/“সশস্ত্র হামলার হুমকি দিলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক”
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ব্যারিস্টারা আব্দুর রাজ্জাক বঙ্গভবনে সশস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছেন। যদিও আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোড়দাড় করা হয়েছে, তবুও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বঙ্গভবনে হামলার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গভবনে হামলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি গোপন রিপোর্ট জমা দিয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, বঙ্গভবনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং অন্যান্য সরকারী অফিসের নিরাপত্তাও জোড়দার করা হয়েছে। এবং আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছি।/
কি খবরটা শুনে চমকে গেলেন?! মূল ঘটনায় আসার আগে বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি যদি কারও ক্ষতি করতে চান তবে মিডিয়ার এই যুগে আপনার সবচাইতে বড় কৌশল হচ্ছে তার বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাস করা।
আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশ দীর্ঘদিন ধরেই চেস্টা করছে জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশন প্রমান করতে, বুদ্ধিজীবি শাহরিয়ার কবিরতো ইতোমধ্যেই “আল্টিমেট জিহাদ” সহ দুইটি মুভি তৈরী করে ফেলেছেন, জামায়াতের আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশনের কল্প কাহিনী নিয়ে। যদিও তাদের সেই প্রচেস্টা আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের পরে পাকিস্থানের জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকার সমর্থক মিডিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এটাই কিন্তু মোক্ষম সময় এবং সুযোগ, যেই গোষ্ঠিটি জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশন খুজে বেড়াচ্ছে তারা সুন্দর একটা উপলক্ষ পেয়ে গেলো, তেহরিক ই তালিবানের নামে ছড়িয়ে দিলো মিথ্যা ভিত্তিহীন খবর।
স্বাভাবিক ভাবেই তেহরিক ই তালিবান যাদের পক্ষে কথা বলবে, তারাও তেহরিক সমর্থক হিসেবে পরিগণিত হবে। এখন যেহেতু তেহরিক ই তালিবান জামায়াতের পক্ষ নিয়ে হুমকি দিয়েছে, সেহেতু জামায়াতও টিটিপি’র সমর্থক সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করলো।
এবার মূল বিষয়ের দিকে দৃস্টিপাত করছি, লেখার শুরতে যে খবরটি দেয়া হয়েছে তার তথ্যসূত্রের দিকে লক্ষ করেছেনতো?
বিশ্বের তাবৎ হলুদ মিডিয়া ভুয়া নিউজ তৈরী করার সময় কয়েকটি তথ্যসূত্র ব্যবহার করে ১।বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে ২।নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ৩।গোয়েন্দা সূত্র জানায়। ৪।বিশ্লেষকদের ধারণা। ৫।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে
এইসব তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে কাউকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন হয়না, কিংবা পরিবেশিত খবরের কোনো লায়াবিলিটিও নেয়ার প্রয়োজন হয়না। মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবাদের নামে মিথ্যাচার করা যায়।
“পাকিস্থানী তেহরিক ই তালিবান হুমকি দিয়েছে, পাকিস্থানে অবস্থিত বাংলাদেশ দুতাবাসে হামলা করা হবে”। খবরটি প্রথম প্রকাশ পায় “দ্যা ন্যাশন” নামক পাকিস্থানের একটি ইংরেজী দৈনিকে, এরপর ওই পত্রিকার সূত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিডিয়া একই খবর প্রকাশ করে, যেমনঃ বাংলাদেশের ডেইলিস্টার, বাংলাদেশ টুডে, নিউ এইজ, ঢাকা ট্রিবিউন, ডেকান হেরাল্ড সহ দেশি বিদেশী অসংখ্য প্রিন্টিং ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায়।
কি ছিলো “দ্যা ন্যাশন” নামক সেই পত্রিকার খবরের তথ্যসূত্র? যে খবরটি বিশ্বব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে?!
খবরটি একনজরে দেখা যাক।
ISLAMABAD - The banned Tehrik-e-Taliban Pakistan (TTP) has threatened to attack Bangladesh Embassy in Islamabad in the wake of the killing of Abdul Qadir Mulla, Jamaat-e-Islami (JI) leader in Bangladesh, it was reliably learnt on Wednesday.
Although security around Bangladesh foreign mission in Pakistan has been enhanced manifold and the fresh security directions have been issued to Ambassador of Bangladesh, yet law enforcement agencies still fear a terrorist attack at BD mission. According to well-placed sources, law enforcement agencies have submitted a report to interior ministry quoting a security agency that Taliban have expressed annoyance with the Bangladesh government over the killing of Abdul Qadir Mulla and could attack the Bangladesh embassy. The unnamed security agency officials had called for preventive measures in the wake of the threats.
The Bangladesh Embassy is located in the residential area of F-6/3, considered one of the most posh sectors of Islamabad.
A senior official of law enforcement agency while talking to The Nation said they have chalked out an elaborate security plan for security of Bangladesh embassy and security has been enhanced of major embassies in the federal capital.
“We have also deployed police commandoes at these sensitive places to avoid any untoward incident during Christmas holidays while patrolling has been enhanced around them,” the security official added.
এবার নিউজটির তথ্যসূত্র দেখি
১। it was reliably learnt on Wednesday. (নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে)
২। According to well-placed sources,
৩। The unnamed security agency officials(আবারো আন নেইমড সিকিউরিটি এজেন্সি)
৪। quoting a security agency (সিকিউরিটি এজিন্সির নাম কই?)
৫। A senior official of law enforcement agency (এই ব্যাটার নাম কই?)
এই ভুয়া/হলুদ খবরটি পড়েই শাহরিয়ার কবির কিংবা অন্যান্য মিডিয়া জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গি কানেকশন আবিস্কার করে ফেলেছে। জামায়াতে ইসলামীকে তেহরিক ই তালিবানের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ বানিয়ে ফেলেছে।
ইতোমধ্যেই অনেক ডানপন্থী ব্যাক্তি পাকিস্থান সরকার এবং টিটিপির বিরুদ্ধে নিন্দাও জানিয়েছেন, কিন্তু খবরের পেছনের বাস্তবতা যাচাই করার সময় এবং সুযোগ কোনোটিই তাদের হয়ে উঠেনি।
সর্বশেষ একটি বিষয়ের দিকে দৃস্টি আকর্ষণ করেই লেখাটির ইতি টানবো, জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। কিন্তু সেই সাংবাদিকরা যদি জন্ডিশে আক্রান্ত হন, তাহলে হতাশা ব্যক্ত করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতে পারেনা। হলুদ মিডিয়া এবং হলুদ সাংবাদিকরাই কি আমাদের চিন্তা চেতনার নিয়ন্ত্রণ করবে? এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি নেই?
দ্যা নেশনের সেই খবরটির লিঙ্কঃ http://www.nation.com.pk/ islamabad/19-Dec-2013/ security-beefed-up-as-taliban-t hreaten-to-attack-b-desh-embas sy
২০ডিসেম্বর২০১৩
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ব্যারিস্টারা আব্দুর রাজ্জাক বঙ্গভবনে সশস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছেন। যদিও আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে বঙ্গভবনের নিরাপত্তা জোড়দাড় করা হয়েছে, তবুও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বঙ্গভবনে হামলার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গভবনে হামলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি গোপন রিপোর্ট জমা দিয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, বঙ্গভবনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং অন্যান্য সরকারী অফিসের নিরাপত্তাও জোড়দার করা হয়েছে। এবং আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছি।/
কি খবরটা শুনে চমকে গেলেন?! মূল ঘটনায় আসার আগে বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি যদি কারও ক্ষতি করতে চান তবে মিডিয়ার এই যুগে আপনার সবচাইতে বড় কৌশল হচ্ছে তার বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাস করা।
আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশ দীর্ঘদিন ধরেই চেস্টা করছে জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশন প্রমান করতে, বুদ্ধিজীবি শাহরিয়ার কবিরতো ইতোমধ্যেই “আল্টিমেট জিহাদ” সহ দুইটি মুভি তৈরী করে ফেলেছেন, জামায়াতের আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশনের কল্প কাহিনী নিয়ে। যদিও তাদের সেই প্রচেস্টা আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের পরে পাকিস্থানের জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনের ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকার সমর্থক মিডিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এটাই কিন্তু মোক্ষম সময় এবং সুযোগ, যেই গোষ্ঠিটি জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গী কানেকশন খুজে বেড়াচ্ছে তারা সুন্দর একটা উপলক্ষ পেয়ে গেলো, তেহরিক ই তালিবানের নামে ছড়িয়ে দিলো মিথ্যা ভিত্তিহীন খবর।
স্বাভাবিক ভাবেই তেহরিক ই তালিবান যাদের পক্ষে কথা বলবে, তারাও তেহরিক সমর্থক হিসেবে পরিগণিত হবে। এখন যেহেতু তেহরিক ই তালিবান জামায়াতের পক্ষ নিয়ে হুমকি দিয়েছে, সেহেতু জামায়াতও টিটিপি’র সমর্থক সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করলো।
এবার মূল বিষয়ের দিকে দৃস্টিপাত করছি, লেখার শুরতে যে খবরটি দেয়া হয়েছে তার তথ্যসূত্রের দিকে লক্ষ করেছেনতো?
বিশ্বের তাবৎ হলুদ মিডিয়া ভুয়া নিউজ তৈরী করার সময় কয়েকটি তথ্যসূত্র ব্যবহার করে ১।বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে ২।নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ৩।গোয়েন্দা সূত্র জানায়। ৪।বিশ্লেষকদের ধারণা। ৫।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে
এইসব তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে কাউকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন হয়না, কিংবা পরিবেশিত খবরের কোনো লায়াবিলিটিও নেয়ার প্রয়োজন হয়না। মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবাদের নামে মিথ্যাচার করা যায়।
“পাকিস্থানী তেহরিক ই তালিবান হুমকি দিয়েছে, পাকিস্থানে অবস্থিত বাংলাদেশ দুতাবাসে হামলা করা হবে”। খবরটি প্রথম প্রকাশ পায় “দ্যা ন্যাশন” নামক পাকিস্থানের একটি ইংরেজী দৈনিকে, এরপর ওই পত্রিকার সূত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিডিয়া একই খবর প্রকাশ করে, যেমনঃ বাংলাদেশের ডেইলিস্টার, বাংলাদেশ টুডে, নিউ এইজ, ঢাকা ট্রিবিউন, ডেকান হেরাল্ড সহ দেশি বিদেশী অসংখ্য প্রিন্টিং ইলেক্ট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায়।
কি ছিলো “দ্যা ন্যাশন” নামক সেই পত্রিকার খবরের তথ্যসূত্র? যে খবরটি বিশ্বব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে?!
খবরটি একনজরে দেখা যাক।
ISLAMABAD - The banned Tehrik-e-Taliban Pakistan (TTP) has threatened to attack Bangladesh Embassy in Islamabad in the wake of the killing of Abdul Qadir Mulla, Jamaat-e-Islami (JI) leader in Bangladesh, it was reliably learnt on Wednesday.
Although security around Bangladesh foreign mission in Pakistan has been enhanced manifold and the fresh security directions have been issued to Ambassador of Bangladesh, yet law enforcement agencies still fear a terrorist attack at BD mission. According to well-placed sources, law enforcement agencies have submitted a report to interior ministry quoting a security agency that Taliban have expressed annoyance with the Bangladesh government over the killing of Abdul Qadir Mulla and could attack the Bangladesh embassy. The unnamed security agency officials had called for preventive measures in the wake of the threats.
The Bangladesh Embassy is located in the residential area of F-6/3, considered one of the most posh sectors of Islamabad.
A senior official of law enforcement agency while talking to The Nation said they have chalked out an elaborate security plan for security of Bangladesh embassy and security has been enhanced of major embassies in the federal capital.
“We have also deployed police commandoes at these sensitive places to avoid any untoward incident during Christmas holidays while patrolling has been enhanced around them,” the security official added.
এবার নিউজটির তথ্যসূত্র দেখি
১। it was reliably learnt on Wednesday. (নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে)
২। According to well-placed sources,
৩। The unnamed security agency officials(আবারো আন নেইমড সিকিউরিটি এজেন্সি)
৪। quoting a security agency (সিকিউরিটি এজিন্সির নাম কই?)
৫। A senior official of law enforcement agency (এই ব্যাটার নাম কই?)
এই ভুয়া/হলুদ খবরটি পড়েই শাহরিয়ার কবির কিংবা অন্যান্য মিডিয়া জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক জঙ্গি কানেকশন আবিস্কার করে ফেলেছে। জামায়াতে ইসলামীকে তেহরিক ই তালিবানের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ বানিয়ে ফেলেছে।
ইতোমধ্যেই অনেক ডানপন্থী ব্যাক্তি পাকিস্থান সরকার এবং টিটিপির বিরুদ্ধে নিন্দাও জানিয়েছেন, কিন্তু খবরের পেছনের বাস্তবতা যাচাই করার সময় এবং সুযোগ কোনোটিই তাদের হয়ে উঠেনি।
সর্বশেষ একটি বিষয়ের দিকে দৃস্টি আকর্ষণ করেই লেখাটির ইতি টানবো, জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। কিন্তু সেই সাংবাদিকরা যদি জন্ডিশে আক্রান্ত হন, তাহলে হতাশা ব্যক্ত করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতে পারেনা। হলুদ মিডিয়া এবং হলুদ সাংবাদিকরাই কি আমাদের চিন্তা চেতনার নিয়ন্ত্রণ করবে? এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি নেই?
দ্যা নেশনের সেই খবরটির লিঙ্কঃ http://www.nation.com.pk/
২০ডিসেম্বর২০১৩
No comments:
Post a Comment