বাঘের বাচ্চা দেখে এলাম।



সত্যিই তিনি বাঘের বাচ্চা, বাঘ এখন খাঁচায় বন্দী। হুমাম কাদের চৌধুরীর কথা বলছিলাম, পিতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর যোগ্য উত্তরসূরী। আজ একটা ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম হুমাম কাদের চৌধুরীর সাথে।
তিনি বলছিলেন বিএনপি’র প্রগ্রামে আমি যাইনা! একজন বললেন আপনিতো ভুল করছেন, বিএনপি’র প্রগ্রামে না গেলেতো আপনি রাজনৈতিক ময়দানে পিছিয়ে যাবেন!
হুংকার ছুড়ে জবাব দিলেন হুমাম কাদের, ‘কিসের বিএনপি! এটাতো বেঈমানের দল, এখন পর্যন্ত সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তির দাবীতে একটা বক্তব্য প্রদান করতে পারেনাই।’
হুমাম কাদের আরো বললেন, আমি এই রমজানে প্রথম প্রগ্রামে গিয়েছি জামায়াতের আর দ্বিতীয় বার আজকে হেফাজতের প্রগ্রামে। বিএনপি’র প্রগ্রামে দাওয়াত দিয়েছে, আমি যাইনাই। কেনো যাবো? বিএনপি’র প্রগ্রামে গিয়ে আমি সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তির দাবী তুলতে পারবোনা, প্রশ্ন উঠবে, যেখামে ম্যাডাম জিয়া সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তি চায়নাই, সেখানে আপনি কেনো বিএনপি’র প্রগ্রামে এসে তার মুক্তি চাইছেন? তারচেয়ে বরং আমি জামায়াত এবং হেফাজতের প্রগ্রামে এসে গলা উচু করে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তি চাইতে পারবো।

একজন প্রশ্ন করলেন, বিএনপি’র সাথে দূরত্ব তৈরী হলে আগামী নির্বাচনে পিতার আসন হতে আপনাকে মনোনয়োন দিবে?
সাথে সাথেই তিনি জবাব দিলেন, ম্যাডাম জিয়ার কাছে আমি মনোনয়োন চাইবোনা, তিনি নিজে এসে আমাকে মনোনয়ন প্রদান করবেন। আমি যদি তার কাছে মনোনয়ন চাইতে যাই তবে তিনি ভাববেন তিনি আমাদের চালাচ্ছেন! সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পরিবারকে কেউ চালায়না, তারা নিজেরাই নিজেদের চালায়!

মৃদু হেসে হুমাম কাদের বলেন, আমরা শুধু বিএনপি করিনা, আমাদের বিএনপি’র আগে একটা শব্দ আছে মুসলিম, আমরা মুসলিম বিএনপি করি।
খালেদা জিয়ার লংমার্চের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ম্যাডাম জিয়া যখন পলোগ্রাউন্ড ময়দানে লংমার্চ পরবর্তী সমাবেশে এলেন, আমার বক্তব্যের শেষে আমি স্লোগান দিলাম ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’। পেছন থেকে আন্দালীব পার্থ প্রশ্ন করলেন আপনি জিয়ার সৈনিক স্লোগান দিলেননা কেনো? আমি জবাব দিয়েছিলাম সমাবেশের মাঠ ভর্তি হয়ে আছে জামায়াত-শিবিরের লোক দ্বারা এখানে আমি কিভাবে জিয়ার সৈনিক স্লোগান দেই?
আমার পূর্বে আমার মা বক্তব্য দিয়েছিলেন, কেউ রেসপন্স করছিলোনা। আমি যখন ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিলাম হাজার হাজার কন্ঠ একসাথে আল্লাহু আকবর বলে প্রতিধ্বনী করে উঠলো!

হুমাম কাদের আরো বলেন, বুকে হাত দিয়ে বলছি, আগামী নির্বাচনে আমি প্রচারণা চালানোর সময় বিএনপি’র সাইনবোর্ড ইউজ করবোনা, প্রয়োজনে নির্বাচনে পরাজিত হবো তবুও সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী পরিবার কারো কাছে মাথা নত করবেনা, বেঈমান বিএনপি’র পক্ষ হতে প্রচারনা নয়, আমি ইসলামপ্রিয় তৌহিদী জনতার পক্ষ হতে ভোট চাইবো। বাংলাদেশে এখন স্পষ্টভাবে দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, একটি পক্ষে আছে ইসলাম ও মুসলিম অন্য পক্ষে আছে নাস্তিক-বাম’রা। আওয়ামীলীগ আমাদের মূল শত্রু নয়, আমাদের মূল শত্রু হচ্ছে নাস্তিক-বাম, তারাই পেছন হতে আওয়ামীলীগকে চালাচ্ছে। আগা কেটে লাভ নেই, গোড়ায় আঘাত হানতে হবে।

তিনি বললেন, আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে? করলে করবে, কয়দিন বন্দী করে রাখবে,সর্বোচ্চ ছয়মাস? এরপরতো ছেড়ে দিতে হবে। আমার পিতাতো দুই বছর ধরে কারাগারে আছে, তার তুলনায় এটা কিছুইনা। তিনি হেসে ফেললেন, একদিক হতে বলতে গেলে ভালোই হবে, বাপের সাথে কিছুদিন থেকে আসতে পারবো!

তার কথাগুলো যতই শুনছিলাম আভিভূত হয়ে যাচ্ছিলাম, যোগ্য নেতার যোগ্য পূত্র। সত্যিই তিনি বাঘের বাচ্চা!!

২৫জুলাই২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment