বিএনপি নেতা আজিজ সাহেবের তিন ছেলে রাসেল, রাকিব এবং রায়হান। তিনভাইয়ের মধ্যে রাসেল সবার বড়, রাকিব মেঝো এবং রায়হান ছোট।
রাসেল একসময় শিবির করতো, কর্মীও হয়েছিলো, কিন্তু বাবা কট্টর বিএনপি নেতা হওয়ার কারণে একসময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। মেঝো ছেলে রাকিবও শিবিরের কর্মী, এরই মধ্যে দেশের ক্ষমতার পট-পরিবর্তন ঘটে, ক্ষমতার মসনদের আরোহন করে আওয়ামিলীগ।
নিজের ব্যবসা এবং পিট বাচানোর উপায় খুজছিলেন আজিজ সাহেব। আর সুযোগও হাতে এসে ধরা দেয়, মেঝো ছেলে রাকিব ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিন চট্টগ্রাম সিটি কলেজে ভর্তি হওয়ায় তিনি ছেলেকে পরামর্শ দিলেন, এই দূর্দিনে পরিবারের স্বার্থে তাকে ছাত্রলীগে যোগ দিতে হবে। বাবার কথা মেনে নিয়ে রাকিব যোগ দেয় ছাত্রলীগে, আজিজ সাহবেও হাফ ছেড়ে বাঁচেন।
ছোট ছেলে রায়হানকে ভর্তি করা হলো গ্রামের একটি কলেজে, রাসেলের বন্ধু শাহীন কিছুটা অবাক হয়েই আজিজ সাহেবকে প্রশ্ন করলেন, আপনারা সবাই থাকেন চট্টগ্রামে অথচ রায়হানকে ভর্তি করেছেন গ্রামের কলেজে, ব্যাপারটা বুঝলামনা!
আজিজ সাহেব হাত নেড়ে বললেন, ‘কাহিনী আছে, সেটা তুমি বুঝবানা!’
‘শাহীনও নাছোর বান্দা, আঙ্কেল বুঝিয়ে বললেই বুঝবো’।
‘আমার ছোট ছেলেকে সেখানকার, নেতা বানাবো!’ কিছুটা গর্বের সাথেই তিনি উত্তর দিলেন।
‘ও আচ্ছা! তাহলে এক কাজ করেন, গ্রামেতো আপনারা কেউ থাকেননা। ছেলের ভালোমন্দও দেখতে পারছেননা, ওকে শিবিরে ঢুকিয়ে দেন! আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে আর ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তাও করতে হবেনা’।
‘ধুর! আর দল পাইলানা, এইটা একটা দল হইলো? এই দলে আছে কয়জন!’
‘না আঙ্কেল দল ছোট ঠিক আছে, কিন্তু শিবিরের যে সিস্টেম! রেগুলার রিপোর্ট রাখা লাগে, ঘুম থেকে শুরু করে পড়াশোনা, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত সব কিছুই রুটিন করা আছে। শিবিরের দায়িত্বশীলরা আবার এগুলার হিসাব নেয়। সেই দিক হতে বলছিলাম আর কি!’
‘শাহীনের কথা শুনে রাসেলও সাপোর্ট দ্যায়, হ্যা আব্বু রায়হানকে শিবিরের সাথে মিট করিয়ে দেই, খারাপ হবেনা, আমিও একসময় শিবির করেছি, ওদের নিয়ম-কানুন আমার ভালো লাগে’।
কিন্তু আজিজ সাহেব এক রোখা মানুষ, নিজের কথা হতে একচুলও নড়লেননা, তার স্বপ্ন ছেলেকে বড় দলের নেতা বানাবেন।
রায়হান গ্রামের কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বহুদিন পার হয়ে গেছে, বহু নদী গিয়ে সাগরে মিশেছে।
ইদানিং রায়হান বেশ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করছে, কাউকে মানতে চায়না, বড় ভাই বাবা কাউকেই নয়। সিগারেট তার নিত্য দিনের সঙ্গী, বন্ধু আড্ডা গান, এই নিয়েই তার জীবন।
গত কিছুদিন আগের ঘটনা, কি একটা ব্যাপার নিয়ে রাসেলের সাথে তুমুল ঝগড়া বেধে গেলো রায়হানের, বড় ভাইয়ের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করলোনা রায়হান! আজিজ সাহেব এবং তার স্ত্রী এসে বাধা দিতে এলে তাদেরকেও ঠেলে সরিয়ে দিলো তার স্বপ্নের ছাত্রদল নেতা!
আজিজ সাহেবের স্ত্রীর ফোন পেয়ে শাহীন ছুটে গেলো ওই বাসায়, ঘটনা তখন অনেক খানি এগিয়ে গেছে, মটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেছে রায়হান। রায়হানের বন্ধুরা বাসায় ফোন করে হুমকি দিয়েছে, রাসেলকে পেলে তার গিড়া ভেঙে দিবে, রগ কেটে দিবে!
ছোট ভাইয়ের কাছে অপমানে চোখে পানি চলে এলো রাসেলের! মা সান্তনা দিতে আসতেই আবেগে ভেঙে পড়লো রাসেল। মা তোমাকে আগেই বলেছিলাম, আব্বুকে বুঝাও ওকে শিবিরে দাও। শিবির করলে আজকে ও আমার সাথে এই ধরনের আচরণ করতে পারতোনা.........
আপনাকে বলছি, হ্যা আপনাকেই! আদরের সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?
১৩সেপ্টেম্বর২০১৩
রাসেল একসময় শিবির করতো, কর্মীও হয়েছিলো, কিন্তু বাবা কট্টর বিএনপি নেতা হওয়ার কারণে একসময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। মেঝো ছেলে রাকিবও শিবিরের কর্মী, এরই মধ্যে দেশের ক্ষমতার পট-পরিবর্তন ঘটে, ক্ষমতার মসনদের আরোহন করে আওয়ামিলীগ।
নিজের ব্যবসা এবং পিট বাচানোর উপায় খুজছিলেন আজিজ সাহেব। আর সুযোগও হাতে এসে ধরা দেয়, মেঝো ছেলে রাকিব ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিন চট্টগ্রাম সিটি কলেজে ভর্তি হওয়ায় তিনি ছেলেকে পরামর্শ দিলেন, এই দূর্দিনে পরিবারের স্বার্থে তাকে ছাত্রলীগে যোগ দিতে হবে। বাবার কথা মেনে নিয়ে রাকিব যোগ দেয় ছাত্রলীগে, আজিজ সাহবেও হাফ ছেড়ে বাঁচেন।
ছোট ছেলে রায়হানকে ভর্তি করা হলো গ্রামের একটি কলেজে, রাসেলের বন্ধু শাহীন কিছুটা অবাক হয়েই আজিজ সাহেবকে প্রশ্ন করলেন, আপনারা সবাই থাকেন চট্টগ্রামে অথচ রায়হানকে ভর্তি করেছেন গ্রামের কলেজে, ব্যাপারটা বুঝলামনা!
আজিজ সাহেব হাত নেড়ে বললেন, ‘কাহিনী আছে, সেটা তুমি বুঝবানা!’
‘শাহীনও নাছোর বান্দা, আঙ্কেল বুঝিয়ে বললেই বুঝবো’।
‘আমার ছোট ছেলেকে সেখানকার, নেতা বানাবো!’ কিছুটা গর্বের সাথেই তিনি উত্তর দিলেন।
‘ও আচ্ছা! তাহলে এক কাজ করেন, গ্রামেতো আপনারা কেউ থাকেননা। ছেলের ভালোমন্দও দেখতে পারছেননা, ওকে শিবিরে ঢুকিয়ে দেন! আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে আর ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তাও করতে হবেনা’।
‘ধুর! আর দল পাইলানা, এইটা একটা দল হইলো? এই দলে আছে কয়জন!’
‘না আঙ্কেল দল ছোট ঠিক আছে, কিন্তু শিবিরের যে সিস্টেম! রেগুলার রিপোর্ট রাখা লাগে, ঘুম থেকে শুরু করে পড়াশোনা, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত সব কিছুই রুটিন করা আছে। শিবিরের দায়িত্বশীলরা আবার এগুলার হিসাব নেয়। সেই দিক হতে বলছিলাম আর কি!’
‘শাহীনের কথা শুনে রাসেলও সাপোর্ট দ্যায়, হ্যা আব্বু রায়হানকে শিবিরের সাথে মিট করিয়ে দেই, খারাপ হবেনা, আমিও একসময় শিবির করেছি, ওদের নিয়ম-কানুন আমার ভালো লাগে’।
কিন্তু আজিজ সাহেব এক রোখা মানুষ, নিজের কথা হতে একচুলও নড়লেননা, তার স্বপ্ন ছেলেকে বড় দলের নেতা বানাবেন।
রায়হান গ্রামের কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বহুদিন পার হয়ে গেছে, বহু নদী গিয়ে সাগরে মিশেছে।
ইদানিং রায়হান বেশ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করছে, কাউকে মানতে চায়না, বড় ভাই বাবা কাউকেই নয়। সিগারেট তার নিত্য দিনের সঙ্গী, বন্ধু আড্ডা গান, এই নিয়েই তার জীবন।
গত কিছুদিন আগের ঘটনা, কি একটা ব্যাপার নিয়ে রাসেলের সাথে তুমুল ঝগড়া বেধে গেলো রায়হানের, বড় ভাইয়ের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করলোনা রায়হান! আজিজ সাহেব এবং তার স্ত্রী এসে বাধা দিতে এলে তাদেরকেও ঠেলে সরিয়ে দিলো তার স্বপ্নের ছাত্রদল নেতা!
আজিজ সাহেবের স্ত্রীর ফোন পেয়ে শাহীন ছুটে গেলো ওই বাসায়, ঘটনা তখন অনেক খানি এগিয়ে গেছে, মটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেছে রায়হান। রায়হানের বন্ধুরা বাসায় ফোন করে হুমকি দিয়েছে, রাসেলকে পেলে তার গিড়া ভেঙে দিবে, রগ কেটে দিবে!
ছোট ভাইয়ের কাছে অপমানে চোখে পানি চলে এলো রাসেলের! মা সান্তনা দিতে আসতেই আবেগে ভেঙে পড়লো রাসেল। মা তোমাকে আগেই বলেছিলাম, আব্বুকে বুঝাও ওকে শিবিরে দাও। শিবির করলে আজকে ও আমার সাথে এই ধরনের আচরণ করতে পারতোনা.........
আপনাকে বলছি, হ্যা আপনাকেই! আদরের সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?
১৩সেপ্টেম্বর২০১৩
No comments:
Post a Comment