আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?............পর্ব-৪


এলাকার চরম শিবির বিদ্বেষী লোকটি ফোন দিলেন,
তুমি কোথায়?
এইতো আঙ্কেল আছি, এলাকাতেই আছি।
খাওয়া দাওয়া করছো?
‘জ্বি আঙ্কেল এইতো কিছুক্ষণ হলো’।
ব্যাচেলর জীবন হচ্ছে কস্টের জীবন! কি খাও না খাও, আল্লাহ জানে! আচ্ছা, আজকে রাতে আমার বাসায় আসবা, সামান্য ডালভাতের ব্যবস্থা করেছি!
কি, কোনো অনুষ্ঠান নাকি?
আরে না, এমনিতেই হঠাৎ তোমার আন্টি বললো! তুমিতো জানোনা, তোমার আন্টি তোমাকে কতটা পছন্দ করে, একেবারে নিজের ছেলের মতো জানে। সারাদিনইতো ছেলে-মেয়েদের কাছে তোমার উদাহরণ টানে!
ঠিক আছে আঙ্কেল, চলে আসবো, ইনশাআল্লাহ!

চিন্তায় পড়ে গেলাম, কাহিনী কি! আজকে এতো খাতির করে দাওয়াত! আন্টিযে আমাকে পছন্দ করে সেটা ভালো করেই জানি, কিন্তু কট্টর আওয়ামিপন্থী আঙ্কেল মিয়াসাবতো পারলে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেয়!

দাওয়াত খাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, আঙ্কেলের ছেলেটিকে দাওয়াতের টার্গেটে রেখেছিলাম বহুদিন ধরেই, সুবিধা করতে পারছিলামনা। সুযোগটিকে কাজে লাগানোর জন্য বাসায় চলে গেলাম।
কথা হচ্ছিলো বহু বিষয়ে, ইনিয়ে বিনিয়ে চাচা মিয়া বলছিলেন,
‘আমার ছেলেটিতো মনে প্রাণে তোমাদের দলের হয়ে গেছে! পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, মাঝে মধ্যে দেখি শিবিরের বইও বাসায় নিয়ে আসে, আগে মানা করতাম এখন কিছু বলিনা। কি দরকার, শিবির করাতো খারাপ কিছু নয়! ছেলে ভালো পথে চললেই হলো!’
‘ওর দিকে একটু খেয়াল-টেয়াল রাইখো, তোমাদের সাথে সাথেই রাখবা’।
সুযোগটা মিস করলামনা, ‘জ্বি আঙ্কেল অবশ্যই, শিবির করলেতো বেপথে যাওয়ার সুযোগ নেই, সাংগঠনিক পরিবেশ একটা ছেলেকে সৎ পথে চলতে অনুপ্রাণীত করে’।
‘ওহ একটি কথা বলতেতো ভুলে গেছি, আমার ছেলেটাতো এবার ইন্টারমিডিয়েট দিয়েছে, চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে ভর্তি হতে চাচ্ছে। পারলে বাবা নিজের ছোট ভাই মনে করে ওকে একটু হেল্প করবা। ভার্সিটিতেতো তোমাদের অবস্থান ভালো!'
‘হেল্প বলতে, ফরম নিয়ে দেয়া থেকে শুরু করে সাজেশন কালেক্ট করে দেয়া পর্যন্ত সব কিছুই করা যাবে, প্রয়োজনে শিবিরের কোচিং-এ ডিসকাউন্ট দিয়ে ভর্তিও করিয়ে দেয়া যাবে, এটা নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। বাকিটা ওর মেধা আর পরিশ্রমের উপর ডিপেন্ড করবে...। আর যদি লবিং এর কথা বলেন তবে স্যরি, শিবির কখনো অনৈতিক সুবিধার জন্য সুপারিশ করেনা, দূর্ণীতিতে শিবির নাই!

কাহিনী আর কিছুই নয়, এটা হচ্ছে প্রতিবছরের কলেজ/ভার্সিটির ভর্তির মওসূমের ঘটনা। ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের ছেলে-মেয়েকে ভর্তির জন্য শিবিরের ছেলেদের পেছনে লাইন ধরে এলাকার মুরব্বিরা। দাওয়াত খাওয়ানো হতে শুরু করে, অয়েলিং তেল মালিশিং কোনটাই বাকি থাকেনা, উদ্দেশ্য একটাই, সন্তানকে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো।

ভর্তির মওসূমের জন্য অপেক্ষা করছেন কেনো? আজই আপনার সন্তানকে ছাত্রশিবিরে ভর্তি করিয়ে দিন, শিবির তাকে লাইফ টাইম সাপোর্ট দিবে ইনশাআল্লাহ, তবে দূর্ণীতিতে নয় মেধায়!

আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?

১০সেপ্টেম্বর২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment