এক
তখন ক্লাস ফাইব কি সিক্সে পড়ি, শিবির আয়োজিত ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় দাওয়াত দেয়া হলো।
প্রশ্ন করা হলো বিশ্ব ইতিহাসে কয়েকজন মহাজ্ঞানী ব্যাক্তির নাম বলো।
ঝটপট উত্তর দিলাম, সক্রেটিস। টিভি দেখে শিখেছিলাম সক্রেটিস অনেক জ্ঞানী।
দায়ীত্বশিল আমার উত্তরটি গ্রহণ করলেন, সাথে ছোট্ট একটা কথা বললেন যেটা আজো মনে গেথে আছে। তিনি বলেছিলেন, “কয়েকজন নবী-রাসূলের নাম বলে দিলেও হতো, নবী-রাসূলদের চাইতে উত্তম জ্ঞানী আর কে আছে”।
শিবির আমাকে জানালো আমাদের নবী-রাসূলদের মর্যাদা ওই সব দার্শনিকের চাইতেও হাজার গুনে বেশি, যেটা আমাদের পাঠ্যপুস্তক শিখাতে পারেনি।
দুই
একটা জনপ্রিয় গান ছিলো সবার মুখে মুখে,
“আমি নই মুসলিম, আমি নই হিন্দু, আমি নই বৌদ্ধ, আমি নই খৃস্টান।
আমার পরিচয় বাংলাদেশের আমি এক বাঙালী”।
ছাত্রশিবিরের প্রগ্রামে গিয়েছিলাম, সেখানে সন্ধান পেলাম নতুন এক গানের, গর্বে বুকটা ফুলে উঠলো।
“মুসলিম আমি, সংগ্রামী আমি, আমি চির রণবীর।
আল্লাহকে ছাড়া কাউকে মানিনা নাড়ায়ে তাকবীর নারায়ে তাকবীর”।
ছাত্রশিবির আমাকে শেখালো, আমার প্রথম এবং শেষ পরিচয় আমি একজন মুসলিম।
তিন
ছোট বেলা হতেই গল্পের বইয়ের প্রতি ছিলো তীব্র আকর্ষণ। নিয়মিত কিশোর তারোকালোক পত্রিকা কিনতাম। সেখানে বিভিন্ন শিশু মডেলের সাক্ষাৎকার নেয়া হতো। ওই সব সাক্ষাৎকার হতে শিখেছি যখন প্রশ্ন করা হয় তোমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব কে? তখন উত্তর দিতে হয়, আমার বাবা আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব! অথবা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের নামও বলতো কেউ কেউ।
জীবনের প্রথম এবং শেষ উদ্দেশ্য নাম কামানো, স্টার হওয়া!
শিবির আমার হাতে তুলে দিলো, কিশোর কন্ঠ। সাহিত্যের এক নতুন দিগন্তের সন্ধান পেলাম, সন্ধান পেলাম আলোর পথের।
কিশোর কন্ঠের মাধ্যমে শিখলাম, আমাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হওয়া উচিত হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ)। কিশোর কন্ঠে আমাদের শেখালো আমাদের জীবনের প্রথম এবং শেষ চাওয়া হওয়া উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। পড়লাম বদর,ওহুদ, খন্দকের যুদ্ধে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিভাবে মুমিন বান্দা বিলিয়ে দিচ্ছে জীবন।
চার
সিলেট ভ্রমনে গিয়েছিলাম সংগঠনের চারজন ভাই, সিলেট শহর, জাফলং ঘুরে গেলাম মাধবকুন্ড ঝর্ণা দেখতে। ঝর্না দেখে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা, মূল সড়কের পাশেই একটা মসজিদে মাগরিব আদায় করলাম। নামাজ শেষে বেরিয়ে দেখি একজন ভাই দাড়িয়ে আছেন, সালাম দিয়ে বললেন, আমি শিবিরের থানা সভাপতি, আপনারা শিবিরের কি?
গম্ভীর মুখে জবাব দিলাম, আমাদের দেখে কি শিবির শিবির মনে হয়? আমরাতো শিবির করিনা।
তিনি নাছোর বান্দা, না না আপনারা অবশ্যই শিবির করেন, বেড়াতে এসে নামাজ পড়ছে, শিবিরের ছেলে ছাড়া এমনটা ভাবাই যায়না! ঝটপট বলে ফেলেন কার মান কি?
শেষে হাসতে হাসতে সবার পরিচয় দিলাম, আমরা চারজনই সাথী ছিলাম।
আপ্যায়ন কাকে বলে, কতপ্রকার ও কিকি তারা সেদিন দেখিয়ে দিলেন। পরের দিনটা তাদের সাথে থাকার জন্য সেকি রিকোয়েস্ট! কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা ট্রেনের রিটার্ণ টিকেট কেটে ফেলেছিলাম, তাই ফিরে আসতে হলো।
শিবির আমাদের শিখিয়েছে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ।
উদাহরণ আরো দেয়া যেতো, তবে লেখা বড় হয়ে যাওয়ার ভয়ে বাদ দিলাম।
সর্বশেষ একটি প্রশ্ন, আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?
২২আগস্ট২০১৩
তখন ক্লাস ফাইব কি সিক্সে পড়ি, শিবির আয়োজিত ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় দাওয়াত দেয়া হলো।
প্রশ্ন করা হলো বিশ্ব ইতিহাসে কয়েকজন মহাজ্ঞানী ব্যাক্তির নাম বলো।
ঝটপট উত্তর দিলাম, সক্রেটিস। টিভি দেখে শিখেছিলাম সক্রেটিস অনেক জ্ঞানী।
দায়ীত্বশিল আমার উত্তরটি গ্রহণ করলেন, সাথে ছোট্ট একটা কথা বললেন যেটা আজো মনে গেথে আছে। তিনি বলেছিলেন, “কয়েকজন নবী-রাসূলের নাম বলে দিলেও হতো, নবী-রাসূলদের চাইতে উত্তম জ্ঞানী আর কে আছে”।
শিবির আমাকে জানালো আমাদের নবী-রাসূলদের মর্যাদা ওই সব দার্শনিকের চাইতেও হাজার গুনে বেশি, যেটা আমাদের পাঠ্যপুস্তক শিখাতে পারেনি।
দুই
একটা জনপ্রিয় গান ছিলো সবার মুখে মুখে,
“আমি নই মুসলিম, আমি নই হিন্দু, আমি নই বৌদ্ধ, আমি নই খৃস্টান।
আমার পরিচয় বাংলাদেশের আমি এক বাঙালী”।
ছাত্রশিবিরের প্রগ্রামে গিয়েছিলাম, সেখানে সন্ধান পেলাম নতুন এক গানের, গর্বে বুকটা ফুলে উঠলো।
“মুসলিম আমি, সংগ্রামী আমি, আমি চির রণবীর।
আল্লাহকে ছাড়া কাউকে মানিনা নাড়ায়ে তাকবীর নারায়ে তাকবীর”।
ছাত্রশিবির আমাকে শেখালো, আমার প্রথম এবং শেষ পরিচয় আমি একজন মুসলিম।
তিন
ছোট বেলা হতেই গল্পের বইয়ের প্রতি ছিলো তীব্র আকর্ষণ। নিয়মিত কিশোর তারোকালোক পত্রিকা কিনতাম। সেখানে বিভিন্ন শিশু মডেলের সাক্ষাৎকার নেয়া হতো। ওই সব সাক্ষাৎকার হতে শিখেছি যখন প্রশ্ন করা হয় তোমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব কে? তখন উত্তর দিতে হয়, আমার বাবা আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব! অথবা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের নামও বলতো কেউ কেউ।
জীবনের প্রথম এবং শেষ উদ্দেশ্য নাম কামানো, স্টার হওয়া!
শিবির আমার হাতে তুলে দিলো, কিশোর কন্ঠ। সাহিত্যের এক নতুন দিগন্তের সন্ধান পেলাম, সন্ধান পেলাম আলোর পথের।
কিশোর কন্ঠের মাধ্যমে শিখলাম, আমাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হওয়া উচিত হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ)। কিশোর কন্ঠে আমাদের শেখালো আমাদের জীবনের প্রথম এবং শেষ চাওয়া হওয়া উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। পড়লাম বদর,ওহুদ, খন্দকের যুদ্ধে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিভাবে মুমিন বান্দা বিলিয়ে দিচ্ছে জীবন।
চার
সিলেট ভ্রমনে গিয়েছিলাম সংগঠনের চারজন ভাই, সিলেট শহর, জাফলং ঘুরে গেলাম মাধবকুন্ড ঝর্ণা দেখতে। ঝর্না দেখে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা, মূল সড়কের পাশেই একটা মসজিদে মাগরিব আদায় করলাম। নামাজ শেষে বেরিয়ে দেখি একজন ভাই দাড়িয়ে আছেন, সালাম দিয়ে বললেন, আমি শিবিরের থানা সভাপতি, আপনারা শিবিরের কি?
গম্ভীর মুখে জবাব দিলাম, আমাদের দেখে কি শিবির শিবির মনে হয়? আমরাতো শিবির করিনা।
তিনি নাছোর বান্দা, না না আপনারা অবশ্যই শিবির করেন, বেড়াতে এসে নামাজ পড়ছে, শিবিরের ছেলে ছাড়া এমনটা ভাবাই যায়না! ঝটপট বলে ফেলেন কার মান কি?
শেষে হাসতে হাসতে সবার পরিচয় দিলাম, আমরা চারজনই সাথী ছিলাম।
আপ্যায়ন কাকে বলে, কতপ্রকার ও কিকি তারা সেদিন দেখিয়ে দিলেন। পরের দিনটা তাদের সাথে থাকার জন্য সেকি রিকোয়েস্ট! কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা ট্রেনের রিটার্ণ টিকেট কেটে ফেলেছিলাম, তাই ফিরে আসতে হলো।
শিবির আমাদের শিখিয়েছে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ।
উদাহরণ আরো দেয়া যেতো, তবে লেখা বড় হয়ে যাওয়ার ভয়ে বাদ দিলাম।
সর্বশেষ একটি প্রশ্ন, আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?
২২আগস্ট২০১৩