‘হেলো, জমির চাচা?’
‘হ্যা, কে চাটনী? কেমন আছো?’
‘ভালো থাকি কিভাবে, এগুলো কি শুনছি? আপনি কি খুব বেশি আহত?’
‘আরে ধুর! তুমি তোমার জমির চাচাকে চিনোনা? এই রকম ৮/১০টা জুতার বাড়ি হজম করা আমার জন্য নস্যি! কেনো, প্রথম দিন তুমিইতো আমাকে ৪/৫টা দিয়েছিলে, আমি কি কাবু হয়েছিলাম?’
‘ছিঃ চাচা! ও কথা মনে করিয়ে লজ্জ্বা দিবেননা, তখনতো আমি চাটনি ছিলামনা! তাই একটু......’।
‘তবে দুঃখ কি জানো চাটনি, হৃদয়ে বড় ব্যাথা পেলাম’।
‘কেনো চাচা আবার কি হলো?’
‘আর বলোনা, বাঙালী ভদ্রতা জানেনা, কার সাথে কেমন আচরণ করতে হয় সেই জ্ঞান ওদের নেই’।
‘কেমন?’
‘আজকের ব্যাপারটিই চিন্তা করে দেখো। ওরা আমাকে ছেড়া জুতা দিয়ে পিটিয়েছে, বিশ্বাস করো ছেড়া জুতা! আচ্ছা আমিতো একজন মন্ত্রী তাইনা? নতুন জুতাদিয়ে পিটালে কি এমন ক্ষতি হতো? আরে বেটা তোদের পায়েতো ভালো জুতা ছিলো, সেগুলো দিয়ে পিটাতি। তাই বলে ছেড়া জুতা!’
‘ঠিকই বলেছেন, আমরা এখনো সভ্য হয়ে উঠতে পারিনাই, মানি লোকের মান দিতে জানিনা। আচ্ছা চাচা আপনি নাকি টয়লেটে লুকিয়েছিলেন? কাহিনী কি?’
‘আরে ধুর! তুমি বেশি কথা বলো, এসব ফালতু কথা তোমাকে কে বলে? আচ্ছা তুমিই বলো, আমি টয়লেটে লুকানোর মতো মানুষ! আমি কি কাপুরুষ!’
‘কে আপনাকে কাপুরুষ বলছে তারে তো ফাঁসি দেয়া দরকার। আপনি তাকে আমার কাছে পাঠাইয়া দেন, আমি আপনার পক্ষে স্বাক্ষি দিবো, প্রয়োজনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভানেত্রীও স্বাক্ষি দিবো, এই মিথ্যাচার মানিনা’।
‘এই আস্তে! আস্তে বলো, কেউ শুনতে পাবে’।
‘আচ্ছা বাদ দেন, আপনি টয়লেটে লুকাইছিলেন কেনো সেটা বলেন’।
‘আবারো বলছো টয়লেটে লুকাইছি! আরে আমি লুকাইনাই, অন্য কারণে ঢুকছি’।
‘কি কারণ?’
‘শোনো, তারা প্রথমে আমাকে জুতাপেটা করেছে, ছেড়া জুতা দিয়ে, আমি মাইন্ড করিনাই। তারপরে কিলঘুশি দিয়ে গায়ের কাপড় ছিড়ে ফেলেছে, তাতেও আমি মাইন্ড করিনাই, কারণ লন্ডনে কাপড় ছাড়াও রাস্তায় ঘুরাফেরা করতে পারবো, লোকজন কিছু মনে করবেনা। কিন্তু তারপরে ঘটলো অন্য ঘটনা’।
‘কি ঘটনা?’
‘তারা বললো, নে তেতুল খা!
আমিতো খুশি হইয়া গেলাম, তারা বোধহয় আমার জন্য তেতুল নিয়ে এসেছে! কিন্তু যা ঘটলো তার জন্য প্রস্তুত ছিলামনা, তারা আমার মুখের উপর ডিম নিক্ষেপ করলো’।
‘কি বলছেন? আমিতো শুনছি রিমান্ডে নাকি ডিম দেয়, আপনাকে কি রিমান্ডে নিয়েছিলো?’
‘ধুর! বড্ড বেশি কথা বলো! আমি হইলাম গিয়া মন্ত্রী, আমাকে কে রিমান্ডে নিবো, আর ডিমতো নিচ দিয়ে দেয়নাই, মুখে মেরেছে’।
‘ও আচ্ছা, তা টয়লেটে ঢুকলেন কেনো সেটা বলেন’।
‘আমিতো আগেই বলেছি, বাঙালি এখনো ভদ্রতা শিখেনাই, কার সাথে কি আচরণ করতে হয় তারা জানেনা, তারা আমাকে পচা ডিম নিক্ষেপ করেছে! আরে বাপ, ডিম মারবি ভালো কথা, পচা ডিম কেনো? লন্ডনের বাজারে কি ভালো ডিম পাওয়া যায়না? আমি একজন মন্ত্রী, মন্ত্রীকে কিভাবে ইজ্জত দিতে হয় তোরা জানিসনা!
সেকি দুর্গন্ধ! ওয়াক থু! তোমাকে বলে বুঝানো যাবেনা, আমার নাকে মুখে এখনো গন্ধ লেগে আছে! পচা ডিমের দূর্গন্ধে টিকতে না পেরে দ্রুত মহিলা টয়লেটে গিয়ে ঢুকলাম, কতকিছু মাখলাম, ডিমের দূর্গন্ধ যাচ্ছেনা!’
‘ও তাহলে এই ব্যাপার! তা যাই বলেন, ওরা এই কাজটা ভালো করেনাই, আপনি একজন মন্ত্রী আপনাকে এভাবে অপমান করা উচিত হয়নাই’।
‘কি বললা, কি বললা তুমি? অপমান করেছে! আমাকে? কার এত্ত বড় বুকের পাঠা! আরে, ওরা আমাকে অপমান করতে চেয়েছিলো, তাই জুতাপেটা করেছে, পচা ডিম ছুড়ে মেরেছে, কিন্তু রাজাকারদের উদ্দেশ্য সফল হয়নাই, হবেওনা! শেষ পর্যন্ত ওরা আমাকে অপমান করতে সক্ষম হয়নাই।
আমার সম্মানকি এতই ঠুনকো! সামান্য জুতাপেটায় আমার অপমান হবে? তুমি জানোনা! মানির মান জুতা দিয়ে পিটাইলেও নষ্ট হয়না!
বড্ড বেশি কথা বলে মেয়েটা, যাও এখন গিয়ে ক্যামেড়ার সামনে দাঁড়াও, ফোন রাখলাম। যত্তসব! মাথাটাই গড়ম করে দিলো!
সেক্রেটারী! সেক্রেটারী!
কোথায় গিয়েছিলে? দ্রুত তেতুলের ব্যবস্থা করো, ক্যুইক!
(আওয়ামি সরকারের বাম তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে লন্ডনে জুতাপেটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্পটি রচনা করা হয়েছে)
১০সেপ্টেম্বর২০১৩
‘হ্যা, কে চাটনী? কেমন আছো?’
‘ভালো থাকি কিভাবে, এগুলো কি শুনছি? আপনি কি খুব বেশি আহত?’
‘আরে ধুর! তুমি তোমার জমির চাচাকে চিনোনা? এই রকম ৮/১০টা জুতার বাড়ি হজম করা আমার জন্য নস্যি! কেনো, প্রথম দিন তুমিইতো আমাকে ৪/৫টা দিয়েছিলে, আমি কি কাবু হয়েছিলাম?’
‘ছিঃ চাচা! ও কথা মনে করিয়ে লজ্জ্বা দিবেননা, তখনতো আমি চাটনি ছিলামনা! তাই একটু......’।
‘তবে দুঃখ কি জানো চাটনি, হৃদয়ে বড় ব্যাথা পেলাম’।
‘কেনো চাচা আবার কি হলো?’
‘আর বলোনা, বাঙালী ভদ্রতা জানেনা, কার সাথে কেমন আচরণ করতে হয় সেই জ্ঞান ওদের নেই’।
‘কেমন?’
‘আজকের ব্যাপারটিই চিন্তা করে দেখো। ওরা আমাকে ছেড়া জুতা দিয়ে পিটিয়েছে, বিশ্বাস করো ছেড়া জুতা! আচ্ছা আমিতো একজন মন্ত্রী তাইনা? নতুন জুতাদিয়ে পিটালে কি এমন ক্ষতি হতো? আরে বেটা তোদের পায়েতো ভালো জুতা ছিলো, সেগুলো দিয়ে পিটাতি। তাই বলে ছেড়া জুতা!’
‘ঠিকই বলেছেন, আমরা এখনো সভ্য হয়ে উঠতে পারিনাই, মানি লোকের মান দিতে জানিনা। আচ্ছা চাচা আপনি নাকি টয়লেটে লুকিয়েছিলেন? কাহিনী কি?’
‘আরে ধুর! তুমি বেশি কথা বলো, এসব ফালতু কথা তোমাকে কে বলে? আচ্ছা তুমিই বলো, আমি টয়লেটে লুকানোর মতো মানুষ! আমি কি কাপুরুষ!’
‘কে আপনাকে কাপুরুষ বলছে তারে তো ফাঁসি দেয়া দরকার। আপনি তাকে আমার কাছে পাঠাইয়া দেন, আমি আপনার পক্ষে স্বাক্ষি দিবো, প্রয়োজনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভানেত্রীও স্বাক্ষি দিবো, এই মিথ্যাচার মানিনা’।
‘এই আস্তে! আস্তে বলো, কেউ শুনতে পাবে’।
‘আচ্ছা বাদ দেন, আপনি টয়লেটে লুকাইছিলেন কেনো সেটা বলেন’।
‘আবারো বলছো টয়লেটে লুকাইছি! আরে আমি লুকাইনাই, অন্য কারণে ঢুকছি’।
‘কি কারণ?’
‘শোনো, তারা প্রথমে আমাকে জুতাপেটা করেছে, ছেড়া জুতা দিয়ে, আমি মাইন্ড করিনাই। তারপরে কিলঘুশি দিয়ে গায়ের কাপড় ছিড়ে ফেলেছে, তাতেও আমি মাইন্ড করিনাই, কারণ লন্ডনে কাপড় ছাড়াও রাস্তায় ঘুরাফেরা করতে পারবো, লোকজন কিছু মনে করবেনা। কিন্তু তারপরে ঘটলো অন্য ঘটনা’।
‘কি ঘটনা?’
‘তারা বললো, নে তেতুল খা!
আমিতো খুশি হইয়া গেলাম, তারা বোধহয় আমার জন্য তেতুল নিয়ে এসেছে! কিন্তু যা ঘটলো তার জন্য প্রস্তুত ছিলামনা, তারা আমার মুখের উপর ডিম নিক্ষেপ করলো’।
‘কি বলছেন? আমিতো শুনছি রিমান্ডে নাকি ডিম দেয়, আপনাকে কি রিমান্ডে নিয়েছিলো?’
‘ধুর! বড্ড বেশি কথা বলো! আমি হইলাম গিয়া মন্ত্রী, আমাকে কে রিমান্ডে নিবো, আর ডিমতো নিচ দিয়ে দেয়নাই, মুখে মেরেছে’।
‘ও আচ্ছা, তা টয়লেটে ঢুকলেন কেনো সেটা বলেন’।
‘আমিতো আগেই বলেছি, বাঙালি এখনো ভদ্রতা শিখেনাই, কার সাথে কি আচরণ করতে হয় তারা জানেনা, তারা আমাকে পচা ডিম নিক্ষেপ করেছে! আরে বাপ, ডিম মারবি ভালো কথা, পচা ডিম কেনো? লন্ডনের বাজারে কি ভালো ডিম পাওয়া যায়না? আমি একজন মন্ত্রী, মন্ত্রীকে কিভাবে ইজ্জত দিতে হয় তোরা জানিসনা!
সেকি দুর্গন্ধ! ওয়াক থু! তোমাকে বলে বুঝানো যাবেনা, আমার নাকে মুখে এখনো গন্ধ লেগে আছে! পচা ডিমের দূর্গন্ধে টিকতে না পেরে দ্রুত মহিলা টয়লেটে গিয়ে ঢুকলাম, কতকিছু মাখলাম, ডিমের দূর্গন্ধ যাচ্ছেনা!’
‘ও তাহলে এই ব্যাপার! তা যাই বলেন, ওরা এই কাজটা ভালো করেনাই, আপনি একজন মন্ত্রী আপনাকে এভাবে অপমান করা উচিত হয়নাই’।
‘কি বললা, কি বললা তুমি? অপমান করেছে! আমাকে? কার এত্ত বড় বুকের পাঠা! আরে, ওরা আমাকে অপমান করতে চেয়েছিলো, তাই জুতাপেটা করেছে, পচা ডিম ছুড়ে মেরেছে, কিন্তু রাজাকারদের উদ্দেশ্য সফল হয়নাই, হবেওনা! শেষ পর্যন্ত ওরা আমাকে অপমান করতে সক্ষম হয়নাই।
আমার সম্মানকি এতই ঠুনকো! সামান্য জুতাপেটায় আমার অপমান হবে? তুমি জানোনা! মানির মান জুতা দিয়ে পিটাইলেও নষ্ট হয়না!
বড্ড বেশি কথা বলে মেয়েটা, যাও এখন গিয়ে ক্যামেড়ার সামনে দাঁড়াও, ফোন রাখলাম। যত্তসব! মাথাটাই গড়ম করে দিলো!
সেক্রেটারী! সেক্রেটারী!
কোথায় গিয়েছিলে? দ্রুত তেতুলের ব্যবস্থা করো, ক্যুইক!
(আওয়ামি সরকারের বাম তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে লন্ডনে জুতাপেটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্পটি রচনা করা হয়েছে)
১০সেপ্টেম্বর২০১৩
No comments:
Post a Comment