বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা।

shamimreja

এক।
গতবছরের অক্টবরের ঘটনা, চট্টগ্রামের খুলশি থানায় কি এক অপরাধে দুটি টোকাই শিশুকে ধরে আনা হলো, বয়স কতইবা হবে বড়জোড় বারো-তেরো! কিছুক্ষণ পরেই সমবয়সি চারটি ছেলে থানায় এসে হাজির! পুলিশকে বলছে, স্যার আমাদের বন্ধুদের ছাইরা দেন! পুলিশ ধমকের স্বরে বললো, যা ভাগ! বিরক্ত করিসনা। এবার তাদের নতুন আব্দার, তাইলে আমাদেরো গ্রেপ্তার করেন, আমরা যেখানেই থাকি ৬বন্ধু একসাথে থাকুম। নিজেদের পকেট হাতিয়ে মোট ২০টাকা বের করে পুলিশকে দিয়ে বললো স্যার আমাদের কাছে এই টাকাই আছে এগুলা নিয়া আমাদেরকেও এরেস্ট করেন। 
পুলিশ টেনে হিঁচড়ে ছেলেগুলোকে থানা থেকে বের করে দিতে লাগলো। গ্রেপ্তার হওয়া শিশু দুটি গরাদের ফাক দিয়ে ছলছল চোখে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে, আবার কখনো হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রুধারা মোছার ব্যর্থ চেস্টা করছে। বাহিরে চিৎকার চেচামেচি, স্যার আমরা জামুনা, আমাদের বন্ধুদের ফালাইয়া আমরা কোথাও যামুনা, আমাদেরো এরেস্ট করেন। আমরা জামুনা স্যার, আমরা জামুনা!
এ অশ্রু কৃতজ্ঞতার, এই চিৎকার ভালোবাসার, বন্ধুত্বের.........

দুই।
জীবন্ত কিংবদন্তি মাহমুদুর রহমান আজ জেলবন্দী, তার প্রিয় পত্রিকা আমার দেশ প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে জালিম সরকার। গর্ভধারিনী মায়ের বিরুদ্ধে করা হয়েছে মামলা। 
রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে এই অকুতোভয় মুজাহীদের উপর, রিমান্ড নির্যাতনকে তিনি পরোয়া করেননি। কিন্তু মায়ের অবমাননা, প্রিয় পত্রিকা বন্ধ করাকে তিনি মেনে নিতে পারেননি, ক্ষোভে অভিমানে এই বীরযোদ্ধা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হলো পিজি হাসপাতালের সিসিইউতে। তিনি আজ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অনেক অনুরোধের পরেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেননি এই লৌহ মানব, সিসিইউতে এখন তিনি ধীরে ধীরে মৃত্যুকে বড়ণ করার অপেক্ষায় আছেন।
একজন দেশপ্রেমিকের এই পরিণতি মেনে নিতে পারেনি প্রতিবাদী তারুণ্য, প্রিয় মাহমুদুর রহমান এভাবে হারিয়ে যাবেন সেটা মেনে নেয়া যায়না। তরুণ প্রজন্ম ঘোষণা দিলো, মাহমুদুর রহমানের দাবীর প্রতি আমরাও একাত্মতা প্রকাশ করলাম, আমরাও তার সাথে অনশন করবো। পুলিশ তাদের অনশনস্থল থেকে তাড়িয়ে দিলো। পরাজয় মানেনি তরুণরা, প্রিয় মাহমুদুর রহমানের জন্য অনশন শুরু করলো প্রেসক্লাব চত্বরে। আজ খবর পেলাম চাপাতী বাহিনী সেখানেও হামলা চালিয়েছে, মারধর করেছে অভুক্ত;দূর্বল সাংবাদিক এবং তরুণদের। 

উপরে প্রথম ঘটনাতে যেমন প্রকাশ পেয়েছে বন্ধুর প্রতি বন্ধুর নিখাদ ভালোবাসা, তেমনি মাহমদুর রহমানের প্রতি দেশেপ্রেমিক তারুণ্যের এই ভালোবাসা প্রমাণ করেছে দেশপ্রেমিক জনতা মাহমুদুর রহমানের পাশে আছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, সংবিধানে প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচন দিন, জনগণ আমাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে। আমি মনে করি বর্তমানে বাংলাদেশে একক ভাবে সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তি হচ্ছেন মাহমুদুর রহমান, আজ যদি দেশে প্রেসিডেন্টের শাসন পদ্ধতী চালু করে নির্বাচন দেয়া হয় এবং সেই নির্বাচনে মাহমদুর রহমান অংশগ্রহণ করেন, তবে নিশ্চিত ভাবে মাহমুদুর রহমান জয়লাভ করবেন!
যুগে যুগে বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার জয় হয়েছে। দেশবন্ধু মাহমুদুর রহমান দুটিই অর্জন করেছেন স্বীয় যোগ্যতায়, দেশের আপামর মানুষ মাহমুদুর রহমানকে নিজেদেরই একজন মনে করে।

২০এপ্রিল২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment