শহীদ হওয়া কি এতই সহজ?


এক
২০০৪সালের কথা গ্রামের বাড়ি যাবো সাথে বন্ধু কামরুল, সদর ঘাট থেকে লঞ্চে উঠলাম। বুড়িগঙ্গা ফেলে লঞ্চ পদ্মা পর্যন্ত যেতে যেতে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেলো, বাতাস অস্থির হয়ে এদিক সেদিক ছোটা ছোটি করছে। লঞ্চের যাত্রিরা ভয়ে আল্লাহর নাম নেয়া শুরু করলো, কামরুল আর আমি তখন লঞ্চের ছাদে পদ্মার একুল ওকুল দু'কুলের কিছুই দেখা যাচ্ছেনা, ভয়ার্ত কন্ঠে কামরুল বললো এখন লঞ্চ ডুবলে কি করবেন?
আমি হাসতে হাসতে জবাব দিলাম, চিন্তা কইরেননা, মরবোনা! কামরুল জিজ্ঞাসা করলো কিভাবে? আমি বললাম শুনেছি পানিতে ডুবে কিংবা আগুনে পুড়ে মরলে নাকি শহীদী মর্জাদা পাওয়া যায়, দুনিয়াতে এমন কি ভালো কাজ করেছি যে আল্লাহ আমাদের শহীদ হিসেবে কবুল করবেন? আর এমন কি পাপ কাজ করেছি যে ফিরাউনের মতো মরতে হবে! 
এই চরম টেনশনের মধ্যেও কামরুল শব্দ করে হেসে উঠলো।

দুই
১৬ই নভেম্বর ২০১১ চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটির এক ভাই ফেসবুকে স্টাটাস দিলেন “হে আল্লাহ, তুমি আমাদের সকল গুনাহ, ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ পরে দিয়ে তোমার প্রিয় বান্দাদের মাঝে অর্ন্তভূক্ত কর। আমাদেরকে তোমার পথে লড়াই করে গাজী হওয়ার তৌফিক দাও। আর মরণ লেখা থাকলে তা যেন হয় শহীদী মরণ। আমাদের উপহার দাও তোমার দিদার ও জান্নাত।”
তার পিতা জনাব হাবিবুর রহমান সেই স্টাটাস পড়ে কমেন্ট বক্সে তার জন্য দয়া করলেন "আমিন" কারণ তিনি জানতেন “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না৷ তারা আসলে জীবিত ৷ নিজেদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা লাভ করছে৷”-সূরা আল-ইমরান, আয়াত ‌১৬৯।
শুধুমাত্র এই একবারই নয় অগুনিত বার ফেসবুকে এবং ব্যক্তিগত পর্যায় বিভিন্ন ভাইয়ের কাছে তিনি শাহাদাতের তামান্না প্রকাশ করেছেন। শাহাদাত প্রত্যাশী এই ভাই আর কেউ নয় আমাদের প্রিয় শহীদ মাসুদ বিন হাবিব গত বছরের ২০১২সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী তিনি শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন।
সত্যি আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদেরই শাহাদাতের জন্য কবুল করেন, আল্লাহকে যারা ভালোবাসে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসে

২৭জানুয়ারী২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment