একটা সময় ছিলো যখন রাষ্ট্র ক্ষমতা ছিলো পেশিতন্ত্রের অধীনে। রাজাদের বিশাল এক সেনাবাহিনী থাকতো তাদের সাহায্যে পরিচালিত হতো রাষ্ট্র, এবং জনগনের কাছ থেকে আদায়কৃত ট্যাক্সের টাকায় চলতো হরদম মৌজ-মাস্তি।
তখনকার দিনে রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের পদ্ধতিটাও ছিলো ভয়াবহ! হঠাৎ দেখা যেতো সেনাপতি অথবা রাজার কোনো নিকটাত্মীয় রাজাকে হত্যা করে নিজেই নিজেকে রাজা দাবী করে বসেছে। অথবা দেশের কোনো এক প্রান্তে নতুন কোনো নেতার উদ্ভব হয়েছে, যিনি রাজার আনুগত্য পরিহার করে নিজেই একটা বাহিনী তৈরী করে নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব করেছেন। রাজ্য পরিচালনায় জনগনের ভূমিকা ছিলো অতি নগন্য।
ইচ্ছেমতো জোর জুলুম, অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে রাজার বানানো আইন মানতে জনগনকে বাধ্য করা হতো।
রাষ্ট্রক্ষমতায় কে থাকবে ইসলাম সেক্ষেত্রে সুন্দর একটা সমাধান দিয়েছে, পেশিতন্ত্র সেখানে অনুপস্থিত। সমাজের সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী এবং ধার্মিক ব্যাক্তিরা ভোটের মাধ্যমে একজন নেতাকে নির্বাচিত করবেন, যিনি আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূলদের(সঃ) প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালিত করবেন। রাজার ব্যাক্তিগত খায়েস মিটানোর কোনো সুযোগ এই পদ্ধতিতে অনুপস্থিত! এটা হচ্ছে ইসলামীক গণতন্ত্র।
পরিবর্তিত সময়ে অনৈসলামিক একটা পদ্ধতির উদ্ভব হলো, যে পদ্ধতিতে সমাজের জ্ঞানী এবং ধার্মিক ব্যাক্তিদের পাশাপাশি চোর,ডাকাত,খুনি,ধর্ষক,লম্পট সকলকেই ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হলো।
এই পদ্ধতির সবচাইতে বড় ত্রুটি হচ্ছে, এইসব পাপী ব্যাক্তিরা তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে যাকে নির্বাচিত করা হলে অবাধে এইসব অপকর্ম সম্পন্ন করতে পারবে। এটা হচ্ছে প্রচলিত গণতন্ত্র।
আমরা যদি মাদানী যুগের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো, পেশিতন্ত্র সেখানে অনুপস্থিত ছিলো। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইসলাম রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়নাই।
মদিনা রাষ্ট্রের সূচনালগ্নে প্রথম শ্রেণীর সকল সাহাবীরা(সঃ) সহ আনসার এবং মুহাজির সবাই একবাক্যে রাসূল(সঃ) কে মদিনা রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। এমনকি তখন পর্যন্ত যারা ইসলাম গ্রহণ করেনাই তারাও মুসলমানদের দ্বারা মনোনীত নেতাকে তাদের নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে।
এক্ষেত্রে মদীনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপধান হিসেবে মুসলমানরা সর্বসম্মতিক্রমে রাসূল(সঃ) কে নির্বাচিত করে সাধারণ জনগনের কাছে উপস্থাপন করেছে, এবং জনগন এই বিশ্ব নেতাকে(সঃ) মেনে নেয়ায় মদিনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান হলেন রাসূল(সঃ)।
এখানে জোর জুলুম কিংবা তরবারীর দ্বারা কারো উপর নতুন শাসক চাপিয়ে দেয়া হয়নাই।
আমরা যদি খলিফা নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলেও একই পদ্ধতি দেখবো। সংখ্যাগরিষ্ঠ সাহাবীরা হজরত আবু বকরের (রাঃ) হাতে বাইয়াত নিলেন, এবং সাধারণ মুসলমানরাও সেইসব প্রথমশ্রেণীর সাহাবীদের (রাঃ) সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত বলে গ্রহণ করায় ইসলামের প্রথম নির্বাচিত খলিফা হলেন হজরত আবু বকর (রাঃ)
প্রচলিত গণতন্ত্র এবং ইসলামী গণতন্ত্রের মধ্যে একটা মৌলিক পার্থক্য হলো, পদ প্রার্থী হওয়া।
ইসলামী গণতন্ত্রে কেউ নিজেকে পদ প্রার্থী দাবী করতে পারবেনা। যেমন, “আমাকে চেয়ারম্যান,এম্পি নির্বাচিত করুন”।
আবার প্রচলিত গণতন্ত্রের কথা হচ্ছে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক, এদিকে ইসলামী গণতন্ত্রে বলা হয় আল্লাহই সকল ক্ষমতার মালিক।
প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্র অনুযায়ী যেহেতু জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক, সেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যদি বলে মদ,যেনা বৈধ, তাহলে মদ বৈধ হয়ে যাবে। আর ইসলামীক গণতন্ত্রে যেহেতু আল্লাহই সকল ক্ষমতার মালিক, সেহেতু দেশের সকল জনগণ যদি বলে, মদ বৈধ, তবে মদ বৈধ হবেনা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মদ হারাম হারামই থেকে যাবে। তবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেখানে ইসলামের সমাধান নেই সেখানে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের ভোট নেবা হবে।
কেউ কেউ প্রশ্ন করে থাকেন, জামায়াতে ইসলামীতো প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল, তাহলে এটা কিভাবে ইসলামী দল হলো। কারণ জামায়াতের নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়, নিজের সমর্থনে ভোট চায়, এটাতো ইসলামী গণতান্ত্রিক সিস্টেম নয়।
মূলত জামায়াত সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনেই মানুষ এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকে, জামায়াতের কোনো নেতা কর্মী, কোনো নির্বাচনে নিজেকে প্রার্থী দাবী করতে পারেনা, যদি কেউ এই ধরনের দাবী করেন তবে সে ওই নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
যখন কোথাও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন জামায়াতের স্থানীয় পর্যায়ে বৈঠক ডাকা হয় এবং সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে কিনা। যদি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়, তখন দলের প্রতিনিধিদের পরামর্শের ভিত্তিতে একজনকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ব্যাপারটাকে আমরা এইভাবে ব্যাক্ষা করতে পারি, প্রভাবশালী সাহাবীরা হজরত আবুবকরকে খলিফা নির্বাচন করে তাঁকে জনগনের নিকট হাজির করে বলা হলো, আবুবকরের (রাঃ) হাতে আমরা বাইয়াত করেছি, তোমরাও তাঁর হাতে বাইয়াতবদ্ধ হও।
এখানে আবু বকর (রাঃ) কিন্তু নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননাই, বরং সাহাবীরাই তাঁকে নির্বাচিত করে এর স্বপক্ষে জনগনের নিকট সমর্থন চেয়েছে।
জামায়াতের সিস্টেমটাও একই রকম, আব্দুর রহিম কিংবা আব্দুল করিমকে জামায়াতের পক্ষ হতে চেয়ারম্যান,এম্পি হিসেবে মনোনীত করে জনগনের কাছে আহ্বান জানানো হয়, আমরা অমুককে মনোনীত করেছি এবার তোমরাও তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করো।
এখানে পার্থীর ব্যাক্তিগত খায়েশের কোনো স্থান নেই। এমনও দেখা গেছে যেই ব্যাক্তিকে জামায়াতের পক্ষ হতে মনোনীত করা হয়েছে তাঁর পকেটে নির্বাচন করার মতো পর্যাপ্ত টাকাও নেই, দলীয় ফান্ড হতে তাঁর নির্বাচনের খরচ বহন করা হয়েছে।
প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্রে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মনে করা হয়, কিন্তু জামায়াতের দলীয় সংবিধানে আল্লাহকেই সকল ক্ষমতার উৎস হিসেবেই মেনে নেয়া হয়েছে, যার কারনে আমরা দেখেছি ইসলাম বিরোধী শক্তি নির্বাচন কমিশন হতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করেছে। আল্লাহকে সকল ক্ষমতার উৎস মানাও অপরাধ!!
সুতরাং, যারা বলছেন জামায়াত কুফরী গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল, তাঁর মূলত বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন, হয়তো তারা অজ্ঞতার কারনে এমন প্রচারনা চালাচ্ছেন অথবা ইচ্ছেকৃতভাবে জামায়াতের প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ে এমনটি করছেন।
এরপরেও যেহেতু আমরা অনৈসলামীক রাষ্ট্রে বসবাস করছি, সেহেতু পুরোপুরি ইসলামীক সিস্টেম মেনে নিয়ে রাজনৈতিক দল পরিচালনা করা অসম্ভবই বলা যায়। যেসব ইসলাম বিরোধী নীতিমালা আমরা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি, রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারলে সেসব বাদ দিয়ে একটি সুখি সমৃদ্ধ ইসলামীক খিলাফত আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো ইনশাআল্লাহ্।
৩ ডিসেম্বর ২০১৩
তখনকার দিনে রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের পদ্ধতিটাও ছিলো ভয়াবহ! হঠাৎ দেখা যেতো সেনাপতি অথবা রাজার কোনো নিকটাত্মীয় রাজাকে হত্যা করে নিজেই নিজেকে রাজা দাবী করে বসেছে। অথবা দেশের কোনো এক প্রান্তে নতুন কোনো নেতার উদ্ভব হয়েছে, যিনি রাজার আনুগত্য পরিহার করে নিজেই একটা বাহিনী তৈরী করে নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব করেছেন। রাজ্য পরিচালনায় জনগনের ভূমিকা ছিলো অতি নগন্য।
ইচ্ছেমতো জোর জুলুম, অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে রাজার বানানো আইন মানতে জনগনকে বাধ্য করা হতো।
রাষ্ট্রক্ষমতায় কে থাকবে ইসলাম সেক্ষেত্রে সুন্দর একটা সমাধান দিয়েছে, পেশিতন্ত্র সেখানে অনুপস্থিত। সমাজের সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী এবং ধার্মিক ব্যাক্তিরা ভোটের মাধ্যমে একজন নেতাকে নির্বাচিত করবেন, যিনি আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূলদের(সঃ) প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালিত করবেন। রাজার ব্যাক্তিগত খায়েস মিটানোর কোনো সুযোগ এই পদ্ধতিতে অনুপস্থিত! এটা হচ্ছে ইসলামীক গণতন্ত্র।
পরিবর্তিত সময়ে অনৈসলামিক একটা পদ্ধতির উদ্ভব হলো, যে পদ্ধতিতে সমাজের জ্ঞানী এবং ধার্মিক ব্যাক্তিদের পাশাপাশি চোর,ডাকাত,খুনি,ধর্ষক,লম্পট সকলকেই ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হলো।
এই পদ্ধতির সবচাইতে বড় ত্রুটি হচ্ছে, এইসব পাপী ব্যাক্তিরা তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে যাকে নির্বাচিত করা হলে অবাধে এইসব অপকর্ম সম্পন্ন করতে পারবে। এটা হচ্ছে প্রচলিত গণতন্ত্র।
আমরা যদি মাদানী যুগের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো, পেশিতন্ত্র সেখানে অনুপস্থিত ছিলো। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইসলাম রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়নাই।
মদিনা রাষ্ট্রের সূচনালগ্নে প্রথম শ্রেণীর সকল সাহাবীরা(সঃ) সহ আনসার এবং মুহাজির সবাই একবাক্যে রাসূল(সঃ) কে মদিনা রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। এমনকি তখন পর্যন্ত যারা ইসলাম গ্রহণ করেনাই তারাও মুসলমানদের দ্বারা মনোনীত নেতাকে তাদের নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে।
এক্ষেত্রে মদীনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপধান হিসেবে মুসলমানরা সর্বসম্মতিক্রমে রাসূল(সঃ) কে নির্বাচিত করে সাধারণ জনগনের কাছে উপস্থাপন করেছে, এবং জনগন এই বিশ্ব নেতাকে(সঃ) মেনে নেয়ায় মদিনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান হলেন রাসূল(সঃ)।
এখানে জোর জুলুম কিংবা তরবারীর দ্বারা কারো উপর নতুন শাসক চাপিয়ে দেয়া হয়নাই।
আমরা যদি খলিফা নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলেও একই পদ্ধতি দেখবো। সংখ্যাগরিষ্ঠ সাহাবীরা হজরত আবু বকরের (রাঃ) হাতে বাইয়াত নিলেন, এবং সাধারণ মুসলমানরাও সেইসব প্রথমশ্রেণীর সাহাবীদের (রাঃ) সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত বলে গ্রহণ করায় ইসলামের প্রথম নির্বাচিত খলিফা হলেন হজরত আবু বকর (রাঃ)
প্রচলিত গণতন্ত্র এবং ইসলামী গণতন্ত্রের মধ্যে একটা মৌলিক পার্থক্য হলো, পদ প্রার্থী হওয়া।
ইসলামী গণতন্ত্রে কেউ নিজেকে পদ প্রার্থী দাবী করতে পারবেনা। যেমন, “আমাকে চেয়ারম্যান,এম্পি নির্বাচিত করুন”।
আবার প্রচলিত গণতন্ত্রের কথা হচ্ছে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক, এদিকে ইসলামী গণতন্ত্রে বলা হয় আল্লাহই সকল ক্ষমতার মালিক।
প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্র অনুযায়ী যেহেতু জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক, সেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যদি বলে মদ,যেনা বৈধ, তাহলে মদ বৈধ হয়ে যাবে। আর ইসলামীক গণতন্ত্রে যেহেতু আল্লাহই সকল ক্ষমতার মালিক, সেহেতু দেশের সকল জনগণ যদি বলে, মদ বৈধ, তবে মদ বৈধ হবেনা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মদ হারাম হারামই থেকে যাবে। তবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেখানে ইসলামের সমাধান নেই সেখানে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের ভোট নেবা হবে।
কেউ কেউ প্রশ্ন করে থাকেন, জামায়াতে ইসলামীতো প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল, তাহলে এটা কিভাবে ইসলামী দল হলো। কারণ জামায়াতের নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়, নিজের সমর্থনে ভোট চায়, এটাতো ইসলামী গণতান্ত্রিক সিস্টেম নয়।
মূলত জামায়াত সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনেই মানুষ এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকে, জামায়াতের কোনো নেতা কর্মী, কোনো নির্বাচনে নিজেকে প্রার্থী দাবী করতে পারেনা, যদি কেউ এই ধরনের দাবী করেন তবে সে ওই নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
যখন কোথাও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন জামায়াতের স্থানীয় পর্যায়ে বৈঠক ডাকা হয় এবং সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে কিনা। যদি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়, তখন দলের প্রতিনিধিদের পরামর্শের ভিত্তিতে একজনকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ব্যাপারটাকে আমরা এইভাবে ব্যাক্ষা করতে পারি, প্রভাবশালী সাহাবীরা হজরত আবুবকরকে খলিফা নির্বাচন করে তাঁকে জনগনের নিকট হাজির করে বলা হলো, আবুবকরের (রাঃ) হাতে আমরা বাইয়াত করেছি, তোমরাও তাঁর হাতে বাইয়াতবদ্ধ হও।
এখানে আবু বকর (রাঃ) কিন্তু নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননাই, বরং সাহাবীরাই তাঁকে নির্বাচিত করে এর স্বপক্ষে জনগনের নিকট সমর্থন চেয়েছে।
জামায়াতের সিস্টেমটাও একই রকম, আব্দুর রহিম কিংবা আব্দুল করিমকে জামায়াতের পক্ষ হতে চেয়ারম্যান,এম্পি হিসেবে মনোনীত করে জনগনের কাছে আহ্বান জানানো হয়, আমরা অমুককে মনোনীত করেছি এবার তোমরাও তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করো।
এখানে পার্থীর ব্যাক্তিগত খায়েশের কোনো স্থান নেই। এমনও দেখা গেছে যেই ব্যাক্তিকে জামায়াতের পক্ষ হতে মনোনীত করা হয়েছে তাঁর পকেটে নির্বাচন করার মতো পর্যাপ্ত টাকাও নেই, দলীয় ফান্ড হতে তাঁর নির্বাচনের খরচ বহন করা হয়েছে।
প্রচলিত অনৈসলামিক গণতন্ত্রে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মনে করা হয়, কিন্তু জামায়াতের দলীয় সংবিধানে আল্লাহকেই সকল ক্ষমতার উৎস হিসেবেই মেনে নেয়া হয়েছে, যার কারনে আমরা দেখেছি ইসলাম বিরোধী শক্তি নির্বাচন কমিশন হতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করেছে। আল্লাহকে সকল ক্ষমতার উৎস মানাও অপরাধ!!
সুতরাং, যারা বলছেন জামায়াত কুফরী গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল, তাঁর মূলত বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন, হয়তো তারা অজ্ঞতার কারনে এমন প্রচারনা চালাচ্ছেন অথবা ইচ্ছেকৃতভাবে জামায়াতের প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ে এমনটি করছেন।
এরপরেও যেহেতু আমরা অনৈসলামীক রাষ্ট্রে বসবাস করছি, সেহেতু পুরোপুরি ইসলামীক সিস্টেম মেনে নিয়ে রাজনৈতিক দল পরিচালনা করা অসম্ভবই বলা যায়। যেসব ইসলাম বিরোধী নীতিমালা আমরা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি, রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারলে সেসব বাদ দিয়ে একটি সুখি সমৃদ্ধ ইসলামীক খিলাফত আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো ইনশাআল্লাহ্।
৩ ডিসেম্বর ২০১৩
No comments:
Post a Comment