বিদায় শিবির


না, অনেক হয়েছে, আর না! এই শিবিরের সাথে আমি আর নেই। অনেকতো করলাম, সেই শৈশব, কৈশর হতে শুরু করে তারুণ্যের সোনা ঝরা দিনগুলো একে একে সব বিলিয়ে দিলাম শিবিরের জন্য। লাভ কি হলো! কি পেয়েছি শিবির করে! আমার মতো হাজারো তরুণ তাদের জীবনের সব চাইতে মূল্যবান সময় ব্যয় করেছে শিবিরের পেছনে। ফলাফল?

সেদিন দেখা করলাম স্থানীয় জামায়াতের দায়িত্বশীলের সাথে, তিনিই ফোন করেছিলেন। আমার সম্পর্কে নাকি কি কি শুনেছেন তাই জানতে চাইছিলেন। অকপটে স্বীকার করলাম, যা শুনেছেন ঠিকই শুনেছেন আমি আর এই শিবিরের সাথে নেই। দায়িত্বশীল ভাই দেখলাম হেব্বি খুশি হয়ে গেলেন, আমার এই সিদ্ধান্তের সাথে তিনিও একমত। হাতে একগাদা বই, রিপোর্ট আর পরিচিতি ধরিয়ে দিলেন।

ওহ! একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, ছাত্র জীবন শেষ হয়ে গেলে কেউ আর শিবিরের সাথে থাকতে পারেনা। শিবিরতো আর আদু ভাইদের সংগঠননা, রেজাল্ট পাবলিশ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে অটোমেটিক শিবিরের খাতা থেকে নাম কেটে যায়। আমারও ছাত্রজীবন শেষ হয়ে গেছে। শিবিরের সাথে থাকবো কি করে?

উপরে যে কথা বলছিলাম, শৈশব কৈশর হতে শুরু করে তারুণ্যের সোনালী দিনগুলো ব্যায় করেছি শিবিরের পেছনে, বিনিময়ে কি পেয়েছি?
আলহামদুলিল্লাহ, বিনিময়ে আমি ইসলাম পেয়েছি। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি ছাত্রের জীবনে আল্লাহর বিশেষ রহমত। আমি ইসলাম শিখেছি শিবিরের কাছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জিয়ার আদর্শ, মুজিবের আদর্শ কিংবা মার্কসের আদর্শের পরিবর্তে মুহাম্মদ (সঃ) এর আদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা আমি শিখেছি শিবিরের কাছে।

শিবির আমাকে শিখিয়েছে মানব রচিত তন্ত্রমন্ত্রকে পদদলিত করে আল্লাহর জমিনে একমাত্র আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করলেই হবে মানবতার মুক্তি। সরাসরি কোরআন হাদিস হতে জ্ঞান অর্জনের প্রেরণা যুগিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেখানে বাতিলের চাকচিক্যময় জীবনের হাতছানি, সেখানে শিবির দেখিয়েছে নিয়ন্ত্রিন আলোকিত পথের দিশা।

এদেশের কলেজ-ভার্সিটির চত্ত্বরে প্রথম আজান দিয়েছে ছাত্রশিবির। মার্ক্সবাদ-মাওবাদের মরিচিকার পেছনে ছুটন্ত ছাত্রদের মাঝে ইসলামের নিয়ামত নিয়ে হাজির হয়েছে আলোকিত সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির।

আমি আর শিবিরের সাথে নেই, মুরুব্বি সংগঠন জামায়াতে যোগ দিয়েছি।

লেখাঃ বিদায় শিবির
© শামীম রেজা
১৭/০৭/২০১৪

Post Comment

No comments:

Post a Comment