অন্ধকে হাইকোর্ট দেখানো বাক্যটির সাথে আমরা বেশ পরিচিত, এই বাক্যটির উৎপত্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানতে না পারলেও এনিয়ে মুখরোচক একটা গল্পের কথা মনে পড়ে গেলো।
এক বাংলাদেশী শ্রমিক আমেরিকা গিয়েছে একটু উন্নত জীবন যাপনার ইচ্ছায়। স্বভাবতই বাংলাদেশীরা একটু চাপাবাজ স্বভাবের, সে তার সহকর্মীদের কাছে নিজের দেশের গুণগান বর্ণনা শুরু করে দিলো, আমার দেশ হ্যান, আমার দেশ ত্যান, দেশের বাড়িতে আমার এই আছে, সেই আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন তার সহকর্মীরা তাঁকে ধরলে তার গ্রামের বাড়ির ছবি দেখানোর জন্য।
গ্রামের কুড়েঘড়ের ছবি দেখালেতো ইজ্জত থাকেনা, তাই ওই বাঙালী হাইকোর্টের ছবি দেখিয়ে সহকর্মীদের বলে দিলো, এই হচ্ছে আমার গ্রামের বাড়ি!
বন্ধুরা দেখেতো হতবাক, বাংলাদেশের একজন শ্রমিকের বাড়ি যদি এতো সুন্দর হয়, সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি না জানি কত সুন্দর!
সে যাই হোক, ওই বাংলাদেশী না হয় তার বিদেশীবন্ধুদের হাইকোর্ট দেখিয়ে রেহাই পেয়ে গেলো। এবার আমাদের দেশের আরেক বুদ্ধিমান বাংলাদেশীর সাথে আপনাদের পরিচিত করিয়ে দিচ্ছি। তিনি বাংলাদেশে বসবাস করেই এদেশের ষোল কোটি মানুষকে প্রতিনিয়ত হাইকোর্ট দেখিয়ে যাচ্ছেন।
এই ধুরন্দর ব্যাক্তি হচ্ছেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। আদালত রায় দিলো, আগামী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি রেখেই পরবর্তীতে অন্য পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে। তিনি সাথে সাথেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাদ দিয়ে দিলেন, ষোল কোটি বাংলাদেশীকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলেন। ঘোষণা দিলেন, আদালতের নির্দেশেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিল করেছি।
ইচ্ছেমতো সংবিধানকে কাঠাছেড়া করে তৈরী করলেন বাকশালী সংবিধান! এবং বাংলাদেশীদের সংবিধানের হাইকোর্ট দেখিয়ে বলে দিলেন, তিনি সংবিধান মানেন, সংবিধান হতে একচুলও নড়বেননা। কিছু সংখ্যক আওয়ামীলীগ ব্যাতিত, সকল মানুষ তার এই সংবিধানের উপর থু থু নিক্ষেপ করলো।
বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, গ্রামীন ব্যাংক, এবং আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন। আবেগে গদ গদ হয়ে ওইদিন এবং তার পরের দিন সারাদেশের ইলেক্ট্রনিক্স এবং প্রিন্টিং মিডিয়ায় প্রচারিত হলো, হিলারী ক্লিনটন শেখ হাসিনার শাসনামলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
পরবর্তীতে ফাঁস হওয়া টেলিফোন আলাপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, ফোন করে শেখ হাসিনাকে মারাত্মক রকমের ঝাড়ি প্রদান করেছিলেন হিলারী ক্লিনটন। এবং সেখানে হাসিনার দুঃশাসনের অনেক ব্যাপারেই কথা বলেছেন তিনি।
নিজের হাবা-গোবা ছেলেকে নিয়ে বারাক ওবামার সাথে দেখা করতে গেলেন শেখ হাসিনা। স্বাভাবিক ভাবেই কোনো মায়ের সাথে তার সন্তান থাকলে মুরব্বিরা সেই সন্তানের একটু প্রশংসা করে, গাল টিপে দেয়।
বারাক ওবামাও শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের একটু প্রশংসা করে দিলেন, যেহেতু পোলা বড় হইছে তাই গাল টিপতে পারেননাই। কিন্তু ওইযে প্রশংসা করেছে, এতেই খুশিতে গদ গদ হয়ে বাংলাদেশীদের আবারো হাইকোর্ট দেখালেন হাসিনা। বারাক ওবামার সাথে আমার পোলার হেব্বি খাতির, বারাক ওবামার মেয়ে বিয়ে দিবে আমার পোলার কাছে, এই হচ্ছে অবস্থা! সারাদেশে ব্যানার পোস্টার লাগানো হলো “ইওর সান ইজ ভেরি স্মার্ট”
সংলাপের আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়াকে ফোন করলেন শেখ হাসিনা, দেশ ব্যাপী অন্ধ বাংলাদেশীদের জানানো হলো হাসিনার কথার জবাব দিতে সক্ষম হয়নাই খালেদা জিয়া, অশিক্ষিত মানুষ কথা জানে নাকি?! শেষ পর্যন্ত সরকারের অতি চালাকিতে সেই টেলিফোন কনভার্সেশন যখন মিডিয়াতে প্রকাশ পেলো, আমরা দেখলাম হাসিনার হাইকোর্ট ধুলোয় মিশে গেছে!
শেখ হাসিনার প্রেস সেক্রেটারি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, জাতিসংঘের মহাসচিব শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন, ফোনে তিনি আগামী নির্বাচন যেনো সুষ্ঠ হয়ে সে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে শান্তিরক্ষা মিশনে আরো এক প্লাটুন সৈন্য, হেলিকপ্টার এবং আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র পাঠাতে অনুরোধ করেছেন।
আহা! এবার তিনি বাংলাদেশিদের দেখিয়ে দিলেন হাইকোর্ট কতপ্রকার ও কি কি! যেই নির্বাচনে জাতিসংঘের সমর্থন পর্যন্ত নেই, আমেরিকা, ইউরোপ সহ গোটা বিশ্ব যে নির্বাচন প্রত্যাক্ষাণ করেছে, জাতিসঙ্ঘ সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে, মাশাআল্লাহ! শুধু তাই নয়, শান্তিরক্ষা মিশনে আরো সেনা পাঠাতে বলেছে!
আসেন আমরা সবাই শেখ হাসিনার হাইকোর্ট দেখি!
২৫ডিসেম্বর২০১৩
এক বাংলাদেশী শ্রমিক আমেরিকা গিয়েছে একটু উন্নত জীবন যাপনার ইচ্ছায়। স্বভাবতই বাংলাদেশীরা একটু চাপাবাজ স্বভাবের, সে তার সহকর্মীদের কাছে নিজের দেশের গুণগান বর্ণনা শুরু করে দিলো, আমার দেশ হ্যান, আমার দেশ ত্যান, দেশের বাড়িতে আমার এই আছে, সেই আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন তার সহকর্মীরা তাঁকে ধরলে তার গ্রামের বাড়ির ছবি দেখানোর জন্য।
গ্রামের কুড়েঘড়ের ছবি দেখালেতো ইজ্জত থাকেনা, তাই ওই বাঙালী হাইকোর্টের ছবি দেখিয়ে সহকর্মীদের বলে দিলো, এই হচ্ছে আমার গ্রামের বাড়ি!
বন্ধুরা দেখেতো হতবাক, বাংলাদেশের একজন শ্রমিকের বাড়ি যদি এতো সুন্দর হয়, সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি না জানি কত সুন্দর!
সে যাই হোক, ওই বাংলাদেশী না হয় তার বিদেশীবন্ধুদের হাইকোর্ট দেখিয়ে রেহাই পেয়ে গেলো। এবার আমাদের দেশের আরেক বুদ্ধিমান বাংলাদেশীর সাথে আপনাদের পরিচিত করিয়ে দিচ্ছি। তিনি বাংলাদেশে বসবাস করেই এদেশের ষোল কোটি মানুষকে প্রতিনিয়ত হাইকোর্ট দেখিয়ে যাচ্ছেন।
এই ধুরন্দর ব্যাক্তি হচ্ছেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। আদালত রায় দিলো, আগামী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি রেখেই পরবর্তীতে অন্য পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে। তিনি সাথে সাথেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাদ দিয়ে দিলেন, ষোল কোটি বাংলাদেশীকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলেন। ঘোষণা দিলেন, আদালতের নির্দেশেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিল করেছি।
ইচ্ছেমতো সংবিধানকে কাঠাছেড়া করে তৈরী করলেন বাকশালী সংবিধান! এবং বাংলাদেশীদের সংবিধানের হাইকোর্ট দেখিয়ে বলে দিলেন, তিনি সংবিধান মানেন, সংবিধান হতে একচুলও নড়বেননা। কিছু সংখ্যক আওয়ামীলীগ ব্যাতিত, সকল মানুষ তার এই সংবিধানের উপর থু থু নিক্ষেপ করলো।
বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, গ্রামীন ব্যাংক, এবং আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন। আবেগে গদ গদ হয়ে ওইদিন এবং তার পরের দিন সারাদেশের ইলেক্ট্রনিক্স এবং প্রিন্টিং মিডিয়ায় প্রচারিত হলো, হিলারী ক্লিনটন শেখ হাসিনার শাসনামলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
পরবর্তীতে ফাঁস হওয়া টেলিফোন আলাপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, ফোন করে শেখ হাসিনাকে মারাত্মক রকমের ঝাড়ি প্রদান করেছিলেন হিলারী ক্লিনটন। এবং সেখানে হাসিনার দুঃশাসনের অনেক ব্যাপারেই কথা বলেছেন তিনি।
নিজের হাবা-গোবা ছেলেকে নিয়ে বারাক ওবামার সাথে দেখা করতে গেলেন শেখ হাসিনা। স্বাভাবিক ভাবেই কোনো মায়ের সাথে তার সন্তান থাকলে মুরব্বিরা সেই সন্তানের একটু প্রশংসা করে, গাল টিপে দেয়।
বারাক ওবামাও শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের একটু প্রশংসা করে দিলেন, যেহেতু পোলা বড় হইছে তাই গাল টিপতে পারেননাই। কিন্তু ওইযে প্রশংসা করেছে, এতেই খুশিতে গদ গদ হয়ে বাংলাদেশীদের আবারো হাইকোর্ট দেখালেন হাসিনা। বারাক ওবামার সাথে আমার পোলার হেব্বি খাতির, বারাক ওবামার মেয়ে বিয়ে দিবে আমার পোলার কাছে, এই হচ্ছে অবস্থা! সারাদেশে ব্যানার পোস্টার লাগানো হলো “ইওর সান ইজ ভেরি স্মার্ট”
সংলাপের আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়াকে ফোন করলেন শেখ হাসিনা, দেশ ব্যাপী অন্ধ বাংলাদেশীদের জানানো হলো হাসিনার কথার জবাব দিতে সক্ষম হয়নাই খালেদা জিয়া, অশিক্ষিত মানুষ কথা জানে নাকি?! শেষ পর্যন্ত সরকারের অতি চালাকিতে সেই টেলিফোন কনভার্সেশন যখন মিডিয়াতে প্রকাশ পেলো, আমরা দেখলাম হাসিনার হাইকোর্ট ধুলোয় মিশে গেছে!
শেখ হাসিনার প্রেস সেক্রেটারি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, জাতিসংঘের মহাসচিব শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন, ফোনে তিনি আগামী নির্বাচন যেনো সুষ্ঠ হয়ে সে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে শান্তিরক্ষা মিশনে আরো এক প্লাটুন সৈন্য, হেলিকপ্টার এবং আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র পাঠাতে অনুরোধ করেছেন।
আহা! এবার তিনি বাংলাদেশিদের দেখিয়ে দিলেন হাইকোর্ট কতপ্রকার ও কি কি! যেই নির্বাচনে জাতিসংঘের সমর্থন পর্যন্ত নেই, আমেরিকা, ইউরোপ সহ গোটা বিশ্ব যে নির্বাচন প্রত্যাক্ষাণ করেছে, জাতিসঙ্ঘ সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে, মাশাআল্লাহ! শুধু তাই নয়, শান্তিরক্ষা মিশনে আরো সেনা পাঠাতে বলেছে!
আসেন আমরা সবাই শেখ হাসিনার হাইকোর্ট দেখি!
২৫ডিসেম্বর২০১৩
No comments:
Post a Comment