মিডিয়ার লাফালাফিতে খুশির কিছু নাই, আড়ালে তার ভারত হাসে!

Shamim Reja


সাভারে রানা প্লাজা ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহানী নিয়ে আমাদের মিডিয়াতে তোলপাড় চলছে। এমনকি সরকারের পাচাটা মিডিয়া পর্যন্ত এই ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করতে দ্বিধা করছেনা। ব্যাপারটা খেয়াল করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন তাইনা? আহ! শ্রমিকদের প্রতি মিডিয়ার কি দরদ! এত বেশি আনন্দিত হওয়ার কিছুনেই, মূল ঘটনা বুঝতে হলে কিছুটা পেছনে যেতে হবে।
ভারতের পূর্বাঞ্চলে একটি তাবেদার রাস্ট্র থাকা ভারতের অস্তিত্বের জন্যই প্রয়োজন ছিলো, এই লক্ষকে সামনে রেখে তারা তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামদের সামনে রেখে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানকে পশ্চিম পাকিস্থান থেকে আলাদা করতে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে, এবং আমরা লাভ করি স্বাধীন বাংলাদেশ। এখানে আমি সচেতন ভাবেই শেখ মুজিবের ভূমিকা উল্লেখ করছিনা, কারণ দেশ স্বাধীনের পেছনে শেখ মুজিবের কোনো ভূমিকা আমি খুজে পাইনা!
স্বাধীন দেশ, নতুন উদ্যমে কর্মক্ষেত্রে ঝাপিয়ে পরবে দেশের মানুষ। শিক্ষক এবং বুদ্ধিজীবিরা জাতিকে দিবে দিক নির্দেশনা, দেশ স্বাবলম্বী হবে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই স্বাভাবিক ঘটনা ঘটলে ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্য সফল হবেনা, তাই তারা পাকিস্থানী বাহিনী আত্মসমর্পণের পূর্ব মূহুর্তে জাতীর সূর্য সন্তানদের হত্যা করা শুরু করলো তালিকা করে, নিঃশেষ করে দিলো জাতীর প্রাণ শক্তি।
পাটকে বলা হয় বাংলাদেশের সোনালী আঁশ, একসময় এই পাঠ ছিলো বাংলাদেশের প্রধাণ অর্থকরী ফসল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাটের গুদামে আগুন লাগা শুরু হলো। পাঠ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত, পুঁজি হারিয়ে তারা পথে বসলো। পাট ব্যবসা চলে গেলো ভারতের হাতে। ঘটনার পেছনে কাদের হাত ছিলো বুঝতে কস্ট হওয়ার কথা নয়।
এরপর মুসলিম রাষ্ট্র গুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটলো, বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী জনশক্তির কর্মসংস্থান হলো মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশে। শ্রমিক রপ্তানীতে বাংলাদেশের সাথে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হলো ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মিডিয়াতে টাকা ঢেলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সম্পর্কে নেতীবাচক খবর প্রচার শুরু করলো এবং পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে করিয়ে নেয়া হলো কিছু আকাম! হ্যা আকামই বলছি। আকাম সমূহ উল্লেখ করছি। ভারতের পরামর্শে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস লাইনটি বিলুপ্ত করা হলো। মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের সহিত বিশেষ সম্পর্ক অপশনটি বাতিল করা হলো। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ উত্থাপন করা হলো। দেশের প্রধান ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগে জেলে নিক্ষেপ করা হলোফলাফল হলো ভয়ানক, তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লো মুসলিম রাষ্ট্রগুলো, বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানী বন্ধ করে দেয়া হলো। লাভবান হলো ভারত, তাদের শ্রমিক রাপ্তানী হু হু করে বেড়েই চলছে, ফিরে আসছে পুরানো বাংলাদেশী শ্রমিকরা। বাংলাদেশের আয়ের এই খাতটি বন্ধ হতে খুব বেশি সময় বাকি নেই বলেই মনে হয়।
এই মূহুর্তে বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী শিল্প পোশাক শিল্প। বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্ধী ভারত, পাকিস্থান, চীন। ইতোমধ্যে সস্তায় শ্রমিক ও গ্যাস সংযোগের সুবিধা পাওয়ায় ভারতের অনেক পোশাক তৈরী কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করা হয়।
এবার ফিরে আসি মূল টপিকে, বাংলাদেশের মিডিয়া গুলো মূলত ভারতের পারপাস সার্ভ করে থাকে। ভারতের ইচ্ছেতেই তারা তাদের সংবাদ প্রচার কৌশল নির্ধারণ করে। বেশি কিছু বলতে চাইনা ইতোমধ্যে ডিজনি ঘোষণা দিয়েছে তারা আর বাংলাদেশ থেকে পোশাক নিবেনা, আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হুমকি দিয়েছে। এই সব প্রতিষ্ঠান এখন বিকল্প হিসেবে ভারত থেকে পোশাক আমদানী করবে।
মিডিয়ার লাফালাফিতে হাসিসনে ভাই, আড়ালে তার ভারত হাসে!

৪মে২০১৩

Post Comment

No comments:

Post a Comment