পোলায় প্রেম করে? অসুবিদা নাইক্কা, শিবিরে পাঠাইয়া দেন সিদা অইয়া যাইবো!-----পর্ব-৫


এক
প্রথমেই একটা ফাও গল্প দিয়ে শুরু করছি! অমূল্য এই গল্প, তবে টাকায় হিসেব করলে বেশিনা, মাত্র তিনশত এক টাকা!

আমার বন্ধু, মারাত্মক রোমান্টিক দিলের মানুষ, ওর জীবনের শেষ প্রেমের আর শেষ নেই। একটা যায়তো দুইটা আসে! ওর সেই ঐতিহাসিক ডায়ালগ এখনো কানে ভাসে, দোস্ত এইটাই শেষ, কসম আর করুমনা!
মাঝে মধ্যে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করতাম, আচ্ছা তোর মন কয়টা! এতো জনকে মন দেস কিভাবে? ওর সোজা উত্তর, শোন আমাদের মন হচ্ছে বিশাল! যাদের মন ছোট তারা একজনকে মন দিলেই শেষ হয়ে যায়। আর আমাদের মন অনেক বড়, দশ জনকে দিলেও কিছু বাকি থাকে, আরেকজনকে দেয়ার জন্য!

সব বাবা-মায়ের কাছেই তার সন্তান ধোয়া তুলসী পাতা, আমার ঐ বন্ধুর মায়ের অবস্থাও তেমন। তার সোনার টুকরা লাল্টু-গুলতু পোলাটার দিকে দুনিয়ার মাইয়া মাইনষের নজর। মেয়ে মানুষের নজর হতে পোলার হেফাজতের জন্য, প্রেমের ব্যাধি চিরতরে নির্মুলের জন্য, তিনি গেলেন তাবিজ বাবার কাছে!
তিনশো এক টাকা হাদিয়ার বিনিময়ে তাবিজ বাবা তাবিজ দিলো। বন্ধুর মা নিজ হাতে ছেলের বাহুতে তাবিজ বেধে দিলেন, এবার নিশ্চিন্ত! দুনিয়ার মেয়েদের বদ নজর হতে পোলা সেইভ!

তাবিজের মারাত্মক কেরামতি! আমার ঐ বন্ধুটি আর প্রেম করেনাই। দুই-মাসের মধ্যে বউ নিয়ে হাজির!

দুই
শিবিরের কলেজ বিভাগের এক কর্মী হঠাৎ করে লাপাত্তা। নেই! কোনো খোজ নেই। দায়িত্বশীল ফোন দিলেই নানা অজুহাত।
কর্মী বৈঠক?-পেট ব্যাথা
আলোচনা চক্র?- মাথা ব্যাথা
কোরআন তালিম?- ঘেডি ব্যাথা
দায়িত্বশীল কনটাক্ট করার টাইম চাইলেন, সেখানেও নানা রকমের টালবাহানা, দুনিয়ার ব্যস্ততা, বিল-গেটসের খালাতো ভাই! দশ মিনিট অবসর নাই!
একদিন কিছু না জানিয়ে ফজরের পরে দায়িত্বশীল বাসায় গিয়ে হাজির! ভ্রাতৃত্বের দাবী নিয়ে প্রশ্ন করলেন, কাহিনী কি খুলে বলেন, আপনার যদি একান্তই কোনো সমস্যা থাকে তবে আমি আপনাকে সংগঠন হতে বিদায় দিবো, কিন্তু আমাদের এভাবে কস্ট দেয়ার মানে হয়না।
ইনিয়ে বিনিয়ে ওই কর্মী যেই জবাব দিয়েছিলেন, তাতে বুঝা গেলো তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। হৃদরোগ বলতে হৃদয়ের রোগ! প্রেম করলেতো শিবির করা যায়না, তাই শিবির হতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
দায়িত্বশীল বুঝলেন, রোগীকে উত্তম চিকিৎসা দেয়া দরকার। তিনি বললেন, আজকে আপনি একটা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে শিবির হতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু হাশরের ময়দানে আল্লাহর কাছ হতে কিভাবে পালাবেন?
শিবির করলে প্রেম করা যায়না সেকথা ঠিক আছে, কিন্তু বিয়ে করা যাবেনা এই ফতোয়া আপনি কই পাইলেন? যেহেতু মেয়ে পছন্দ হয়েছে বিয়ে করে ফেলেন! বিয়ের ব্যবস্থা আমি করবো। মেয়ে রাজী কিনা দেখেন।
ওইদিন বিকালেই মেয়েকে বিয়ের কথা জানালো, ওই কর্মী।
মেয়েতো আকাশ হতে পড়লো! এই মূহুর্তে বিয়ে করা অসম্ভব।
বিয়ে করা অসম্ভব আর প্রেম করা খুব সম্ভব তাইনা!? তার মানে তুমিও ওই সস্তা মেয়েদের দলে, যারা পোলাদের সাথে বেহুদা টাইমপাস প্রেম করে!
লাগলো তুমুল ঝগড়া, অতঃপর বিয়ের আগেই তালাক!

ঐ কর্মীটি এখন দায়ীত্ববান মুসলিম, ইসলামী আন্দোলনের একনিষ্ঠ সৈনিক। সন্তানের অভিভাবক যেখানে ব্যর্থ, বিকল্প অভিভাবক হিসেবে সফলতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছ ইসলামী ছাত্রশিবির। আপনার সন্তানের জন্য পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত উচ্ছল উজ্বল জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে একমাত্র ছাত্রশিবির!

আপনাকে বলছি, হ্যা আপনাকেই। আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?

১২সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment