আমরা কার সৈনিক?

গোয়ার্তুমির ধর্মের নাম ইসলাম নয় । যুদ্ধ হচ্ছে কৌশলের নাম, আপনি তরবারী দিয়েও যুদ্ধ করতে পারেন, কলম দিয়েও যুদ্ধ করতে পারেন, কথার মাধ্যমেও যুদ্ধ করা যায়। যেই কৌশলে যুদ্ধ করলে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেই কৌশলেই যুদ্ধ করতে হবে।
মাক্কী জীবনে মুসলমানরা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো, সেখানে যুদ্ধ হয়নাই। আবার হুদাইবিয়ার সন্ধীকালীন সময়ে, যুদ্ধের চাইতে চুক্তিকেই আল্লাহর রাসূল (সঃ) উত্তম মনে করেছিলেন তাই যুদ্ধের পরিবর্তে চুক্তি করেছিলেন।

থাবা বাবাকে কয়জনে চিনতো? তাকে হত্যা করা হলো, হিরো বানানো হলো। লাভ কি হলো? কিছু নিষ্পাপ ইসলাম প্রেমি ছাত্র এখন জেলের ঘানি টানছে। তারা কি পারতোনা থাবা বাবার কী-বোর্ডের বিপরীতে কী-বোর্ড ধারণ করতে?
শত্রুকে হত্যা করে তার মুখ বন্ধ করা যায়না, তার রক্ত কথা বলে। শত্রুর মোকাবেলায় কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।

সেই যুদ্ধেই অবতীর্ণ হতে হবে যেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ইসলাম আত্মহত্যা করতে অনুমতি দেয়না। যদি অস্ত্র ধারণ করলেই ইসলাম বিজয়ী হবে বলে আমি বিশ্বাস করতাম, তাহলে আমিও জঙ্গীদের পক্ষ নিতাম।
কিন্তু প্রথমেই বলেছি, গোয়ার্তুমির নাম ইসলাম নয়, অস্ত্র ধারণ করতে হলেও পরিবেশের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অস্ত্র ধারণ করার উপযুক্ত নয়। এখান ইসলামপন্থীদের অস্ত্র ধারণ করার অর্থ হচ্ছে, শত্রুর অস্ত্র শক্তির নিকট পরাজিত হওয়া, জঙ্গিবাদ দমনের অযুহাতে বাংলাদেশে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর প্রবেশ ঘটানো।

আমরা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুললাম, লাভ কি হলো? তসলিমা নাসরিন দেশ ছেড়ে চলে গেলেন, তার লেখালেখি কি বন্ধ হয়েছে? উল্টো তিনি অর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি।
আমি তসলিমা নাসরিনের বই পড়েছি, আচ্ছা তার লেখাগুলো সাহিত্যের কোন ক্যাটাগড়িতে পড়ে? এই নিম্ন মানের লেখাগুলোকেই তরুণ সমাজের কাছে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করেছি আমরাই।
সেদিন বই কিনতে গিয়েছিলাম, দেখলাম কলেজ পড়ুয়া এক মেয়ে তসলিমার নিষিদ্ধ বই কিনলেন, ড্রেসআপ চুলের কাটিং হুবুহু তসলিমা নাসরিন, বুঝলাম তিনি তসলীমার বিরাট ফ্যান।
এর জন্য দায়ী আমরাই, আমরা যারা নিজেদেরকে মৌলবাদী দাবী করি তারাই এর পেছনে দায়ী।

রকমারী ডট কমে কোন এক নাস্তিকের বই বিক্রি করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা চড়মে পৌছে গেছে। আচ্ছা ওই নাস্তিকের পাঠক সংখ্যা কত? ঐ নাস্তিকের নাম আগে কখনো শুনেছেন?
আমি জানি, পাঠকদের বিরাট একটা অংশ বলবেন, না শুনিনাই। এই অখ্যাত একজন নাস্তিক লেখককে জাতির বিরাট একটা অংশের অনলাইন পাঠকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পেছনে মূল ভূমিকা কার?

ঠিক ধরেছেন, তিনি শফিউর রহমান ফারাবি। এখন যদি পাঠকরা ওই নাস্তিক কি লেখেছে সেটা জানার জন্য তার বই কিনে পড়া শুরু করে, তবে আপনি পাঠকদের দোষ দিতে পারবেন?
আজকে যে নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিনকে নিয়ে এতো কথা, লাফালাফি, ফালাফালি, আমি মনে করি আসিফ মহিউদ্দিনের এই বিরাট সংখ্যক ফলোয়ার সৃষ্টির পেছনে দায়ী হচ্ছেন এই ফারাবি।

সর্বশেষ যে কথাটি বলতে চাই, শফিউর রহমান ফারাবি কিংবা সম গোত্রিয়রা সজ্ঞানে কিংবা অজ্ঞানে যেভাবেই হোক, এদেশে নাস্তিকতার প্রচার প্রসারে ভূমিকা পালন করছেন।

লেখাঃ আমরা কার সৈনিক?
© শামীম রেজা
১৮/০৩/২০১৪

Post Comment

No comments:

Post a Comment