হলুদ মিডিয়া এবং ছাগু প্রজন্ম

১। আলী আহসান মুজাহীদ বললেন, বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই।
-হলুদ মিডিয়া হই হই করে উঠলো, ঘুশি পাকিয়ে ছুটে এলো, ব্যাটা তোর সাহসতো কমনা। তুই এতোবড় সত্যকথা কইলি। আজ তোর একদিন কি আমাদের দশদিন।
ব্যাস হয়ে গেলো কাজ, ছাগু প্রজন্ম মিন মিনে কন্ঠে বলতে শুরু করলো, মুজাহিদ সাহেব কাজটা ঠিক করেননাই, এই পরিস্থিতিতে এই কথা না বললেও চলতো, মুজাহিদ সাহেব বেশি বুঝেন, ইত্যাদি ইত্যাদি।

২। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন রায় প্রদান করা হলো। কর্মীরা আবেগে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো, প্রতিবাদে ফেটে পড়লো গোটা দেশ। আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেব কর্মীদের আশ্বস্ত করলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য জেল জুলুম নির্যাতন নতুন কিছু নয়, এই জেল জুলুমের পথ ধরেই আসবে বিজয়। এই রায়ে আমরা বিচলিত নই, আমরা ভেঙ্গে পড়িনাই। নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি তিনি প্রদর্শন করলেন বিজয় চিহ্ন
- হলুদ মিডিয়ার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিলো এই বিজয় চিহ্ন। ব্যাটা তুই বিজয় চিহ্ন দেখালি ক্যান? তুই মাথা নিচু করে থাকবি, বিচারকের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইবি। কানতে কানতে পাঞ্জাবির আস্তিন ভিজিয়ে ফেলবি। তুই বিজয় চিহ্ন দেখালি ক্যান, এইটা নিয়ে আমরা ৯০দিনের শোক পালন করুম।
ব্যাস হয়ে গেলো কাজ, ছাগু প্রজন্ম মিন মিনে কন্ঠে বলতে শুরু করলো, আহা! কি দরকার ছিলো এই বিজয় চিহ্ন দেখানোর। চুপ করে থাকলে কি হইতো। খালি খালি বিজয় চিহ্ন দেখাইতে গিয়ে এখন একটা গ্যাঞ্জাম বাজাইয়া দিছে। আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেব এটা ঠিক করেননাই।

৩। বিশ্বজিতকে হত্যা করা হলো, ছাত্রলীগ কুপিয়ে খুন করলো বিশ্বজিতকে।
- ভারত নিয়ন্ত্রিত হলুদ মিডিয়া চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে দিলো। আহারে! আমাদের জাতের একটা পোলারে এমনভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো, এই অন্যায় জুলুম আমরা মেনে নিবোনা। পুরো বিশ্বকে ভিডিও চিত্রের মাধ্যেমে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এই সংখ্যালঘু নির্যাতনের দৃশ্য দেখানোর প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে গেলো।
ব্যাস শুরু হয়ে গেলো ছাগুদের ম্যাতাকার, চারদিকে বিশ্বজিৎ বিশ্বজিৎ নামে রব উঠে গেলো। এদিকেযে গোটা দশেক মুসলিম বিশ্বজিৎকে প্রতিদিন হত্যা করা হচ্ছে সেদিকে কারো খেয়াল নেই, জিজ্ঞাসা করলে নামটাও ঠিক মতো বলতে পারবেনা। অথচ কেউ কেউ বিশ্বজিৎকে নিয়ে কবিতাও রচান করে ফেলেছে, বিশ্বজিৎ হায় আমাদের বিশ্বজিৎ! ছাগু গোষ্ঠির এই ম্যাতাকার শুনলে মনে হবে ১০০টা শিবির কর্মী মরলেও একটা বিশ্বজিৎ এর রক্তের সম মানের জাগরণ হবেনা।

৪। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে, শেষ বারের মতো দেখা করে তার স্ত্রী দেশবাসীর প্রতি বিজয় চিহ্ন প্রদর্শন করলেন। তিনি জনগণকে জানিয়ে দিলেন দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ইসলামী আন্দোলনের এক নিবেদিত প্রাণ কর্মী তার প্রভুর ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে শহীদের মর্যাদা পেতে যাচ্ছেন।
কারও কারও মতে তিনি এই বিজয় চিহ্নের মাধ্যমে মানুষের গড়া আদালতের এই রায়ের প্রতি তীব্র ঘৃনা প্রদর্শন করে, মূল বিচারের দায়িত্ব আল্লাহর হাতে তুলে দিলেন।
-হলুদ মিডিয়ার গায়ে আবারো আগুন ধরে গেলো। আপনি বিজয় চিহ্ন দেখাবেন কেনো? স্বামী শোকে পাগল হয়ে আপনি কেনো চিৎকারের সাথে রাস্তায় গড়া গড়ি করে কান্নাকাটি করলেননা? আপনি কেনো যন্ত্রনায় ছটফট করলেননা। আপনার পরিবারের যন্ত্রনামাখা মুখ দেখার জন্যইতো এতো এতো ভারতীয় টাকায় লালিত পালিত সাংবাদিক অপেক্ষায় ছিলো। এবার আপনার বিচার করা হবে, আপনার বিরুদ্ধে শাহবাগে মিছিল করা হবে।
শুরু হয়ে গেলো, ছাগুদের ম্যতাকার, মিন মিনে কন্ঠে মিসেস আব্দুল কাদেরকে বকা ঝকা শুরু করে দিলো, আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেবের স্ত্রী কাজটা ঠিক করেননাই, এভাবে বিজয় চিহ্ন দেখানো উচিত হয়নাই। এখন একটা গ্যাঞ্জাম বাধাইলো, শাহবাগীদের উত্থান ঘটবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।

৫। আব্দুল কাদের মোল্লার বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালো পাকিস্থানের জাতীয় সংসদ। একটি মুসলিম দেশের একজন ইসলামীক নেতাকে হত্যার প্রতিবাদ জানানোর অধিকার তাদের রয়েছে। এছাড়াও বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এবং জাতিসঙ্ঘ এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
-হলুদ মিডিয়া রঙ মিশিয়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে বিষেদগার শুরু করলো, আপনারা কেনো এই রায়ের পক্ষে বললেননা, মাওলানা মওদূদীর সেই ত্যাজ্য পুত্রের মতো করে এই বিচারকে স্বাগত জানাইলেননা, অতএব আপনারা খারাপ, চ্রম খারাপ।
ছাগু প্রজন্মও মিডিয়ার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলা শুরু করলো, আপনারা খারাপ, চরম খারাপ। আপনারা বাংলাদেশের অভ্যান্তরিন ইস্যুতে কথা বলতে আসবেননা। এটা আওয়ামীলীগ, ভারত ও ছাগুদের নিজস্ব ব্যাপার, আপনারা ছাগুদের প্রতি সহানুভুতি দেখাতে আসবেননা।

হে ছাগু প্রজন্ম, আর কতকাল হীনমন্মতায় ভুগবা? আর কত আত্মরক্ষা করবা? আত্নরক্ষা করতে করতেতো ইঁদুরের গর্তে ঢুকে গেছো! আজকে তোমরা মিডিয়ার চোখে দুনিয়া দেখছো, মিডিয়ার ভাষায় কথা বলছো। আবার রিমান্ডে ডিম থেরাপী খাইলে ওই মিডিয়াকেই দোষারোপ করছো।

বরং আক্রমনাত্মক হও, নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করো দৃঢ়,কঠিন,উদ্ধত কন্ঠে। লজ্জ্বিত হইয়োনা, নিচু হইয়োনা। বরং লজ্জ্বিত করো যারা বিরোধী শক্তি, দূর্বল করে দাও যারা বিরোধীতা করে। ভুলে গেলে চলবেনা, আমরাই মিডিয়া!

১৮ডিসেম্বর২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment