কুফরী গণতন্ত্র

facebook link 

 
ভাই কি করেন?
মুখ থেকে ধোঁয়া ছাড়াতে ছাড়তে ভাইয়ের জবাব, বিড়ি খাই!
‘ছিঃ ভাইয়া, আপনি না শিবির করেন?’
‘একসময় করতাম এখন করিনা। কুফরী গণতন্ত্রের দলে আমি নাই’।
‘গণতন্ত্র কুফরী হইলো কেমনে?’
‘তুমি এগুলা বুঝবানা, অবশ্য ব্রেন ওয়াশ পোলাইপাইনে এগুলা বুঝার কথাওনা। ইসলামে গণতন্ত্র হারাম’।
‘হযরত আবু বকর (রাঃ) কিভাবে খলিফা হইছিলো? অস্ত্র দিয়ে, নাকি গণতান্ত্রিক উপায়ে?’
‘ধুর মিয়া! কিসের মধ্যে কি ঢুকাও! কই আগরতলা আর কই চোকির তলা’।
‘ভাই বুঝাইয়া কইবেনতো! আমিতো বুঝিনা, বয়স কম আর আপনারমতো এতো পড়াশোনাও নাই। রাসূল (সঃ) এর ইন্তেকালের পরে তার জানাজা ফেলে রেখেই মুসলমানদের মধ্যে যখন খিলাফত নিয়ে দন্ধ লেগে গেলো তখনতো গণতান্ত্রিক উপায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে হযরত আবু বকর (রাঃ) খলিফা নির্বাচিত হলেন, আমিতো এটাই জানি’।
‘তোমার কথা ঠিক, তবে সেটা গণতন্ত্র ছিলোনা। গণতন্ত্রের মিনিং হলো সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত যেদিকে যাবে সেটাই বাস্তবায়ন হবে। এখানে কোরান হাদিসের কোনো প্রাধান্য নেই’।
‘হযরত আবু বকর (রাঃ)তো সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতেই খলিফা নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাহলে কি খলিফা নির্বাচন কুফরী গণতন্ত্র অনুযায়ী হয়েছিলো?’
‘তোমার মাথা হয়েছিলো! দিলাতো মেজাজটা গরম করে। এখন আরেকটা বিড়ি খাইতে হবে নইলে মাথা ঠান্ডা হবেনা’।
শোনো, গণতন্ত্র হইলো একটা কুফরী সিস্টেম, তোমাকে ব্যাক্ষা করলেই বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবা। বিড়িতে বিশাল দম নিয়ে বড় ভাই একটু থামলেন।
‘ধরো সরকার গণভোটের আয়োজন করলো, দেশে ব্যাভিচারের অনুমোদন দেয়া হবে কিনা। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এটার পক্ষে ভোট দেয় তবে ব্যভিচার জায়েজ হয়ে যাবে। কিন্তু ইসলাম বলে, দুনিয়ার সবাই যদি ব্যভিচারের পক্ষ নেয় তবুও ব্যভিচার করতে দেয়া যাবেনা। এটাই হচ্ছে কুফরী গণতন্ত্র ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য’।
‘হুম, বুঝলাম! কিন্তু ভাইয়া জামায়াত-শিবিরকি কুফরী গণতন্ত্রের এই অংশটা মানে?’
‘তুমি কিযে বলোনা! অবশ্যই মানে। দেখোনা, জামায়াত কুফরী গণতন্ত্রের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়’।
‘হযরত আবু বকর (রাঃ) কি তাহলে কুফরী গণতন্ত্রের অধীনে নির্বাচিত হয়েছিলো?’
‘তুমি কিন্তু আমার মাথা গরম করে দিচ্ছ! কিসের সাথে কি মেলাচ্ছ!’
“আমি ভুল বলেছি? হযরত আবু বকর (রাঃ) এর নির্বাচনের সময় যেভাবে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের ভালো দিকটাকে গ্রহণ করা হয়েছিলো, জামায়াত-শিবিরও তেমনি শুধুমাত্র গণতন্ত্রের ভালো দিকটা গ্রহণ করছে। অন্যান্য খারাপ দিকগুলোকে অমান্য করছে।
এইযে সেদিনকার ঘটনাই বলছি, গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার ইসলাম বিরোধী ‘নারী নীতি’ প্রণয়ন করেছে। যেহেতু তারা নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেয়েছে সেহেতু তারা চাইলেই সেটা করতে পারে। জামায়াত কিন্তু গণতন্ত্রের এই খারাপ দিকটা গ্রহণ করেনাই। জামায়াত তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছে নারী নীতির বিরুদ্ধে”।
‘শোনো তোমাকে আরো পড়াশোনা করতে হবে, এভাবে বুঝবানা। জামায়াত যেভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে সেভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবেনা। ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপায় হচ্ছে ক্ষমতাবান মানুষের কাছে নুসরা চাইতে হবে। নুসরা নিয়ে জিহাদ করে ক্ষমতায় আসতে হবে”।
‘সুন্দর পয়েন্ট বলেছেন। কাফির মুশরিকদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে রাসূল(সঃ)তায়েফবাসী সহ মদিনার আনসারদের কাছে নুসরা চেয়েছিলেন। তাদের সে সক্ষমতা ছিলো। তায়েফ বাসী নুসরা দেয়নাই, আনসাররা দিয়েছিলো। বর্তমান বিশ্বের নিয়ম অনুযায়ী জনগণই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শক্তিমান অংশ, জামায়াত যদি ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের কাছে নুসরা (ভোট/সমর্থন) চায় সেটা কি অন্যায় হবে?’
‘তোমার মাথা পুরাটাই গেছে, আজকে আর টাইম দিতে পারছিনা, গার্লফ্রেন্ড ওয়েট করতেছে, তাকে নিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠা বিষয়ক একটা সেমিনারে যেতে হবে’।
‘আজব! আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে!!!’
‘হ্যা, অনেক ভালো মেয়ে, হিজাবী’।
‘ও আচ্ছা, ঠিক আছে ভাই, আল্লাহ হাফেজ’।
‘খালি মুখে চলে যাবা! কিছু খাবানা? একটা বিড়ি খাও! ও স্যরি তুমিতো আবার এগুলা খাওনা।
আল্লাহ হাফেজ!’

লেখাঃ কুফরী গণতন্ত্র
© শামীম রেজা
১৫/০৬/২০১৪

Post Comment

No comments:

Post a Comment