আত্মঘাতী হামলা


ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখলাম, সেখানে বলা হয়েছে, “আফগানিস্থানে শাহদাতি হামলায়(আত্মঘাতি) কুফফারদের একটি ট্যাংক ধ্বংশ হয়েছে, কমপক্ষে দশজন কুফফার নিহত ও দশজন আহত”।

নিঃসন্দেহে সমগ্র মুসলিম জাহানের জন্য বাতিলের পরাজয় একটি সুখবর। কিন্তু একজন মুসলিম মুজাহিদের আত্মহত্যার খবর কি কখনো সুখবর হতে পারে? শাহদাতের মর্যাদা আর আত্মঘাতী বোমা হামলা (আত্মহত্যা) কি কখনো এক হতে পারে?

সমগ্র বিশ্বে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলো, বাতিল-কুফফারদের ধ্বংশ হলো, কিন্তু আমি জান্নাতে যেতে পারলামনা, তাহলে আমার লাভ কি?
কেউ আত্মহত্যা করলে সে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করবে (মুসলিম হা/১০৯)। এই হাদিসের ব্যাক্ষ্যায় বলা হয়েছে এখানে চিরস্থায়ী বলতে সুদীর্ঘকাল ও অধিকাল বুঝানো হয়েছে। কিন্তু কেউ যদি আত্মহত্যাকে হালাল বলে বিশ্বাস করে। এরুপ বিশ্বাসের কারণে সে কাফের হয়ে যাবে, আর কাফেরের চিরস্থায়ী ঠিকানা জাহান্নাম।

ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে যুদ্ধ করতে করতে প্রতিপক্ষের আঘাতে শহীদ হয়ে গেলাম সেটা হচ্ছে জিহাদ। আর নিজের শরীরে বোমা বেধে সেটা ফুটিয়ে দিলাম, নিজে মরলাম সাথে কয়েকজন বাতিল শক্তিকেও মারলাম এটাযে আত্মহত্যা সেক্ষেত্রে কোনো সন্দেহ আছে?

আমি এ পর্যন্ত কখনো দেখিনাই বা শুনিনাই যে কোনো জিহাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় লিডার আত্মঘাতী হামলা করে মারা গেছেন। অথচ ঈমান ও তাকওয়ার দিক হতে তিনিই দলের মধ্যে সেরা হিসেবে বিবেচিত।
ওসামা বিন লাদেন বাতিলের সাথে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে গেছেন, মোল্লা ওমর এখনো জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছেন, কই তারাতো আত্মঘাতী হামলা করছেননা!?
মিডিয়ায় দেখলাম বাংলাদেশের জেএমবি’র প্রধান আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের নির্দেশে কতিপয় তরুণ আত্মঘাতী বোমা হামলা করলো, ইসলামের জন্য নিজেকে কোরবানী করে দিলো। অথচ সেই আব্দুর রহমান সাহেব কিন্তু ধরা পড়েছেন আত্মসমর্পনের মাধ্যমে। তিনি কেনো নিজের শরীরে বোমা বেঁধে র‍্যাবের কমান্ডারের উপর ফাটিয়ে দিলেননা?

একটা প্রশ্ন রেখেই লেখাটি শেষ করতে চাই, আত্মঘাতী বোমা হামলা কি শুধু ওইসব সংগঠের কর্মীদের জন্য? আর নেতাদের জন্য হালুয়া রুটি?

লেখাঃ আত্মঘাতী হামলা
© শামীম রেজা
১২/০৫/২০১৪

Post Comment

No comments:

Post a Comment