কথায় আছে যার কন্ঠ সুন্দর নেই, তার কান্না করাও উচিত নয়, কারণ সেই কান্নার শব্দ শুনে মানুষ বিরক্ত হয়।
গতকাল রাতে বেশ কয়েকটি কারণে ঠিক মতো ঘুমাতে পারিনাই, তার মধ্যে একটা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী কোনো এক বিয়ে বাড়ি হতে তীব্র ভাবে ভেসে আসা হিন্দী গানের শব্দ।
গানগুলো হিন্দী এবং অশালীন হলেও সুরগুলো সুন্দর ছিলো তাই খুব একটা বিরক্ত হইনাই। তবে কষ্ট পেয়েছি, কোন ধরনের রুচি হলে বিয়ের মতো একটা পবিত্র আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয় অশালীন হিন্দী গানের মাধ্যমে! শুরুতেই ভুল, বাকি জীবনটাতো ভুলে ভুলেই পার হবে।
এখন যেখানে বসে আছি, সেখানেও একই অবস্থা, এখানেও তীব্র শব্দে মাইক বাজিয়ে আনন্দ করা হচ্ছে। আনন্দানুষ্ঠানের নাম “ঈদোছে বারা ঈদ” বাংলায় বললে বলতে হয়, “সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ”।
কিছু কিছু মানুষের কান্ড দেখলে হাসি পায়না, দুঃখ হয়। বিয়ে করা ফরজ তাই এরা দুইটা বিয়ে করে ডবল ফরজ আদায় করে, চারটা বিয়ে করে সুন্নত এবং আটটা বিয়ে করে ডবল সুন্নত পালন করে।
মহান রব্বুল আলামীন আমাদের আনন্দ করার জন্য দুইটা দিন দিয়েছেন, একটা ঈদুল ফিতর, আরেকটা ঈদুল আযহা। কোথা হতে হঠাৎ করে আরেকটা ঈদের উৎপত্তি হলো, আল্লাহই ভালো জানেন। এই ঈদ নাকি সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নবী!
সব চাইতে দুঃখজনক যে ব্যাপার সেটা হচ্ছে, এই আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে আমাদের প্রিয়নবী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর মৃত্যুর দিনে। যে দিনটাতে আমাদের শোকে বিহ্বল হওয়ার কথা, সেই দিন আমরা আনন্দানুষ্ঠান করছি। হায়রে অভাগা মুসলমান!
আচ্ছা, যে ঈদ আল্লাহর পক্ষ হতে আসে নাই, সেই ঈদ কার নিকট হতে এসেছে, শয়তানের নিকট থেকে?
গতরাতের বিয়ের সংগীতানুষ্ঠানের সাথে আজকের এই সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, গতরাতে সুরেলা কন্ঠের হিন্দী গান দিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া হয়েছে। আর আজকের অনুষ্ঠানে ইসলামী সংগীতের নামে অসহ্য সঙ্গীত পরিবেশণ করে মানুষকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
“দেখ আমিনা মায়ের কোলে, দোলে শিশু ইসলাম দোলে” কি চমৎকার একটা ইসলামী সংগীত। সেই সংগীতের সাথে যুক্ত করা হয়েছে সমবেত কন্ঠের হুক-হুক, হুক-হুক, শব্দ। একজন শিল্পী গান গাইছে, আর ৪-৫জন ব্যাক্তি পাশ থেকে হুক-হুক শব্দে করে তার গানে যন্ত্র সঙ্গীতের আমেজ দিচ্ছে!!
লেখার শুরুতেই বলেছি যার কন্ঠ সুন্দর নেই, তার কান্না করাও উচিত নয়। আমাদের দেশের গ্রামে-গঞ্জে ওয়াজ-মাহফিলে ইসলামী সংগীতের নামে যেসব গান বাজানো হয়, সেটা প্রকারান্তরে মানুষের মনে ইসলাম সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণাই তৈরী করে। মানুষ মনে করে ইসলাম মানেই সেকেলে, ইসলাম মানেই ক্ষ্যাত। ইসলাম যদি ক্ষ্যাতই না হবে, তইলে এই ক্ষ্যাত মার্কা গানগুলোই কেনো ইসলামী সংগীত?
ঢাকার সাইমুম, রাজশাহীর বিকল্প কিংবা চট্টগ্রামের পাঞ্জেরী শিল্পীগোষ্ঠির এতো সুন্দর সুন্দর ইসলামী সংগীতের ক্যাসেট থাকতে ওয়াজ মাহফিলে এই হুক্কা হুয়া টাইপের ইসলামী সংগীত পরিবেশনের মানে কি?
সেদিন এক সিনিয়র আপার একটা লেখা পড়েছিলাম, যেখানে তিনি বলেছিলেন প্রতিটা সম্পর্ক হচ্ছে একেকটা এ্যাসাইনমেন্টের মতো। আমরা চাইলে সেই এসাইনমেন্ট হাতে লিখে জমা দিতে পারি, কিংবা টাইপ করে প্রিন্টেড কপিও জমা দিতে পারি, অথবা আরেকটু সুন্দর করে রঙ্গিণ মলাটে স্পাইরাল বাইন্ডিং করেও জমা দিতে পারি।
নিঃসন্দেহে হাতে লেখা এ্যাসাইনমেন্টের চাইতে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা এ্যাসাইনমেন্টটাই হৃদয়ে পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে।
আসুন ইসলামকেও আমরা রঙ্গিণ মলাটের স্পাইরাল বাইন্ডিং করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করি। বেসুরো কন্ঠের গানের চাইতে সুরেলা কন্ঠের গালি উত্তম।
বিষয়ঃ ঈদে মিলাদুন্নবী এবং সেকেলে ইসলাম
© শামীম রেজা
২৮/০২/২০১৪
গতকাল রাতে বেশ কয়েকটি কারণে ঠিক মতো ঘুমাতে পারিনাই, তার মধ্যে একটা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী কোনো এক বিয়ে বাড়ি হতে তীব্র ভাবে ভেসে আসা হিন্দী গানের শব্দ।
গানগুলো হিন্দী এবং অশালীন হলেও সুরগুলো সুন্দর ছিলো তাই খুব একটা বিরক্ত হইনাই। তবে কষ্ট পেয়েছি, কোন ধরনের রুচি হলে বিয়ের মতো একটা পবিত্র আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয় অশালীন হিন্দী গানের মাধ্যমে! শুরুতেই ভুল, বাকি জীবনটাতো ভুলে ভুলেই পার হবে।
এখন যেখানে বসে আছি, সেখানেও একই অবস্থা, এখানেও তীব্র শব্দে মাইক বাজিয়ে আনন্দ করা হচ্ছে। আনন্দানুষ্ঠানের নাম “ঈদোছে বারা ঈদ” বাংলায় বললে বলতে হয়, “সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ”।
কিছু কিছু মানুষের কান্ড দেখলে হাসি পায়না, দুঃখ হয়। বিয়ে করা ফরজ তাই এরা দুইটা বিয়ে করে ডবল ফরজ আদায় করে, চারটা বিয়ে করে সুন্নত এবং আটটা বিয়ে করে ডবল সুন্নত পালন করে।
মহান রব্বুল আলামীন আমাদের আনন্দ করার জন্য দুইটা দিন দিয়েছেন, একটা ঈদুল ফিতর, আরেকটা ঈদুল আযহা। কোথা হতে হঠাৎ করে আরেকটা ঈদের উৎপত্তি হলো, আল্লাহই ভালো জানেন। এই ঈদ নাকি সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নবী!
সব চাইতে দুঃখজনক যে ব্যাপার সেটা হচ্ছে, এই আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে আমাদের প্রিয়নবী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর মৃত্যুর দিনে। যে দিনটাতে আমাদের শোকে বিহ্বল হওয়ার কথা, সেই দিন আমরা আনন্দানুষ্ঠান করছি। হায়রে অভাগা মুসলমান!
আচ্ছা, যে ঈদ আল্লাহর পক্ষ হতে আসে নাই, সেই ঈদ কার নিকট হতে এসেছে, শয়তানের নিকট থেকে?
গতরাতের বিয়ের সংগীতানুষ্ঠানের সাথে আজকের এই সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, গতরাতে সুরেলা কন্ঠের হিন্দী গান দিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া হয়েছে। আর আজকের অনুষ্ঠানে ইসলামী সংগীতের নামে অসহ্য সঙ্গীত পরিবেশণ করে মানুষকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
“দেখ আমিনা মায়ের কোলে, দোলে শিশু ইসলাম দোলে” কি চমৎকার একটা ইসলামী সংগীত। সেই সংগীতের সাথে যুক্ত করা হয়েছে সমবেত কন্ঠের হুক-হুক, হুক-হুক, শব্দ। একজন শিল্পী গান গাইছে, আর ৪-৫জন ব্যাক্তি পাশ থেকে হুক-হুক শব্দে করে তার গানে যন্ত্র সঙ্গীতের আমেজ দিচ্ছে!!
লেখার শুরুতেই বলেছি যার কন্ঠ সুন্দর নেই, তার কান্না করাও উচিত নয়। আমাদের দেশের গ্রামে-গঞ্জে ওয়াজ-মাহফিলে ইসলামী সংগীতের নামে যেসব গান বাজানো হয়, সেটা প্রকারান্তরে মানুষের মনে ইসলাম সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণাই তৈরী করে। মানুষ মনে করে ইসলাম মানেই সেকেলে, ইসলাম মানেই ক্ষ্যাত। ইসলাম যদি ক্ষ্যাতই না হবে, তইলে এই ক্ষ্যাত মার্কা গানগুলোই কেনো ইসলামী সংগীত?
ঢাকার সাইমুম, রাজশাহীর বিকল্প কিংবা চট্টগ্রামের পাঞ্জেরী শিল্পীগোষ্ঠির এতো সুন্দর সুন্দর ইসলামী সংগীতের ক্যাসেট থাকতে ওয়াজ মাহফিলে এই হুক্কা হুয়া টাইপের ইসলামী সংগীত পরিবেশনের মানে কি?
সেদিন এক সিনিয়র আপার একটা লেখা পড়েছিলাম, যেখানে তিনি বলেছিলেন প্রতিটা সম্পর্ক হচ্ছে একেকটা এ্যাসাইনমেন্টের মতো। আমরা চাইলে সেই এসাইনমেন্ট হাতে লিখে জমা দিতে পারি, কিংবা টাইপ করে প্রিন্টেড কপিও জমা দিতে পারি, অথবা আরেকটু সুন্দর করে রঙ্গিণ মলাটে স্পাইরাল বাইন্ডিং করেও জমা দিতে পারি।
নিঃসন্দেহে হাতে লেখা এ্যাসাইনমেন্টের চাইতে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা এ্যাসাইনমেন্টটাই হৃদয়ে পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে।
আসুন ইসলামকেও আমরা রঙ্গিণ মলাটের স্পাইরাল বাইন্ডিং করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করি। বেসুরো কন্ঠের গানের চাইতে সুরেলা কন্ঠের গালি উত্তম।
বিষয়ঃ ঈদে মিলাদুন্নবী এবং সেকেলে ইসলাম
© শামীম রেজা
২৮/০২/২০১৪
No comments:
Post a Comment