জাতীয় বেঈমানদের পরিণতি

ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের সাথে বেঈমানী করে যারা এই অঞ্চলের মুসলিম জাতীকে একবার খৃস্টানদের গোলামী এবং একবার হিন্দুদের গোলামীর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে ভূমিকা পালন করেছিলো, তাদের পরিণতি সুখকর হয় নাই।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে বেঈমানদের পরিণতি হয়েছিলো ভয়াবহ। মীর জাফর আলী খানের মৃত্যু হয়েছিলো কুষ্ঠ রোগে, জগৎ শেঠকে হাত পা বেধে গঙ্গায় নিক্ষেপ করেছিলো মীর কাসিম, রায় দূর্লভের মৃত্যু হয় অন্ধ কারাগারে ধুঁকে ধুঁকে, পাগল অবস্থায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে মৃত্যু হয়েছিলো উমিচাঁদের, রায় বল্লভ মরেছিলো পদ্মায় ডুবে, নন্দকুমারের ফাঁসি হয়েছিলো, মীর মীরনের মৃত্যু হয়েছিলো মেজর ওয়াল’স এর হাতে, ঘষেটি বেগমকে নৌকা ডুবিয়ে হত্যা করা হয়, মুহাম্মদী বেগ মরেছিলো আত্মহত্যা করে, রবার্ট ক্লাইভ নিজের গলায় ক্ষুর চালিয়ে আত্মহত্যা করেছিলো।

১৯৭১সালে যাদের বেঈমানীর পরিণতিতে ভাইয়ে ভাইয়ে হয়েছিলো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, নিহত হয়েছিলো লক্ষাধিক মুসলিম, একটি শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্র ভেঙে হয়েছিলো দু’টুকরো, পূর্ব বঙ্গের মুসলিমদের বানানো হয়েছিলো ভারতের গোলামে, তাদের পরিণতিও সুখকর হয় নাই।

৭১এর ঘটনার জন্য মূলত দায়ী ছিলো দু'জন ব্যাক্তির ক্ষমতা নিয়ে কামড়া কামড়ি। একজন ছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান, অন্যজন হলেন জুলফিকার আলী ভূট্টো। ভূট্টো ফাঁসিতে ঝুলে মরেছিলো, আততায়ীর গুলিতে বেনজীর ভূট্টোর মৃত্যুর মাধ্যমে ভূট্টোর বংশ নির্বংশ হয়।
আর শেখ মুজিবের পরিণতিও একই রকম হয়েছিলো, নির্বংশ হতে বাকি আছে কি? বেচে আছে শুধু হাসিনা ও রেহানা, তাদের পরিণতিও দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

একাত্তরের ঘটনায় শেখ মুজিবের দোষর এবং ভারতের এজেন্সির ভূমিকায় অন্য যারা মূল দায়িত্ব পালন করেছিলো তারা হচ্ছেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহম্মদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান। এরা সবাই কারাবন্দী অবস্থায় বিপ্লবীদের গুলিতে নিহত হয়।

ভারতের অর্থে উত্থান হলো গণজাগরণ মঞ্চের, ফাঁসি দেয়া হলো ইসলামী আন্দোলনের সিংহ পুরুষ শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে। শহীদ হলেন জনাব আব্দুল কাদের মোল্লা।

গণজাগরণ মঞ্চের নেতাদের পরিণতিও দেখতে শুরু করেছে এ জাতি। গণজাগরণ মঞ্চের প্রথম সারির এক নেতা থাবা বাবা ওরফে রাজিব নিহত হলো জঙ্গিদের দায়ের কোপে। বহু বছর পর্দার আড়ালে থাকলেও যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে সোচ্চার ডাক্তার আইজুর পরিচয় এবং কুকৃতি প্রকাশ হয়ে গেলো। গজা মঞ্চ নেতা অমি পিয়ালের পর্ণ ছবি বের হলো, টাকা মেরে খাওয়ার ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলো, অপদস্ত হলো পথে ঘাটে।

নমরুদের মৃত্যু হয়েছিলো ভৃত্যের জুতার বাড়ি খেয়ে, জুতার বাড়ি দেয়ার জন্যই নমরুদ তাকে নিযুক্ত করেছিলো। জুতার বাড়ি না খেলে নমরুদের মাথায় তীব্র যন্ত্রনা দিতো মশা।
গতকাল দেখলাম শাহবাগী গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ইমরান সরকারকে নিয়ে পুলিশ টানা হেঁচড়া করছে, আর পেছন থেকে এক কর্মী এমরানের ঘাড় চেপে ধরেছে পুলিশের হাত হতে নেতাকে রক্ষার জন্য।
আরেকটা ছবিতে দেখলাম, এমরানের এক শিষ্য পেছন হতে এমরানের গলা পেচিয়ে ধরেছে পুলিশের হাত হতে এমরানকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য। গলায় প্রচন্ড চাপ খেয়ে এমরানের প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

যুগে যুগে জাতীয় বেঈমান ও শয়তানের দোসরদের পরিণতি এভাবেই প্রকাশিত হয়। এই ঘটনাগুলো হতে আমাদের শিক্ষা নেয়ার অনেক উপাদান রয়েছে।
শাহবাগী গজা মঞ্চ ও তার ইন্ধনদাতাদের এর চাইতেও ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার হত্যাকারীদের অন্তিম পরিণতি দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

লেখাঃ জাতীয় বেঈমানদের পরিণতি
© শামীম রেজা
০৫/০৪/২০১৪

Post Comment

No comments:

Post a Comment