আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?


শিরোনাম দেখে চমকে গেলেন? না, আপনি ভুল দেখেননি! লাখো তরুনের নৈতিক-আধ্যাত্মিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির একটি বিকল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ভার্সিটি ভর্তি হয়ে বাড়ি হতে বিদায় নেয়ার প্রাক্কালে বাজারের একটি দোকানে বসে কাকা বলছিলেন, “শিবির করো ভালো কথা! একটা বিষয় মনে রাখবা, পড়াশোনা ঠিক না থাকলে শিবির করে লাভ নাই। খারাপ ছাত্রদের শিবির মূল্যায়ন করেনা। রেজাল্ট খারাপ হলে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাবে, শিবির হতেও বের করে দিবে। অতএব ঠিকমতো পড়াশোনা করবা”।
কাকার এক বন্ধু পাশেই বসা ছিলেন, তিনি হৈ হৈ করে উঠলেন, ‘না না, রাজনীতি করার কি দরকার?’
কাকা তাকে থামিয়ে দিলেন, দরকার আছে বলেইতো বলছি, রাজনীতি করার দরকার নাই, শিবির করার দরকার আছে।

সেদিন কাকার কথার পূর্ণ অর্থ বুঝতে পারিনাই, ভেবেছিলাম কাকা যে সংগঠন পছন্দ করেন আমিও সে সংগঠন করছি তাই হয়তো তিনি আমাকে সাপোর্ট করছেন।

বেশ কিছুদিন পরে কাকার কথার অর্থ বুঝতে পেরেছিলাম, কয়েকটি ঘটনার পরে। সেগুলোই উল্লেখ করলাম।

এক
আমাদের এলাকার এক ছাত্রকে সংগঠনের দাওয়াত দিয়ে কর্মী পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলাম, প্রতিদিন ফজর নামাজে তাকে জাগিয়ে দিতাম, ছাত্রটির অভিভাবক চরম বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলেই বলতেন ‘ও অনেক রাইতে ঘুমাইছে, এখন জাগাইয়োনা!’ আমরাও প্রতিদিন তাকে ডাকতাম কিন্তু তার মায়ের অনুরোধে তাকে ঘুম হতে জাগাইতামনা।

ছেলেটিও আর জাগেনাই! ফলাফল, বেশ কয়েকবার রেজাল্ট খারাপ করে ছাত্রত্ব বাতিল। ছাত্রটির বাবা মাঝে মধ্যেই আমার সাথে দেখা করে অনুরোধ করতেন, তোমরা আমার ছেলেটিকে একটু দেখো, তাকে তোমাদের সাথে রেখে কিছু বুঝাও, দেখো ঠিক করতে পারো কিনা!

দুই
আমাদের এলাকার এক প্রভাবশালী মুরব্বি, তার দৈনন্দিন কাজের রুটিন ছিলো, শিবিরের কর্মীদের বাসায় গিয়ে তাদের অভিভাবকদের কাছে নালিশ জানানো, ‘আপনার পোলায়তো বড় নেতা হয়ে গেছে, শিবির করে! এলাকার সব পোলাদের শিবিরের প্রগ্রামে নিয়া নষ্ট করে ফেলতেছে, এখনো সময় আছে পোলারে সামলান!”

এলাকার অধিকাংশ ছেলেকে শিবিরের প্রগ্রামে নিয়ে নষ্ট করতে সক্ষম হলেও সেই মুরব্বির ছেলেকে নষ্ট করতে পারিনাই। তার ছেলে এখন ইয়াবা খায়, মাঝে মধ্যে গাঁজা খেয়ে রেললাইনের পাশে বসে বসে ঝিমায়! পড়াশোনা টেনেটুনে এসএসসি!

তিন
এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের এক ছাত্রকে শিবিরের কর্মী বানাবো বলে টার্গেট নিলাম। একদিন ফজরের নামাজের পরে, তাকে ঘুম থেকে তুলে অজু করিয়ে মাত্র মসজিদের দিকে রওয়ানা হয়েছি, এমন সময় কোথা হতে তার বাবা এসে হাজির!
এই কই যাস?
কাচুমাচু হয়ে ছেলেটি জবাব দিলো, নামাজ পড়তে যাচ্ছি!
গর্জন করে উঠলো তার বাবা, সারাদিন নামাজের নাম নাই! এখন কামের টাইমে তোর নামাজের কতা মনে হইছে!
তারপরে শুরু হলো, অকথ্য ভাষায় গালা-গালি!
আমার সামনে অপমানিত হওয়ায় রাগে ক্ষোভে ছেলেটি মসজিদে না গিয়ে দুপ ধাপ পা ফেলে ঘরে চলে গেলো।
এরপরে বিভিন্ন সময়ে ছেলেটিকে শিবিরের প্রগ্রামে দাওয়াত দিলেও পারিবারিক নানা বাধ্যবাধকতায় আর শিবিরের প্রগ্রামে হাজির করাতে পারিনাই।

অনেক দিন পরের ঘটনা, ছেলেটি জড়িত হয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে, ছোট খাটো চুরি করাও শুরু করে। আসক্ত হয় পড়ে ইয়াবা, গাঁজা সহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্যে। ছেলেটির বড় ভাই মাঝে মধ্যেই ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে অনুরোধ করতো, তোমরা থাকতে আমার ভাই এমন হয় কিভাবে? পার্সোনালী ওকে একটু সময় দাও, দেখো ঠিক করতে পারো কিনা।
ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে, কাচামাটি পরিশ্রম করে মনের মতো আকৃতি দেয়া যায়, পোড়ামাটির রুপ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।

অবশেষে একদিন ধর্শনের মামলায় এলাকা ছাড়া হয় ছেলেটি, ছেলেকে না পেয়ে তার বাবাকেই ধরে নিয়ে যায় পুলিশ!

পরিশিষ্ট্যঃ
যে কথা বলছিলাম, কাকার নসিহতের কারণ এখন বুঝেছি, ভাতিজা পরিবারের বাইরে একা একা শহরে থেকে পড়াশোনা করবে। তার নৈতিক-আধ্যাত্মিক সুরক্ষায় সম্ভবত শিবিরের বিকল্প কিছুর সন্ধান খুজে পাননাই কাকা, তাই তিনি শিবির করার ব্যাপারটিকে এ্যাপ্রিসিয়েট করেছিলেন। শিবির একজন ছাত্রের জন্য অভিভাবকের চাইতেও বড় অভিভাবক,

আপনাকেই বলছি, হ্যা আপনাকেই! আপনার সন্তানকে শিবিরে ভর্তি করেছেনতো?

৩১জুলাই২০১৩

Post Comment

ইসলামী বিপ্লবের ডেডলাইন কি ঘণিয়ে আসছে?


একটা সময় ছিলো আমরা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা স্বপ্ন দেখতাম আগামী ২০বছরের মধ্যে বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হব। আমাদের পূর্ববর্তী দায়ীত্বশীলদের কাছে শুনেছি তারাও এমন স্বপ্ন দেখতেন, দেখতে দেখতে বহু ২০বছর অতিক্রম হয়ে গেলো, ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন সেই স্বপ্নই রয়ে গেলো। পরিকল্পনাহীন গতানুগতিক ভাবে চলছেতো চলছেই ভাব নিয়ে একটাই সংগঠন পরিচালিত হলে এমন স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে সেটাই স্বাভাবিক।

প্রধান বিরোধীদল বিএনপি’র নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঈদের পরে দূর্বার আন্দোলনের ঘোশনা দিয়েছেন, যদিও অতীতে বহুবার এমন ঘোষণা দিয়েও জনমনে হাস্যরসের সৃস্টি করা ছাড়া আর কিছু উপহার দিতে পারেননাই। তবে এবারের প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন, ঈদের পরে আন্দোলন কর্মসূচী গ্রহণ করা না হলে বিএনপি’র অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নাই। অতএব ইচ্ছেয় হোক আর অনিচ্ছায় হোক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার দাবীতে আন্দোলনে বিএনপি’কে আসতেই হবে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, অসাংবিধানীক সরকার প্রতিষ্ঠার চেস্টা করা হলে, আগামী ১০বছরেও নির্বাচন দেয়া হবেনা।

ধরা যাক, ঈদের পরে বিএনপি তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুললো। হেফাজত তাদের ১৩দফা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো রাজপথে এবং জামায়াত নিজস্ব পদ্ধতীতে অবৈধ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বন্ধের দাবীতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো। ফলাফল সরকার পতন ছাড়া বিকল্প নেই, হয় বিরোধীদের দাবী মেনে নিতে হবে, নয়তো সেনাবাহিনী ক্ষমতা কেড়ে নিবে, এর বিকল্প কিছু হতে পারেনা।

আবার অন্যদিকটাও ভেবে দেখা দরকার, ধরা যাক শেখ হাসিনা তার ভারতীয় কানেকশন কাজে লাগিয়ে সেনাবাহিনীকে ম্যানেজ করে ফেললো। খালেদার তর্জন গর্জন গলা থেকে ঠোট পর্যন্তই সীমাবদ্ধ হয়ে রইলো, রাজপথে আলোর মুখ দেখলোনা এবং হেফাজত তাদের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে মাদ্রাসায় বসে বসে জিকির-আসগার নিয়ে মগ্ন থাকলো। এই পরিস্থিতিতে দেশের কি হবে, একটু বিশ্লেষণ করা যাক।

হোসনি মোবারক স্টাইলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় শেখ হাসিনা ক্ষমতা দখল করে রাখলো, এবং সেটা অবশ্যই ১০বছর কিংবা তারো অধিক সময়ের জন্য। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা এখন পর্যন্ত যারা দল ক্ষমতায় আসবে বলে স্বপ্ন দেখছে তারা হতাশ হয়ে যাবে, অনেকেই রাজনীতি ছেড়া দিবে। বড় বড় ব্যবসায়ী নেতারা যারা বিএনপি’র মন্ত্রী-এম্পি হয়েছিলো তারা সরকারের সাথে আপোশ করে ব্যবসাতে নিমগ্ন হবে, রুট পর্যায়ের নেতারা রাজনীতি বিমুখ হওয়ায় দলে নতুন কর্মী রিক্রুটমেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, অস্তিত্ব হারাবে বিএনপি। মাদ্রাসা-গুলোতে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে, আহম্মদ শফীদের মতো বিদগ্ধ আলেমদের সরিয়ে দিয়ে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন উবাইদের মাদ্রাসা পরিচালনার দায়ীত্ব দেয়া হবে। জামায়াতের সিনিয়র পর্যায়ের সকল নেতাদের নিশ্চিত ভাবে ফাসি-কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয়া হবে। দেশের সর্বময় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে বাংলার ফিরাউন শেখ হাসিনা।

এরপরের পরিস্থিতি কিন্তু একটু ভিন্ন, ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াত-শিবির ব্যক্তি নির্ভর দল না হওয়ায় তারা তাদের আন্দোলন বন্ধ করবেনা, আপোষহীন ভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে নতুন কর্মকৌশল নির্ধারণ করবে, সরকার বিরোধী আন্দোলনকে আরো বেগবান করবে। গণভিত্তি রচনা করার জন্য নানামুখি সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে জড়িয়ে পড়বে। ফলশ্রুতিতে ফাকা মাঠে গোল দিবে জামায়াত, সরকার বিরোধী জনমতের পুরোটাই অর্জন করবে এই দলটি। জনগণের আশা-আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে জামায়াতে ইসলামী। পরবর্তীতে প্রয়োজন হবে একটা তীব্র ঝাকুনী, সেটা অবশ্যই মিশরের তাহরীর স্কয়ারের মোবারক বিরোধী আন্দোলনের অনুরুপ। সৃষ্টি হবে একটি ইসলামী গণবিপ্লব, 'ইসলামীক রিপাব্লিক অব বাংলাদেশ'

আমরা আমাদের নেতাদের হারাতে চাইনা, ইসলামী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ আলেমেদ্বীনরা ফাসির রশিতে ঝুলবে আর আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো সেটা হতে পারেনা। তারপরেও পজেটিভ-নেগেটিভ দু’টি দিকই আমাদের ভেবে রাখতে হবে। মিশর বিপ্লবের মতো, বিপ্লব যেনো কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে সেই প্রস্তুতিও জামায়াতকে অর্জন করতে হবে।


৩০জুলাই২০১৩

Post Comment

দোয়ার রি-এ্যাকশন!!


আমার বন্ধু আলী, পুরো নাম আলী আহম্মদ। চিন্তা চেতনায় যোজন যোজন দূরত্ব সত্বেও চরম বন্ধুত্ব দু’জনের মধ্যে। আমি যেমন চিন্তা চেতনায় একশো পার্সেন্ট আলবদর, অন্যদিকে আলী হচ্ছে একশ পার্সেন্ট শাহবাগী।
নাহ! আলী’কে শাহবাগী বলা যাবেনা, শত হলেও নিজের বন্ধু, বন্ধুকে শাহবাগী বলে গালী দেয়া ঠিক হবেনা! বরং বলা যায় চিন্তা চেতনায় শতভাগ মুক্তিযোদ্ধা।
মুখ থেকে ভুস ভুস করে সিগারেটের ধোয়া ছাড়া আলীর প্রিয় হবির মধ্যে একটা, অন্যদিকে সিগারেটের ধোয়া নাকে ঢুকলেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।
গার্লফ্রেন্ড লালন পালন আর হাতি লালন পালন করা একই কথা, এই কাজটি নিরলস ভাবে অতীব যত্নের সাথে সম্পাদন করে যাচ্ছে আমার এই বন্ধুটি। অন্যদিকে এই কাজটিকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং ফালতু কর্ম আখ্যায়ীত করে, একশ হাত দূরত্ব বজায়ে রাখার চেস্টায় সদা নিমগ্ন আমি।

সেদিন এমবিএ’র থিসিস রিলেটেড একটি কাজে গিয়েছিলাম আলীর বাসায়, গিয়েতো আমি থ!
‘কিরে তুই আবার রাজাকার বাহিনীতে জোগ দিলি কবে?’
বত্রিশ পাটি দাত বের করে আলী হাসছে, হাসিটা ভেতর হতে আসছিলোনা, বুঝাই যাচ্ছিলো প্রাণহীন হাসি! মুখ ভর্তি দাড়ি-গোফের জঙ্গল বানিয়ে রেখেছে।
চেহারার এই অবস্থা কেনো? তোর সাথে হাটলেতো আমাকে পুলিশে ধরবে! ঠাট্টা করেই বললাম।
আলী আবার হাসে, কেনো পুলিশে ধরবে কেনো?
‘আমি খাটি আলবদর হয়েও ক্লিন সেভড, অথচ তোর মুখ দাড়ি গোফে ভর্তি! না তোর সাথে আর চলা যাবেনা! নিশ্চিত একদিন শিবির করার অভিযোগে তোকে সহ আমাকে রাস্তা হতে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে’।
আলি এবার অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।

ঝটপট রেডি হয়ে আলী আমাকে নিয়ে ঘর হতে বের হলো।
দোস্ত তোর সাথে অনেক কথা আছে, আলীর কন্ঠে উদ্বেগ ঝড়ে পড়ছে। আলীর বাসায় আসলেই আমাদের প্রাথমিক গন্তব্য পাড়ার সোহেলের দোকান। দারুন খাতির হয়ে গেছে সোহেলের সাথে, আমাদের দেখেই হৈ হৈ করে উঠলো সোহেল।
একটা সিগারেট নিয়ে আমার সামনেই ধীরে সুস্থে সেটা টানছে আলী, আমি কি করবো! অলস ভঙ্গিত একটা সেন্টার ফ্রুইট নিয়ে চিবোতে থাকলাম।
‘তোকে না কতদিন বলেছি, আমার সামনে বসে সিগারেট টানবিনা! বিশ্রী গন্ধ, এগুলাও মানুষে খায় ছি!’
আমি সিগারেট খাইলে গন্ধ হয়না, দেখবি? বলেই আলী একগাদা ধোয়া ছেড়ে দিলো আমার মুখ লক্ষ করে। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আলী, মনে হচ্ছে বিশাল এক রসিকতা করে ফেলেছে।
চরম বিরক্তি নিয়ে আমি তাকিয়ে আছি ওর দিকে। শালা! তোর মতো বন্ধু থাকলে আর শত্রুর দরকার হয়না, মনে হচ্ছে জুতা খুইলা মোজা দিয়ে তোরে ইচ্ছে মতো পিটাই!
আলী হাসে, সেই বিখ্যাত বত্রিশ দাত বিস্তৃত হাসি!

কিছুক্ষণ যেতেই আলী নীরব হয়ে যায়, একে একে বর্ণনা করে দুঃখগুলো। চেহারার এই অবস্থার হেতু এবার বুঝতে পারি। গার্লফ্রেন্ডের পরিবারে তাদের এই রিলেশন নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে, টেনশনে বেচারা নাওয়া খাওয়া ভুলে দেবদাস দেবদাস ভাব। ভাতের বদলে এখন নিয়ম করে তিনবেলা সিগারেট খায়। সর্বশেষে আলী রিকোয়েস্ট করে, দোস্ত নামাজ পড়ে আমাদের জন্য একটু দোয়া করবি, যেনো ঝামেলাটা ঠিকঠাক মতো মিটে যায়।
আমি সহানুভূতির স্বরে জিজ্ঞাসা করলাম, কি দোয়া করবো?
‘দোয়া করবি যেনো আমার আর ওর মাঝে যেসব ঝামেলা আছে সেগুলো দূর হয়ে যায়। আমি যেনো ওকে পাই। ইত্যাদি ইত্যাদি’
‘ঠিক আছে দোয়া করবো, তবে একটা শর্ত আছে’।
‘কি শর্ত?’
‘শর্ত হচ্ছে দোয়ায় রি-এ্যাকশন খারাপ কিছু হলে কিন্তু আমাকে দোষ দিতে পারবিনা!’
‘ওই! আন্ধারে হাইকোর্ট দেখাস? আমার সাথে মশকারী করস! দোয়ার আবার রি-এ্যাকশন আছে?’
‘তোর বিশ্বাস হচ্ছেনা? আচ্ছা তাহলে তোকে দু’টি ঘটনা বলছি, শোন।’
আলীর আবার ভালো একটা গুন আছে, সেটা হচ্ছে মনযোগী শ্রোতা। যাই বলিনা কেনো, আলী অত্যান্ত মনযোগ সহকারে শোনার চেস্টা করে। আমি শুরু করলাম।

প্রথম ঘটনাঃ এক বৃদ্ধা মহিলা তপ্ত মরুর বুকে হাটছে, গন্তব্য এখনো বহুদূর। হাটতে হাটতে ক্লান্ত মহিলা আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আমাকে একটা উট দান করো। মহিলা হাটছেন আর দোয়া করছেন, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করছেননা। একপর্যায়ে অধৈর্য হয়ে মহিলা আবার দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! উট না দিলে একটা উটের বাচ্চা হলেও দান করো! আল্লাহ এবার তার দোয়া কবুল করলেন।
ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিলো এক বাণিজ্য কাফেলা, হঠাৎ করেই কাফেলার একটি উটনী বাচ্চা প্রসব করলো। কাফেলার সর্দারতো মহা চিন্তায় পড়ে গেলেন! একদিকে উটের বাচ্চা নেয়ার মতো পর্যাপ্ত বাহন কাফেলায় নেই, অন্যদিকে মরুভূমিতে এটা ফেলে যাওয়াও বোকামী হবে, বাজারে নিয়ে এটা বিক্রয় করলে বেশ লাভবান হওয়া যাবে।
হঠাৎ করেই কাফেলার সর্দার ওই বৃদ্ধাকে দেখতে পেলেন, যিনি উটের বাচ্চার জন্য দোয়া করেছিলেন। সর্দার জোড় করেই উঠের বাচ্চাটিকে বৃদ্ধার কাধে তুলে দিলেন। হুকুম করলেন, এটা নিয়ে আমাদের সাথে সাথে আসো!
শিক্ষাঃ ওই বৃদ্ধা মরুভূমিতে চলতে গিয়ে আল্লাহর কাছে পথ চলার বাহন চাননাই, তিনি চেয়েছিলেন উট কিংবা উটের বাচ্চা। আল্লাহ তাকে উটের বাচ্চাই দান করেছিলেন, পথ চলার বাহন দান করেননাই।

ইতোমধ্যেই সোহেল চা বানিয়ে দিয়েছে, চমৎকার চা বানায় ছেলেটি! চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে আমার দ্বিতীয় ঘটনা শুরু করলাম। মনযোগী শ্রোতার মতো আলী আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।

দ্বিতীয় ঘটনাঃ আমাদের এলাকার জিকু ভাই, নাম শুনেছিস নিশ্চই? কয়েকবার তার ব্যাপারে তোর সাথে আলোচনা করেছিলাম আমাদের প্রজেক্টের ব্যাপারে, যাই হোক মূল টপিক্সে আসি।
জিকু ভাইয়ের ছোট বেলার কথা, জিকু ভাই সাইজে আমার সমানই, মানে বেটে খাটো মানুষ। হঠাৎ করেই একদিন রাতের বেলা, গ্রামের বাড়িতে জিকুভাই ও তার কয়েকজন সমবয়সী ছেলে দৌড় প্রতিযোগীতা শুরু করলো, কার আগে কে গন্তব্যে পৌছতে পারে। দূর্ভাগ্যবশত একমাত্র জিকুভাই গন্তব্য পৌছতে পেরেছিলো, বাকি দুইজন মাঝ পথ থেকেই আউট!
‘মাঝ পথে থেকেই আউট মানে? আর গন্তব্যে পৌছানোটা দূর্ভাগ্য হবে কেনো? সেটাতো সৌভাগ্য! আলীর কথায় যুক্তি ঝড়ে পড়ে’।
আমি আবার শুরু করি, গ্রামে সাধারণতো বাড়ির সামনের উঠুনে রশি টানিয়ে সেখানে কাপড় শুকাতে দেয়া হয়। জিকু ভাইয়ের বাকি দুই কম্পিটিটর ছিলো তার তুলনায় বেশ লম্বা! অন্ধকারে দৌড় দিতেই ওই রশির সাথে গলা আটকে তারা ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়, অন্যদিকে সাইজে ছোট হওয়ায় জিকুভাই রশির নিচ দিয়েই অবলিলায় গন্তব্যে পৌছে যায়, মাথার কিঞ্চিত উপরেই যে রশি আছে সেটা জিকুভাই অনুভবই করেনাই।
আলী এবার অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে, হাসির দমকে হাতের কাপ হতে চা পড়ে যাচ্ছে সেদিকে নজর নেই।
হাসি থামতেই আমি আবার শুরু করি, রশির সাথে গলা বেধে দুইবন্ধুর পড়ে যাওয়া এবং রশির নিচ দিয়ে জিকু ভাই পার হয়ে যাওয়া, ব্যাপারটি জিকু ভাইয়ের কাছে চরম অবমাননাকর মনে হয়।
জিকু ভাই আল্লাহর কাছে দোয়া করে, হে আল্লাহ! আমি সাইজে ছোট, তুমি অতি দ্রুত এমন ব্যবস্থা করো, যেনো ওই রশি আমার গলায় লাগে। আল্লাহ জিকু ভাইয়ের দোয়া কবুল করেছিলো।
সপ্তাহ খানিক পরে, এক সন্ধায় জিকুভাই উঠোনে দৌড়া দৌড়ি করছিলো, হঠাৎ করেই ওই রশির সাথে জিকু ভাইয়ের গলা এমনভাবে ধাক্কা খায়, ফাঁসি খাওয়ার মতো অবস্থা প্রায়। ব্যাপার যেটা তাহচ্ছে, রশিটা যেই বাশের সাথে বাধা ছিলো, সেই বাশ কোন এক কারনে হেলে পড়ে রশি নিচু হয়ে গিয়েছিলো।
শিক্ষাঃ জিকু ভাই লম্বা হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেননাই, তিনি দোয়া করেছিলেন গলায় রশি লাগার জন্য। আল্লাহ তার গলায় রশি লাগানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

‘ঘটনা শুনে চিন্তিতভাবে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে আলী, তুই কি বোঝাতে চাস সেটা স্পষ্ট করে বল’।
‘আমি যেটা বোঝাতে চাই সেটা বেশ সিম্পল, তোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তুই কি চাস!’
‘মানে কি?’
‘মানে হচ্ছে, তুই কি তোর গার্লফ্রেন্ডকে চাস? নাকি তোর সাংসারীক জীবন সুখী হবে, বাকি জীবন সুখে শান্তিতে কাটাতে পারবি এমন একটা মেয়েকে বিয়ে করতে চাস?
দ্রুত সিদ্ধান্তনে, সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে জানা। তুই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে যে দোয়া করতে বলবি, আমি সেই দোয়াই করবো। দোয়া কবুল হবে কিনা জানিনা, তবে উল্টাপাল্টা দোয়া কবুল হয়ে গেলে কিন্তু পরে পস্তাতে হবে! তোর এই গার্লফ্রেন্ড কিন্তু জিকু ভাইয়ের মতো তোর গলায় রশি কিংবা ওই বৃদ্ধার উটের মতো তোর ঘাড়ে চেপে বসতে পারে!’

চিন্তিত ভঙ্গিতে আলী বসে আছে, তার মুখে কোনো কথা নাই। দোস্ত আজকে বাদ দে! আমি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা, আমার কি চাওয়া দরকার। তবে তোর গল্প শুনে গার্লফ্রেন্ড সংক্রান্ত দূশ্চিন্তা নাই হয়ে গেছে! আমার মনে হচ্ছে, এভাবে দোয়া করা উচিত। “হে আল্লাহ! তুমি আমার কল্যান করো! কিসে আমার কল্যান, কিসে আমার অকল্যান সেটা আমি জানিনা। তুমি আমার জন্য যেটা কল্যানকর মনে করো সেটাই কর। যাবতীয় অকল্যান হতে আমাকে হেফাজত করো।”

২৭জুলাই২০১৩

Post Comment

মেকাপ বক্স এবং বেওয়ারিশ কুকুর!


ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম, টেম্পোতে আমার অপজিট সিটে বসা ছিলো জলজ্যান্ত দুটি মেকাপ বক্স। থুক্কু! বক্স ছিলোনা, বক্স গুলো সম্ভবত বাসায় রেখে এসেছিলো, তবে ভেতরের মসলাগুলো আমার সামনেই দেখতে পাচ্ছিলাম। যাই হোক আমি চোখ নামিয়ে নিলাম, চলতি পথে এমনিতেই আমি চোখ নামিয়ে রাখি।

কি ভাবছেন, আমি খুব ধার্মিক? অনেক বেশি তাকওয়াবান? চলতি পথে বিব্রতকর কিছু দেখার ভয়ে চোখ নামিয়ে রাখি? যদি তাই ভেবে থাকেন তবে আপনি ভুল। দৃস্টিনত করে আমি তখন মোবাইলে ফেসবুক ইউজ করছিলাম। চোখ উচু করে মোবাইল থেকে ফেসবুক ইউজ করা যায়না।

ভাবছিলাম, বাসায় কি এদের মা-বাবা নেই? রমজান মাসে বেওয়ারিশ কুকুরগুলোও একটু হিসেব করে চলাফেরা করে!

২৬জুলাই২০১৩

Post Comment

একগুচ্ছ হাসি!


এক
আবুল মিয়া চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে দিলো, হায় হায়রে, বুড়া গড়ুটা মইরা যাইবোরে......
আবুলের বৃদ্ধা মা দৌড়ে এলো, কিরে কি হইছে, কানতেছচ ক্যা?
মা দেখ গরুর উপরের পাটির সবগুলো দাত পইড়া গেছে, গরুটা বেশি দিন বাচবোনা। এটা বিক্রি করে দিতে হবে।
আবুলের মা উদ্বেগের স্বরে বললো, কই দেখি দেখি? সত্যিইতো! উপরের পাটিতেতো একটা দাতও নাই, কালকেই তুই এটারে বিক্রি করার ব্যবস্থা কর।
আবুল হাফ ছেড়ে বাঁচে, আড়ালে মুচকি মুচকি হাসে। মাকে ধোঁকা দিয়ে এবার গরুটা বিক্রি করা যাবে। গরুর উপরের পাটিতে যে দাত থাকেনা, মা সেটা জানেইনা!

দুই
আমাদের ম্যাচের ফারুক ভাই, পিকুলিয়ার চরিত্রের একজন মানুষ। ফারুক ভাইয়ের বিস্তারিত পরিচয় দিচ্ছিনা, দিলে তিনি মাইন্ড খাইতে পারেন!
সেদিন গোসলের জন্য লাইফবয় সাবান কিনেছিলাম, ফারুক ভাই দ্রুত হাতে আমার হাত থেকে সাবান নিয়ে প্যাকেটের গায়ের লেখা পড়তে শুরু করলো।
‘কি দেখছেন ফারুক ভাই?’
‘আরে বইলেননা, এর আগে দুইটা সাবান কিনেছি, দুইবারই ঠক খাইছি!’
‘ঠক কেমনে খাইলেন, দাম বেশি নিয়েছে?’
‘আরে না! প্রথমে কিনেছিলাম ডেটল সাবান, বাসায় এনে দেখি সেটার গায়ে লেখা টয়লেট সোপ। এরপরে কিনলাম স্যাভলন সাভান, সেটার গায়েও লেখা টয়লেট সোপ! চিন্তা করে দেখেন, টয়লেটের সাবান কি গায়ে মাখা যায়? ফারুক ভাই হতাশ কন্ঠে প্রশ্ন করলো’
আমি মুচকি হেসে বললাম তাহলেতো আপনার সাবান ইউজ করা বন্ধ হয়ে যাবে!
কেনো, কেনো? ফারুক ভাই উদ্বিগ্ন কন্ঠে প্রশ্ন করলো।
‘দুনিয়ার সব সাবানই টয়লেট সোপ! এমনকি এই লাইফবয়ও টয়লেট সোপ। এবং টয়লেট সোপ মানে টয়লেটের(ল্যাট্রিনের  ) সাবান নয়!’
ফারুক ভাইয়ের চেহারাটা দেখার মতো হয়েছিলো।

তিন
ফার্মের গরুর দুধ ঘণ নাকি পাতলা তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো। ফারুক ভাইয়ের যুক্তি ছিলো ফার্মের গরুর দুধ কিছুতেই ঘণ হবেনা।
আমি প্রশ্ন করলাম কেনো হবেনা? ফার্মের গরুর দুধে পানি মেশায়না, সেটা অবশ্যই ঘণ হবে।
ফারুক ভাইয়ের উত্তেজিত কন্ঠের উত্তর শুনেতো আমি টাশকিতো!
‘আরে মিয়া, একটা গরু দিনে ৪০লিটার দুধ দেয়, দুধ পাতলা হবেনাতো আপনার জন্য ঘণ হইবো? গরুগুলা সারাদিন একটু বিশ্রাম নিতে পারেনা!!’

২৬জুলাই২০১৩

Post Comment

বাঘের বাচ্চা দেখে এলাম।



সত্যিই তিনি বাঘের বাচ্চা, বাঘ এখন খাঁচায় বন্দী। হুমাম কাদের চৌধুরীর কথা বলছিলাম, পিতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর যোগ্য উত্তরসূরী। আজ একটা ঘরোয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম হুমাম কাদের চৌধুরীর সাথে।
তিনি বলছিলেন বিএনপি’র প্রগ্রামে আমি যাইনা! একজন বললেন আপনিতো ভুল করছেন, বিএনপি’র প্রগ্রামে না গেলেতো আপনি রাজনৈতিক ময়দানে পিছিয়ে যাবেন!
হুংকার ছুড়ে জবাব দিলেন হুমাম কাদের, ‘কিসের বিএনপি! এটাতো বেঈমানের দল, এখন পর্যন্ত সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তির দাবীতে একটা বক্তব্য প্রদান করতে পারেনাই।’
হুমাম কাদের আরো বললেন, আমি এই রমজানে প্রথম প্রগ্রামে গিয়েছি জামায়াতের আর দ্বিতীয় বার আজকে হেফাজতের প্রগ্রামে। বিএনপি’র প্রগ্রামে দাওয়াত দিয়েছে, আমি যাইনাই। কেনো যাবো? বিএনপি’র প্রগ্রামে গিয়ে আমি সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তির দাবী তুলতে পারবোনা, প্রশ্ন উঠবে, যেখামে ম্যাডাম জিয়া সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তি চায়নাই, সেখানে আপনি কেনো বিএনপি’র প্রগ্রামে এসে তার মুক্তি চাইছেন? তারচেয়ে বরং আমি জামায়াত এবং হেফাজতের প্রগ্রামে এসে গলা উচু করে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মুক্তি চাইতে পারবো।

একজন প্রশ্ন করলেন, বিএনপি’র সাথে দূরত্ব তৈরী হলে আগামী নির্বাচনে পিতার আসন হতে আপনাকে মনোনয়োন দিবে?
সাথে সাথেই তিনি জবাব দিলেন, ম্যাডাম জিয়ার কাছে আমি মনোনয়োন চাইবোনা, তিনি নিজে এসে আমাকে মনোনয়ন প্রদান করবেন। আমি যদি তার কাছে মনোনয়ন চাইতে যাই তবে তিনি ভাববেন তিনি আমাদের চালাচ্ছেন! সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পরিবারকে কেউ চালায়না, তারা নিজেরাই নিজেদের চালায়!

মৃদু হেসে হুমাম কাদের বলেন, আমরা শুধু বিএনপি করিনা, আমাদের বিএনপি’র আগে একটা শব্দ আছে মুসলিম, আমরা মুসলিম বিএনপি করি।
খালেদা জিয়ার লংমার্চের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ম্যাডাম জিয়া যখন পলোগ্রাউন্ড ময়দানে লংমার্চ পরবর্তী সমাবেশে এলেন, আমার বক্তব্যের শেষে আমি স্লোগান দিলাম ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’। পেছন থেকে আন্দালীব পার্থ প্রশ্ন করলেন আপনি জিয়ার সৈনিক স্লোগান দিলেননা কেনো? আমি জবাব দিয়েছিলাম সমাবেশের মাঠ ভর্তি হয়ে আছে জামায়াত-শিবিরের লোক দ্বারা এখানে আমি কিভাবে জিয়ার সৈনিক স্লোগান দেই?
আমার পূর্বে আমার মা বক্তব্য দিয়েছিলেন, কেউ রেসপন্স করছিলোনা। আমি যখন ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিলাম হাজার হাজার কন্ঠ একসাথে আল্লাহু আকবর বলে প্রতিধ্বনী করে উঠলো!

হুমাম কাদের আরো বলেন, বুকে হাত দিয়ে বলছি, আগামী নির্বাচনে আমি প্রচারণা চালানোর সময় বিএনপি’র সাইনবোর্ড ইউজ করবোনা, প্রয়োজনে নির্বাচনে পরাজিত হবো তবুও সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী পরিবার কারো কাছে মাথা নত করবেনা, বেঈমান বিএনপি’র পক্ষ হতে প্রচারনা নয়, আমি ইসলামপ্রিয় তৌহিদী জনতার পক্ষ হতে ভোট চাইবো। বাংলাদেশে এখন স্পষ্টভাবে দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, একটি পক্ষে আছে ইসলাম ও মুসলিম অন্য পক্ষে আছে নাস্তিক-বাম’রা। আওয়ামীলীগ আমাদের মূল শত্রু নয়, আমাদের মূল শত্রু হচ্ছে নাস্তিক-বাম, তারাই পেছন হতে আওয়ামীলীগকে চালাচ্ছে। আগা কেটে লাভ নেই, গোড়ায় আঘাত হানতে হবে।

তিনি বললেন, আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে? করলে করবে, কয়দিন বন্দী করে রাখবে,সর্বোচ্চ ছয়মাস? এরপরতো ছেড়ে দিতে হবে। আমার পিতাতো দুই বছর ধরে কারাগারে আছে, তার তুলনায় এটা কিছুইনা। তিনি হেসে ফেললেন, একদিক হতে বলতে গেলে ভালোই হবে, বাপের সাথে কিছুদিন থেকে আসতে পারবো!

তার কথাগুলো যতই শুনছিলাম আভিভূত হয়ে যাচ্ছিলাম, যোগ্য নেতার যোগ্য পূত্র। সত্যিই তিনি বাঘের বাচ্চা!!

২৫জুলাই২০১৩

Post Comment

আন্দোলনের নামে বিএনপি'র তামাসা।


ঈদের পরে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচীর ডাক দিলেন খালেদা জিয়া!

ঘটনা নতুন কিছুনা, প্রতি ঈদের পূর্বেই তিনি আনন্দের আতিশয্যে এই টাইপের ঘোশনা দিয়ে থাকেন, তাই অবাক হওয়ার কিছুনাই। গত কোরবানীর ঈদের পূর্বেও তিনি একই ঘোশণা দিয়েছিলেন, এমনকি গত রমজানের ঈদের আগেও দিয়েছিলেন সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক। হেফাজতের আন্দোলনের আগেরদিনতো ৪৮ঘন্টার আলটিমেটামই দিয়ে বসেছিলেন। অবশেষে তর্জন গর্জন সার।

বলি, শুধু শুধু নিজেকে হালকা করার কি দরকার? তার চাইতে সরাসরি বললেই পারেন, জামায়াত-শিবিরের ভাইয়েরা আপনারা আন্দোলন করেন, আমরা মজা লই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে স্পষ্ট করে একটা বিবৃতি দেয়ার সাহস নেই, সেই দল নাকি ঈদের পরে আন্দোলন করবে, শুনলেই হাসি পায়।

বিএনপি’র আন্দোলন যেনো একেকটা কমেডি শো, হরতাল ঘোশণা করে কেন্দ্রীয় নেতারা গিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকেন। পুলিশ এসে কার্যালয় ঘিরে রাখে, নেতারা অবরুদ্ধ হয়ে বক্তৃতা দিতে থাকে, আমাদের বের হতে দেয়া হচ্ছেনা, হরতাল গণতান্ত্রিক কর্মসূচী, পুলিশ আমাদের হরতালে বাধা দিচ্ছে। আরে বেক্কলের দল! সারা দেশবাসী যেখানে জানে হরতালের দিন কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ ঘেরাও করে রাখবে, সেখানে তোরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেনো যাস! পিকনিক করতে?

বেক্কল নেতাদের পার্টি (বিএনপি)

২৩জুলাই২০১৩

Post Comment

জোট রাজনীতির সরল অংক



ম্যাডাম আরেকটা একটা পান দিবো? হাত কচলাতে কচলাতে বিনীত ভাবে জানতে চাইলো সাহিদা। ম্যাডামের বিশ্বস্ত সেবিকাদের একজন এই সাহিদা, ইডেন কলেজ থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে এখানে জয়েন করেছে। ম্যাডামের মাথার উকুন বেছে দেয়া থেকে শুরু করে জুতা পরিয়ে দেয়া পর্যন্ত সব কাজেই সাহিদা সহযোগীতা করে। অত্যান্ত দূর্লভ এই চাকরী এমনি এমনি পাওয়া যায়নি, অনেক দৌড়ঝাপ করে, এম্পি-মন্ত্রীদের লবিংয়ের পরে সাহিদার আজকের এই অবস্থান। দুই-দুই বার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান প্রধান বিরোধী দলের নেত্রীর খাস সেবিকার চাকরী অর্জন যেনো তেনো ব্যাপার নয়।

হাসি হাসি মুখে ম্যাডাম পান চিবাচ্ছেন, এমনিতে তিনি পান খাননা, যখন মন ভালো থাকে তখন পান খান, এখন মন ভালো তাই পান খাচ্ছেন। কি বুঝলা সাহিদা? পানের পিক ফেলতে ফেলতে প্রশ্ন করলেন ম্যাডাম জিয়া।
‘পানটা মজা হইছে সেইটাই বুঝলাম’
‘তোমার মাথা বুঝছো, আমি দেশের কথা জিজ্ঞাসা করছি’
‘সাহিদা চুপসে গেলো, দেশের পরিস্থিতিতো খারাপ ম্যাডাম, আপনার দূর্দিন যাচ্ছে’
‘কেনো কেনো, দূর্দীন কেনো?’
‘আপনার প্রধান মিত্র জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়ে দিচ্ছে, এটা আপনার জন্য খারাপ খবর না?’
‘আবার পানের পিক ফেললেন ম্যাডাম জিয়া, শোনো তোমার মাথায় ঘিলু একটু কম, অবশ্য সেটা তোমার সৌভাগ্য। আমি আবার অতিরিক্ত চালাক লোক পছন্দ করিনা, চালাক লোক সুযোগ পেলেই মানুষের ক্ষতি করার ধান্দায় থাকে, বোকারা সেটা করেনা। একারনেই তোমাকে আমি বেশি পছন্দ করি’
‘কি জানি ম্যাডাম, আমার আম্মাও বলে আমার মাথায় ঘিলু একটু কম, তবে কত গ্রাম কম সেটা বলেনাই, তবে আপনি যখন বলছেন সেটা আধাকেজির কম হবে বলে মনে হয়না।’
‘আচ্ছা যে কথা বলছিলাম, জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দিচ্ছে, এতে কারা বেশি খুশি হচ্ছে?’
কারা আবার! আওয়ামীলীগের লোকেরাইতো খুশি হবে, কারণ আওয়ামীলীগ ভালো করেই জানে জামায়াত ছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারবেনা, জামায়াতকে ধ্বংস করতে পারলে বিএনপি এমনিতেই ক্ষমতার সিড়ি থেকে ছিটকে পড়বে’।
‘হুম, তোমার কথায় যুক্তি আছে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি অচল। আচ্ছা ধরো, সরকার জামায়াতের সকল নেতাদের বেকসুর খালাস দিয়ে ফেললো, তখন কি হবে?’
‘তাহলেতো ভালোই হবে, জামায়াত নেতারা মুক্তি পেয়ে যাবে, আপনারা কাধে কাধ মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে পারবেন’।
‘এজন্যইতো বলেছি, তোমার মাথায় ঘিলু একটু কম আছে। তুমি সব কিছু সড়ল দৃস্টিতে দেখো, কিন্তু দুনিয়াতো এত সড়ল নয়, দুনিয়া অনেক জটিল, রাজনীতির হিসাব আরো জটিল।’
‘আমি সত্যিই বোকা, আমার মাথায় এইসব প্যাচ কাজ করেনা, যদি বুঝিয়ে বলেন তবে বুঝবো’।
‘আমি এখন পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে রায়ের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাইনাই, কেনো দেখানিনাই! দেখাইনাই একটি মাত্র কারণে, তাহচ্ছে আমি যদি বক্তব্য রাখি তবে আমাকে একটা পক্ষ নিতে হবে, জামায়াত নেতারা দোষী অথবা নির্দোষ। যেহেতু তারা জোটের শরীক দল সেহেতু তাদের দোষী বলা যাচ্ছেনা, আবার নির্দোষ বললেও সমস্যা’।
‘কি সমস্যা?’
‘জামায়াত আজকে আমাদের জোটে আছে, কালকে আমাদের ত্যাগ করে আওয়ামীলীগের সাথে জোট করবেনা তার নিশ্চয়তা কি! তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর উপায় আছে? এখন যদি তাদের নির্দোষ ঘোষণা করি, তখন আর তাদের যুদ্ধাপরাধী বলে গালি দিতে পারবোনা, সুতরাং এই ইস্যুটা হাতে রেখে দেয়া প্রয়োজন’।
কথা বলতে বলতে ম্যাডাম জিয়া হাপিয়ে উঠলেন, বাতের ব্যাথাটা ইদানিং খুব ভোগাচ্ছে, পায়ের সমস্যাটাও সামাল দেয়া যাচ্ছেনা। নাহ! আগামী সপ্তাহেই একবার সিঙ্গাপুর না গেলেই নয়। তিনি হিসিয়ে উঠলেন, সাহিদা তেল গরম করে আনো পায়ে মালিশ করতে হবে।
অনুগত ভৃত্যের মতো সাহিদা ছুটে গেলো, ম্যাডামের নির্দেশ শিরোধার্য।

সাহিদা তেল মালিশ করছে, ম্যাডাম কথা বলে যাচ্ছেন, আজকে তাকে কথার বাতিকে পেয়েছে। এমনিতে ম্যাডাম নিরব, তিনি মেপে মেপে কথা বলেন, প্রয়োজনের বাহিরে একটা অক্ষরো তার মুখ থেকে বের হবেনা। কিন্তু একান্ত ঘরোয়া পরিবেশে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা মানুষ, যখন কথা শুরু করেন তখন তাকে থামায় সে সাধ্য কার!
‘আচ্ছা ম্যাডাম আজকে আপনাকে বেশ খুশি খুশি লাগছে, সকাল থেকে একটার পরে আরেকটা পান চিবিয়েই যাচ্ছেন, কারণ জানতে পারি?’
‘আছে আছে খুশির কারণ অবশ্যই আছে, এমনিতেতো আর পান চিবোচ্ছিনা! সরকার গতকাল গোলাম আযম সাহেবকে ৯০বছরের কারাদন্ড দিয়েছে, আজ দিলো মুজাহিদ সাহেবকে মৃত্যুদন্ড, কিছুদিন পরে নিজামী সাহেবের রায় দিবে। সরকার যত রায় দিবে আমার আনন্দের সীমা তত বৃদ্ধি পাবে’।
‘কি বলছেন ম্যাডাম! জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিলেতো আপনার বিপদ, আপনার রাজনৈতিক মিত্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া মানে আপনার ক্ষতি!’
‘আমিতো তোমার চোখে দিখিনা, আমি দেখি রাজনৈতিক দৃস্টিকোণ থেকে। শোনো সরকার জামায়াতের সাথে যত বেশি সংঘর্ষে জড়াবে, জামায়াত তত বেশি বিএনপির দিকে ঝুকে পড়বে, সরকার চাচ্ছে জামায়াত বাধ্য হয়ে আওয়ামীলীগের দিকে ঝুকে পড়ুক, কিন্তু জামায়াত কখনো ধর্মবিদ্বেষী আওয়ামীদের সাথে জোট করবেনা, এই সুযোগটাই বিএনপি গ্রহণ করবে’।
‘ধরেন জামায়াত তাদের নেতাদের ফাঁসির হাত হতে বাচাতে আওয়ামীদের সাথে আপোষ করলো, তখন কি হবে? বিএনপি’তো আর ক্ষমতায় আসতে পারবেনা’।
‘তুমি জামায়াতকে চিনতে ভুল করেছো, জামায়াত ভাঙবে কিন্তু মচকাবেনা। জামায়াতের কর্মীরাই জামায়াতকে আওয়ামীলীগের সাথে আপোষে যেতে দিবেনা, বিগত ৫টি বছর ধরে বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে ছিলোনা, সরকারের সাথে এককভাবে জামায়াত শিবিরই লড়াই চালিয়েছে, এর ফলে যেটা হয়েছে সবচাইতে বেশি নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। বিএনপি’র লোকজন অন্তত নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারছে, কিন্তু সারাদেশের কোথাও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারছেনা, তাদের এই ক্ষোভ থেকে যে প্রতিশোধস্পৃহা জন্ম হয়েছে, সে কারণেই তারা আওয়ামীলীগের সাথে আপোষ করবেনা’।
‘তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন জামায়াত নেতাদের ফাঁসি হয়ে যাবে আর জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সেটা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে?’
একগ্লাস পানি দাও, একটু কুলি করে নেই, সাহিদা পানি এগিয়ে দিলো। গড়াগড়া করে কুলি করলেন ম্যাডাম জিয়া, দাত লাল হয়ে গেছে, ভালো করে ব্রাশ করতে হবে। এই দাত নিয়ে দলীয় প্রগ্রামে গেলে ইজ্জত থাকবেনা।
‘কি যেনো বলছিলে? ও হ্যা জামায়াত নেতাদের ফাঁসি! জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিলেও বিএনপি’র লাভ না দিলেও বিএনপি’র লাভ’।
‘কিভাবে?’
‘ধরো জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেয়া হলো, ফলাফল কি হবে? জামায়াত চিরতরে আওয়ামিদের দুশমন হয়ে যাবে, এর ফলে জামায়াতের সামনে বিএনপি’র বাইরে আর কোনো মিত্র থাকবেনা। আবার ধরো জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় নির্বাচনের পূর্বে কার্যকর করা হলোনা, সেক্ষেত্রেও নেতাদের ফাঁসির দড়ি হতে রক্ষা করতে বিএনপি’র সাথে যেকোনো শর্তে জোট টিকিয়ে রাখতে জামায়াত বাধ্য হবে’।
‘আর যদি নির্বাচনের পূর্বে জামায়াত নেতারা মুক্তি পেয়ে যায়?’
‘সেক্ষেত্রে বিএনপি একটু চিপায় পড়ে যাবে, জামায়াত বিপুল জনপ্রিয় একটা দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, জোটবদ্ধ নির্বাচনে আসন বন্টনের ক্ষেত্রে জামায়াতের দাবীকে আমলে নিতে হবে। আসন বন্টন হবে জামায়াতের ইচ্ছায়, সেটা বিএনপি’র জন্য ভালো হবেনা’।
‘কিন্তু ম্যাডাম, ফাক কিন্তু একটা রয়েই যাচ্ছে’
‘কেমন?’
‘ধরেন জামায়াত তাদের নেতাদের ফাঁসির দড়ি হতে রক্ষা করতে আওয়ামীলীগের সাথে জোট বদ্ধ নির্বাচনে গেলোনা, কিন্তু তারা একক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো। সেক্ষেত্রেতো নির্বাচনে বিএনপি’র ভড়াডুবি হবে! একদিকে একক ভাবে বিএনপি’র ভোট আওয়ামীলীগের একক ভোটের চাইতে কম, অন্যদিকে আওয়ামীলীগের সাথে জাতীয় পার্টি আছে। বিএনপি’র সাথে জামায়াত না থাকলেতো বিএনপি মাঠে মারা যাবে। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতো রয়েই গেলো, জামায়াত যদি আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে রাজী হয়ে যায়, তখন বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা লাভ করবে। বিএনপি’র সেই শক্তি নেই যে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায় সরকার প্রতিষ্ঠা করবে কিংবা আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন বাঞ্চাল করবে। এরফলে বিএনপি রাজনীতির মাঠ হতে বিলীন হয়ে যাবে, একেবার মুসলিম লীগের পরিণতি! জামায়াত পরিণত হবে প্রধান বিরোধী দলে’।
‘ধেই ধেই করে উঠলো ম্যাডাম জিয়া, তোমার মাথায়তো দেখছি অনেক বুদ্ধি! আমিতো তোমাকে গাধা মনে করেছিলাম! যাও তোমার বেতন ২হাজার টাকা বাড়িয়ে দিলাম। তোমার ছোট ভাইয়ের কথা বলেছিলেনা, কি নাম যেনো ওর? আচ্ছা ওর চাকরিটাও হয়ে যাবে, আমি কম্পানীর ম্যানেজারকে বলে দিবো’।

বিউটিশিয়ান এসেছে, ম্যাডাম তার রুপচর্চার রুমে চলে গেলেন, একঘন্টার আগে বের হবেননা এটা নিশ্চিত! কোথাও বের হবার পূর্বে মেকাপ করতে ম্যাডাম ভুল করেননা।
সাহিদাও সুযোগটা কাজে লাগালো, চট করে লুকিয়ে রাখা গোপন মোবাইলটা বের করলো, শেখ হাসিনাকে ফোন দিতে হবে। তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে, কর্তব্য কাজে সাহিদা কখনো অবহেলা করেনা, স্পেশাল ব্রাঞ্চে সাহিদার একটা সুনাম আছে!


১৭জুলাই২০১৩

Post Comment

পাগলা বিবির গ্রাম শাসন।


পাগলা বিবি আজ বেশ ফুড়ফুড়ে মেজাজে আছেন, এমনিতেও তিনি সবসময় ফুড়ফুড়ে মেজাজে থাকেন, তবে আজ কারণটা একটু ভিন্ন। পশ্চিম পাড়ার সাঈদ আলী, গোলাম মাওলা, কাদের বেপারী, কামারুজ্জামান আর মুজাহিদ উদ্দিনরে আজ পেচগিতে ফেলতে পারছেন, নিজাম উদ্দিনেরও রেহাই নাই। 

আরাম কেদারায় শরীরটা এলিয়ে দিলেন পাগলা বিবি, পাশের টেবিলের উপর রাখা বোতল থেকে দুই চামচ মধু খেয়ে নিলেন, এমনিতে সকাল দুপুর সন্ধ্যা নিয়ম করে ৬চামচ খান, আজকে বিশেষ দিন আজকে ওসব নিয়ম কানুনের ধার না ধরলেও চলবে, এখন ঘড়িতে ১১টা বাজে বোতল প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, মেজাজ ফুরফুরে হওয়ার এটাও একটা কারণ। বোতলের গায়ে খাঁটি মধুর স্টিকার লাগানো থাকলেও ভেতরে ফেন্সিডিল আছে।

হন্তদন্ত হয়ে হাসান রুমে প্রবেশ করলো, ম্যাডাম ডেকেছেন? হ্যা ডেকেছি! সকাল থেকে তোমাকে দেখছিনা ব্যাপার কি?
ম্যাডাম আনন্দ করছি, আপনার শত্রুর বিনাশের আনন্দ! হাসানের কণ্ঠ ভক্তিতে গদগদ।
পাগলা বিবি সন্দেহের দৃস্টিতে তাকালেন, অতিভক্তি চোরের লক্ষণ। তিনি কাউকে বিশ্বাস করতে পারেননা, এমনকি তার লাঠিয়াল বাহিনীকেওনা। বড় বজ্জাতের হাড়ি এই লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দারগুলো, সুযোগ পেলেই মাথায় চড়ে বসে, মাথায় বসে ঘাড় মটকে দেয়। মাঝে মধ্যে মনে হয়, এগুলোকে বিদায় করে নানাবাড়ি থেকে লাঠিয়াল নিয়ে আসেন, কিন্তু গ্রামের লোকজন সেটা পছন্দ করবেনা, পাবলিক সেন্টিমেন্টের দিকেওতো লক্ষ রাখতে হবে।
কিভাবে আনন্দ করছো শুনি? পাগলা বিবির কন্ঠে তাচ্ছিল্য ঝড়ে পড়লো।
ম্যাডাম, ভোর বেলাতেই আপনারা নানা বাড়ি থেকে পাঠানো মিস্টিগুলো সকল কর্মচারীদের মাঝে বিতরণ করেছি, বিশাল বিশাল সাউন্ড বক্সে আপনার নানার অঞ্চলের গান চলছে। চারিদিকে উৎসব উৎসব পরিবেশ।

মিথ্যা কথাগুলো বলতে হাসান সাহেবের গলা একটুও কাপলোনা, সেক্রেটারীদের গলা কাপতে নেই। গুছিয়ে সত্যের মতো করে মিথ্যা বলা একটা আর্ট, এই আর্ট রপ্ত করতে না পারলে চাকরী থাকবেনা। ম্যাডামের মুখের ওপরতো আর বলা যায়না, কর্মচারিরা সবাই বিমর্ষ ভাবে বসে আছে, তাদের প্রিয় হুজুর সাঈদ আলীকে হত্যার হুকুম দেয়া হয়েছে, এটা তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা, আহ কত ভালো মানুষটা! লাঠিয়াল বাহিনীও ক্ষোভে ফুসছে, কিন্তু কিছু করার নাই, পাগলা বিবির নানারা খুব শক্তিশালী, কিছু করতে চাইলে নানা বাড়ি থেকে লাঠিয়াল বাহিনী পাঠিয়ে দিবে।

গ্রামের মানুষের খবর কি হাসান, তারা আমার সিদ্ধান্তকে কিভাবে নিয়েছে? ফেন্সিডিলের নেশায় বুদ হয়ে চোখ বন্ধ করেই প্রশ্ন করছেন পাগলা বিবি।
তারা খুব আন্দন্দিত ম্যাডাম, দলে দলে আপনাকে শুভেচ্ছা পাঠিয়েছে এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য। গ্রামবাসী আনন্দ মিছিল করছে, মিস্টি বিতরণ করছে। অবলীলায় হাসি হাসি মুখে মিথ্যাগুলো বলে ফেললো হাসান।

মিথ্যা বলছো কেনো হাসান? আমার কাচারী বাড়িতে যেসব ফকির-মিসকিনদেরকে তিনবেলা খাওয়া সাপ্লাই দিচ্ছ শুধুমাত্র তারাই খাবারের গুণগাণ গাচ্ছে। অন্যদিকে গ্রামের মানুষ আমার বিরুদ্ধে লাঠি মিছিল করছে, পাগলা বিবির চামড়া তুলে নিতে চাইছে, সত্যি কিনা?
জ্বি ম্যাডাম, আপনি ঠিকই শুনেছেন! মাথা নিচু করে জবাব দিলো হাসান। গ্রাম পুলিশ চেস্টা করছে আন্দোলন থামাতে, যারা উঁচু স্বরে মিছিল করছে তাদের গলাটিপে দিতে নির্দেশ দিয়েছে আপনার সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, আপনি এ নিয়ে চিন্তা করবেননা।
ঠিক আছে তুমি যাও, আমার নানাবাড়ি থেকে কেউ এলে পাঠিয়ে দিও, আর যাওয়ার আগে আরেকটা বোতল দিয়ে যাও।

হাসান বেরিয়ে যায়। ভোরবেলা সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির লোকজন তার ছোট ভাইকে গলাটিপে হত্যা করেছে। মাটিতে গড়াগড়ি করে বিলাপ করছেন হাসানের মা, পাগলা বিবিরে আল্লাহ ধবংশ করুক, ওর উপর আল্লাহর গজব নাজিল হোক। হাসানের চোখ ভিজে যায় টিস্যু পেপারে চোখ মুছে, সেক্রেটারীদের চোখে পানি থাকতে নাই, সেক্রেটারীরা কখনো কাঁদেনা।

১৭জুলাই২০১৩

Post Comment

জামায়াতের গুরুত্ব জামায়াত নিজেই উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেনা।


বাংলাদেশ ননসেন্স পার্টি (বিএনপি) এখন পর্যন্ত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যাপক গোলাম আযমের রায়ের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান করেনাই। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া এই ননসেন্স পার্টির সাথে জোট টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা কি জামায়াতের আছে?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে জামায়াতের গুরুত্ব জামায়াত নিজেই উপলব্ধি করতে পারেনাই। আজ যদি জামায়াত আওয়ামীলিগকে ‘হ্যা’ বলে দেয়, তবে নিশ্চিত ভাবে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া আওয়ামীলীগের কাছ থেকে জামায়াত ১০০টা আসন বাগিয়ে নিতে সক্ষম হবে। জাতীয় নেতৃবৃন্দ পেয়ে যাবে বেকসুর খালাস।

বিগত ৫টি বছর সরকার বিরোধী রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রাম জামায়াত এককভাবেই চালিয়ে গিয়েছে। আন্দোলন সংগ্রামে রক্তদিবে জামায়াত আর তার ফলভোগ করবে ননসেন্স পার্টি সেটা হতে দেয়া যাবেনা। জামায়াত নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ রইলো, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসন বন্টনের ক্ষেত্রে জামায়াতের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া না হলে এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। এই ননসেন্স পার্টিকে দেখিয়ে দিতে হবে, জামায়াতের অনুগ্রহ ছাড়া ক্ষমতার স্বাদ উপভোগ করার চিন্তা করা আর ছেড়া কাথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা একই কথা।

১৬জুলাই২০১৩

Post Comment

অধ্যাপক গোলাম আযমের সাজা একহাজার বছর দেন।


সেদিন এক সমাবেশে নারায়নগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমান বলছিলেন, আমি ডিসি সাহেবকে ফোন করলাম, জেলের তালা খুলছি আসামী নিয়ে আসছি, আপনার কিছু করার থাকলে কইরেন। ডিসি অনুরোধ করলো, শামীম ভাই অন্তত জামীন নিয়ে যান, আমি বলছি জামিন লেইক্ষা বাসায় পাঠাইয়া দেন।

সেটা ছিলো শামীম ওসমানের বক্তব্য। এবার শামীম রেজার বক্তব্য শুনাচ্ছি, ঘরোয়া বৈঠকে বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক শামীম রেজা বক্তব্য রাখছিলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের সাজা নব্বই বছর নয় একহাজার বছর হলেও সমস্যা নেই। সরকার পরিবর্তন হবে, আমরা ঢাকায় যাবো, গোলাম আযম সাহেবকে প্রিজন সেল হতে বাসায় নিয়ে আসবো। ম্যাডাম জিয়া ফোন করবেন, অন্তত জামিনটা নিয়ে যান! আমরা তখন বলবো, জামিন লেইক্ষা বাসায় পাঠাইয়া দিয়েন!


১৫জুলাই২০১৩

Post Comment

তারুণ্যের সাহসী ঠিকানা ইসলামী ছাত্রশিবির


সন্ধ্যা বেলায় গিয়েছিলাম একটি রাজনৈতিক যুব সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের বাসায়। ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনা হচ্ছিলো, হঠাৎ করেই একটি ফুটফুটে শিশু ড্রইং রুমে ছুটে এলো, কাছে ডাকতেই লাজুক লাজুক ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইলো, কিছুতেই আসবেনা।
ওমা তোমার প্যান্টটাতো ওনেক সুন্দর! দেখি দেখি! এবার কাজ হলো, একছুটে চলে এলো।
কে কিনে দিয়েছে, তোমার আব্বু?
না, আম্মু।
সুন্দর প্যান্ট, আমাকে দিবা?
এবার একটু সাহস পেলো, হাত মুষ্ঠি করে মিছিলের ভঙ্গিতে উপরের দিকে ঘুশি পাকিয়ে আধো আধো কন্ঠে স্লোগান ধরলো, “থিবির হরতাল, থিবির হরতাল”।
কিছুদিন আগের একটা দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠলো, রাস্তা ঘাটে যেখানেই যাই, ছোট ছোট বাচ্চারা মায়ের কোলে বসে স্লোগান দিচ্ছে “কাদের মোল্লা, তুই লাজাকার, তুই লাজাকার”। মাশাআল্লাহ, পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে, সরকারী সহায়তায় বিরাণী দিয়ে তৈরী কৃত্রিম আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী ফল বয়ে আনতে সক্ষম হয়নাই।

একটা সময় ছিলো বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জামায়াত-শিবির নামে দলের সাথে পরিচিত ছিলোনা, কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের মধ্যেই আমার জানামতে ৪জন এম্পি আছেন যারা ছাত্রজীবনে শিবিরের কর্মী ছিলেন, বিএনপির মধ্যেও বেশ কয়েকজন সাবেক এম্পি আছেন যারা একসময় শিবিরের কর্মী ছিলেন। নানাবিধ কারণে তারা সংগঠন থেকে ছিটকে পড়েছেন। আমি আশাবাদী নই তারা এখন দলবল নিয়ে জামায়াতে যোগ দিবে, তবে এটুকু বিশ্বাস আছে অন্তত পক্ষে, নূরুল ইসলাম নাহিদের মতো ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষাব্যবস্থা তারা তৈরী করবেনা, মতিয়া চৌধুরী কিংবা লতিফ সিদ্দিকীর মতো সংবিধান হতে ধর্মের কালো ছায়া মুছে দিতে চাইবেনা।

একটি গতিশীল ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবির যেভাবে তরুণ ছাত্রসমাজের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরী করেছে তাতে এটাই প্রতীয়মান হয়, একটা সময় আসবে যখন বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলে এমন কোনো সংসদ সদস্য থাকবেনা যে জীবনে কখনো শিবিরের দাওয়াত লাভ করেনাই।

স্বপ্ন দেখি, পরিবর্তিত পরিস্থিতীতে মায়ের কোলে শিশু আধো আধো কন্ঠে “থিবির হরতাল, থিবির হরতাল” স্লোগানের পরিবর্তে “বিপ্লব বিপ্লব ইসলামী বিপ্লব, শিবিরের বিপ্লব ইসলামী বিপ্লব” স্লোগান দিচ্ছে।

১২জুলাই২০১৩

Post Comment

কালের বিবর্তনে বিসিএস


২০২৫সালের প্রাইমারী স্কুলের প্রশ্ন

প্রশ্নঃ বিসিএস শব্দটির আভিধানিক অর্থ লিখ।

উত্তরঃ বাংলাদেশ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী পূণর্বাসন কেন্দ্র

(খবরঃ বিসিএসে কোটার পরিমান ৫৫%)



১১জুলাই২০১৩

Post Comment

বিসিএসে কোটা, অদক্ষ প্রশাসন।


পাকিস্থানীদের কাছ থেকে দেশ স্বাধীন হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতির গোলামী করার জন্য? অগা-মগা দিয়ে প্রশাসন ভারী করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন?

দেশটাকে জাহান্নামের চৌরাস্তায় পৌচ্ছে দিচ্ছে ওইসব বলদ মার্কা প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অফিসের পিয়নের চাকরী করার মতো মেধা নেই অথচ কোটা ব্যবস্থার সুযোগে সচিবের পদ বাগিয়ে নিয়েছে এমন নজীর আছে ভুরি ভুরি। এদের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কামনা করা আর রিক্সায় করে চান্দের দেশ ভ্রমনের স্বপ্ন দেখা একই কথা।

১১জুলাই২০১৩

Post Comment

নায়ীকা ফখরুল এবং ভিলেন হাসিনা।


নায়ীকাঃ ছেড়ে দে শয়তান, তুই দেহ পাবি কিন্তু মন পাবিনা।
ভিলেনঃ হা হা হা আমার ওইটা হলেই চলবে।

মির্জা ফখরুলঃ গুম-হত্য করে বিএনপির রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না।
হাসিনাঃ হে হে হে, হিজড়া বানাইতে পারলেই চলবে ।

০৯জুলাই২০১৩

Post Comment

সরকারের মেয়াদ এক বছর করা হোক।



বিভিন্ন মিডিয়াতে খবর প্রাকাশিত হচ্ছে, জনরোষের হাত হতে রক্ষা পেতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পাসপোর্ট-ভিসা রেডি করছে। প্রতি ৫বছর পর পর বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে আর এভাবেই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অপকর্মের শাস্তি হতে পিঠ বাঁচাতে বিদেশ পাড়ি দেয়।

একবার আওয়ামীলীগ পালায় তো আরেকবার বিএনপি, এভাবেই বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি দল দুটি সক্রিয় কর্মী সংকটে পড়ে। অন্যদিকে জামায়াত এবং শিবির কিন্তু উচ্চশিক্ষা এবং ভালো মানের চাকরীর অফার না পেলে সহজে বিদেশ পারি দেয়না, রাজনৈতিক কারণেতো কখনোই নয়।
ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতি ৫বছর পরপর ক্ষমতার পালাবদলে বাংলাদেশ কিছু কুলাঙ্গার সন্ত্রাসীর বোঝা হতে মুক্তি পায়। অন্যদিকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

আমার প্রস্তাব হলো বাংলাদেশে সরকারের মেয়াদ একবছর করা হোক। তাহলে প্রতিবছরই আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা দেশ ছেড়ে পালাবে। প্রতিবছর যদি এভাবে আওয়ামী এবং বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা দেশ ছেড়ে পালায় তাহলে একদিকে যেমন বাংলাদেশের রেমিটেন্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে একটা সময় দেখা যাবে বাংলাদেশে জামায়াত এবং শিবির ছাড়া অন্যকোনো দলের কর্মী খুজে পাওয়া যাবেনা।

সবশেষে দাবী একটাই, গণতান্ত্রিক সরকারের মেয়াদ একবছর করা হোক।

৮জুলাই২০১৩

Post Comment

নির্বাচনী গল্পঃ নৌকা এবার ডুববেই


সময়ঃ২০১৪সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে।
স্থানঃ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা।

বাবুল দৌড়াচ্ছে, তারপাশে দৌড়াচ্ছে হাবুল।

কিরে দোস্ত দোড়াইতাসোস ক্যান? হাবুল অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে।

শেখ হাসিনা আমার দিকে কুনজর দিছে! বাবুল হাপাতে হাপাতে জবাব দেয়।

কি কস দোস্ত!? অবাক হাবুল প্রশ্ন করে।

হাচা কইছি দোস্ত, তুই আমার মানসম্মান বাঁচা! কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় বাবুলের কণ্ঠ।
আরে কি হইছে, খুইল্লা কবিতো!

দোস্ত আইজকা হাসিনা আমারে তার বাসায় খবর দিছিলো। সেখান থাইকা পালাইয়া আইছি।

পালাইছোস ক্যান! কি হইছিলো? নেত্রী নাকি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে?

আমারে কয় নৌকা মার্কা নিয়া নির্বাচন করতে হইবো, লাগলে টাকাও দিবো। আমার মানইজ্জত সব শ্যাষ হইয়া যাইবোরে দোস্ত! হাউ মাউ করে কেদে ওঠে বাবুল।

কান্দিস না দোস্ত! শান্তনার স্বরে জবাব দেয় হাবুল। তা তুই কি কইছস?

আমি পালাইয়া আইছি, তয় সিরিয়ালে আমার পরেই দেখলাম তোর নাম আছে।

হাবুল এবার হার্টফেল করে।



৬জুলাই২০১৩

Post Comment

হিজবুতীদের স্বরুপ


facebook link

অনেক ভাই আমাকে প্রশ্ন করছেন, অভিযোগ করছেন। হঠাৎ করেই আমি কেনো ইসলামপন্থীদের মাঝে ফাটল সৃস্টি করছি, ঐক্যই যেখানে কাম্য ছিলো।
জাতির এই ক্রান্তিকালে ইসলামপন্থীদের এই দূর্যোগে যারা ইখওয়ানের পক্ষে না দাঁড়িয়ে, মুরসীর দোষ চর্চায় লিপ্ত রয়েছে, গণতন্ত্র নাকি খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করা হবে এই নিয়ে তাত্ত্বিক বুলি কপচাচ্ছে। আমার মতে তারা মুনাফিক বৈ অন্য কিছু নয়।

ইসলামের লেবাস ধারণ করে খিলাফত, কুফফার, নুসরা নুসরা বলে চেঁচামেচি করলেই ইসলামপন্থী প্রমান হয়না। আমদের ভুলে গেলে চলবেনা, আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের নেতৃত্বে মুনাফিকরা আলাদা মসজিদ প্রতিষ্ঠিত করেছিলো, রাসূল (সঃ) এর নির্দেশে সেই মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়।

দুনিয়ার সকল মুসলিম যেখানে একমত হয়ে মিশরের ইসলামপন্থিদের বিজয় কামনা করছে, মুরসীর জন্য চোখের পানি ফেলছে, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করছে হে পরওয়ারদিগার আমাদের ভাইদের কবুল করো, শহীদ ভাইদের পরিবারকে ধৈর্যধারণ করার তৌফিক দান করো। ঠিক সেই মূহুর্তেই একদল মুনাফিক, জনগণের সমর্থনে নির্বাচিত মিশরের ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মুরসির পতনে উল্লাস প্রকাশ করে ফেসবুকে স্টাটাস দিচ্ছে, “আগেই বলেছিলাম ওইসব গণতন্ত্র-ফন্ত্র দিয়ে লাভ হবেনা, মুরসি মুসলমানদের সাথে গাদ্দারী করেছে তার শ্বাস্তি সে পাচ্ছে”। তাদের কথায় মনে হচ্ছে, ইসলামবিদ্বেষী, ইহুদীদের দালাল, সেনাবাহিনী ক্ষমতায় এসে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করে দিবে।

গোবরের নাম যদি গোলাপ রাখা হয় তবুও তার দূর্গন্ধ দূর হবেনা, তেমনি মুনাফিকরা সারাদিন খিলাফত খিলাফত বলে চেঁচামেচি করলেও খিলাফত আসবেনা, টাইমমতো তাদের মুনাফিকি দূর্গন্ধ ঠিকই বের হয়ে আসবে। মুনাফিকদের সাথে কোনো আপোষ নেই।


খিলাফতপন্থী দাবীদার হিজবুতীদের ফতোয়া, গণতান্ত্রীক উপায়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া, হামাস, হিজবুল্লাহ, আন নাহদা, জামায়াত, ইখওয়ান, তুরস্কের একেপি সবাই কাফের







৬এপ্রিল২০১৩

Post Comment

হিজবুতীদের মুখোশ খুলে গেলো মুরসী ইস্যুতে।

facebook link

ইখওয়ানুল মুসলিমুন মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সবচাইতে প্রভাবশালী সংগঠন। বিগত অর্ধশতাব্দী ধরে তারা কায়েমী শক্তির শত জুলুম নির্যাতন সহ্য করে জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে মুহাম্মদ মুরসী, অর্ধশতাব্দী ব্যাপী এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে দলের প্রতিষ্ঠাতা হাসানুল বান্না সহ প্রথম সারীর প্রায় সকল নেতা। ৪০হাজার শহীদের সংগঠন এই মুসলিম ব্রাদারহুড

রাষ্ট্রক্ষমতায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেও ইহুদী খৃস্টান এবং নাস্তিকদের সমর্থনপুস্ট সেনাবাহিনীর কারণে ইখওয়ান তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিলোনা। এমন অবস্থায় দেশের সকল ইসলামদ্রোহী শক্তি ইখওয়ানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়লো, শুরু হয়ে গেলো সত্য মিথ্যার চিরন্তন সংঘাত, ইসলাম বিরোধী সেনাবাহিনী বাতিল শক্তির পক্ষনিলো। দেশের সকল চরিত্রহীন মানুষ মুরসীর পতনের আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়লো, যার প্রমান আমরা দেখতে পাই তাহরীর স্কয়ারের মুরসী বিরোধী আন্দোলনে যোগদিতে এসে নিজেদের লোকের হাতে ধর্ষিত হয়েছে ৯৫জন নারী, এমনকি বাদ পড়েনি মহিলা সাংবাদিকও।

আল্লাহ কখনো হক ও বাতিলকে একসাথে রাখেননা, একটি সময় পৃথক করে দেন। মিশর ইস্যুতে আমরা দেখতে পাই, খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীদার হিজবুত তাহরীরের মুখোশ খসে পড়েছে, নির্লজ্বভাবে তারা মিশরের বাতিলপন্থী সেনাবাহিনী এবং নাস্তিকদের সাপোর্ট করছে। উল্লাস প্রকাশ করে মুরসির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্টাটাস দিচ্ছে।

হিজবুতিদের চিনতে কি বাকি আছে, তারা কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে? হিজবুতিদের যদি জিজ্ঞাসা করেন তোমাদের সংগঠনের অর্থের উৎস কি? তোমরা বিলাসবহুল ভাবে প্রগ্রাম আয়োজন করো, এত টাকা কোথায় পাও? এর কোনো সন্তোষজনক উত্তর তারা দিতে পারবেনা। ঘুরিয়ে পেচিয়ে আপনাকে গালি দিবে এই প্রশ্ন করার কারণে।

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি হিজবুত তাহরীর সংগঠনটি ইহুদিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য ইসলামের পোষাক ধারণ করেছে!?

৩জুলাই২০১৩

Post Comment

প্রেমের রাজা পরকীয়া

facebook link

গতকাল চট্টগ্রামের আখতারুজ্জামান সেন্টারে গিয়েছিলাম এক বন্ধুকে নিয়ে। ভুল তথ্যের কারণে ৪র্থ তলা হতে ৭ম তলা পর্যন্ত বেশ কয়েকবার উঠানামা করতে হয়েছিলো, বহুতল ভবন হওয়ায় উঠানামায় সবাই লিফটই ব্যবহার করে তবে লিফটের জন্য ওয়েট না করে আমরা সিড়ি ব্যবহার করছিলাম।
বেশ নির্জন সিড়িপথে বোরখা পরিহিতা এক মহিলা দেখলাম বাচ্চাকে কোলে নিয়ে চ্যাংড়া বয়সী একটা ছেলের সাথে দাড়িয়ে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলছে, আমাদের দেখতেই তারা স্বাভাবীক হয়ে গেলো, স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছিলো তারা পরকীয়াতে লিপ্ত। এই দৃশ্য এখন বাংলাদেশের শহর গুলোর একটা স্বাভাবিক বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।

ভেবে অবাক হই, এই মহিলা এবং তার সন্তানের জন্য ঠিক এই মূহুর্তেই হয়তো সূদুর প্রবাসে তপ্ত মরুর বুকে অথবা বাংলাদেশেই হাড় ভাঙ্গা খাটুনি করছে কোন এক পুরুষ। চোখে তার স্বপ্ন একটি সুখী পরিবার, স্বচ্ছল পরিবার, স্ত্রী সন্তানের সুখের জন্যই তার জীবনের সকল প্রচেস্টা নিয়োজিত। দিন শেষে ক্লান্ত দেহে যখন ঘরে ফিরে আসেন তখন প্রত্যাশা করেন একটি শান্তির নীড়, প্রেয়সীর মুখ দেখে ভুলে যেতে চান জীবনের সকল দুঃখ কষ্ট এবং যন্ত্রনা। 
কার বিশ্বাস নিয়ে আপনি ছিনিমিনি খেলছেন !? প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি, কি জবাব দিবেন আল্লাহর কাছে? একটা মানুষের বিশ্বাস এভাবেই বিকিয়ে দিচ্ছেন স্বস্তা দামে? দোয়া করে যাই, হে আল্লাহ যে নারীরা স্বামীর বিশ্বাস নষ্ট করে লিপ্ত হয় পরকীয়াতে তাদের জন্য নির্ধারণ করে দাও জাহান্নামের নিকৃষ্টতম শ্বাস্তি, কঠিনতম শ্বাস্তি।

নিজের বেকারত্ব এবং অখন্ড অবসরের সুযোগে আরেকজনের বউকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন? ভাবছেন আপনি খুব বাহাদুর! নারীরা আপনার কাছে ধরাশায়ী? একটু অপেক্ষা করুন, জীবন এভাবে কাটবেনা। সেদিন বেশি দূরে নয়, আপনার ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে অন্য কোনো পুরুষ ঠিক একই ভাবে সুযোগ গ্রহণ করবে আপনার স্ত্রীর সাথে। দুনিয়াতেই প্রস্তুত হন জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ উপলব্ধি করার জন্য, আপনার সংসারই পরিণত হবে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে।

হে আল্লাহ জাহান্নামীদের হতে আমাদের পৃথক করে দাও, শয়তানের ধোঁকা থেকে আমাদের হেফাজত করো।



৩জুলাই২০১৩

Post Comment

প্রেম কইরাছে ইউসুফ নবী




দোস্ত আসার পথে তোর জানটুর সাথে দেখা হইছে।
তাই নাকি! কোথায়? টেবেলির উপর পা দুলিয়ে বসা থেকে প্রায় দাঁড়িয়ে গেলো সোহান।
ওর বাড়ির সামনে, আন্টির সাথে কোথায় যেনো যাচ্ছিলো। যা সুন্দর লাগছিলোনা দোস্ত, ইস! বলার মতোনা। রাসেলের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে ইশারা করলো ফাহিম।
দেখ ভালো হচ্ছেনা কিন্তু, আমার গার্লফ্রেন্ড সুন্দর না বান্দর তাতে তোদের কি? তোরা এভাবে তাকাবি কেনো!
 
হেহে করে হেসে উঠলো রাসেল, এই সেরেছে! আচ্ছা ফাহিম কি রঙের কাপড় পড়েছিলো তানিয়া? ওকে নীল ড্রেসটাতে যা লাগেনা, হেব্বি!
 
সোহান সার্টের হাতা গুটিয়ে ঘুসি পাকিয়ে রাসেলের দিকে তেড়ে আসলো, দাড়া ফাজলামি হচ্ছে না!?
আরে দোস্ত চ্যাতস ক্যান! আমার জিনিস মানে তোর জিনিস, তোর জিনিস মানে আমার জিনিস। তোর বউ মানে আমার বউ, আমার বউ মানে তোর ভাবী। বত্রিশটা দাত বেড় করে হেসে ওঠে ফাহিম।
শোন, পরস্ত্রীর দিকে এভাবে তাকাতে নেই গুনাহ হয়, দার্শনীক সুলভ একটা ভাব নেয় সোহান। বন্ধুর বউয়ের দিকে মায়ের দৃস্টিতে তাকাবী।
তা মিস্টার ভাবের পাগল, এখন পর্যন্ততো অফারই করতে পারলানা। তানিয়া তোমার বউ হইলো কবে থেইকা। আগে বিয়া করো তারপরে দেখা যাবে, মুখ ভেঙচিয়ে জবাব দেয় ফাহিম।
ওইযে আমাদের হীরো আসতেছে, জানালা দিয়ে আঙুলের ইশারা করে রাসেদকে দেখিয়ে দিলো রাসেল।

চরম বিরক্তি নিয়ে কাঠফাটা রোদের মধ্য দিয়েই কোচিংয়ের মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করলো রাসেদ। ক্লাস রুম যেনো এখন কনসার্ট হলে পরিণত হয়েছে।
বেশুরো গলায় গান ধরেছে রাসেল, জিহবার তালুতে অদ্ভুত ভাবে যন্ত্রসংগীত সৃস্টি করেছে ফাহিম, ডিশটিং ডিশটিং অন্যদিকে টেবিলকেই তবলা মনে করে সমানে চর থাপ্পর দিয়ে যাচ্ছে সোহান।
 
প্রেম কইরাছে ইউসুফ নবী.........
তার প্রেমে জুলেখা বিবি গো............
ও সে প্রেমের দায়ে জেল খাটিল
তবু সে প্রেম ছাড়লো না দরদী।
প্রেমে মরা জলে ডোবেনা.........
ও প্রেম করতে দুইদিন ভাঙ্গতে একদিন
অমন প্রেম আর কইরো না দরদী।।
তোরা এগুলা কি শুরু করছস! কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। আজকেতো কোচিং বন্ধ, তোরা কোচিং সেন্টারে কি করস?
 
রাসেদের কথাশুনে একে অপরের দিকে একবার অর্থপূর্ণ দৃস্টিতে তাকায় ফাহিম, রাসেল ও সোহান, মুচকি হাসি দিয়ে আবার শুরু করে দেয়।
প্রেমে মরা জলে ডোবেনা.........
প্রেমে পড়ছে আইরিন আফা......
হায়রে, তার প্রেমেতে রাসেদ ভাইয়াগো......

তোরা থামবি! রাসেদ ধমকে ওঠে। এই দুপুর বেলাতে ডেকে এনে কি সব ফাজলামো করছিস? কি জন্য ডেকেছিস তাড়াতাড়ি বল।
এহ! দুনিয়ার মেয়েদের মাথা ঘুরিয়ে, এখন আসছে ব্যস্ততা দেখাতে! তোকে ডাকছি খিদা লাগছে তাই, তুই এখন মিস্টি খাওয়াবি। বলে হেহে করে হেসে ওঠে রাসেল।
মিস্টি খাওয়াবো! কেনো?
 
এহ পোলায় কিছু জানেনা! ভং করে। আইরিন তোমারে লাভ লেটার পাঠাইছে। ওইটা নিতে হইলে মিস্টি খাওয়াতে হবে, চোখে মুখে সিরিয়াস ভাব নিয়ে বলে সোহান।
 
তোরা এককাজ কর ওই লাভ লেটার দিয়া কটকটি খা, যা! এইসব ফালতু কথা বলার জন্য আমাকে এখানে ডেকেছিস! আমি আরো ভাবলাম কি না কি প্রব্লেম। ধুর! নিরর্থক কষ্ট করলাম। চোখে মুখে বিরক্ত ভাব নিয়ে একটা হাই বেঞ্চের উপর বসে পড়ে রাসেদ।

হঠাৎই বিষন্নতায় ছেয়ে যায় রাসেদের মুখ। কি ব্যাপার রাসেদ তুই মন খারাপ করেছিস কেনো, দোস্ত? আরে, আমরা কি ইচ্ছে করে এই চিঠি এনেছি নাকি? আইরিনইতো জোর করে দিতে বললো। আমরা কত করে বললাম রাসেদ এগুলো পছন্দ করেনা, কে শোনে কার কথা। তুই মন খারাপ করিসনা দোস্ত!

না ব্যাপার সেটা নয় অন্য একটা ব্যাপার নিয়ে একটু খারাপ লাগছে, একটু আগে একজন একটা কথা বললো, খুব কষ্ট পেয়েছি। কিছুটা হতাশা ঝড়ে পড়লো রাশেদের কণ্ঠ হতে।
কে তোকে উল্টাপাল্টা কথা বলছে? নাম বল! সমস্বরে চেচিয়ে উঠলো বন্ধুরা। আরেনা, আমাকে বলেনাই। একজন বলেছে আমাদের নবী নাকি বিয়ের আগে বেগানা নারীর সাথে প্রেম করতো, নবীর চরিত্রের উপর কলঙ্ক দিচ্ছিলো।

ওই শালারে ছাড়লি কেনো? উত্তেজিত হয়ে ওঠে ফাহিম, ওরেতো উচিৎ শিক্ষা দেয়া দরকার ছিলো। কত্তবড় জাহেল, বলেকিনা নবী প্রেম করছে! ওরে যদি সামনে পাইতাম নিজের হাতে খুন করতাম! হাত নিষপিশ করছে!
 
উত্তেজনায় এদিক সেদিক পায়চারী করছে রাসেল, সোহান এবং ফাহিম। ওই নাস্তিকটাকে দেখলে চিনবি? একবার চিনাইয়া দে দোস্ত, খালি একবার চিনাইয়া দে, মাথা গরম হয়ে গেছে।

রাসেদের মুখে কথা নেই, নির্লিপ্ত ভাবে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। একসময় নিরবতা ভেঙ্গে গেলো, তোরা বলেছিস। তোরা মজা করে নবীর চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে গান করছিলি। প্রেম করেছ ইউসুফ নবী তার প্রেমেতে জুলেখা বিবি” (নাউজুবিল্লাহ)। এবার তোরাই ঠিক কর, তোদের কি শ্বাস্তি হওয়া দরকার, আল্লাহ তোদের ক্ষমা করুন।
 

রাশেদ ধীরে ধীরে রুম থেকে বের হয়ে যায়। কারও মুখে কোনো কথা নেই, বাহিরে বৃস্টি হচ্ছে, বৃস্টির ঝাপটা এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে বন্ধুদের, মাথা নিচু করে বসে আছে তিনবন্ধু, অনুতপ্ত হৃদয়ের নীরব রক্তক্ষরণ বৃস্টি হয়ে চোখ ভাসে, গাল ভাসে, বুক ভাসে......

১জুলাই২০১৩

Post Comment