এক
একটি ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম, আয়োজক ছিলো অনলাইন ভিত্তিক একটি সংগঠন। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি ও সময় মার্মা ভাই প্লান করছিলাম অনলাইনে পর্ণোগ্রাফীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করবো, তো আমরা ঠিক করলাম মূল প্রগ্রাম শেষ হলেই আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করবো।
প্রগ্রাম শেষ হলো, সময় ভাই পর্ণোগ্রাফি শব্দটা নিয়ে মাত্র দুটি লাইন বলেছেন, অমনি একভাই দাড়িয়ে গেলেন, প্রগ্রামটি তার বাসাতেই হয়েছিলো। তিনি তীব্র ভাবে এই টাইপের ক্যাম্পেইনের বিরোধীতা করে যুক্তি উপস্থাপন করলেন, তার ভাষায় পর্ণগ্রাফি একটি শিল্প! শিল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা বোকামী।
তিনি একটি প্যাকেট বের করলেন, প্যাকেটে সম্ভবত পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ছিলো, তিনি সদম্ভে ঘোশণা করলেন, আপনারা পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে কি বুঝেন? পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে বুঝতে হলে আমার সাথে কথা বলবেন! তিনি হাতের প্যাকেটের দিকে দৃস্টি আকর্ষণ করে বললেন, এইখানে দুইহাজারের বেশি ভিডিও আছে......
কি আর করার চুপ হয়ে গেলাম, মনে মনে বললাম, ‘ভাইজান, আপনি শিল্পী মানুষ! শিল্পচর্চা করতে থাকেন। আর আমাদের একটু রেহাই দেন!’
প্রগ্রাম সেখানেই শেষ।
দুই
কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে চটি পেইজ সাজেশন করা হচ্ছিলো ডানদিকের কলামে, বেশ কিছু ফ্রেন্ড দেখলাম সেখানে লাইক করেছে, ধরে ধরে সবগুলোকে ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম। বন্ধু শুভাকাঙ্কীরা অনেকেই ব্যাপারটিকে পজেটিভলী নিলেননা, তাদের কথা হচ্ছে ভুল করেও কেউ কেউ এইসব পেইজে লাইক দিয়ে ফেলতে পারে, অতএব সুযোগ দেয়া প্রয়োজন ছিলো।
পরবর্তীতে এই টাইপের পেজ সাজেশন আসলেই মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদেরকে একটি করে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সতর্ক করা শুরু করি। অনেকেই দেখলাম লজ্জ্বিত হয়ে আনলাই বাটনে ক্লিক করছে আবার কেউ কেউ রিপ্লাই দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছেনা, তাদেরকেও ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম।
তিন
সেদিন এক বন্ধুর সাথে ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম, বন্ধুটি অবাক হয়ে বললো, আমিওতো চটি পেইজে লাইক দিয়েছি, পারলে আমাকে আনফ্রেন্ড কর।
ভাবলাম ঠাট্টা করছে, পরে সে প্রমান হাজির করলো। মুখের উপর বলে দিলাম পেজ গুলো আনলাইক না করে আর কখনো আমাকে ফোন দিবিনা।
পরের দিনই বন্ধুটি ফোন দিলো, ‘দোস্ত সবগুলো আনলাইক করেছি, একটা বাদে’
‘একটা কেনো রাখলি?’
‘পরতে ভালো লাগে’
‘তাইলে তুই পরতে থাক, আর নিজের চরিত্র নষ্ট করতে থাক’ ফোন রেখে দিলাম।
দীর্ঘদিন পরে আজ ঈদের দিন ফোন দিলো বন্ধুটি, ঈদের দিনে শত্রুতা রাখতে নেই। ঈদ মোবারক জানালাম।
বন্ধুটি হাসতে হাসতেই জানালো, আমাকে বাদ দিতে পারবে কিন্তু ওই পেইজ বাদ দিতে পারবেনা।
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ধর্মীয় বই পড়লে কি হয়?’
‘উত্তর দিলো, ধার্মিক হয়’
আবার জিজ্ঞাসা করলাম, ‘চটি পড়লে কি হয়?’
আমাকেই আবার প্রশ্ন করলো, কি হয়?
বললাম, ‘চরিত্র নষ্ট হয়’।
বন্ধুর যুক্তি, চটি পড়লেও তার চরিত্র ঠিক আছে......
"যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।"
~~[সূরা যুখরুফ ৪৩:৩৬-৩৭]
১৬অক্টোবর২০১৩
একটি ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম, আয়োজক ছিলো অনলাইন ভিত্তিক একটি সংগঠন। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি ও সময় মার্মা ভাই প্লান করছিলাম অনলাইনে পর্ণোগ্রাফীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করবো, তো আমরা ঠিক করলাম মূল প্রগ্রাম শেষ হলেই আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করবো।
প্রগ্রাম শেষ হলো, সময় ভাই পর্ণোগ্রাফি শব্দটা নিয়ে মাত্র দুটি লাইন বলেছেন, অমনি একভাই দাড়িয়ে গেলেন, প্রগ্রামটি তার বাসাতেই হয়েছিলো। তিনি তীব্র ভাবে এই টাইপের ক্যাম্পেইনের বিরোধীতা করে যুক্তি উপস্থাপন করলেন, তার ভাষায় পর্ণগ্রাফি একটি শিল্প! শিল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা বোকামী।
তিনি একটি প্যাকেট বের করলেন, প্যাকেটে সম্ভবত পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ছিলো, তিনি সদম্ভে ঘোশণা করলেন, আপনারা পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে কি বুঝেন? পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে বুঝতে হলে আমার সাথে কথা বলবেন! তিনি হাতের প্যাকেটের দিকে দৃস্টি আকর্ষণ করে বললেন, এইখানে দুইহাজারের বেশি ভিডিও আছে......
কি আর করার চুপ হয়ে গেলাম, মনে মনে বললাম, ‘ভাইজান, আপনি শিল্পী মানুষ! শিল্পচর্চা করতে থাকেন। আর আমাদের একটু রেহাই দেন!’
প্রগ্রাম সেখানেই শেষ।
দুই
কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে চটি পেইজ সাজেশন করা হচ্ছিলো ডানদিকের কলামে, বেশ কিছু ফ্রেন্ড দেখলাম সেখানে লাইক করেছে, ধরে ধরে সবগুলোকে ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম। বন্ধু শুভাকাঙ্কীরা অনেকেই ব্যাপারটিকে পজেটিভলী নিলেননা, তাদের কথা হচ্ছে ভুল করেও কেউ কেউ এইসব পেইজে লাইক দিয়ে ফেলতে পারে, অতএব সুযোগ দেয়া প্রয়োজন ছিলো।
পরবর্তীতে এই টাইপের পেজ সাজেশন আসলেই মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদেরকে একটি করে ম্যাসেজ পাঠিয়ে সতর্ক করা শুরু করি। অনেকেই দেখলাম লজ্জ্বিত হয়ে আনলাই বাটনে ক্লিক করছে আবার কেউ কেউ রিপ্লাই দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছেনা, তাদেরকেও ফ্রেন্ডলিস্ট হতে বের করে দিলাম।
তিন
সেদিন এক বন্ধুর সাথে ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম, বন্ধুটি অবাক হয়ে বললো, আমিওতো চটি পেইজে লাইক দিয়েছি, পারলে আমাকে আনফ্রেন্ড কর।
ভাবলাম ঠাট্টা করছে, পরে সে প্রমান হাজির করলো। মুখের উপর বলে দিলাম পেজ গুলো আনলাইক না করে আর কখনো আমাকে ফোন দিবিনা।
পরের দিনই বন্ধুটি ফোন দিলো, ‘দোস্ত সবগুলো আনলাইক করেছি, একটা বাদে’
‘একটা কেনো রাখলি?’
‘পরতে ভালো লাগে’
‘তাইলে তুই পরতে থাক, আর নিজের চরিত্র নষ্ট করতে থাক’ ফোন রেখে দিলাম।
দীর্ঘদিন পরে আজ ঈদের দিন ফোন দিলো বন্ধুটি, ঈদের দিনে শত্রুতা রাখতে নেই। ঈদ মোবারক জানালাম।
বন্ধুটি হাসতে হাসতেই জানালো, আমাকে বাদ দিতে পারবে কিন্তু ওই পেইজ বাদ দিতে পারবেনা।
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ধর্মীয় বই পড়লে কি হয়?’
‘উত্তর দিলো, ধার্মিক হয়’
আবার জিজ্ঞাসা করলাম, ‘চটি পড়লে কি হয়?’
আমাকেই আবার প্রশ্ন করলো, কি হয়?
বললাম, ‘চরিত্র নষ্ট হয়’।
বন্ধুর যুক্তি, চটি পড়লেও তার চরিত্র ঠিক আছে......
"যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।"
~~[সূরা যুখরুফ ৪৩:৩৬-৩৭]
১৬অক্টোবর২০১৩
No comments:
Post a Comment