সেই ভয়ঙ্কর চুক্তি এবং সিকিমের পথে
বাংলাদেশ।
যে ৭দফা মৈত্রি চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয়
সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষ নিয়েছিলো সেটা বিশ্বব্যাপী গোলামী চুক্তি
নামেই অধিক পরিচিত লাভ করে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের
রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
যদিও পরবর্তীকালে শেখ মুজিবুর রহমানের
বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে সে চুক্তি তখন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু বর্তমানে তারই কন্যা শেখ হাসিনার
প্রতিটি পদক্ষেপই চুক্তি বাস্তবায়নের দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
আসুন দেখা যাক কি ছিলো সেই ৭ দফা গোলামী
চুক্তিতেঃ
১. যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ
নিয়েছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকীদের
চাকুরীচ্যুত করা হবে এবং সেই শুন্যপদ পূরণ করবে ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
২. বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে (কতদিন অবস্থান করবে, তার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি)। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতি বছর এ সম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু'দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
৩. বাংলাদেশের কোন নিজস্ব সেনাবাহিনী থাকবে না।
৪. অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য
মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।
৫. সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে
অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নন এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিবাহিনী
ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে।
৬. দু'দেশের বানিজ্য হবে খোলা বাজার (ওপেন
মার্কেট) ভিত্তিক। তবে বাণিজ্যের পরিমান হিসাব হবে বছর-ওয়ারী এবং যার যা পাওনা, সেটা স্টার্লি-এ পরিশোধ করা হবে।
৭. বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের
সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং ভারক যতদূর পারে এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহায়তা
দেবে।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সাত দফা
গোপন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। চুক্তিপত্রে
স্বাক্ষর দানের পরপরই তিনি মুর্ছা যান।
( দুশো
ছেষট্টি দিনে স্বাধীনতা, পৃষ্ঠা-৩২৫, লেখকঃ মুহাম্মদ নূরুল কাদির, সাবেক ভ্রাম্যমান কূটনৈতিক প্রতিনিধি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার-মুজিবনগর) (সোর্স লিঙ্ক)
এপর্যায়ে আমরা দেখবো কিভাবে একের পর এক
বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ধীরে ধীরে চুক্তির বিভিন্ন ধারাগুলো বাস্তবায়ন করছেন, মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা।
১। চুক্তির ১নম্বর ধারা অনুযায়ী, ভারতীয় কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে
বাংলাদেশের প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে
এরপূর্বেও বিটিআরসিতে ৫জন ভারতীয়
কর্মকর্তাকে নিয়োগের তথ্য ফাঁস করেন মাহমুদুর রহমানের আমারদেশ।,পরবর্তীতে এই নিউজের জন্য মাহমুদুর
রহমানের বিরুদ্ধে হয়রানী মূলক মামলা দায়ের করে বিটিআরসি (রেফারেন্সলিঙ্ক)
২। চুক্তির দুই নম্বর ধারা অনুযায়ী
বাংলাদেশে গোপনে অবস্থান করছে ভারতীয় সেনাকর্তারা। (রেফারেন্স লিঙ্ক)
৩। চুক্তির তিন নম্বর শর্ত অনুযায়ী
পরিকল্পিতভাবে ধ্বংশ করা হচ্ছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে। আওয়ামী সরকারের এই মেয়াদে,
প্রথম দফায় পিলখানাতে অভ্যুত্থান নাটক
সাজিয়ে হত্যা করা হয় ৫৭জন সেনা অফিসারকে
৪। চুক্তুতির চতুর্থ ধারায় ছিলো অভ্যান্তরীন
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।
শেখ মুজিব গঠন করেছিলেন রক্ষিবাহিনী, শেখ হাসিনার সেটা প্রয়োজন হয়নাই, তিনি বিরোধী মত দমনে র্যাবকে
রক্ষিবাহিনীতে রুপান্তরিত করেছেন, এবং সীমান্তরক্ষীবাহিনীকেও সন্ত্রাসী বাহিনীতে রুপান্তরিত করে
দেশের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন।
৫। পাঁচ নম্বর ধারা অলরেডি বাস্তবায়ন হয়ে
গেছে, মুক্তিযুদ্ধকে
ভারতীয়রা ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধ নামেই আখ্যায়িত করে এবং এ যুদ্ধে পাকিস্থানীরা
ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে।
চুক্তির এই অনুচ্ছেদটির কথা মুক্তিবাহিনীর
সর্বাধিনাআয়ক জেনারেল ওসমানীকে জানানো হলে তীব্র ক্ষোভে তিনি ফেটে পড়েন এর
প্রতিবাদে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্থান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে তিনি
উপস্থিত থাকতে অস্বীকার করেছিলেন। (সোর্স লিঙ্ক)
৬। ছয় নম্বর দফার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু
বলবোনা, আপনার ঘরের
পাশের দোকানে গেলেই বুঝতে পারবেন, ওপেন মার্কেট এখন একতরফা মার্কেটে পরিণত হয়েছে, ভারতীয় পণ্যে সয়লাভ বাংলাদেশের বাজার।
৭। সাত নম্বর ধারার মূল বক্তব্য হচ্ছে
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কি হবে সেটা ভারত ঠিক করে দিবে, ভারতের কথা অনুযায়ীই বাংলাদেশ বিশ্বের
বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।
চুক্তির এই ধারাটিও অলরেডি বাস্তবায়ন হয়ে
গেছে,
বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখার জন্য
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রকাশ্যই আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান
খুরশীদ (রেফারেন্সলিঙ্ক)
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
বিবেচনায়, চীনের
রাষ্ট্রদূতের একটা বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, তিনি বলেছিলেন,
"চীন স্বাধীন বাংলাদেশ দেখতেচায়”।
সর্বশেষ একটাই প্রশ্ন, সিকিম হতে কত দেরী পাঞ্জেরী? আমরা কি সত্যিই স্বাধীন, নাকি সিকিমের আপগ্রেডেড ভার্সন?
৩১ডিসেম্বর ২০১৩
সর্বশেষ একটাই প্রশ্ন, সিকিম হতে কত দেরী পাঞ্জেরী? আমরা কি সত্যিই স্বাধীন, নাকি সিকিমের আপগ্রেডেড ভার্সন?
৩১ডিসেম্বর ২০১৩
No comments:
Post a Comment