে প্রতিষ্ঠিত করলেন ইসলামী খিলাফত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় অস্ত্রই ছিলো একমাত্র অবলম্বন!
আজ আফগানিস্থানে আমেরিকা আগ্রাসন চালিয়েছে, ড্রোন বিমান ব্যবহার করে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করছে, স্বাধীন দেশে বিদেশী সৈন্য অনুপ্রবেশ করেছে, অতএব আমেরিকার বিরুদ্ধে তালেবানদের এই যুদ্ধে আমার ১০০% সমর্থন রয়েছে।

আমি জামায়াতে ইসলামী এবং ইখওয়ানকে ভালোবাসিঃ

জামায়াত এবং ইখওয়ানুল মুসলিমুন দল দুইটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী যেখানে যেভাবে দরকার সেভাবেই ইসলামী বিপ্লবের বাস্তবসম্মত কর্মকৌশল তৈরী করেছে। বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্থান এবং শ্রীলঙ্কার মতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেখানে বিদ্যমান সেখানে জনগণের সমর্থন নিয়েই ইসলামী বিপ্লবের কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে জামায়াত।
অন্যদিকে মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সেখানকার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ইসলামী বিপ্লবের আধুনিক কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে ইখওয়ান, যেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে ইসলামকে রাস্ট্র ক্ষমতায় নেয়া সম্ভব সেখানে গণতান্ত্রিক কর্মকৌশল এবং যেখানে গণতন্ত্রের পাশাপাশি মুগুড়ের প্রয়োজন আছে সেখানে মুগুড়েরও ব্যবস্থা করেছেন, যেমন ফিলিস্তিনের হামাস! তবে কোথাও মধ্যপন্থাকে সম্পূর্ণরুপে পরিত্যাগ করে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়া হয়নাই।

আমি হিজবুত তাহরিরের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহানঃ

খিলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদেখিয়ে তরুণদের আকৃষ্ট করছে হিজবুত তাহরীর নামক সংগঠনটি। কিন্তু তাদের বেশ কিছু তৎপরতায় একটাই প্রশ্ন জাগে, তাদের আসল উদ্দেশ্য কি? খিলাফত নাকি সাম্রাজ্যবাদ? এই দলটি কি সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে!!?
১। বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি নামক দল দু'টি চলে ব্যবসায়ীদের দেয়া চাদার টাকায় এবং ক্ষমতায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন রকমের অবৈধ সুবিধা দিয়ে সেই ঋণ শোধ করা হয়।
বাংলাদেশের সকল ইসলামী দলের সাংগঠনিক ব্যয় পরিচালিত হয় দলের কর্মী-শুভাকাংখীদের পকেটের টাকায়!
এদিক হতে জামায়াত কিছুটা এগিয়ে আছে, জামায়াতের রুকনদের মাসিক ইনকামের ৫% সংগঠনকে দিয়ে দিতে হয়।
আর হিজবুত তাহরীরের আর্থিক উৎস সন্ধান করতে হলে মান্না-সালওয়া পর্যন্ত যেতে হবে। কারণ তাদের কর্মীরা দলকে কোনো প্রকার মাসিক চাদা প্রদান করেনা! তাহলে তাদের এতো এতো ব্যয়বহুল প্রগ্রামের আর্থিক উৎস কি?
২। সাম্প্রতিক মিশরের ঘটনার দিকে দৃস্টিপাত করুন, সারাবিশ্বের মুসলিমরা একদিকে আর আল্লাহদ্রোহী-কাফেররা অন্যদিকে। সমগ্র মুসলিম জাতি মুহাম্মদ মুরসি ও ইখওয়ানের বিজয়ের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে। ঠিক সেই মুহূর্তে হিজবুত তাহরির লিপ্ত হয়েছে সমালোচনা মূলক মন্তব্য এবং লেখা প্রকাশে। ইখওয়ান এবং মুরসীর যাবতীয় ভুল-ত্রুটি নিয়ে তারা বিশ্ববাসীর নিকট হাজির হয়েছে। হিজবুতিদের বক্তব্য শুনলে মনে হবে, যা হয়েছে ভালো হয়েছে, মুরসি এবং ইখওয়ানের উচিৎ শিক্ষা হয়েছে।
৩। বাংলাদেশের জালিম আওয়ামি শাসনের নির্মম অত্যাচারে রাসূল প্রেমিক তৌহিদী জনতা হাপিয়ে উঠেছে। এমনকি অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম পর্যন্ত আওয়ামি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে, ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তারা আওয়ামিদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে হিজবুতিরা লেখা প্রকাশ করেছে, "নির্বাচনে আওয়ামিলীগ জিতলেই কি আর বিএনপি জিতলেই কি? এটা নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই"। তারমানে তারা বর্তমান আওয়ামি সরকারের তৎপরতায় সন্তুষ্ট!!
৪। আগামী ২৪তারিখ বর্তমান আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের অবসান হবে, ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতা অধীর হয়ে অপেক্ষা করছে কখন সেই মুক্তির সোনালী সূর্য উদয় হবে। হাজার হাজার আলেম ওলামা হত্যাকারী, শত শত মাদ্রাসা বন্ধ, সেনাবাহিনীতে মাদ্রাসা ছাত্র কমানো এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধকারী, ইসলাম বিরোধী নারী নীতির উদ্ভাবক, সংবিধান হতে বিসমিল্লাহ মুছে দেয়া এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসির রায় দেয়ার হোতা এই আওয়ামী সরকারের কখন পতন হবে?
ঠিক সেই মুহূর্তে হিজবুত তাহরির হাজির হয়েছে নতুন স্লোগান নিয়ে “নৌকা আর ধানের শীষ, দুই সাপেরই একই বিষ!” তারা জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন বর্জন করতে। তাদের মতে বিএনপি’র চাইতে আওয়ামিলীগ ভালো। আওয়ামিলীগকে উৎখাত করে ইসলামের কোনো লাভ নাই!

সর্বশেষ ইসলাম প্রিয় তৌহিদীর জনতার কাছে প্রশ্ন, হিজবুত তাহরির কি আদৌ কোনো ইসলামী সংগঠন! নাকি তারা ইসরাইল প্রদত্ত খিলাফতের দায়ীত্ব কঠোর আন্তরিকতার সাথে পালন করে যাচ্ছে? যেখানেই ইসলামী আন্দোলনের সফলতার সম্ভাবনা, সেখানেই প্রতিবন্ধকতা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে হিজবুত তাহরির, “খিলাফতে ইসরাইলিয়া হিজভুতিয়া”

১৯অক্টোবর২০১৩

Post Comment

নৌকা আর ধানের শীষ, দুই সাপের একই বিষ!


নৌকা প্রতীকের আওয়ামিলীগ বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, তারচাইতেও বেশি ক্ষতিকর দল হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামিলীগ ইসলামের বিরুদ্ধে কি করেছে? তারা যা করেছে তা হচ্ছে, মাত্র কয়েক হাজার হেফাজত মেরেছে, শ’পাচেক শিবির মেরেছে, মাত্র শ’খানেক মাদ্রাসা বন্ধ করেছে, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নাহয় হিজাব নিষিদ্ধ করেছে, সেনাবাহিনীতে মাদ্রাসা ছাত্র কমানো হয়েছে, ভার্সিটিতে মাদ্রাসা ছাত্র ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়েছে, এর চাইতে বেশি কিছুতো করেনাই?

আর বিএনপি! ওই হারামীর দল কি করেছে জানেন? বাংলাদেশ হতে ইসলাম নির্মূলের চেস্টা করেছিলো ধানের শীষ মার্কা এই দলটি। জেএমবি’র মতো একটা ইসলামীক দলকে নিষিদ্ধ করেছে, বিএনপি’তো কাফেরের চাইতেও অধম! তারা আওয়ামি নেতা মির্জা আজমের দুলাভাই জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে, ফাসি দিয়েছে। ছিঃ কি জঘন্য ইসলাম বিরোধী দল এই বিএনপি! এই দলটি বিধর্মীদের অধিকার পর্যন্ত দিতে চায়নাই।

আপনারা জানেন মুসলিম রাস্ট্রে বিধর্মীদের অধিকার দিতে হয়। আওয়ামিলীগের দিকে তাকিয়ে দেখেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে হিন্দু অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে, ৬৪টা জেলা প্রশাসকের মধ্যে ৪০জনের বেশি হিন্দু, দেশের অধিকাংশ থানার ওসি হিন্দু, শিক্ষা বিভাগে হিন্দু, কোথায় নেই তারা? এটা আওয়ামিলীগের অবদান, সহিহ ইসলামীক পদ্ধতীতে মদিনা সনদ অনুযায়ী প্রশাসনে অমুসলিমদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমার মতে বিএনপি’র চাইতে আওয়ামিলীগ দেশ ও ইসলামের জন্য হাজার গুণ ভালো।

আগামী ২৫তারিখ বর্তমান আওয়ামী সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হবে, ইতোমধ্যেই প্রচার প্রপাগান্ডা শুরু হয়ে গেছে, ইসলাম বিরোধী জামায়াত-শিবির ও হেফাজতকে সাথে নিয়ে কুফরী গণতন্ত্রের মাধ্যমে কাফের বিএনপি নাকি আগামীতে ক্ষমতায় আসবে!
আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ইসরাইল প্রদত্ত খিলাফতের দায়ীত্ব যতদিন আমাদের হাতে থাকবে আমরা কিছুতেই এই ইসলাম বিরোধী জামায়াত-হেফাজতকে ক্ষমতায় আসতে দিবোনা। আমরা এই কুফরি গণতন্ত্রের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবোনা। প্রয়োজনে আওয়ামিলীগকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
সর্বশেষ একটি কথা বলতে চাই, এই আন্দোলন করতে গিয়ে অদূর ভবিষ্যতে যদি আমাদের ‘খিলাফতে ইসরাইলিয়া হিজভুতিয়া’ পন্থীদের মধ্য হতে কেউ গ্রেপ্তার হয়, তবে আমরা ওয়াদা করছি, ইসরাইল হতে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে কুফরি গণতন্ত্রী ব্যবস্থার আদালত হতে তাদের জামিন করিয়ে আনবো।

কুফরী আদালতে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করলে কাফের হয়না—ফতোয়ায়ে কুফরি!

১৮অক্টোবর২০১৩

Post Comment

কোরবানী এবং নাস্তিক্যবাদীদের দ্বিমুখী আচরণ

‘দোস্ত ভাবীর হাতের রান্না অসাধারণ! বিশাল সাইজের একটা হাড় কামড়াতে কামড়াতে রান্নার উচ্ছসিত প্রশংসা শুরু করলো নাহিদ। আচ্ছা ভাবীকে দেখছিনা, এতো সুন্দর রান্নার হাত, না জানি ভাবী কত সুন্দর!’
‘ইয়ে, তোর ভাবী একটু অসুস্থ, গতকাল কোরবানীর রান্না সামলাতে সামলাতে বেচারী কাহিল হয়ে পড়েছে’। অবলীলায় মিথ্যে কথাটি বলে ফেললো হাসান, অবশ্য মিথ্যে না বলে উপায়ও ছিলোনা, বিষাক্ত সাপকে বিশ্বাস করা যায় কিন্তু একটা নাস্তিককে বিশ্বাস করা যায়না। দুনিয়ার সকল নারীই নাস্তিকের নিকটা সমান, মা এবং বোনের পার্থক্য নাস্তিকের কাছে নেই! থাকবেই বা কি করে? তাদেরতো ধর্ম নেই, পরকালের ভয় নেই, জান্নাত-জাহান্নাম নেই! সুতরাং নব্য নাস্তিক এই বন্ধুর নিকট হতে পরিবারের সদস্যদের দূরে রাখাই নিরাপদ।
‘ওহ! আচ্ছা, এতো সুন্দর রান্নার জন্য ভাবীকে আমার ধন্যবাদ জানিয়ে দিস, ততক্ষণে আরেকবাটি গোস্ত সাবাড় করে দিয়েছে নাহিদ’।

খাওয়ার পর্ব শেষ হতেই জম্পেশ আড্ডায় মেতে উঠলো দুই বন্ধু!
তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে নাহিদ প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, ‘এইযে তোরা কোরবানীর নামে পশু হত্যা করছিস, এটা কি ঠিক হচ্ছে? ওই প্রাণি গুলোর জন্য তোদের কি একটুও মায়া দয়া নাই?’
মৃদু হেসে নাহিদের দিকে তাকালো হাসান। নব্য নাস্তিক এই নাহিদ, ইসলামের সব কিছুতেই খুত ধরা তার প্রিয় একটা হবি! ‘হঠাৎ এই প্রশ্ন? তুই কি গোস্ত খাসনা?’
‘গোস্ত খাবোনা কেনো? অবশ্যই খাই, আজকে এতো বেশি পরিমাণে খেয়েছি যে এখন নড়াচড়া করতে কস্ট হচ্ছে, তারপরেও প্রাণী হত্যা ব্যাপারটা কিন্তু অমানবিক!’
‘পশু জবাই না করলে গোস্ত খাবি কি করে? অবাক হয়ে প্রশ্ন করে হাসান। এক কাজ কর, আজকে হতে গোস্ত খাওয়া বন্ধ করে দে, আর ভুলেও কখনো মশা-মাছি হত্যা করবিনা, মনে রাখবি ওগুলাও কিন্তু প্রাণী। ও হ্যা, বৃক্ষ লতা-পাতা এগুলোরও কিন্তু প্রাণ আছে তাই শাখ-সবজি খাওয়া চলবেনা, প্রাণ হত্যা করা অমানবিক!’
‘ধুর! কিসের মধ্যে কি নিয়ে এসেছিস, না খেয়ে থাকবো নাকি! তারপরেও দোস্ত, এভাবে একদিনে হাজার হাজার পশু জবাই করা হচ্ছে, কেমন যেনো লাগেনা?’
বন্ধুর অযৌক্তিক গোয়ার্তুমি দেখে হাসি পেলেও, চুপ করে রইল হাসান। গত কিছুদিন আগে হিন্দুদের পাঁঠাবলি অনুষ্ঠান হয়েছিলো, তোর মনে আছে?’
‘থাকবেনা কেনো? খুব মজা করেছিলাম, জটিল নাচ-গান হয়েছিলো, হালকা-পাতলা ড্রিংকও করেছিলাম। সোৎসাহে জবাব দিলো নাহিদ’।
‘খুব মজা করেছিলি, ভালো কথা। কিন্তু তখন তোর ওই প্রাণী প্রেম কোথায় ছিলো? পাঁঠাবলি দিলে মানবিকতা নষ্ট হয়না? কই তখনতো তুই এই মানবিকতা/অমানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলিসনাই!’
‘কাচু-মাচু মুখ করে ফেললো নাহিদ, আসলে ব্যাপারটা তেমন না, পাঁঠাবলিতে আর কয়টা পাঁঠা জবাই করা হয়, খুবই নগন্য সংখ্যক। তাই সে ব্যাপারে কিছু বলিনাই’।
‘আচ্ছা, তোকে একটা পরিসংখ্যান শুনাচ্ছি, প্রতিবছর শুধুমাত্র আমেরিকাতে ৯বিলিয়ন পশু জবাই করা হয়, কানাডাতে ৬৫০মিলিয়ন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৩০০মিলিয়ন পশু জবাই করা হয়। আর প্রতিদিন আমাদের ঘরের পাশের বাজারেও ৮/১০টি গরু জবাই করা হয়।
কই কখনোতো তোদের মতো নাস্তিকদের মুখে এই টাইপের সুশীল মার্কা বয়ান শুনিনাই! শোন, তোদের সমস্যা পশু হত্যা নয়, তোদের সমস্যা হচ্ছে আল্লাহর নামে পশু জবাই করাতে। প্রতিদিন গরু/মুরগী/খাসি সব খেতে পারবি, কিন্তু প্রব্লেম হচ্ছে আল্লাহর নাম! আল্লাহর নাম নিলেই তোদের মতো নাস্তিকদের চুলকানী শুরু হয়ে যায়’।
‘তারপরেও দোস্ত, একদিনে এতোগুলো প্রাণী জবাই করলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে, দেশে গবাদী পশু কমে যাবে’। পিছলাতে চাচ্ছে নাহিদ।
‘আচ্ছা, আমরা এমনিতেইতো গোস্ত খাচ্ছি, খাচ্ছিনা? পার্থক্য হচ্ছে বছরের ৩৬৫দিন আমরা বাজার হতে গোস্ত কিনে নিজেরা একা একাই খাই, আর কোরবানীর ঈদে আল্লাহর উদ্দেশ্য পশু জবাই করে তার একটা অংশ গরীব এবং অভাবী মানুষের মধ্যে বিতরণ করি, এতে করে আমরা যেমন সওয়াব অর্জন করি তেমনি তারাও পুষ্টি অর্জন করে’।
‘তারপরেও দোস্ত, কথা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে, এভাবে প্রাণী হত্যাকে কিছুতেই সমর্থন দেয়া যায়না, তার উপর শিশুদের সামনে......’
‘তুইতো নাস্তিক, ব্যাপারটা বুঝতে হলে তোকেতো আস্তিকের অবস্থান হতে চিন্তা করতে হবে, শিশু বয়সটাইত শিক্ষা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়, এই বয়সেই একটি শিশুকে শেখাতে হবে, আল্লাহর পথে নিজের জীবন উৎসর্গ করার মর্যাদা এবং আল্লাহর পথে কোরবানী করার মাহাত্ম!’
‘তারপরেও দোস্ত এভাবে কোরবানীর নামে পশু হত্যা মানা যায়না......’
‘তুই বারবার শুধু হত্যা হত্যা করছিস, এখানে হত্যার কি দেখলি? আল্লাহ এইসব গবাদী পশুকে সৃস্টি করেছেন আমাদের খাদ্য হিসেবে, এখন খেতে হলেতো সেটাকে প্রসেসিং করতে হবে, জবাই করতে হবে, নাকি আস্ত পশুর শরীর হতে গোস্ত কেটে খাওয়া শুরু করে দিবি? আমরা যে শাক সবজি খাচ্ছি, এটাকে তুই কিভাবে দেখবি? এটার নাম কি বৃক্ষ হত্যা?’
'তুই যাই বলিস, তারপরেও এভাবে রক্তপাত! ওফ! মানা যায়না.........'

“যারা অস্বীকার করেছে, তাদেরকে আপনি সাবধান করুন আর নাই করুন, উভয়টাই সমান, এরা কখনো বিশ্বাস স্থাপন করবে না। আল্লাহ তায়ালা তাদের অন্তর এবং তাদের শ্রবণশক্তি ও তাদের দৃষ্টিশক্তির উপর আবরণে ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি” [ আল কুরআন, সূরা বাকারাহ ২:৬-৭ ]

১৭অক্টোবর২০১৩

Post Comment

পর্ণগ্রাফী আক্রান্ত প্রজন্ম।

এক
একটি ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম, আয়োজক ছিলো অনলাইন ভিত্তিক একটি সংগঠন। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি ও সময় মার্মা ভাই প্লান করছিলাম অনলাইনে পর্ণোগ্রাফীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করবো, তো আমরা ঠিক করলাম মূল প্রগ্রাম শেষ হলেই আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করবো।
প্রগ্রাম শেষ হলো, সময় ভাই পর্ণোগ্রাফি শব্দটা নিয়ে মাত্র দুটি লাইন বলেছেন, অমনি একভাই দাড়িয়ে গেলেন, প্রগ্রামটি তার বাসাতেই হয়েছিলো। তিনি তীব্র ভাবে এই টাইপের ক্যাম্পেইনের বিরোধীতা করে যুক্তি উপস্থাপন করলেন, তার ভাষায় পর্ণগ্রাফি একটি শিল্প! শিল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা বোকামী।
তিনি একটি প্যাকেট বের করলেন, প্যাকেটে সম্ভবত পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ছিলো, তিনি সদম্ভে ঘোশণা করলেন, আপনারা পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে কি বুঝেন? পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে বুঝতে হলে আমার সাথে কথা বলবেন! তিনি হাতের প্যাকেটের দিকে দৃস্টি আকর্ষণ করে বললেন, এইখানে দুইহাজারের বেশি ভিডিও আছে......
কি আর করার চুপ হয়ে গেলাম, মনে মনে বললাম, ‘ভাইজান, আপনি শিল্পী মানুষ! শিল্পচর্চা করতে থাকেন। আর আমাদের একটু রেহাই দেন!’
প্রগ্রাম সেখানেই শেষ।

দুই
কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে চটি পেইজ সাজেশন করা হচ্ছিলো ডানদিকের কলামে, বেশ কিছু ফ্রেন্ড দেখলাম সেখানে লাইক করেছে, ধরে ধরে সবগুলোকে ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম। বন্ধু শুভাকাঙ্কীরা অনেকেই ব্যাপারটিকে পজেটিভলী নিলেননা, তাদের কথা হচ্ছে ভুল করেও কেউ কেউ এইসব পেইজে লাইক দিয়ে ফেলতে পারে, অতএব সুযোগ দেয়া প্রয়োজন ছিলো।
পরবর্তীতে এই টাইপের পেজ সাজেশন আসলেই মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদেরকে একটি করে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সতর্ক করা শুরু করি। অনেকেই দেখলাম লজ্জ্বিত হয়ে আনলাই বাটনে ক্লিক করছে আবার কেউ কেউ রিপ্লাই দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছেনা, তাদেরকেও ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম।

তিন
সেদিন এক বন্ধুর সাথে ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম, বন্ধুটি অবাক হয়ে বললো, আমিওতো চটি পেইজে লাইক দিয়েছি, পারলে আমাকে আনফ্রেন্ড কর।
ভাবলাম ঠাট্টা করছে, পরে সে প্রমান হাজির করলো। মুখের উপর বলে দিলাম পেজ গুলো আনলাইক না করে আর কখনো আমাকে ফোন দিবিনা।
পরের দিনই বন্ধুটি ফোন দিলো, ‘দোস্ত সবগুলো আনলাইক করেছি, একটা বাদে’
‘একটা কেনো রাখলি?’
‘পরতে ভালো লাগে’
‘তাইলে তুই পরতে থাক, আর নিজের চরিত্র নষ্ট করতে থাক’ ফোন রেখে দিলাম।

দীর্ঘদিন পরে আজ ঈদের দিন ফোন দিলো বন্ধুটি, ঈদের দিনে শত্রুতা রাখতে নেই। ঈদ মোবারক জানালাম।
বন্ধুটি হাসতে হাসতেই জানালো, আমাকে বাদ দিতে পারবে কিন্তু ওই পেইজ বাদ দিতে পারবেনা।
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ধর্মীয় বই পড়লে কি হয়?’
‘উত্তর দিলো, ধার্মিক হয়’
আবার জিজ্ঞাসা করলাম, ‘চটি পড়লে কি হয়?’
আমাকেই আবার প্রশ্ন করলো, কি হয়?
বললাম, ‘চরিত্র নষ্ট হয়’।
বন্ধুর যুক্তি, চটি পড়লেও তার চরিত্র ঠিক আছে......

"যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।"

~~[সূরা যুখরুফ ৪৩:৩৬-৩৭]

১৬অক্টোবর২০১৩

Post Comment

জনগণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী!!


সরওয়ার ফারুকীর “মেইড ইন বাংলাদেশ” দেখেছিলাম অনেক আগে, সেখানে জাহিদ হাসানের একটি ডায়লগ ছিলো, “দেখেতো মনে হয় ভয় পাননাই, তয় আঙুল কাঁপে ক্যা?”
বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বকালের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থা দেখে ডায়লগটি মনে পড়ে গেলো। “আপনি নাকি জনপ্রিয়তম প্রধানমন্ত্রী, তয় জনগণকে এতো ভয় পান ক্যা?”
প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমন উপলক্ষে শিবির আতঙ্কে তড়িঘড়ি করে খালি করে ফেলা হয় চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ। বুলেটপ্রুফ গাড়িতে থাকার পরেও জনগণের জুতাক্রমনের ভয়ে প্রেসক্লাবের আশেপাশের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার রাস্তা ও দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশস্থলের প্রবেশমুখেও ছিলো কড়ানিরাপত্তা, লাইনকরে চেকিংয়ের মাধ্যমে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় সমাবেশে আগতদের।

মাননীয় নেত্রী! ২৪তারিখ এখনো বহুদূর, ২৮অক্টোবরের শহীদদের রক্তের গর্জন শুনে ভয় পাচ্ছেন? লগী-বৈঠায় কাজ হবেনা, বোরখা রেডি আছে, দাদাদের সীমান্ত আপনার জন্য খোলা......

১২অক্টোবর২০১৩

Post Comment

পরীর গল্প


হঠাৎ করেই মামা ফোন দিলেন, চট্টগ্রামের ভালো মানের আবাসিক হোটেল কোথায় আছে আর ভাড়া কেমন ইত্যাদি তথ্যের জন্য।
বললাম ‘হোটেল শামীম রেজা’তে উঠে যান, ফাইভস্টার মানের সেবা পাবেন, আর ভাড়া নেগোশিয়েবল। আমার চাপাচাপিতে মামা না করতে পারলেননা, শেষ পর্যন্ত হোটেল শামীম রেজাই সিলেক্ট করা হলো।

মামা-মামী, মামাতো ভাই আর পিচ্চি মামাতো বোন মারিয়াকে নিয়ে তিনদিনে পুরো চট্টগ্রাম এমাথা হতে ওমাথা ছাড়িয়ে চলে গেলাম সুদূর কক্সবাজার পর্যন্ত। আর যথারিতী কাঁধে বসা আছে সিন্দাবাদের ভূত ৪বছর বয়সী মারিয়া।
ডিজিটাল যুগের হাইব্রিড মগজের এই পিচ্চিটার সাথে আমার কথোপকথন তুলে ধরলাম।

একবন্ধুর সাথে মারিয়াকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলাম,
‘আপু তোমার নাম বলো!’
‘নাম নাই’
‘তোমার আব্বুর নাম বলো’
‘আব্বুর নাম নাই’
‘তুমি কবিতা জানো? একটা কবিতা শোনাও’।
‘না’।
‘গল্প জানো? তাহলে গল্প শোনাও’।
‘না’।
‘অ, আ, ই, ঈ পারো?’
‘না’।
তাহলে কি পারো?
মারিয়ার সোজা উত্তর, কিছুই পারিনা! খাটের উপর বসে বসে ঢ্যাং ঢ্যাং করে টিভি দেখতে পারি!

‘মারিয়াকে খোচা দিয়ে বললাম, তুমিতো কিছুই পারোনা, তুমি পচা মেয়ে, গন্ধ! তুমি গাধু!’
মারিয়া হুমকির স্বরে বললো, ‘বলতে থাকো, তুমি কি বলছ আমার কিন্তু মনে থাকবে, হু!’
‘মনে থাকলে আমার কি? তুমি একটা নান্টু, বল্টু’।
এবার মারিয়া হাসে, হাসতে হাসতে বলে ‘তুমি যেগুলো যেগুলো বলবা, সেগুলো সেগুলা আমি মনে রাখবো, তারপর তোমাকে বলবো’!

‘হঠাৎ আবদার করলো, ভাইয়া চকলেট খাবো’।
‘না চকলেট দিবোনা, তোমার দাত পোকায় খাবে, সবগুলো দাত পরে যাবে’।
‘দাত পড়লে কিছু হবেনা, আমি চকলেট খাবো!
‘দাত পরলে তুমি গোস্ত খেতে পারবানা, শুধু পানি খেতে হবে, আর পানি খেলে দাতের ফাক দিয়া পরে যাবে’।
‘গোস্ত খাবোনা, না খেয়ে থাকবো’।
‘না খেয়ে থাকলেতো তুমি ক্ষুধায় মারা যাবা, মরে ভুত হয়ে যাবা’।
‘আচ্ছা, আমি মরে ভুত হবো, ভুত হয়ে তোমাকে খাবো’!

এবার মারিয়ার চোখ যায়, নিজের লাল টুকটুকে জামার দিকে,
‘ভাইয়া, জামাটা অনেক সুন্দর না?’
‘হ্যা, সুন্দর কে দিয়েছে?’
আমার কথায় মারিয়ার কান নেই, নিজেই বলে যাচ্ছে......। আব্বু বলেছে এই জামাটা পড়লে আমাকে পরীর মতো লাগে!
‘পরীরাতো জীনের বউ, তুমি কি জীনের বউ?’
‘মারিয়ার সোজা উত্তর, না আমি জীনের বউ না’
‘তাহলে কি মানুষের বউ?
‘না, আমি কিছুর বউ না! আমি হচ্ছি পরী’

এবার মারিয়া উঠে যায়, একটু দূরে দাঁড়িয়ে বলে, ভাইয়া পরীর একটা ছবি তুলোতো!

মনে মনে বলি, মারিয়ারে......, আপুরে......, তুই বড় হইসনা, ছোট্ট পরীই থাক। তোকে কাঁধে নিয়ে বিশ্বভ্রমণ করা যাবে, ক্লান্তি হবেনা!

০৮অক্টোবর২০১৩

Post Comment

আওয়ামিলীগের তর্জন-গর্জন এবং অন্তস্বার শূণ্যতা

সাঈদ আল সাহফের কথা মনে আছে আপনাদের? ইরাকের সাদ্দাম হোসেন শাসনের সর্বশেষ তথ্যমন্ত্রী ছিলেন এই সাইদ আল সাহাফ, মুসলিম বিশ্বের তরূনদের আইকনে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।
চমৎকার একটি গুণ ছিলো এই ব্যক্তির, তা হচ্ছে প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে শত্রুকে ধোঁকা দিয়ে নিজের পক্ষের জনমতকে উদ্দীপ্ত করা।
মনে পরে, টিভি পর্দায় কিংবা পত্রিকার পাতায় সাঈদ আল সাহাফের নাম দেখলেই রক্তের মধ্যে তীব্র উদ্দীপনা অনুভব করতাম। তিনি বারবার বিবৃতি দিতেন, ইরাক হামলা হলে মার্কিন বাহিনীর কবর রচিত হবে, প্রয়োজনে আমেরিকায় গিয়ে পাল্টা হামলা চালানো হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রতিদিনই বেশ কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন করে এমনভাবে বক্তব্য রাখতেন সাঈদ আলা সাহাফ, মনে হতো মার্কিন বাহিনী ইরাকের কিছুই করতে পারবেনা, লেজ তুলে পালাবে। ইরাক যদি ফু দেয়, তবে মার্কিন বাহিনী বাতাসে উড়ে যাবে।
এমনকি মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী বাগদাদ বিমানবন্দর দখল নেয়ার পরেও সাহাফ বলেছিলেন তারা এখনো ফোরাত নদী অতিক্রম করতে পারেনাই। তারপরের ইতিহাসতো সবারই জানা, দুই/তিনদিনের লড়াইয়ের পরেই সাদ্দাম বাহিনীর শোচনীয় পরাজয়। আমি হয়তো সাদ্দাম হোসেনকে একসময় ভুলে যাবো কিন্তু সাঈদ আল সাহাফের সেই জ্বালাময়ী বক্তব্য ভোলা অসম্ভব!

আজ যখন টিভি কিংবা পত্রিকার পাতায় বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগের মন্ত্রী-এম্পি কিংবা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনি, তখন কেবলি সাঈদ আল সাহাফের কথা মনে পরে যায়। প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় আওয়ামি মন্ত্রী-এম্পিদের হুঙ্কার শুনে কেবলি হাসি পায়। সাধারণ জনতা কিন্তু হাসেনা, তারা ভয় পায়। তাদের ধারণা হয়, নিশ্চই খুটিতে জোড় আছে নয়তো এমন কনফিডেন্স নিয়ে কথা বলে কিভাবে!?
অথচ ভেতরের খবর সম্পূর্ণ ভিন্ন, ইতোমধ্যেই আওয়ামিপন্থী দুই হাজার পুলিশ কর্মকর্তা ছুটির জন্য আবেদন করেছে, অনেক মন্ত্রী-এম্পি তাদের পরিবারকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন শুধুই অপেক্ষা, গণধোলাই হতে রেহাই পাওয়ার জন্য কবে উড়াল দিতে পারবে।
সাগরের পানিতে ডুবন্ত ব্যাক্তি যেমন খুড়কুটো ধরে ভেসে থাকতে চায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগ তেমন সাঈদ আল সাহাফের মতো করেই মিডিয়ার উপর ভরসা করে ভেসে থাকতে চায়। চাপাবাজি হুঙ্কার দিয়ে বিরোধী শক্তিকে ভড়কে দিতে চায়।

আওয়ামি সরকার চরম সুন্দর একটা কৌশল হাতে নিয়েছিলো, চমৎকার একটি ফাঁদ তৈরী করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত বিরোধী শিবির আগেই সতর্ক থাকায় এই ফাদ কার্যকর হয়নাই।
তারা শেষ মুহূর্তে এসে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর ফাসির রায় ঘোশণা করে বিরোধী দলকে উস্কে দিতে চেয়েছিলো। আর বিরোধী দল যদি আগে পিছে না ভেবে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলতো, তখনি ঘটতো অঘটন, নির্বিচারে গুলি করে সেই আন্দোলন বাঞ্চাল করে দেয়া হতো। প্রশাসন সরকারের প্রতি আশ্বস্ত হতো, সরকারের প্রতি অনুগত থাকতো, ফলে ২৪অক্টোবরের পরে তাদের ক্ষমতা চালিয়ে নিতে প্রব্লেম হতোনা। নির্মম হত্যাকান্ডের পরে বিরোধী দল শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে পর্যাপ্ত জনবল মাঠে নামাতে ব্যার্থ হতো।

একথা এখন দিবালোকের মতই স্পষ্ট ২৪অক্টোবরের পরে বাংলাদেশের পাড়া-মহল্লা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে আওয়ামিশক্তি হয় পালিয়ে যাবে, নয়তো গণরোশের শিকার হবে। প্রশাসনের আওয়ামীপন্থী অংশটি তখন নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমানে বিরোধী দলের নেতাদের পায়ে পড়ে থাকবে।

০৬অক্টোবর২০১৩

Post Comment

ডক্টর শামীম রেজা

পিঁয়াজ’ডি-রসুনডি (পিএইচডি) ডিগ্রি পাইতে হইলে আজকাল আর পড়াশোনার প্রয়োজন হয়না, ফেসবুক ইউজ করলেই হয়। অতএব যেসকল ভাইয়ারা পিঁয়াজ’ডি করবেন বলে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন, তাদের প্রতি পরামর্শ রইলো ওইগুলো বাদ দিয়ে সত্ত্বর একখানা ফেসবুক আইডি খুলে ফেলেন, ডিগ্রি নিজেই হাতে এসে ধরা দিবে।

কি বিশ্বাস হচ্ছেনা! প্রমাণ চান? তাহলে প্রমাণ দিচ্ছি।
কিছুদিন আগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর সাথে সাক্ষাতের ঘটনা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, শিরোনাম ছিলো “বাঘের বাচ্চা দেখে এলাম” (https://www.facebook.com/shamimreja/posts/619279374763497 )।
বিগত কিছুদিন ধরে দেখছি সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর রায়ের ইস্যুতে সেই পোস্টের কপিপেস্টের বন্যা বয়ে যাচ্ছে অনলাইনে, সাথে রেফারেন্সও আছে। কপিপেস্টকারীরা আবার মারাত্মক ভদ্র, রেফারেন্স ছাড়া লেখা কপি করেননা।
যাই হোক, তারা পোস্টের নিচে রেফারেন্স দিয়েছেন।
Collected From
Dr. Shamim Reja Political Anlyst and Social
Media Personality.

পিয়াজ’ডি গবেষক ভাই-বোনেরা, উপরের ইংরেজী লেখাটার বাংলা অনুবাদ কি হইবে!!!!??? দেখলেনতো কত সহজেই 'ডঃ শামীম রেজা' হয়ে গেলাম!!
ফেসবুকে লেখালেখি করেন, হাসিনা আফার মতো পিঁয়াজ’ডি-রসুনডি ডিগ্রীর অভাব হইবেনা।

জানতে মুঞ্চায়, এতো সুন্দর ডিগ্রী সমূহ কোন সেই আল্লাহর বান্দা আমার নামের শেষে যুক্ত করেছেন!? ভাইজান একটু সামনে আসেন, আপনার খোমা মোবারক দর্শণ করে ধন্য হই।

সর্বেশেষ যে কথাটি বলতে চাই, “আমি ডিগ্রি পিয়েছি, আপনি পেয়েছেনতো?”

৩অক্টোবর২০১৩

Post Comment

হতাশার আধার চিড়ে আলোর হাতছানি। পর্ব-১০

facebook link

‘দোস্ত পাঁচটা টাকা দেতো!’
‘না দিমুনা, যা ফুট!’
‘দোস্ত এমন করস ক্যা, একটাইতো!’
‘তোর একটার গুষ্টি কিলাই! আমার সামনে ওইসব টানতে পারবিনা, মেজাজ খারাপ হয়ে যায়’।
‘শোন দোস্ত, তোর কথার সাথে আমি একমত। তুই কি কস, সিগারেট দেশের শত্রু না?’
‘খালি সিগারেটনা, যারা সিগারেট খায় তারাও দেশের শত্রু’।
‘তাইলে শোন, দেশের শত্রুকে ধ্বংস করতে হবে, জ্বালাইয়া ফেলতে হবে! মাঝে মাঝে আমার মনে হয় দোকানের সব সিগারেট কিনে জ্বালাইয়া দেই! কিন্তু এত টাকাতো আমার কাছে নাই, তাই আপাতত একটাই জ্বালাইছি!’
কথাটি বলেই খ্যাক খ্যাক করে হাসতে শুরু করলো আলী, আমার ক্লাসমেট।
সকাল হতেই কলের পরে কল দিচ্ছি, কোনো খবর নাই, মোবাইল বালিশচাপা দিয়ে ঘুম! অবশেষে বাসায় গিয়ে মাথায় পানি ঢেলে ঘুম ভাঙাইছি, আর ভার্সিটিতে যাওয়ার পথেই সোহেলের দোকানে এই কাহিনী।

টেম্পুতে বাদুড় ঝোলা করে জিইসি মোড়ে গিয়ে নামলাম, আহারে ললনাদের ভীড়! লালপরী, নীলপরী, ডানাকাটা পরী, ময়ূরের পালক লাগানো কাউয়া পরী, হরেক রকমের পরীর হাট বসেছে জিইসি মোড়ে।
হ্যা, হাটই বলছি! পরস্পরের কাছে কিভাবে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করা যায়, নিজেকে বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডের কাছে বিক্রি করা যায়, তারই কম্পিটিশন হয় সম্ভবত এই জিইসি মোড়ে। এককথায় বলা যায় ওয়েস্টার্ণ ড্রেসের ফাকে ফাকে বাঙালী চামড়া।
আলী দেখলাম ভেউ ভেউ করে কান্নার অভিনয় করে মুখ ঢাকলো, কিরে ফাজলামো করিস কেনো?
হাসতে হাসতে জবাব দিলো, ‘দোস্ত আবেগে কাইন্দালাইসি!’
‘মানে কি?’
‘মানে হইলো, মাইয়াগুলো এতো সুন্দর ক্যান?’
‘সুন্দর হইলে তোর কি?’
‘কথা সেইটানা, কানছি আরেক কারণে!’
‘কি কারণ?’
‘মেয়ে সবগুলাতো দখল হইয়া গেছে!’
‘দখল হইলে তোর কি? নিজেতো ৭/৮টা প্রেম করস! নাকি আরো করার ইচ্ছে আছে?’
‘না দোস্ত, টেনশনে আছি। এভাবে সবাই দখল হয়ে গেলে বিয়ে করার জন্যতো মেয়ে পাওয়া যাবেনা’।

আলীর কথা শুনে লোকমান ( Lokman ) ভাইয়ের একটা কথা মনে পরে গেলো। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ফ্রি-সেক্সের দেশে পরিণত হয়ে যাবে। তার যুক্তি ছিলো, বর্তমানে যেসব ছেলে-মেয়ে বিয়ের পূর্বেই প্রেম-ভালোবাসা নামক অনাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছে, তারা সবাই কিন্তু পরস্পরকে বিয়ে করতে পারবেনা। ফলাফল যা হবে সেটা হচ্ছে বিয়ের পরেও অনেকেই তাদের পূর্বের প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং ঘটবে পরকীয়া সম্পর্কের বিস্ফোরণ। আগামী পনেরো হতে বিশ বছরের মধ্যেই এটি ছড়িয়ে পড়বে মহামারী আকারে।

লোকমান ভাইয়ের যুক্তি কিন্তু ফেলে দেওয়ার মতো না। আমার বন্ধু আলী ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, তাই সাংগঠনিক সার্কেলের বাইরের জগতে কি ঘটে চলছে তার সম্পর্কে কিছু কিছু জানতে পারি। সেদিন আলী বলছিলো, ‘দোস্ত, এখনকার পোলাপাইন অবিবাহিত মেয়েদের চাইতে বিবাহীত মেয়েদের সাথে প্রেম করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে!’ এবং কথার স্বপক্ষে কয়েকটি নজীরও প্রদর্শন করলো।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কারণ কি?
আলীর জবাব ছিলো, পরকীয়াতে রিস্ক নাই!
বিশেষ কাজে ঢাকায় গিয়েছিলাম, একটি পার্কের পাশ দিয়ে রিক্সায় করে যাওয়ার সময় সেদিকে ইঙ্গিত করে খালাতো ভাই বলছিলো, ছোট-ছোট বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে অনেক গার্জিয়ান এখানে এসে পরকীয়া সম্পর্ক উপভোগ করে দিবালোকেই। শুনে বিশ্বাস হয়নাই, ভেবেছিলাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে, কিন্তু পরবর্তীতে এব্যাপারে কয়েকটি পত্রিকার রিপোর্ট পড়ে অবিশ্বাস করতে পারিনাই।

উপরে যে কথাগুলো বললাম সেটা হচ্ছে হতাশার দিক, অনেকেই হয়তো দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ইতোমধ্যেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে আলীর মতো অবিবাহীত রসিক পোলাপাইনরা আবেগে কাইন্দালাইছেন! একটাই চিন্তা, ভালো বউ পাওয়া যাবেতো!?

এবার আশার দিক শুনাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে চলা ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ছেলে-মেয়েগুলো অন্ততপক্ষে এই ভাইরাস হতে অনেক দূরে আছে। সাংগঠনিক সিস্টেমে ইসলাম মেনে চলার কারণে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী পরিচিত হচ্ছে ইসলামের সুমহান শিক্ষার সাথে, ইসলামের অনন্য নির্দেশের সাথে, ইসলামের কল্যানময় পথের সাথে।
আমরা আশা করতে পারি, হতাশার মেঘ দূর করে এই তরুণ-তরুনীরাই দেশটাকে রক্ষা করবে জাহেলিয়াতের কদর্য থাবা হতে।

২৯সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবসের শানে নজুল

ছবির এই প্রাণীটি হতে সাবধান।

অদ্ভুত সেই মেয়ে, অদ্ভুত তার জীবন যাপন। মানুষ সর্বদা আতঙ্কিত থাকে কুকুর হতে, কারণ কুকুরে কামড় দিলে জলাতঙ্ক হবে। কিন্তু তার বেলায় ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন, কুকুরই সর্বদা আতঙ্কে থাকে তাকে নিয়ে, কারণ তার সংস্পর্ষে হতে পারে জলাতঙ্কের চাইতেও ভয়াবহ ব্যাধি!

এমন অদ্ভুত চরিত্রের শিশুটির জন্ম হয়েছিলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানে বর্তমান বাংলাদেশে, লোক মুখে শোনা যায়, শেখ-মুজিবের শাসনামলে ভারতকে ফারাক্কা বাধ চালু করার অনুমতি দান এবং বর্তমানে তিস্তা চুক্তি না হওয়ার পেছনে ছিলো এই মেয়েটির অবদান। কারণ জন্ম হতেই তিনি বহন করেছিলেন জলাতঙ্কের বিষাক্ত জীবনু, ভারতের ভেতর দিয়ে আসা পাহাড়ি নদীর জল দেখে তিনি আতঙ্ক বোধ করতেন, তাই সেই জল বন্ধ করার জন্যই চালু করা হলো ফারাক্কা বাঁধ।

এমন অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের কারনে তিনি আশা করেছিলেন নোবেল কমিটি তাকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে জন্মসূত্রে জলাতঙ্কের জীবনু বহন করার জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়ার কোনো নিয়ম নেই।

গত পরশু এই নারী জাতিসংঘে গিয়েছিলেন ভাষণ দিবেন বলে, সেখানে তার দেখা হয় পাকিস্থানী কিশোরী মালালা ইউসুফ জাইয়ের সাথে, শোনা যায় তিনি আদর করে মালালাকে চুমু খেয়েছিলেন, আর একারনেই গত দু’দিন ধরে জলাতঙ্কে ভুগছেন মালালা ইউসুফ জাই।

সবচাইতে ভয়াবহ ব্যাপার যেটা তা হচ্ছে, আমেরিকার স্বাস্থ বিভাগ সম্প্রতি এই নারীর কিছু বক্তব্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। তারা ঘোশণা দিয়েছেন, এই নারীর মুখের ভাষা প্রাণী জগতের জন্য ক্ষতিকর। গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনের রাস্তায় তার কিছু লিখিত বক্তব্য পরে থাকায় সেখানে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে, হুলস্থুল পড়ে যায় পুরো এলাকায়। সাথে সাথেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছুটে আসে শত শত পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড, এফবিআই, এন্ট্রি টেরোরিজম টাস্ক ফোর্সের বিশেষ বাহিনী, দমকল, প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড ও অ্যাম্বুলেন্স সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য। পরবর্তীতে সেগুলো জব্দ করা হয় এবং স্বাস্থ বিভাগে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সন্ধার দিকে জীবানুমুক্ত করতে সক্ষম হয় বলে জানা গেছে।

সর্বেশেষ যে কথাটি সবাইকে জানানো প্রয়োজন বলে মনে করছি সেটা হচ্ছে, আজ ২৮সেপ্টেম্বর এই মহান নারীর জন্মদিন, এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জাতিসঙ্ঘ আজকের দিনটিকে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস হিসেবে ঘোশণা করেছে।

তথ্যসূত্রঃ
১।বোমা ভেবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পুস্তিকা নিয়ে তুলকালাম ( www.rtnn.net//newsdetail/detail/1/3/70930 )
২। শেখ হাসিনার জন্মদিন ২৮সেপ্টেম্বর ( http://bn.wikipedia.org/wiki/শেখ_হাসিনা )
৩। বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস ২৮সেপ্টেম্বর ( http://bn.wikipedia.org/wiki/বিশ্ব_জলাতঙ্ক_দিবস )

২৮সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

বাতিল শক্তির অপপ্রচার এবং উহাদের ফলাফল


এক
পত্রিকায় বিশাল হেডিং দিয়ে নিউজ আসলো, রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে শিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগ ও বাম ছাত্রসংগঠনের কর্মিদের রগ কেটে কেয়ামত বানিয়ে ফেলছে। তারা নাকি ছাত্রলীগের নাক/কান কেটে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলতেছে। পুরো দেশ জুড়ে হই-চই পড়ে গেলো, বিদেশী সাংবাদিকরা আসলেন সরেজমিনে তদন্ত করতে, কিন্তু কোথাকার কি! রগকাটার একটা নজীরও উপস্থাপন করতে পারলোনা মিথ্যাবাদীর দল, তারা লজ্বিত হলো।
কিন্তু ততদিনে দেশের ছাত্রসমাজের কাছে শিবিরের নাম ছড়িয়ে পড়েছে, বাংলাদেশে একটা ছাত্রসংগঠন আছে নাম ছাত্রশিবির, রাজশাহী ইউনিতে তাদের হেব্বি দাপট! সন্ত্রাসীদের নাক-কান কেটে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলা চাট্টিখানি কথা!?
ফলাফলঃ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ রাজশাহী ইউনির ছাত্ররা দলে দলে শিবিরে যোগ দিলো, সন্ত্রাস দমনে শিবিরের বিকল্প নেই!

দুই
কোটালী পাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা মঞ্চের নিচ হতে বিশাল বোমা পাওয়া গেলো, ওজন বাহাত্তর কেজি। বোমা হামলা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলো মুফতি হান্নানকে, মিডিয়া প্রচারণা শুরু করলো, মুফতি হান্নান জামায়াত-শিবিরের লোক, জামায়াত শিবির জঙ্গী!!
ফলাফলঃ দূর্দান্ত সাহসী এক ছেলে শিবিরের স্থানীয় অফিসে এসে হাজির!
‘আমি শিবির করবো’।
‘তুমি শিবির করবা, কিন্তু কেনো’?
‘শিবিরের কাছে যে অস্ত্র আছে এই অস্ত্র বাংলাদেশের মিলিটারীর কাছেও নাই(বাহাত্তর কেজী ওজনের বোমা)! ভারতের হাত হতে বাংলাদেশকে বাচাতে হলে শিবিরের বিকল্প আমি কিছু দেখছিনা, তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি শিবিরে যোগ দিবো!

তিন
মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারনা, চট্টগ্রাম কলেজ-মহসিন কলেজে শিবিরের অস্ত্রের গুদাম আছে, এই কলেজ দুটিতে শিবিরের জঙ্গিরা সবসময়ই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে।
ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম কলেজে হামলা করবে, বিশাল প্রস্তুতি। অন্যদিকে কলেজ ছাত্রাবাসে তখন কি এক কারনে শিবিরের জনশক্তি খুবই কম। প্রস্তুতি বলতে কয়েকটা পানির পাইপ আর কিছু পাথর সংগ্রহ
করে ছাত্রাবাসের ছাদে জড়ো করা হলো।
দায়ীত্বশীল একটা চমৎকার সিদ্ধান্ত নিলেন, শিবিরের কর্মীদের নির্দেশ দিলেন পানির পাইপগুলো ছাদের কিনারায় নিয়ে এমন ভাবে এদিক সেদিক মুভ করতে হবে, বাহির হতে দেখলে যেনো মনে হয় বন্দুকের নল ঘুরছে...
এদিকে ছাত্রলীগ আগেই মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছে এখানে শিবিরের অস্ত্রের গুদাম আছে, অন্যদিকে ছাদের উপর পানির পাইপের নড়াচড়া, দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে নিতে সময় লাগলোনা, মেশিনগানের নল ভেবে পরিমরি ছুট!

চার
চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটির শিবিরগুলো বিড়ালের মতো আদরের বস্তু, ওই ছেলেগুলোর মতো অমায়ীক ছেলে অন্যকোথাও পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। কিন্তু এই বিড়ালকে হিংস্র বাঘ বানিয়ে ছেড়েছে মিডিয়া, সারক্ষণ নিউজ করছে, চট্টগ্রাম ইউনিতে শিবিরের রণপ্রস্তুতি, বিশাল অস্ত্রের সংগ্রহ ইত্যাদি ইত্যাদি।
ছাত্রলীগ সিদ্ধান্ত নিলো চট্টগ্রাম ইউনিতে তারা সমাবেশ করবে, একদিকে সমাবেশের কার্যক্রম চলছে অন্যদিকে বারবার ডানে বামে তাকাচ্ছে কখন শিবির অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে, তীব্র আতঙ্ক সবার মাঝে।
এরই মধ্যে শব্দ হলো ‘ঠুশ!’
কে কোন দিকে, কার গায়ের উপর দিয়ে, দিক-বেদিক জ্ঞান হারিয়ে ছুটছে কারো খবর নেই। পরে দেখা গেলো একটা রিক্সার চাংকা পাঙচার হয়ে গিয়েছে......

পাঁচ
আমার বাসায় পুলিশ অভিযান হলো, পুলিশ একটি সেভিং ব্লেড জব্দ করেছিলো রগ কাটার অস্ত্র হিসেবে, ওটা দিয়ে নাকি আমরা মানুষের রগকাটি!
যাই হোক বাতাসে গুঞ্জন শুনছি, ছাত্রলীগ-যুবলীগের উঠতি পোলাপাইন নাকি আমাকে নিয়ে এখন হেব্বি আতঙ্কে আছে! প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সত্যিই তাদের রগ কেটে দেই কিনা।
শুনে হাসি পাইছে, যে মানুষ জীবনে নিজের হাতে একটা মুরগী জবাই করেনাই, সে কিনা মানুষের রগ কাটবে......

পাঁচ
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চট্টগ্রাম মাহফিল করতে দেয়া হবেনা, ১৪৪ধারা জাড়ি করা হলো। চট্টগ্রামবাসীও সিদ্ধান্তে অনড়, মাহফিল হবেই সেটা যেভাবেই হোক।
পরে মাহফিল হয়েছিলো আউটার স্টেডিয়ামে, মাহফিল নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা নিয়ে প্রতিদিনই পত্রিকার রিপোর্ট হয়েছে, প্রচারণা হয়েছে মাহফিলের। ওই মাহফিলটাই ছিলো চট্টগ্রামের ইতিহাসে সবচাইতে বড় মাহফিল।
গত দুটি বছর ধরে এই আলেমের উপর যেভাবে জুলুম করা হয়েছে এবং আলহামদুলিল্লাহ সাঈদী সাহেবকে নিয়ে বিশ্ব মিডিয়া যেভাবে কভারেজ দিচ্ছে, আমি স্বপ্ন দেখছি গোটা চট্টগ্রামে পা রাখার জায়গা থাকবেনা আল্লামা সাঈদীর মুক্তি পরবর্তী মাহফিলে।
কোরআন প্রেমিক লক্ষ-লক্ষ ছাত্রজনতা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’ স্লোগানে প্রকম্পিত করবে চট্টগ্রামের রাজপথ।

২৮সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

আপনি শিয়া নাকি সুন্নী?


প্রথমবার যখন অনলাইনে আসলাম, হেব্বি মজা পেয়ে গেলাম। দেশ বিদেশের কতশত মানুষ একই যায়গায় বসে কথা বলা যায়, অনুভূতি শেয়ার করা যায়, পত্রমিতালীকে বিদায় জানিয়ে ফেসবুকে ফ্রেন্ড করা যায়, আরো কত কি!
দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যেতো বিভিন্ন দেশের বৈচিত্রপূর্ণ ওয়েবসাইট ভ্রমণ করে অজানাকে জানার নেশায়! এরই মধ্যে পরিচয় হলো মধ্য প্রাচ্যের কিছু মুসলিম ভাইয়ের সাথে। সেই সব মুসলিম ভাইদের সাথে প্রথমবারের কথোপকথনের শুরুটা ছিলো অদ্ভুত রকমের সাদৃশ্যপূর্ণ।
সালাম দিয়ে কথা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই তাদের প্রশ্ন হতো, আপনি মুসলিম?
আমি মুসলিম এব্যাপারে কনফার্ম হলেই তারা দ্বিতীয় প্রশ্ন ছুড়ে দিতো, আপনি শিয়া নাকি সুন্নী?
এই শিয়া/সুন্নী শুনলেই হুট করে মাথা ধরে যেতো। তবে মাথা ঠান্ডা রেখেই প্রশ্ন করতাম, আমিতো শিয়া সুন্নী বুঝিনা! আমাদের রাসূল(সঃ) কি শিয়া ছিলেন নাকি সুন্নী ছিলেন? আমার প্রশ্ন শুনে তারা হতবাক হয়ে যেতেন!
এরপরেই বলতাম, আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ এক এবং মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, তাছাড়া আমি কুরআন মানি এবং হাদিস মানি, আমি মুসলিম! একজন মুসলিম কখনো শিয়া কিংবা সুন্নী হতে পারেনা।
আমার জবাব শুনে তারা দ্বিতীয়বার এই বিষয়ে কথা বাড়াতেননা। অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলেই এই চ্যাপ্টার ক্লজ করে দিতেন। ভেবে অবাক হতাম, ইসলামের প্রাণকেন্দ্র আরবের মানুষ কিভাবে নিজেদের শিয়া সুন্নীতে পৃথক করতে পারে?

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বক্তব্যে শুনেছিলাম, মঙ্গল সেনাপতি হালাকু খানের নেতৃত্বে যখন বাগদাদ নগরী ধ্বংশ করে দেয়া হচ্ছিলো, দাউ দাউ করে জ্বলছিলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ লাইব্রেরী, ঠিক সেই মুহূর্তে বাগদাদের মসজিদে একদল আলেম তুমুল বিতর্কে লিপ্ত ছিলেন, তাদের বিতর্কের বিষয় ছিলো, “হযরত ঈসা (আঃ) শেষ যমানায় যে গাধার পিঠে চড়ে আসবেন, সেই গাধার মূত্র পাক নাকি নাপাক!!”

আজ ইরাক, আফগানিস্থান, কাশ্মির, ফিলিস্তিন, মিশর, সিরিয়া সহ গোটা দুনিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো যখন ইসলামের দুশমনদের আগুনে জ্বলছে, বাংলাদেশে এবং মিশরের ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উপর ঘটছে একের পর এক গণহত্যা, ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্বের মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে বাহাস করছে, আপনি শিয়া নাকি সুন্নী?

ভেবেছিলাম শিয়া-সুন্নীর এই ফিতনা হতে অন্তত আমাদের এই বাংলাদেশকে আল্লাহ হেফাজত করেছেন, কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু ভাইয়ের কাফের ফতোয়া দেখে, সে আশাটিও উবে গেলো।

২৩সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

চোরের মায়ের গলা একটু বড়ই থাকে


এক
হাসান সাহেব পরোপকারী ব্যক্তি, মানুষের উপকার করার দারুণ গুণ তার মধ্যে বিদ্যমান। সারা মাস হাড়ভাঙা খাটুনি করে কিছু সম্পদ উপার্জন করলেন, নিজ হাতে অভাবী মানুষের মাঝে বিতরণ করবেন বলে।
অন্যদিকে আলিম সাহেবও পরোপকারী ব্যক্তি তবে একটু ভিন্ন টাইপের পরোপকারী, তিনি হাসান সাহেবের উপার্জন করা সম্পদগুলো চুরি করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন, সেখানে বিশাল ব্যানার টানানো হলো, জনাব আলিম সাহেবের পক্ষ হতে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মধ্যে সাহাজ্য বিতরণ।
আর জনাব মনির সাহেবো পরোপকারী ব্যক্তি তিনিও হাসান সাহেবের কস্টার্জিত সম্পদ থেকে কিছু চুরি করে নিজের বাড়িতে গিয়ে বিতরণ শুরু করলেন, বিশাল ব্যানার ঝুলানো হলো, মনির সাহেব মানুষ হতে সাহাজ্য সংগ্রহ করে বিতরণ করছেন।

হাসান সাহেব ঘুম থেকে উঠেই দেখেন তার কস্টার্জিত সম্পদ তাকে না জানিয়েই আলিম এবং মনির নামের দুইজন ব্যক্তি লুটপাট করে বিতরণ শুরু করে দিয়েছে। হাসান সাহেব প্রচন্ড রেগে গিয়ে এই ঘটনার প্রতীবাদ জানালেন, কিন্তু কিসের কি?
আলিম সাহেব এবং মনির সাহেব দুইজনেই মার মার বলে তেড়ে এলেন, ব্যাটা তুই কি নামের জন্য দান করিস, নাকি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করিস? তোর উদ্দেশ্য কি? আমরাতো দানই করতেছি খেয়ে ফেলতেছিনা।
অন্যদিকে জনাব আলিম এবং জনাব মনিরের ভক্তের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়, তারাও যুক্তির লিস্টি নিয়ে হাজির, “আরে ভাই মাইন্ড খাইতাছেন ক্যান! আপনি কি চান, আপনার নাম নাকি আপনার দান করা জিনিসগুলো মানুষের হাতে পৌছাক। আলিম সাহেব এবং মনির সাহেবতো খারাপ কিছু করছেননা, আপনার জিনিসগুলো সঠিক মানুশের কাছে পৌছে দিচ্ছি, আপনি এমন ছোটলোকের মতো আচরণ করছেন কেনো?"

হাসান সাহেব আর কি করবেন, শেষ পর্যন্ত ছোট লোকের মতো আচরণ করেও তার জিনিসগুলো ফেরত আনতে পারলেননা। ভগ্ন হৃদয়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে নিয়ে ফিরে এলেন আপন নিবাসে।

দুই।
অনলাইনে লেখালেখি করছি, বছর দুয়েক হবে, এর আগে পোস্ট শেয়ার করেই দায়ীত্ব শেষ করতাম, কপিপেস্ট কিংবা অন্যের লেখা চুরি করেছি বলে মনে পড়ছেনা। কিন্তু যখনি লেখালেখি শুরু করলাম তখনি দেখলাম আমার অবস্থা হয়েছে উপরোক্ত হাসান সাহেবের মতো। একটা লেখা অনলাইনে পোস্ট করতে না করতেই বিভিন্ন পেজ সয়লাভ সে লেখাতে, কিন্তু রেফারেন্স নাই! কখনো নিজেদের নাম দিয়ে কখনো সংগৃহীতি শব্দটি জুড়ে দিচ্ছেন কপিপেস্ট কারীরা।
আর আমি প্রতীবাদ করলেই হইছে, ওই লেখাচোর এবং তার সাঙ্গ-পাঙ্গরে ছুটে এসেছেন উপদেশের ঝুড়ি নিয়ে, “আরে ভাই চ্যাতেন ক্যান, আপনি কি নিজের নাম প্রচারের জন্য লেখেন নাকি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য লেখেন? কোনটা জরুরী বলেন, আপনার নাম প্রচার নাকি লেখাটার প্রচার!”
আমি বুঝিনা, ওই আবাল গুলারে কিভাবে বুঝাবো, আমার লেখা আমার অনুমতি ছাড়া যারা কপিপেস্ট করছেন উইদাউট রেফারেন্স, তারা আমার অধিকার নষ্ট করছেন, আমার হক কেড়ে নিচ্ছেন। এবং এরজন্য আখিরাতে আল্লাহর কাঠগড়ায় তাদের দাড়াতে হবে।

আজকে দেখলাম বেশ কয়েকটি পেজ আমার অনুমতি ছাড়াই লেখা কপিপেস্ট করে দিয়েছে। প্রতীবাদ করেছি কাজ হয়নাই, কিছুক্ষণ পরেই হয়তো রিপ্লাই আসবে, "আপনি কি নাম প্রচারের জন্য লেখেন?"

২৩সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

কসাইদের হাতে বিপদাক্রান্ত শিশু!


এক
আমার বড় আপার কাহিনী দিয়েই শুরু করলাম,
আপার বাচ্চা হবে, দুলাভাইয়ের দৌড়ঝাপ শুরু হয়ে গেলো, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে সরকারী হাসপাতালের পরিবর্তে প্রাইভেট ক্লিনিকের সিডিউল নেয়া হলো, ডাক্তারের সাথে বারবার পরামর্শ চেকআপ নিয়মিত চলছে, প্রয়োজনে রক্তের জন্য ডোনার রেডি করা হলো। দুলাভাই আবার এইসব বিষয়ে মহা সচেতন।
ক্লিনিকের ডাক্তার ডেলিভারীর সম্ভাব্য একটি ডেট দিলেন, তড়িঘড়ি করে গ্রাম হতে ছোট বোনকে নিয়ে এলাম আপার বাড়তি যত্নের জন্য। কিন্তু কোথাকার কি? দেখতে দেখতে ৫/৬দিন চলে গেলো কিন্তু কোনো খবর নেই, ডাক্তার বললেন ক্লিনিকে ভর্তি করেন, সম্ভবত সিজার করতে হবে।
আপা বললেন আমিতো শারিরীক ভাবে সুস্থ আছি ক্লিনিকে ভর্তি হবো কেনো? আপা বাসায় চলে এলেন।
সম্ভাব্য ডেটের ২১ দিন পরে আমার ফুটফুটে একটি ভাগ্নীর জন্ম হলো, আলহামদুলিল্লাহ মা-মেয়ে দু’জনেই সুস্থ!
আমার প্রশ্ন হলো, তাহলে ডাক্তার এতো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একজন সুস্থ মানুষকে ক্লিনিকে ভর্তি করতে চাইলেন কেনো? আর সিজার অপারেশনের কথাই বা কেনো বললেন?
এটাকি মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা?
ইদানিং কারো বাচ্চা হলেই শুনি সিজার হয়েছে, স্বাভাবিক পন্থায় সন্তান দুনিয়াতে আসছেনা, যাও আসছে হাতে গোনা দুই একটা, এর পেছনের কাহিনী কি? মায়েদের অক্ষমতা নাকি ডাক্তারদের কারসাজী?

দুই
এ ব্যাপারটি নিয়ে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে নিজের অভিজ্ঞতা লিখেছেন চৌধুরী মহিবুল হাসান(বাশেরকেল্লা হতে প্রাপ্ত),
ভবিষ্যতে কেউ যদি ঢাকা এপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন তাহলে দয়া করে একটু ভেবেচিন্তে আসবেন। এই হাসপাতাল হাসপাতাল না, এটা চিকিৎসার নামে একটা সম্পূর্ণ অনৈতিক, বাণিজ্যিক ধান্দা বাজির একটা বিশাল দালান। আমার স্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে, ভয় পাইয়ে দিয়ে তারা আমার সম্পূর্ণ সুস্থ শিশুকে এক মাস আগে জন্ম দেয়ালো কোনো কারণ ছাড়াই। বলল বাচ্চার ওজন অনেক বেশি, আর আগে জন্ম হলে তাদের জন্য ম্যানেজ করা সহজ হবে। জন্মের পর দেখা গেল বাচ্চার ওজন অনেক কম এবং তাকে ইনকিউবেটরে রাখতে হবে। পরে বুঝলাম "ম্যানেজ" মানে হল শুধু মাত্র বিল বাড়ানোর জন্য আমাদেরকে আগে বাচ্চা জন্ম দেয়ালো। একদিনের ভুমিষ্ট বাচ্চাকে এন্টিবায়োটিক, অক্সিজেন ইত্যাদি দিয়ে এক ভীতিকর অবস্থার সৃস্টি করল, বলল ইনফেকশন হতে পারে, ব্লাড কালচারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৭২ ঘণ্টা, পুড়া সময় বাচ্চা ইন্টেন্সিভ কেয়ারে থাকবে। ৭২ ঘন্টা পর রিপোর্ট আসলো কোনো ইনফেকশন নাই। কেনও একদিনের বাচ্চাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে তিনদিন আইসিঊ তে রাখা হল? কোনো উত্তর নাই। ফাইল দেখতে চাইলে বলল রিলিজের আগে দেখানোর নিয়ম নাই। পূরো নাটকটি তাদের সাজানো। তারাই প্রথমে আমাদেরকে আগাম ডেলিভারী দিতে বাধ্য করল এইবলে বাচ্চার ওজন অতিরিক্ত, যাতে করে কিছু পয়সা অতিরিক্ত খসাতে পারে। কেনো তারা একটা বাচ্চার জীবন বিষীয়ে তুলে এই কাজটা করল? একবার ভাবলাম আমি ভুল করছি। পরে মেটারনীটি ডিপার্টমেন্টে দেখলাম তারা এই কাজ শতকরা ৬০% রোগীকে করাচ্ছে। যেই ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে হাসি খুসির জায়গা হওয়ার সেখানে এক ভীতিকর পরিস্থিতি। প্রত্যেক নতুন বাবা মার চোখে ব্যপক আতংক। অন্য একজনের সাথে পরিচিত হলাম, বল্লেন তার ভাইকে অস্ত্রপচার করতে প্রাথমিক ভাবে অসফল হয় হাসপাতাল, পরে ভুল স্বীকার করে আবার করে। কিন্তু বিল ঠিকই ডাবল করছে। এখানে এমনও অভিযোগ আছে মৃত রোগি আনলে তারা তাকে দুইদিন ইন্টেন্সিভ কেয়ারে রেখে দেয়, এবং এর প্রমানও পাওয়া গেছে। পরে একটু অনুসন্ধান করতে বার্ষিক রিটার্ণ দেখলাম, চক্ষু চরক গাছ। তারা ২০১১ সালেই মুনাফা করে ২৬ কোটি টাকা! আয়ের শতকরা ৪০% আসে গাইনি ও অবস্ট্রেট্রিকস ডিপার্টমেন্ট থেকে! সুতরাং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার এপোলো হাসপাতালে যারা আসবেন তারা দয়া করে ভেবেচিন্তে আসবেন। এই কসাইখানা ব্যবসা চট্টগ্রামে যাওয়ার পায়তারা করছে এবং স্বল্প মূল্যে সিডিএ থেকে জমিও কিনেছে মানবিক প্রতিষ্ঠান নাম করে। এই এপোলো হাসপাতাল হল ব্যবসায়ী এম পি টিপু মুন্সি, শান্তা গ্রুপের মালিক, আর লংকা বাংলা ফাইনান্সের যৌথ প্রযোজনার এক ধান্দা বাজির দোকান যার প্রাতিষ্ঠানিক নাম এস টি এস হোল্ডিং লিঃ তারা ভারতের তৃতীয় শ্রেনীর কিছু ডাক্তার এপোলো গ্রুপের সাথে যৌথ চুক্তির আওতায় এনে জনগণের সাথে ভাওতাবাজির এক ব্যপক আয়োজন করেছে। ভারতে এই ডাক্তারগূলোকে কেউ চেনা দুরে থাক চাকরি ও দেবেনা। দূর্ভাগ্যের বিষয়,এই ব্যপক লূটতরাজ দেখার, নিয়ন্ত্রন করার সংস্থা (বিএমডিসি, ডীজি হেলথ) একেবারই নিস্ক্রিয়। তাই ঢাকা এপোলো হাসপাতালে আসার আগে সুচিন্তিৎ স্বীদ্ধান্ত নিন।

আমার প্রশ্ন হলো, চিকিৎসা সেবার নামে এই সব মানুষরুপী জানোয়ারদের হাত হতে জাতিকে মুক্ত করার কোনো উপায় কি নেই?

২৩সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment