তোমরা যারা হরতাল করো' অথবা তোমরা যারা জিহাদ করো


বর্তমান আওয়ামী সরকার জামায়াতে ইসলামীর উপর যে জুলুম নির্যাতন পরিচালিত করছে এব্যাপারে সচেতন মানুষ মাত্রই অবগত আছি। এর প্রতিবাদে জামায়াতের করণীয় নিয়ে সংগঠনের ভেতরে বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে, ফাসির দন্ড ঘোষণা করা হয়েছে। মিছিল সমাবেশে গুলি করা হচ্ছে, এমনকি ঘরোয়া বৈঠকের মতো নিরীহ কর্মসূচীকেও নাশকতার পরিকল্পনা আখ্যায়ীত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে জামায়াত-শিবির কর্মীদের। ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়েছে হাজার হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী।

এমতাবস্থায় জামায়াত-শিবির তিন ভাবে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করতে পারে।
১।নরমপন্থা, ২।মধ্যমপন্থা ৩।চরমপন্থা

নরমপন্থাঃ-
সরকারের সকল জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদে জামায়াত শিবির অন্তর থেকে তাদের ঘৃণা করবে, মসজিদের কোণায় বসে জিকির করে আল্লাহ’র সহযোগীতা প্রত্যাশা করবে, আল্লাহ যেনো ফেরেশতা নাজিল করে তাদের বিপদমুক্ত করেন।
মানববন্ধন, বেলুন উড়ানো কর্মসূচী, ২মিনিট নিরবতা পালন ইত্যাদি কর্মসূচী পালন করে সরকারের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে বিপ্লবী প্রতিবাদ জানানো
কুফল- সরকার আগামী দুইশত বছর পরে বিরোধী দলের দাবী মেনে নিবে বলে বিশ্বাস করা যায়।
সুফল- সরকার খুশি, মহাজ্ঞানী পাবলিকেও খুশি। আহা! কি সুন্দর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী!

মধ্যমপন্থাঃ-
সরকারকে রাস্ট্র পরিচালনায় বাধা প্রদান করা, এ লক্ষে দেশের অর্থনীতির চাকা বন্ধ করে দেয়া। দেশের সকল মিলকারখানা বন্ধ করে দেয়া। সর্বোপরী সর্বাত্মক হরতাল পরিচালিত করা।
কুফল- সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
সুফল- দেশের মানুষের কানের ছিদ্র অনেক ছোট, হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচী ঘোষনা করা না হলে জনগণ সরকারের অপকর্ম সম্পর্কে অবগত হয়না। হরতাল আহবান করা হলে তারা জিজ্ঞাসা করে, হরতাল আহবান করা হয়েছে কেনো? সে হিসেবে হরতাল একদিকে যেমন সরকারকে বাঁশ দেয়, অন্যদিকে বিরোধীদলের পাবলিক রিলেশনের কাজটিও সুচারুভাবে পালন করে।

চরমপন্থাঃ-
সংগঠিতভাবে দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষনা করা, ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
প্রশ্ন আসতে পারে, অস্ত্র আসবে কোথা হতে? হিসেব সহজ, অস্ত্র দিবে সরকার, ইন্ডিয়া দিবে, আমেরিকা দিবে, ইসরাইল দিবে। ইসলামপন্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারলে, সবচাইতে বেশি লাভবান হবে এই শক্তিগুলো।
জামায়াত মারবে সেনাবাহিনীকে, সেনাবাহিনী মারবে জামায়াতকে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, জঙ্গিমুক্ত করতে, সর্বোপরি বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করবে, জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষি মিশনের সাথে আমেরিকার সৈন্য আসবে, ন্যাটো আসবে।
কুফল- চিরস্থায়ী যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হবে বাংলাদেশ, ইসলামী শক্তি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত এই লড়াই থামবে বলে মনে হয়না।
সুফল- অতিআবেগি যুদ্ধবাজরা যুদ্ধ করার জন্য একটা ময়দান পাবে।

সারমর্মঃ আসেন অস্ত্র হাতে তুলে নেই, যুদ্ধ করি!


১৩আগস্ট২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment