আমার ছেলে-মেয়েরা ফেরেস্তা নয়।---------পর্ব-৯


গিয়েছিলাম এক জামায়াত নেতার বাসায়, নিজের এলাকার আওয়ামিলীগ-পুলিশের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আমার এলাকায় এসে বাসা নিয়েছেন হেব্বি আপায়্যন করা হলো আমাদের, আসার সময় তার ছোট্ট ছেলেটিকে দেখিয়ে বললাম একে স্থানীয় সংগঠনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে উক্ত জামায়াত নেতা আতকে উঠলেন, ‘না না এখন না, আর কিছুদিন যাক সামনে ওর জেএসসি পরীক্ষা, রেজাল্ট ভালো করতে হবে
এই জামায়াত নেতার কথা শুনে বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেলো নিচে সেগুলোই তুলে ধরছি

অনলাইনের এক আপার কাছ হতে শোনা, বাংলাদেশের একটি ইসলামী দলের নেতার মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করে, একদিন এক বৌদ্ধ ছেলের সাথে পালিয়ে গেলো মেয়ের বাবা-মা অনেক চেস্টা করলেন মেয়েকে ফিরিয়ে আনার, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নাই, মেয়ের সাফ জবাব, আমি বাবা-মাকে চিনিনা ওই মেয়ে এখন কট্টর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হয়েছে

গাজীপুরের একটি ইসলামী দলের নেতার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, প্রেমের টানে নারায়নগঞ্জে পালিয়ে এসেছে ছেলে আর কেউ নয় স্থানীয় নেশাখোড় ছাত্রলীগের ক্যাডার! মা-বাবা অনেক চেস্টা করলেন, কিন্তু প্রেমের বাঁধন ছেড়া কি এতই সহজ!!

একটি ইসলামীক দলের নেতার মেয়ে ফেসবুকে স্টাটাস দেয়
তোমায় ছাড়া দিনে রাতে নিঃস্ব কেন লাগে
এই অনুভূতি হয়নি তো আর তোমায় পাওয়ার আগে — feeling loved with .........”

চট্টগ্রামের এক সু-পরিচিত ইসলামী দলের নেতার ছেলে এখন গাজাখোড় হিসেবে সমাজে পরিচিত, বাপের পরিচয় দিলে মানুষ মুখ টিপে হাসে

বাংলাদেশের এক বিখ্যাত চিন্তাবিদ, নৈতিক শিক্ষাবিদতো বটেই তার আদরের ছেলের নাম রেখেছিলেন বশির উল্লাহ, শেষ পর্যন্ত ওই ছেলে নিজের নামের শেষের উল্লাহ শব্দটা বাদ দিয়ে দিয়েছেন কারণ এই নামের কারনে তিনি আনইজি ফিল করেন তিনি বামপন্থায় বিশ্বাসী

বাবা মস্তবড় কওমী আলেম, ছেলে শাহবাগে গিয়ে গাজা টানে, গাজা টেনে দেশটাকে যুদ্ধাপরাধী মুক্ত করে ছাড়বে

উপরের ঘটনাগুলো পড়ে কি ভাবছেন, আমি ইসলামী দলগুলোর পেছনে লেগেছি? আমি ইসলামী দল হতে খারিজ হয়ে গেছি? আমি গিবত গাইছি? আমি ছিদ্রান্বেষণ করছি?
ওহ! সেটা ভাবছেননা?
তাহলে কি ভাবছেন, আরে ধুর! আর এমনকি ঘটনা! এমন ঘটনা আমাদের দেশে অহরহ ঘটছে, প্রতিটি এলাকায় ঘুরলে এই টাইপের অকাজ করছেনা এমন ছেলে-মেয়ে খুজে পাওয়া কস্টকর! ইসলামী দলের নেতাদের সন্তান হইছে বলে তারা কি ফেরেস্তা নাকি! একটু আধটুতো করতেই পারে এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা
আপনার আমার কাছে এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হতে পারে, কিন্তু যার যায় সে বুঝে! মুখে চুনকালি পড়লে তখন হুশ হয়

উপরে এক জামায়াত নেতার কথা বলেছিলাম, তার ছেলে এখনো ছোটো, সামনে জেএসসি পরীক্ষা দিবে! এর পরে আসবে এসএসসি পরীক্ষা, তারপরে ভালো কলেজে ভর্তির জন্য ছোটাছুটি, অবশেষে কলেজে ভর্তি হলে ভালো রেজাল্ট করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে, নইলেতো ভালো ইউনিতে ভর্তি হতে পারবেনা ওহ! ইউনিতে ভর্তি হইছেতো কি হইছে, ভালো রেজাল্ট করতে হইবে নইলে ভার্সিটির টিচার হইতে পারবেনা, ওকে এখন শিবিরে ডাইকোনা, আর কিছুদিন যাক
মাশাআল্লাহ ততদিনে এই ছেলে হয় মাদক নয়তো গার্লফ্রেন্ডের খপ্পড়ে পড়ে বাপ-মায়ের মুখে চুন এবং বোনাস হিসেবে কালির ব্যবস্থা করে সাত ঘাটের পানি খায়

আমার মেয়েতো ছোট, মাত্র এসএসসি দিলো, বোরখা ছাড়া বাইরেই যায়না, মাশাআল্লাহ ভীষণ পরহেজগার এতো তাড়াতাড়ি ছাত্রী সংস্থায় দেয়ার দরকার নাই, পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে!
চাচা মিয়া, কোনো দিন খবর নিয়ে দেখেছেন, আপনার মেয়ে বোরখার মধ্যে মোবাইল লুকিয়ে কতজনের সাথে ইটিস-পিটিস করে? ফেসবুকের কতশত পোলারে ইনবক্সে গান শুনায়?
বুঝবেন, যখন বুঝবেন তখন সময় থাকবেনা

আবারো বলছি, “কাঁচা না নোয়াইলে বাঁশ, পাকলে করে ঠাশ! ঠাশ!”

আপনাকে বলছি, হ্যা আপনাকেই! আপনি যতবড় ইসলামিস্ট কিংবা হাম্বালীগ ধর্মের অনুসারী হননা কেনো, আপনার ছেলে-মেয়ে কিন্তু ফেরেশতা নয়, তারাও নষ্ট হতে পারে। ছেলে-মেয়েকে যদি মানুষ করতে চান, আজই যোগাযোগ করুন নিকটস্থ শিবির অথবা ছাত্রীসংস্থার সাথে ঘরের দায়িত্ব আপনার, ঘর-বাহির উভয়ের দায়িত্ব শিবিরের!

২২সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment