facebook link
‘দোস্ত পাঁচটা টাকা দেতো!’
‘না দিমুনা, যা ফুট!’
‘দোস্ত এমন করস ক্যা, একটাইতো!’
‘তোর একটার গুষ্টি কিলাই! আমার সামনে ওইসব টানতে পারবিনা, মেজাজ খারাপ হয়ে যায়’।
‘শোন দোস্ত, তোর কথার সাথে আমি একমত। তুই কি কস, সিগারেট দেশের শত্রু না?’
‘খালি সিগারেটনা, যারা সিগারেট খায় তারাও দেশের শত্রু’।
‘তাইলে শোন, দেশের শত্রুকে ধ্বংস করতে হবে, জ্বালাইয়া ফেলতে হবে! মাঝে মাঝে আমার মনে হয় দোকানের সব সিগারেট কিনে জ্বালাইয়া দেই! কিন্তু এত টাকাতো আমার কাছে নাই, তাই আপাতত একটাই জ্বালাইছি!’
কথাটি বলেই খ্যাক খ্যাক করে হাসতে শুরু করলো আলী, আমার ক্লাসমেট।
সকাল হতেই কলের পরে কল দিচ্ছি, কোনো খবর নাই, মোবাইল বালিশচাপা দিয়ে ঘুম! অবশেষে বাসায় গিয়ে মাথায় পানি ঢেলে ঘুম ভাঙাইছি, আর ভার্সিটিতে যাওয়ার পথেই সোহেলের দোকানে এই কাহিনী।
টেম্পুতে বাদুড় ঝোলা করে জিইসি মোড়ে গিয়ে নামলাম, আহারে ললনাদের ভীড়! লালপরী, নীলপরী, ডানাকাটা পরী, ময়ূরের পালক লাগানো কাউয়া পরী, হরেক রকমের পরীর হাট বসেছে জিইসি মোড়ে।
হ্যা, হাটই বলছি! পরস্পরের কাছে কিভাবে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করা যায়, নিজেকে বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডের কাছে বিক্রি করা যায়, তারই কম্পিটিশন হয় সম্ভবত এই জিইসি মোড়ে। এককথায় বলা যায় ওয়েস্টার্ণ ড্রেসের ফাকে ফাকে বাঙালী চামড়া।
আলী দেখলাম ভেউ ভেউ করে কান্নার অভিনয় করে মুখ ঢাকলো, কিরে ফাজলামো করিস কেনো?
হাসতে হাসতে জবাব দিলো, ‘দোস্ত আবেগে কাইন্দালাইসি!’
‘মানে কি?’
‘মানে হইলো, মাইয়াগুলো এতো সুন্দর ক্যান?’
‘সুন্দর হইলে তোর কি?’
‘কথা সেইটানা, কানছি আরেক কারণে!’
‘কি কারণ?’
‘মেয়ে সবগুলাতো দখল হইয়া গেছে!’
‘দখল হইলে তোর কি? নিজেতো ৭/৮টা প্রেম করস! নাকি আরো করার ইচ্ছে আছে?’
‘না দোস্ত, টেনশনে আছি। এভাবে সবাই দখল হয়ে গেলে বিয়ে করার জন্যতো মেয়ে পাওয়া যাবেনা’।
আলীর কথা শুনে লোকমান ( Lokman ) ভাইয়ের একটা কথা মনে পরে গেলো। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ফ্রি-সেক্সের দেশে পরিণত হয়ে যাবে। তার যুক্তি ছিলো, বর্তমানে যেসব ছেলে-মেয়ে বিয়ের পূর্বেই প্রেম-ভালোবাসা নামক অনাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছে, তারা সবাই কিন্তু পরস্পরকে বিয়ে করতে পারবেনা। ফলাফল যা হবে সেটা হচ্ছে বিয়ের পরেও অনেকেই তাদের পূর্বের প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং ঘটবে পরকীয়া সম্পর্কের বিস্ফোরণ। আগামী পনেরো হতে বিশ বছরের মধ্যেই এটি ছড়িয়ে পড়বে মহামারী আকারে।
লোকমান ভাইয়ের যুক্তি কিন্তু ফেলে দেওয়ার মতো না। আমার বন্ধু আলী ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, তাই সাংগঠনিক সার্কেলের বাইরের জগতে কি ঘটে চলছে তার সম্পর্কে কিছু কিছু জানতে পারি। সেদিন আলী বলছিলো, ‘দোস্ত, এখনকার পোলাপাইন অবিবাহিত মেয়েদের চাইতে বিবাহীত মেয়েদের সাথে প্রেম করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে!’ এবং কথার স্বপক্ষে কয়েকটি নজীরও প্রদর্শন করলো।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কারণ কি?
আলীর জবাব ছিলো, পরকীয়াতে রিস্ক নাই!
বিশেষ কাজে ঢাকায় গিয়েছিলাম, একটি পার্কের পাশ দিয়ে রিক্সায় করে যাওয়ার সময় সেদিকে ইঙ্গিত করে খালাতো ভাই বলছিলো, ছোট-ছোট বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে অনেক গার্জিয়ান এখানে এসে পরকীয়া সম্পর্ক উপভোগ করে দিবালোকেই। শুনে বিশ্বাস হয়নাই, ভেবেছিলাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে, কিন্তু পরবর্তীতে এব্যাপারে কয়েকটি পত্রিকার রিপোর্ট পড়ে অবিশ্বাস করতে পারিনাই।
উপরে যে কথাগুলো বললাম সেটা হচ্ছে হতাশার দিক, অনেকেই হয়তো দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ইতোমধ্যেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে আলীর মতো অবিবাহীত রসিক পোলাপাইনরা আবেগে কাইন্দালাইছেন! একটাই চিন্তা, ভালো বউ পাওয়া যাবেতো!?
এবার আশার দিক শুনাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে চলা ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ছেলে-মেয়েগুলো অন্ততপক্ষে এই ভাইরাস হতে অনেক দূরে আছে। সাংগঠনিক সিস্টেমে ইসলাম মেনে চলার কারণে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী পরিচিত হচ্ছে ইসলামের সুমহান শিক্ষার সাথে, ইসলামের অনন্য নির্দেশের সাথে, ইসলামের কল্যানময় পথের সাথে।
আমরা আশা করতে পারি, হতাশার মেঘ দূর করে এই তরুণ-তরুনীরাই দেশটাকে রক্ষা করবে জাহেলিয়াতের কদর্য থাবা হতে।
২৯সেপ্টেম্বর২০১৩
‘দোস্ত পাঁচটা টাকা দেতো!’
‘না দিমুনা, যা ফুট!’
‘দোস্ত এমন করস ক্যা, একটাইতো!’
‘তোর একটার গুষ্টি কিলাই! আমার সামনে ওইসব টানতে পারবিনা, মেজাজ খারাপ হয়ে যায়’।
‘শোন দোস্ত, তোর কথার সাথে আমি একমত। তুই কি কস, সিগারেট দেশের শত্রু না?’
‘খালি সিগারেটনা, যারা সিগারেট খায় তারাও দেশের শত্রু’।
‘তাইলে শোন, দেশের শত্রুকে ধ্বংস করতে হবে, জ্বালাইয়া ফেলতে হবে! মাঝে মাঝে আমার মনে হয় দোকানের সব সিগারেট কিনে জ্বালাইয়া দেই! কিন্তু এত টাকাতো আমার কাছে নাই, তাই আপাতত একটাই জ্বালাইছি!’
কথাটি বলেই খ্যাক খ্যাক করে হাসতে শুরু করলো আলী, আমার ক্লাসমেট।
সকাল হতেই কলের পরে কল দিচ্ছি, কোনো খবর নাই, মোবাইল বালিশচাপা দিয়ে ঘুম! অবশেষে বাসায় গিয়ে মাথায় পানি ঢেলে ঘুম ভাঙাইছি, আর ভার্সিটিতে যাওয়ার পথেই সোহেলের দোকানে এই কাহিনী।
টেম্পুতে বাদুড় ঝোলা করে জিইসি মোড়ে গিয়ে নামলাম, আহারে ললনাদের ভীড়! লালপরী, নীলপরী, ডানাকাটা পরী, ময়ূরের পালক লাগানো কাউয়া পরী, হরেক রকমের পরীর হাট বসেছে জিইসি মোড়ে।
হ্যা, হাটই বলছি! পরস্পরের কাছে কিভাবে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করা যায়, নিজেকে বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডের কাছে বিক্রি করা যায়, তারই কম্পিটিশন হয় সম্ভবত এই জিইসি মোড়ে। এককথায় বলা যায় ওয়েস্টার্ণ ড্রেসের ফাকে ফাকে বাঙালী চামড়া।
আলী দেখলাম ভেউ ভেউ করে কান্নার অভিনয় করে মুখ ঢাকলো, কিরে ফাজলামো করিস কেনো?
হাসতে হাসতে জবাব দিলো, ‘দোস্ত আবেগে কাইন্দালাইসি!’
‘মানে কি?’
‘মানে হইলো, মাইয়াগুলো এতো সুন্দর ক্যান?’
‘সুন্দর হইলে তোর কি?’
‘কথা সেইটানা, কানছি আরেক কারণে!’
‘কি কারণ?’
‘মেয়ে সবগুলাতো দখল হইয়া গেছে!’
‘দখল হইলে তোর কি? নিজেতো ৭/৮টা প্রেম করস! নাকি আরো করার ইচ্ছে আছে?’
‘না দোস্ত, টেনশনে আছি। এভাবে সবাই দখল হয়ে গেলে বিয়ে করার জন্যতো মেয়ে পাওয়া যাবেনা’।
আলীর কথা শুনে লোকমান ( Lokman ) ভাইয়ের একটা কথা মনে পরে গেলো। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ফ্রি-সেক্সের দেশে পরিণত হয়ে যাবে। তার যুক্তি ছিলো, বর্তমানে যেসব ছেলে-মেয়ে বিয়ের পূর্বেই প্রেম-ভালোবাসা নামক অনাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছে, তারা সবাই কিন্তু পরস্পরকে বিয়ে করতে পারবেনা। ফলাফল যা হবে সেটা হচ্ছে বিয়ের পরেও অনেকেই তাদের পূর্বের প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং ঘটবে পরকীয়া সম্পর্কের বিস্ফোরণ। আগামী পনেরো হতে বিশ বছরের মধ্যেই এটি ছড়িয়ে পড়বে মহামারী আকারে।
লোকমান ভাইয়ের যুক্তি কিন্তু ফেলে দেওয়ার মতো না। আমার বন্ধু আলী ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, তাই সাংগঠনিক সার্কেলের বাইরের জগতে কি ঘটে চলছে তার সম্পর্কে কিছু কিছু জানতে পারি। সেদিন আলী বলছিলো, ‘দোস্ত, এখনকার পোলাপাইন অবিবাহিত মেয়েদের চাইতে বিবাহীত মেয়েদের সাথে প্রেম করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে!’ এবং কথার স্বপক্ষে কয়েকটি নজীরও প্রদর্শন করলো।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কারণ কি?
আলীর জবাব ছিলো, পরকীয়াতে রিস্ক নাই!
বিশেষ কাজে ঢাকায় গিয়েছিলাম, একটি পার্কের পাশ দিয়ে রিক্সায় করে যাওয়ার সময় সেদিকে ইঙ্গিত করে খালাতো ভাই বলছিলো, ছোট-ছোট বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে অনেক গার্জিয়ান এখানে এসে পরকীয়া সম্পর্ক উপভোগ করে দিবালোকেই। শুনে বিশ্বাস হয়নাই, ভেবেছিলাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে, কিন্তু পরবর্তীতে এব্যাপারে কয়েকটি পত্রিকার রিপোর্ট পড়ে অবিশ্বাস করতে পারিনাই।
উপরে যে কথাগুলো বললাম সেটা হচ্ছে হতাশার দিক, অনেকেই হয়তো দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ইতোমধ্যেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে আলীর মতো অবিবাহীত রসিক পোলাপাইনরা আবেগে কাইন্দালাইছেন! একটাই চিন্তা, ভালো বউ পাওয়া যাবেতো!?
এবার আশার দিক শুনাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে চলা ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ছেলে-মেয়েগুলো অন্ততপক্ষে এই ভাইরাস হতে অনেক দূরে আছে। সাংগঠনিক সিস্টেমে ইসলাম মেনে চলার কারণে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী পরিচিত হচ্ছে ইসলামের সুমহান শিক্ষার সাথে, ইসলামের অনন্য নির্দেশের সাথে, ইসলামের কল্যানময় পথের সাথে।
আমরা আশা করতে পারি, হতাশার মেঘ দূর করে এই তরুণ-তরুনীরাই দেশটাকে রক্ষা করবে জাহেলিয়াতের কদর্য থাবা হতে।
২৯সেপ্টেম্বর২০১৩
No comments:
Post a Comment