এক
মেথরের গল্প বলছি, যে সে মেথর নয় একেবারে জাত মেথর সেই ব্যক্তি। সাত পুরুষ
ধরে মেথরের কাজ করছে, এই পেশা ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানা নেই তার। তাছাড়া
পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে দেয়ার মতো বিপুল বিশাল হিম্মতও নেই
মেথর হীরা লালের।
একদিন কাজের সন্ধানে একটি সুপার স্টোরে আবেদন করলো হীরা লাল। যথারিতী তার সবগুলো যোগ্যতা যাচাই বাছাই শেষে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য ভাইবা অনুষ্ঠিত হবে।
ভাইবা বোর্ডে তাকে একটি প্রশ্নই করা হলো, আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস আছে?
হতভম্ব মেথরের চোখ কপালে উঠলো, “না স্যার, আমার ইমেইল নেই”
বিরক্তিতে নিয়োগকর্তার ভ্রু কুঞ্চিত হলো, তাহলেতো আপনার চাকরী হবেনা। আমাদের এই সুপারস্টোর হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান, আর এই প্রতিষ্ঠানে এমন কারো চাকরী হতে পারেনা, যে প্রযুক্তি জ্ঞানে পিছিয়ে আছে। আমরা আপনাকে নিতে পারছিনা বলে দুঃখিত!
ব্যর্থ এবং ভগ্ন হৃদয়ে সুপারস্টোর হতে বেরিয়ে এলো মেথর হীরা লাল। না, অনেক হয়েছে, চাকরীর পেছনে আর দৌড়াবোনা, এবার নিজেই কিছু একটা করতে হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ, পকেটে কিছু টাকা ছিলো সে টাকা দিয়ে কলা কিনে ফুটপাতে কলা বিক্রি শুরু করলো মেথর হীরা লাল।
হীরা লালের ব্যবসা ভাগ্য ছিলো দারুণ, অল্প দিনের মধ্যেই ব্যবসা ফুলে ফেঁপে বিশাল আকৃতি ধারণ করলো। দিন যায় দিন আসে, হীরা লালকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নাই।
দেখতে দেখতে হীরা লাল একদিন বিশাল ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। এখন সে দেশের সর্ববৃহৎ চেইনস্টোরের মালিক।
চীন থেকে প্রতিনিধীদল এসেছে, তারা হীরালালের সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রাসঙ্গিক আলোচনা হলো, চুক্তি স্বাক্ষর হলো, এবার চীনের কোম্পানীর এক কর্মকর্তা এসে বললো, স্যার আপনার ইমেইল এ্যাড্রেসটা একটু দেয়া যাবে?
মুখে একটু বিরক্তির ভাব এনে হীরা লাল জবাব দিলো, আমার ইমেইল এ্যাড্রেস নাই।
হতভম্ব কর্মকর্তা পুণরায় প্রশ্ন করলো, স্যার এটা আপনি কি বলছেন? ! প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস নাই! আপনি জানেন স্যার, আজ যদি আপনার একটা ই-মেইল এ্যাড্রেস থাকতো তবে আপনার ব্যবসা কোন পর্যায়ে উন্নতি হতো?
হীরা লাল কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে থাকে, তারপরে কর্মকর্তার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে জবাব দেয়, হ্যা আমি জানি আজকে যদি আমার একটা ইমেইল এ্যাড্রেস থাকতো তবে আমি কোথায় থাকতাম!!
হীরালালের ঘটনাটি মনে পড়লো সাম্প্রতিক বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে। শাহবাগের উত্থান ঘটলো, পালটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে উত্থান হলো হেফাজতের, সেখানে গুলি চালানো হলো, মানুষ মরলো। একের পর এক আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলন ব্যার্থ হলো, আমরা হতাশ হলাম।
কিন্তু আমার যেটা মনে হচ্ছে, আমাদের আগের সকল ব্যার্থতাই হচ্ছে আমাদের সফলতা। বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রাম যদি সফল হতো তাহলে হয়তো ১৮দলীয় জোট ক্ষমতায় যেতে পারতো, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামীলীগ থেকে যেতো তার আগের অবস্থানেই।
কিন্তু দেশের বর্তমান অবস্থা ঘোষণা দিচ্ছে, ক্ষমতায় থেকেও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগের মৃত্যু ঘটেছে, জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে গেছে। বিকল্প শক্তি হিসেবে উত্থান ঘটেছে জামায়াতে ইসলামীর। দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেই সেটা প্রমাণ হয়েছে।
শেষ কথা, সাময়িক বিজয় নয়, চাই দীর্ঘ মেয়াদী ইসলামী বিপ্লব।
লেখাঃ ইসলামী বিপ্লব চাই
© শামীম রেজা
০২/০৫/২০১৪
একদিন কাজের সন্ধানে একটি সুপার স্টোরে আবেদন করলো হীরা লাল। যথারিতী তার সবগুলো যোগ্যতা যাচাই বাছাই শেষে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য ভাইবা অনুষ্ঠিত হবে।
ভাইবা বোর্ডে তাকে একটি প্রশ্নই করা হলো, আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস আছে?
হতভম্ব মেথরের চোখ কপালে উঠলো, “না স্যার, আমার ইমেইল নেই”
বিরক্তিতে নিয়োগকর্তার ভ্রু কুঞ্চিত হলো, তাহলেতো আপনার চাকরী হবেনা। আমাদের এই সুপারস্টোর হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান, আর এই প্রতিষ্ঠানে এমন কারো চাকরী হতে পারেনা, যে প্রযুক্তি জ্ঞানে পিছিয়ে আছে। আমরা আপনাকে নিতে পারছিনা বলে দুঃখিত!
ব্যর্থ এবং ভগ্ন হৃদয়ে সুপারস্টোর হতে বেরিয়ে এলো মেথর হীরা লাল। না, অনেক হয়েছে, চাকরীর পেছনে আর দৌড়াবোনা, এবার নিজেই কিছু একটা করতে হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ, পকেটে কিছু টাকা ছিলো সে টাকা দিয়ে কলা কিনে ফুটপাতে কলা বিক্রি শুরু করলো মেথর হীরা লাল।
হীরা লালের ব্যবসা ভাগ্য ছিলো দারুণ, অল্প দিনের মধ্যেই ব্যবসা ফুলে ফেঁপে বিশাল আকৃতি ধারণ করলো। দিন যায় দিন আসে, হীরা লালকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নাই।
দেখতে দেখতে হীরা লাল একদিন বিশাল ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। এখন সে দেশের সর্ববৃহৎ চেইনস্টোরের মালিক।
চীন থেকে প্রতিনিধীদল এসেছে, তারা হীরালালের সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রাসঙ্গিক আলোচনা হলো, চুক্তি স্বাক্ষর হলো, এবার চীনের কোম্পানীর এক কর্মকর্তা এসে বললো, স্যার আপনার ইমেইল এ্যাড্রেসটা একটু দেয়া যাবে?
মুখে একটু বিরক্তির ভাব এনে হীরা লাল জবাব দিলো, আমার ইমেইল এ্যাড্রেস নাই।
হতভম্ব কর্মকর্তা পুণরায় প্রশ্ন করলো, স্যার এটা আপনি কি বলছেন? ! প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস নাই! আপনি জানেন স্যার, আজ যদি আপনার একটা ই-মেইল এ্যাড্রেস থাকতো তবে আপনার ব্যবসা কোন পর্যায়ে উন্নতি হতো?
হীরা লাল কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে থাকে, তারপরে কর্মকর্তার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে জবাব দেয়, হ্যা আমি জানি আজকে যদি আমার একটা ইমেইল এ্যাড্রেস থাকতো তবে আমি কোথায় থাকতাম!!
হীরালালের ঘটনাটি মনে পড়লো সাম্প্রতিক বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে। শাহবাগের উত্থান ঘটলো, পালটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে উত্থান হলো হেফাজতের, সেখানে গুলি চালানো হলো, মানুষ মরলো। একের পর এক আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলন ব্যার্থ হলো, আমরা হতাশ হলাম।
কিন্তু আমার যেটা মনে হচ্ছে, আমাদের আগের সকল ব্যার্থতাই হচ্ছে আমাদের সফলতা। বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রাম যদি সফল হতো তাহলে হয়তো ১৮দলীয় জোট ক্ষমতায় যেতে পারতো, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামীলীগ থেকে যেতো তার আগের অবস্থানেই।
কিন্তু দেশের বর্তমান অবস্থা ঘোষণা দিচ্ছে, ক্ষমতায় থেকেও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগের মৃত্যু ঘটেছে, জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে গেছে। বিকল্প শক্তি হিসেবে উত্থান ঘটেছে জামায়াতে ইসলামীর। দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেই সেটা প্রমাণ হয়েছে।
শেষ কথা, সাময়িক বিজয় নয়, চাই দীর্ঘ মেয়াদী ইসলামী বিপ্লব।
লেখাঃ ইসলামী বিপ্লব চাই
© শামীম রেজা
০২/০৫/২০১৪
No comments:
Post a Comment