বিয়ে মুবারক! ভাবিয়া করিয় কাজ, করিয়া ভাবিওনা।


তিনটি সত্য ঘটনা, পাত্র-পাত্রীর নাম গুলো পরিবর্তিত।

এক
রাসেদ এবং তানিয়ার বিয়ে হয়ে গেলো, মহা ধুম ধামের বিয়ে। তানিয়া রক্ষণশীল পরিবারের ভদ্র মেয়ে, অন্যদিকে রাসেদ মহা আধুনিক পরিবারের ডিজুস ছেলে, সংসার জীবন ভালোই চলছিলো, বাচ্চাও হয়েছে। 
বিয়ের পর থেকেই তানিয়ে লক্ষ করলো রাসেদের মধ্যে কিছু প্রব্লেম আছে। ভাবলো ইয়াং বয়স, বাচ্চা কাচ্চা হয়ে গেলে সংসারী হবে, সংসারের প্রতি দায়ীত্ববোধ বাড়বে। কিন্তু কল্পনা এক বাস্তবতা আরেক। রাসেদ এক সময় সম্পূর্ণ কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেলো, রাত করে বাড়ি ফেরা, মাঝে মাঝে লাল পানি খেয়ে গায়ে হাত তোলা, একাধিক মেয়ে বন্ধু মেইনটেন করা, সবই চললো সমান তালে, স্ত্রী’র প্রয়োজনীয়তা রাসেদের নেই। 
তানিয়া মাঝে মাঝে গুমড়ে গুমড়ে কাদে, অভিমান করে। কিন্তু তার অভিমান ভাঙাবে কে? শ্বশুর শ্বাশুরীর কাছে এগুলো কোনো ব্যাপারই না, এই বয়সে ছেলেরা একটু আধটু এমন হবেই এটা নিয়ে কান্নাকাটি হুলস্থুল করার কিছুনেই।

শিক্ষাঃ দুনিয়াতেই জাহান্নামের আজাবের ঘ্রাণ গ্রহণ করতে হলে কু-চরিত্রের ছেলে/মেয়ে বিয়ে করার বিকল্প নেই।

দুই
হাসান এবং জেরিন একই ক্লাসে পড়ে। অসাধারণ সুন্দরী মেয়ে জেরিন, অসাধারণ বলতে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায় এমন সুন্দরী। কিন্তু প্রব্লেম হলো কাপড় পাল্টানোর মতো করেই প্রেমিক পাল্টায় জেরিন, আজকে এর সাথে তো কালকে ওর সাথে, এভাবেই চলছিলো। হাসানও মনে মনে জেরিনকে পছন্দ করে, কিন্তু সিরায়াল পাচ্ছিলোনা, একদিন হয়ে গেলো, সবাইকে টেক্কা দিয়ে হাসানের সাথে জেরিনের প্রেম হয়ে গেলো।
হাসান আবার ভীষণ চালাক ছেলে, প্রেম গরম থাকতে থাকতেই একা একা বিয়ে করে ফেললো জেরিনকে, বিয়ে মানে পাকা পাকি সম্পর্ক। বিয়ে এমনই সম্পর্ক চাইলেই কেউ কাউকে সহজে ছেড়ে যেতে পারবেনা। উভয় পক্ষের গার্জিয়ানরা প্রথম দিকে ক্যা-কু করলেও পরবর্তীতে মেনে নিতে বাধ্য হলো। নিশ্চিন্ত হাসান, কিন্তু সেটা বেশিদিনের জন্যনা। সংসারের ভিত্তি মজবুত করার লক্ষে বছর খানেকের মধ্যেই ঘর আলো করে সন্তান এলো। হাফ ছেড়ে বাচলো হাসান, যাক আর দূর্ঘটনার সম্ভাবনা নেই।
অভ্যাস হচ্ছে কুত্তার লেজ, বারো বছর চোঙের ভেতরে রাখলেও সোজা হয়না। অথবা বলা যায় কয়লা ধুইলে ময়লা যায়না। একদিন হুট করে হাসানের বন্ধুর সাথে পালিয়ে গেলো জেরিন, বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে বউকে ফিরিয়ে আনা হলো। বছর খানেক পরে অন্য এক ছেলের সাথে আবার পালিয়ে গেলো, বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে নাকি নিজের কাপুরুষতার কারণে জানিনা, আবারো ফিরিয়ে আনা হলো জেরিনকে। এখনো তারা সংসার করছে, এটাকে কি সংসার বলা হয়, নাকি একসাথে থাকা বলা হয়, বিজ্ঞজনেরাই সেটা ভালো বলতে পারবেন।

শিক্ষাঃ প্রেম কইরা রোমান্টি/পোলা মাইয়া বিয়ে করার পরেও যদি তাদের রোমান্টিকটা আগের মতো চলতে থাকে তবে মাইন্ড করার কিছু নাই।

তিন
নাম তার শিমু, চমৎকার সেই মেয়ে, অসাধারণ তার চুল। ডাগর ডাগর চোখের কোণে যেনো জাহাজ ডুবে যায়, প্রথম দেখাতেই মনে হয় কোথায় যেনো দেখেছি। প্রেম মানেনা নিয়ম কানুন, নবম শ্রেণীতে থাকা অবস্থাতেই একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গেলো। সুখের সংসার, ভালোবাসার সংসার, সুখ উপচে পড়ছে দু’জনার জীবনে। জীবিকার তাগিদে একদিন ছেলেটি বিদেশ পাড়ি দিলো, চোখের জলে গাল ভাসিয়ে, বুক ভাসিয়ে বিদায় দিলো প্রেয়সি।
বিরহেই কাটতে থাকলো শিমুর দিনগুলো, কিন্তু সেটা বেশি দিনের জন্য নয়। মনের বন্দরে নোঙর করলো নতুন জাহাজ। একদিন সেই জাহাজে করেই স্বামীর সংসার ত্যাগ করলো শিমু।
বেচারা স্বামী! বিদেশে বসে বুক ফাটা আর্তনাদ করা ছাড়া কিছুই করার ছিলোনা।

শিমু নতুন সংসার, নতুন জীবন। সুখে দুঃখে ভালোই কাটছিলো দিনগুলো, কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে মন ভরলেও পেট ভরেনা। পেটের জন্য চাই টাকা, অনেক টাকা। নতুন স্বামীও একদিন উড়াল দিলো বিদেশের উদ্দেশ্যে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিমু এখন তিন নম্বর স্বামীর সংসার করছে। এটাও নাকি ভালোবাসার সংসার, এখানেও সুখ আছে, ভালোবাসা আছে, তবে ভালোবাসা বাড়াবাড়ি রকমের উপচে পড়ছে কিনা জানিনা।

শিক্ষাঃ অপরের সুন্দরী বউ কিংবা পয়সা ওয়ালা স্বামীকে কেড়ে নিয়ে তার ঘর ভাঙার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? অপেক্ষা করেন আরেক জন আসছে সে আপনার ঘর ভাঙবে।


১৪জুন২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment