অলস
মস্তিস্ক কবিতার কারখানা, এবং এই অলসতার কারণে অধিকাংশ কবিই শেষ বয়সে
নিদারুণ অর্থ কষ্টে পতিত হয়। যেমন রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, শাহ আব্দুল
করিম, ফররুখ আহম্মদ প্রমুখ প্রমুখ এবং প্রমুখ।
কবি চরিত্র নিয়ে যুগে যুগে বিস্তর গবেষনা হয়েছে, তা সে গবেষণা যতটানা কবিতার মর্মোদ্ধারের উদ্দেশ্যে হয়েছে তার চাইতেও বেশি হয়েছে কবি জাতির চরিত্রের সর্বোনাশ করার উদ্দেশ্যে। কবিদের সবাই হিংসে করে, শত্রুজ্ঞান করে, নিন্দা করে। নারী কবিদেরকে নারীরা হিংসে করে, পুরুষ কবিদেরকে পুরুষরা হিংসে করে।
নজরুল দাদায় যেখানে সেখানে গিয়ে একটার পরে একটা প্রেম করেছিলেন, এই তথ্যটা গোপন রাখলে কি এমন ক্ষতি হতো? কিংবা রবীন্দ্র সাহেব যে গণহারে ভাবিদের সাথে পরকীয়া করতেন এটাইবা প্রকাশ করার কি প্রয়োজন ছিলো! শুধু শুধু কবি জাতির অসম্মান!
সেদিন এক বড় ভাই চুপি চুপি ডেকে বললেন, প্রেম করেন?
‘কেনো ভাই?’
‘এতো সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখেন! প্রেম না করলেতো এমন ছন্দ আসার কথানা!’
তারো আগে, বহু বহু আগে, ‘একবার একলা পেয়ে এক শুভাকাঙ্খী বলেই ফেললেন, ‘কবিদের আমি বিশ্বাস করিনা! আমি দেখেছি কবিদের ক্যরেক্টারে সমস্যা থাকে’।
‘আমিতো ভাই রাজাকার পার্টি করি, মল্লিক ভাই, ফররুখ চাচায়তো কবি ছিলেন, তাঁদের ক্যারেক্টারেও কি......?’
‘সবাই মল্লিক-ফররুখ হতে পারেনা!’
ভাগ্যিস বিশ্বের তাবৎ সুশীল কবিবৃন্দ এই শুভাকাঙ্খীকে চিনতে পারেনাই, নইলে শ’খানেক থুক্কু হাজারে হাজারে, লাখে লাখে বিপ্লবী কবিতা রচিত হয়ে যেতো। ফাঁকতালে গালি দেয়া এই শুভাকাঙ্খী বিখ্যাত হয়ে যেতেন।
আমার এক বন্ধু চোখ বড় বড় করে বলেছিলো, ‘কবিতা লেখিস?! সাবধান! কবিদের অনেক প্রেমিকা থাকে কিন্তু বউ থাকেনা। বউ থাকবে কি করে, বউ পালার মতো পয়সা থাকলেতো!’
কিন্তু সবার উপরে যে কথাটি মনে রাখতে হবে, বিশ্বের যাবতীয় সুশীল-কুশীল মানুষের মধ্যে এই কবিরাই কিন্তু সব চাইতে বেশি দীর্ঘজীবি হয়। আপনি পুলিশের আইজি হন, সেনাবাহিনীর প্রধান হন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর হন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, কিংবা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী হন। জনগণ একদিন ঠিকই আপনাকে ভুলে যাবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র।
অতিকায় ডায়নোসর বিলুপ্ত হয়, কিন্তু তেলাপোকা প্রজাতির কবিরা থেকে যায়, অমর, অক্ষয়। আমাদের সেই দুখু মিয়া নজরুল কিংবা ভুখা মিয়া রুদ্র কিন্তু এখনো মরেনাই, চরম অভাবী ফররুখ এখনো জাজ্বল্যমান প্রস্ফুটিত।
আসুন আমরা অলস হই, কবি হই, অমর হই- বলেছেন জনৈক লেজকাটা শেয়াল থুক্ক জনৈক কবি।
লেখাঃ কবি, কবিতা এবং কিছু অলস কথন।
© শামীম রেজা
২২/০৭/২০১৪
কবি চরিত্র নিয়ে যুগে যুগে বিস্তর গবেষনা হয়েছে, তা সে গবেষণা যতটানা কবিতার মর্মোদ্ধারের উদ্দেশ্যে হয়েছে তার চাইতেও বেশি হয়েছে কবি জাতির চরিত্রের সর্বোনাশ করার উদ্দেশ্যে। কবিদের সবাই হিংসে করে, শত্রুজ্ঞান করে, নিন্দা করে। নারী কবিদেরকে নারীরা হিংসে করে, পুরুষ কবিদেরকে পুরুষরা হিংসে করে।
নজরুল দাদায় যেখানে সেখানে গিয়ে একটার পরে একটা প্রেম করেছিলেন, এই তথ্যটা গোপন রাখলে কি এমন ক্ষতি হতো? কিংবা রবীন্দ্র সাহেব যে গণহারে ভাবিদের সাথে পরকীয়া করতেন এটাইবা প্রকাশ করার কি প্রয়োজন ছিলো! শুধু শুধু কবি জাতির অসম্মান!
সেদিন এক বড় ভাই চুপি চুপি ডেকে বললেন, প্রেম করেন?
‘কেনো ভাই?’
‘এতো সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখেন! প্রেম না করলেতো এমন ছন্দ আসার কথানা!’
তারো আগে, বহু বহু আগে, ‘একবার একলা পেয়ে এক শুভাকাঙ্খী বলেই ফেললেন, ‘কবিদের আমি বিশ্বাস করিনা! আমি দেখেছি কবিদের ক্যরেক্টারে সমস্যা থাকে’।
‘আমিতো ভাই রাজাকার পার্টি করি, মল্লিক ভাই, ফররুখ চাচায়তো কবি ছিলেন, তাঁদের ক্যারেক্টারেও কি......?’
‘সবাই মল্লিক-ফররুখ হতে পারেনা!’
ভাগ্যিস বিশ্বের তাবৎ সুশীল কবিবৃন্দ এই শুভাকাঙ্খীকে চিনতে পারেনাই, নইলে শ’খানেক থুক্কু হাজারে হাজারে, লাখে লাখে বিপ্লবী কবিতা রচিত হয়ে যেতো। ফাঁকতালে গালি দেয়া এই শুভাকাঙ্খী বিখ্যাত হয়ে যেতেন।
আমার এক বন্ধু চোখ বড় বড় করে বলেছিলো, ‘কবিতা লেখিস?! সাবধান! কবিদের অনেক প্রেমিকা থাকে কিন্তু বউ থাকেনা। বউ থাকবে কি করে, বউ পালার মতো পয়সা থাকলেতো!’
কিন্তু সবার উপরে যে কথাটি মনে রাখতে হবে, বিশ্বের যাবতীয় সুশীল-কুশীল মানুষের মধ্যে এই কবিরাই কিন্তু সব চাইতে বেশি দীর্ঘজীবি হয়। আপনি পুলিশের আইজি হন, সেনাবাহিনীর প্রধান হন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর হন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হন, কিংবা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী হন। জনগণ একদিন ঠিকই আপনাকে ভুলে যাবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র।
অতিকায় ডায়নোসর বিলুপ্ত হয়, কিন্তু তেলাপোকা প্রজাতির কবিরা থেকে যায়, অমর, অক্ষয়। আমাদের সেই দুখু মিয়া নজরুল কিংবা ভুখা মিয়া রুদ্র কিন্তু এখনো মরেনাই, চরম অভাবী ফররুখ এখনো জাজ্বল্যমান প্রস্ফুটিত।
আসুন আমরা অলস হই, কবি হই, অমর হই- বলেছেন জনৈক লেজকাটা শেয়াল থুক্ক জনৈক কবি।
লেখাঃ কবি, কবিতা এবং কিছু অলস কথন।
© শামীম রেজা
২২/০৭/২০১৪
No comments:
Post a Comment